নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন মানেই আনন্দ আর কষ্ট..

দিগন্ত জর্জ

সাধারণ একজন মানুষ

দিগন্ত জর্জ › বিস্তারিত পোস্টঃ

যে কারণগুলোর জন্য রিলেশনে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকে

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৫৩

সেদিন মনিপুরীপাড়া ১ নং গেইট দিয়ে বাসায় যাচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি এক পরিচিত ছোটভাই আমার সামনেই হেঁটে যাচ্ছে। ডাকতে যাবো এমন সময় তার মুখে ধমকের সুর শুনে থমকে গেলাম। ধমকের শিকার হল তার পাশে থাকা মেয়ে-বান্ধবী/ গার্লফ্রেন্ড (সম্ভবত)। উচ্চস্বরে বান্ধবীকে কী যেন বোঝানোর চেষ্টা করছে আর তার বান্ধবী নত মস্তকে শুনেও না শোনার ভান করছে বা না শুনেও শোনার ভান করছে। আশেপাশের মানুষগুলো এমনভাবে তাকিয়ে আছে মনে হয় যেন কমেডি শো দেখছে। এই মূহুর্তে ছোটভাইয়ের সাথে দেখা হওয়াটা অস্বস্তিকর। পাশ কাটিয়ে চলে গেলাম।

প্রেমিক-প্রেমিকা বা স্বামী স্ত্রী তো ভালোবাসার-ই মানুষ। একে অন্যকে মন থেকে ভালোবাসে বিধায়-ই একসাথে থেকে সারাজীবন কাটিয়ে দেওয়ার শপথ করে। একসাথে থাকতে গেলে একটু আধটু মনোমালিণ্য হবে, মান-অভিমান হবে এটাইতো স্বাভাবিক। কিন্তু সেই রাগারাগি যদি সম্পর্কের বিচ্ছেদের কারণ হয় বা মানুষের সামনে অপমান করার সামিল হয় তাহলে একটু দৃষ্টিকটু ই লাগে। বা মাসের ২৯/৩০ দিনই যদি ঝামেলা লেগেই থাকে তবে ভালোবাসা প্রকাশের সুযোগ কোথায়!!!!! আসুন জেনে নেই যে কারণে এই ঝামেলাগুলো হয়-

অবিশ্বাস: ভালোবাসার মানুষটির প্রতি একবার যদি অবিশ্বাস এসে পড়ে সারাজীবন অশান্তিতে কাটাতে হবে। এবং প্রেমিক-প্রেমিকাদের বেলায় তো ব্রেক-আপ অবধারিত। বেশিরভাগ গণ্ডগোল গুলো হয় অবিশ্বাস নিয়েই। প্রেমিক সন্দেহ করছে প্রেমিকাকে, স্ত্রী সন্দেহ করছে স্বামীকে আবার উল্টোটাও ঘটছে। অনেক প্রেমিকরা এমন ভাব করে যেন তার গার্লফ্রেন্ড তার নিজের সম্পত্তি। অন্য কারো সাথে কথা বলতে দেখলেই তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে। ভাবে, এই বুঝি তার প্রেমিকা হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। বা ফোনে ওয়েটিং দেখলেই ভাবে মনে হয় আরেকটা প্রেম করছে। শুরু হয় নানান প্রশ্ন এবং সেই সাথে চিল্লাপাল্লা। প্রেমিকারাও কম যায় না। “ওই মেয়ের দিকে তাকাইছো কেন/ ফোন এতো ওয়েটিং কেন/ ফোন রিসিভ করো নায় কেন/ আজকে দেখা কর নায় কেন/ ক্লাশ থেকে আসতে এতো দেরী হল কেন/ এতো আড্ডা দিতে হবে কেন/ সারাদিন ফেইসবুকে থাকো কেন/ কার সাথে এতো চ্যাটিং কর ইত্যাদি আরো অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। শুরু হয় তর্ক-বিতর্ক তারপর কথা বলা বন্ধ। অপরদিকে স্ত্রী ভাবে স্বামী মনে হয় সারাদিন অফিস কলিগের সাথে ফস্টিনস্টি করছে। বাসায় ফিরলেই নানান প্রশ্নে মুখে পড়েন অনেক স্বামী, “ফিরতে এতো দেরী হল কেন/ কোথায় গিয়েছিলে/ কেন গিয়েছিলে/ কী কাজ ছিল ইত্যাদি। আবার স্বামীর ও চিন্তা হয় “আমি তো নেই, বাসায় স্ত্রী একা না জানি কার সাথে কী করছে!!! এই সমস্ত অবিশ্বাসের কারণেই অশান্তি লেগেই থাকে।

ইগো: ইগো থাকা ভালো কিন্তু বেশি থাকলে রিলেশনশিপের জন্য খারাপ। মেয়ে ভাবে “আমি সুন্দরী তাই আমার বয়ফ্রেন্ডের উচিত আমার মন যুগিয়ে চলা। আমি যা বলব তাই শুনতে হবে।” অপরদিকে ছেলে ভাবে, “আমি ছেলে মানুষ, বুদ্ধি বেশি, শক্তি বেশি। আমি যা বলব তা-ই ঠিক। আমি কেন মেয়ের কাছে ছোট হব। আমি কেন গার্লফ্রেন্ডের কথা মত চলব!!! আমার কথা মত তাকে চলতে হবে।” সবসময় ‘কথায় জয়ী’ হবার মনোভাব নিয়ে থাকলে কখনোই সংসারে সুখ আসবে না। স্ত্রী ভাবে “স্বামীর কথায় উঠবো- বসবো ওই যুগ শেষ, এখন আমার আদেশ ও তাকে শুনতে হবে।” নারীবাদী মন জেগে ওঠে ভেতরে। স্বামীর চিন্তা, “সংসারের সমস্ত খরচ যোগান দেই আমি, আর তুই আমার মুখের উপর কথা কস্…. এতো বড় সাহস!!!!!

ভুল বোঝাবুঝিঃ সবচেয়ে বেশি ঝামেলা বা মনোমালিন্য হয় ভুল বোঝাবোঝিরে কারণে। বয়ফ্রেন্ড হয়তোবা সরল মনে জিজ্ঞাসা করলো, "কী করেছো আজকে সারাদিনে?" অমনি মেয়ে রেগে উঠলো, "কী! তুমি আমাকে সন্দেহ করতেছো? ভাবতেছো সারাদিনে আমি অন্য ছেলের সাথে ঘুরে বেড়াইছি? এর জন্য আমাকে জেরা করতেছো? তোমার মন মানসিকতা এতো খারাপ?" অমনি তৈরি হয়ে গেল কুরুক্ষেত্র।
অন্যদিকে স্ত্রী হয়তোবা স্বমীকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞাসা করলো, "কখন ফিরবা বাসায়?" স্বামী বলে ওঠে, "আচ্ছা, আমাকে ফোন দিয়ে সিওর হয়ে নিচ্ছ আমি কখন বাসায় ফিরবো, আর এই সময়ের মধ্যে তুমি তোমার লীলাখেলা চালিয়ে যাবে, তাইতো? সব বুঝি এগুলো, তোমার রূপ আমার চেনা হয়ে গেছে!!" প্রতিটা কথায় ভুল বুঝে অন্য মিনিং খোজার কারণেও সাংসারিক অশান্তিগুলো বেশি হয়ে থাকে।

অতিরিক্ত খবরদারিঃ একটা মানুষের প্রতিটা পদক্ষেপেরই যদি খবরদারি করা হয়, স্বভাবতই মানুষটার বিরক্ত আর রাগ উঠবে। এটা করবা না, ওইটা করাবা না, অমুক জায়গায় যাবে না, ওর সাথে কথা বলবা না, এটা খাবা না, সেটা খাবা না, এই কাপড় পড়বা না, এটা বলবা না..... ব্লা ব্লা ব্লা নানান নিষেধাজ্ঞা আর নির্দেশ মানতে মানতে বিরক্ত ধরে গিয়ে যখনই প্রটেস্ট করতে যাই, তখনই ঝগড়াটা বাধে। "ওও, আমার কথা শুনতে তো ভালো লাগবেই না এখন। যাও নিজের ইচ্ছা মত চল, তোমার সাথে আমি আর থাকতে পারবো না। লিভ মি এলন।"

এইসব ঝামেলার কি কোন সমাধান নেই??? আছে, অবশ্যই সমাধান আছে। আমাদের আপস করতে শিখতে হবে। রাগ নিয়ন্ত্রন করতে শিখতে হবে। সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। দুইজনের ই সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। যা নিয়ে সন্দেহ তার খোলামেলা আলোচনার প্রয়োজন। দুইজনের একসাথে রাগ করলে ঝগড়া কখনোই শেষ হবে না। একজন রাগ করলে অন্যজনকে ঠাণ্ডা থাকতে হবে, যদিও জানি কাজটা খুব কঠিন। যেখানে শুধুমাত্র একটি ‘সরি/ আমি দু:খিত’ বললেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায় সেখানে তা বলতে শিখতে হবে। এই শব্দটা বলা মানে ছোট হওয়া নয় বরং বড় মনের পরিচয় দেয়া। আর হ্যা, অবশ্যই অন্যজনের ইচ্ছার মূল্য দিতে হবে। আবেগের চেয়ে বিবেককে একটু প্রাধান্য দিতে পারলেই আমরা সুখের রাজ্যের সন্ধান পাব।

বিঃ দ্রঃ লেখাটা কোন জরিপের ফলাফল নয়। নিজের অভিজ্ঞতার সাথে কল্পনার মিশ্রণ ঘটানো হয়েছে মাত্র।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:১৯

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


আর্থিক লেনদেন আরেকটা ভাইটাল দিক।

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:২১

দিগন্ত জর্জ বলেছেন: ধন্যবাদ ব্যাপারটার কথা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য। লেখার সময় মাথায় ছিলো না কথাটা।

২| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:২৫

মাহমুদা আক্তার সুমা বলেছেন: আপনে এত্ত কিছু জানলেন কেমনে??

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:২৯

দিগন্ত জর্জ বলেছেন: হি হি হি হি... ওইযে বিঃ দ্রঃ তে বললাম, নিজের অভিজ্ঞতার সাথে কল্পনার মিশ্রণ ঘটানো হয়েছে মাত্র। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.