![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
- কী নাম?
- সাদ্দাম
- জেলে কতদিন হয়?
- ১ বছরের জেল দিছে, মাত্র ৩ মাস হয়।
- কেস কী?
- ছিনতাই করবার গিয়া ধরা খাইছি। বুঝবারই পারি নাই ওই হালায় নিজেই পুলিশ। এই লাইনে জীবনে কোনদিন ধরা খাইনাই। হালার, ওইদিন কপালডাই খারাপ আছিলো!
- হমম.... তোমার বাবাও মনে হয় এই লাইনেরই ছিলেন, নাকি?
- হ, বাপে গেরামে চুরি করতো। হের হাত খুব পাক্কা আছিলো। কোনদিন ধরা খায় নায়। কিন্তু তার পার্টনার তার লগে মীর জাফরী কইরা ধরা খাওয়াইয়ে দিছে। কাউরেই বিশ্বাস করা যায় না এই দুনিয়ায়। গেরামের মাতব্বর বাপেরে গ্রামছাড়া করার হুকুম দিছে। তার পর থাইকা বাপের কোন খোঁজ পাই নাই। বাধ্য হইয়া আমারই সংসার চালাইতে হয়। বাপের কাছ থ্যাইকা একটু আধটা টেরনিংও নিছিলাম। ভালোই চলতাছিলো, একটুর লাইগা ধরা খাইয়া গেলাম।
- হমম বুঝলাম.... এবার চুপ করে এর উপর শোও.........
বলেই ড. রায়হান কয়েদী সাদ্দামকে "ডিএনএ ট্রান্সফর্মারে" শুইয়ে দেয়। দীর্ঘ ৩২ বছর গবেষণা করার পর তিনি এই ট্রান্সফর্মারটি আবিষ্কার করতে সক্ষম হন। তিনি চিন্তা করে দেখলেন, যেহেতু, ডিএনএ হচ্ছে বংশ গতির একক বা বাহক । এটি আমাদের জীবন পক্রিয়া নিয়ন্ত্রন করে, তাই কোনভাবে যদি খারাপ কাজ পরিচালনা করার ডিএনএ প্রতিস্থাপন করে ভালোটা বসিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে মানুষ আর বংশ পরম্পরায় খারাপ কাজগুলো করবে না। যেই ভাবা সেই কাজ, নেমে পড়লেন গবেষণায়। প্রথমেই তিনি ভালো ভালো মানুষের চুলের গোড়া, রক্ত, বীর্জ থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করে ডি-অক্সিরাইবোজ সুগার, অজৈব ফসফেট ও অ্যাডেনিন (Adenine), গুয়ানিন ( Guanine), সাইটোসিন ( Cytosine), থায়ামিন (Thymine) নামক নাইট্রোজেন বেস-কে আলাদা আলাদা করলেন, কারণ এগুলোই হল ডিএনএ'র গাঠনিক উপাদান। অতঃপর উপাদানগুলো থেকে ইলেকট্রিক কোডেক তৈরি করলেন, যেন সহজেই মানুষের শরীরের মধ্যে কোডগুলো প্রতিস্থাপন যায়। এভাবে সবশেষে তৈরি করলেন ডিএনএ ট্রান্সফর্মার। তিনি এটাকে কেন্দ্রিয় কারাগারে স্খাপন করার চিন্তা করলেন যেন অপরাধী যারা আছে তাদের ডিএনএ প্রতিস্থাপন করে ভালো মানুষ বানাতে পারে। তাহলে একটা সময় বাংলাদেশে খারাপ মানুষ বলে কেউ থাকবে না। একজন একজন কয়েদীকে মেশিনে ঢুকান আর তারা ভালো হয়ে বের হয়ে আসে। ভালো মানুষের সার্টিফিকেট দিয়ে কয়েদীদের জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।
* * *
জরুরী মন্ত্রীসভার আহবান করা হয়েছে। দেশের পরিস্থিতি খুব খারাপ। দেশে বেকারত্ব বাড়ার সাথে সাথে অর্থনৈতিক মন্দা, খাদ্য উৎপাদন কম এবং মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। মাননীয় স্পীকার বলে চললেন,
- “ডিজিটাল বাংলাদেশ হওয়ার সুবাদে দেশে এখন খারাপ মানুষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। সবাই ভালো ভালো কাজ করে, ভালো চিন্তা করে তবুও দেশের এই অবস্থা কেন? কেন দেশের উন্নতি হচ্ছে না।? আমরা মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো দিতেও ব্যর্থ হচ্ছি। এক কারণ কী?”
একে একে সবাই মুখ চাওয়া-চাওয়ি করতে লাগলো। কেউ প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে পারলো না। দেশকে রক্ষা করার জন্য এর কারণ খুঁজে বের করতেই হবে। তাই ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হল। ১ মাসের মধ্যে তদন্ত কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হল।
তদন্ত শেষে রিপোর্ট পেশ করতে সভা আহবান করা হল। রিপোর্টে বলা হল- দেশের এই অবস্থার জন্য দায়ী হলেন ড. রায়হান। উনার "ডিএনএ ট্রান্সফর্মার” আবিষ্কারের ফলে কয়েদিরা ভালো মানুষ হয়ে বেরিয়ে আসছে। দৈনিক ১০০ জন করে কয়েদি ছাড়া পাচ্ছে জেল থেকে। দীর্ঘদিন জেলে থাকার দরূন তাদের কোন চাকরীর অভিজ্ঞতো না থাকায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে না। ভালো ডিএনএ থাকার ফলে খারাপ কোন কাজেও জড়িত হতে পারছে না। ফলে তারা বেকার রয়ে যাচ্ছে। সেই সাথে তাদের বাসস্থানের জন্য আবাদী জমিতেও ঘর বানানো হচ্ছে, যার কারণে ফসল উৎপাদন অনেক কমে গেছে। অন্যদিকে, দিনে দিনে খারাপ কাজের পরিমান কমে যাচ্ছে বলে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনেকেরই চাকরী চলে যাচ্ছে। মানুষ পিটানো আর ঘুষ নেওয়া ছাড়া তাদের অন্য কোন অভিজ্ঞতা না থাকায় কোথাও চাকরী করতে পারছে না। আইনজীবীরাও মক্কেল না পেয়ে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। জরীপে দেখা গেছে, বাংলাদেশে সর্বমোট কয়েদীর সংখ্যা আনুমানিক ৮৫,০০০ এর উপরে। দিনে দিনে এদের সবাইকে খালাস দেওয়া হলে দেশের অবস্থা আরো খারাপের দিকে ধাবিত হবে।
রিপোর্ট শোনার পর সভার সবাই দুঃচিন্তায় পড়ে গেল। স্পিকার বলে উঠলেন, “নাহ, এভাবে চলতে থাকলে বাংলাদেশের সবাই ভালো হয়ে যাবে। খারাপ কাজ বলে কিছু থাকবে না। আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী বলে কোন সেকশন থাবে না, আইনজীবীদের আয় কমে যাবে। মাদক ব্যবসায় বন্ধ হয়ে যাবে, খাদ্য উৎপাদনের জমি না থাকায় ঘাটতি পড়ে যাবে, কেউ আইন অমান্য করবে না বিধায় গণতন্ত্র স্বয়ংক্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে, ফলে মন্ত্রী পরিষদের গুরুত্ব কমে যাবে। মন্ত্রীদের দেখলে কেউ রাস্তা ফাঁকা করে দিবে না। এহেন অবস্থায় আমাদের ভবিষ্যত হুমকির মুখে। এটা হতে দেওয়া যাবে না। ড. রায়হানের বিরুদ্ধে একটা ব্যবস্থা নিতেই হবে। ”
অতঃপর ড. রায়হানের নামে মামলা করা হল। তাকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করা হল। “দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার” ক্ষুন্ন করার অপরাধে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হল। যেহেতু, ডিএনএ ট্রান্সফর্মেইশনের মাধ্যমে মানুষেরে প্রকৃত ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন আনা হচ্ছে, তাই “স্বকীয়তা ও ব্যক্তিস্বাধীনতায় বাধা দানের” জন্য অভিযুক্ত করা হল। সমস্ত স্বাক্ষী, প্রমাণ ও পরিস্থির কথা বিবেচনা করে ড. রায়হানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় এবং তার আবিষ্কৃত ডিএনএ ট্রান্সফর্মার বিনষ্ট করে দেওয়ার আদেশ দেয়।
“‘কেউ যেন জেলে না থাকে আর খারাপ পথে না চলে’ এই নিয়ে চিন্তা করে যেই আমি এতো গবেষণা করলাম, সেই আমাকেই কিনা সারাজীবন জেলখানায় কয়েদী হয়ে কাটাতে হবে।!!! এটাই আমার দেশকে নিয়ে ভালো চিন্তা করার নিয়তি!!! কেউ বুঝলো না যে, এই মানুষগুলোকে জনশক্তিতে রূপান্তর করা যেত, উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারতো। সবাই নিজের স্বার্থ নিয়ে বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছে, যার ফলে বৃহৎ কল্যাণের কথা কারো মাথায় আসে না। যন্ত্রটা জেলখানায় ব্যবহান না করে মন্ত্রী পরিষদে ব্যবহার করলেই বেশি ভালো হতো। ” মনে মনে কথাগুলো বলে দীর্ঘ একটা নিঃশ্বাস ছাড়লেন ড. রায়হান।
০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৩২
দিগন্ত জর্জ বলেছেন: ভালোই বলেছেন। তাহলে হয়তো দেশ উন্নতির দিকে যাবে।
২| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৭:৪৫
নিসঙ্গ বিহঙ্গ বলেছেন: চমৎকার আইড়িয়া। তবে ডঃ রায়হান উনার পরীক্ষা ভুল জায়গা থেকে শুরু করেছেন।বাকিটুকু বুঝে নিন।
০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:২৫
দিগন্ত জর্জ বলেছেন: তিনি যে ভুল জায়গায় উনার আইডিয়া প্রয়োগ করেছেন, তা শেষে বুঝতে পেরেই দীর্ঘশ্বাসটা নিলেন। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
৩| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:২০
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: অাজগুবি গল্প হলেও ভালো লেগেছে ।
০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৯
দিগন্ত জর্জ বলেছেন: এটা কখনো সম্ভব হবে না, তাই আজগুবি বলে চালায় দিছি। আপনার ভালো লেগেছে শুনে আমারও ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।
৪| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:২৭
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: আজগুবি গল্পের মেসেজ টা আজগুবি নয় ।
সুন্দর লিখেছেন ।
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৪৪
দিগন্ত জর্জ বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। আমাদের দেশের মাথা স্থানীয় যারা আছে তারা চাইলেই সুন্দর একটা দেশ পেতে পারি।
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:২৭
আজমান আন্দালিব বলেছেন: সংসদ গেটে বসানো দরকার।