![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার বাড়ি উত্তরবঙ্গে। ছুটিতে ঢাকা থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে বাসে ওঠার পরেই মনে হয়ে “এই যাত্রাই মনে হয় আমার শেষ যাত্রা", বারে বারেই মনে হয় গাড়ি "এক্সিডেন্টে মারা যাবো।” তাই প্রতিবারই যাওয়ার আগে সবার কাছে বিদায় নিয়ে যাই। মৃত্যুকে ভয় পাই না কখনোই কিন্তু মরার কথা মনে হলে খারাপ লাগে প্রিয় মানুষগুলোর কথা মনে পড়লে । বাসে বসে থেকে একে একে প্রিয় মানুষের মুখগুলোর ছবি ভেসে ওঠে। মায়ের কান্না মিশ্রিত মুখটা ভেসে ওঠে। আমি মারা গেলে আর হয়তো ছেলে বলে আর কেউ থাকবে না তার। কখনো ছেলের প্রিয় ভর্তাগুলো রান্না করে অপেক্ষা করবে না, ছুটিতে আর তার একমাত্র ছেলের জন্য অপেক্ষা করবে না। কোন কোনদিন ভুলবশত হয়তোবা সকালে আমার রুমে ঘুম থেকে ডেকে তুলতে যাবে, কিন্তু অশ্রুসিক্ত নয়নে ফিরে আসবে ফাঁকা বিছানা দেখে। “ছেলে আমার কাঠের বিছানা ছেড়ে মাটির বিছানায় শান্তির ঘুম দিচ্ছে”-এই কঠিন বাস্তবটি মেনে নিতে হবে আমার মাকে। আমার বাবাও হয়তো ভুল করে বাড়িতে মটর সাইকেলটি রেখে চলে যাবে কাজে- এই ভেবে যে, ছেলেটি ঘুরতে যাবে। ছেলেটি যে না ফেরার দেশে ঘুরতে চলে গেছে এই কথা তো আর সে বিশ্বাস করতে চাইবে না। সবচেয়ে ছোট বোনটি তার সমস্ত আবদারের কথা বলার মত কাউকে আর পাবে না। ফোন করে কখনো বলতে পারবে না, “দাদা, আমার জন্য সুন্দর ড্রেস আনবি/চকলেট আনবি/এটা আনবি/সেটা আনবি”- আরো কত আবদার। সেই বোনটি হয়তো রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে দাদার আসার জন্য অপেক্ষা করবে, দাদার ব্যাগটা নিয়েই সব কাপড় বের করে দেখবে কী এনেছে তার জন্য। তার সেই অপেক্ষার প্রহর আর কখনোই শেষ হবে না। ক্লান্ত হয়ে বাড়িতে ফিরে যাবে বেচারী। আমি না থাকলে আমার আরেক বোন ফোন করে কখনো বলবে না, “দাদা, নতুন একটা জোকস বানাইছি, শুনে বলতো কেমন হইছে?” বা কখনো বলবে না, “দাদা, নতুন নতুন কিছু বই কিনে নিয়ে আনিস, আগের গুলা পড়া শেষ।” আমার বড় বোনটি আমাকে মিস করবে অনেক। ওর একটা মাত্র ভাইকে আর বলতে পারবে না, “বাবু, বাড়িতে আয়, ঘুরে যা, দুপুরে খেয়ে যাবি কিন্তু।”
এছাড়াও বন্ধু-বান্ধবের কথা মনে পড়ে যায়। এদের ভালোবাসার কথা মনে হলেই ইচ্ছে করে আরো কয়েক বছর বেঁচে থাকি। এদের মুখের হাসি দেখলেই পৃথিবীর প্রতি মায়া বেড়ে যায়।
যারা হতাশার মধ্যে জীবন যাপন করে সবশেষে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়, তাদের কথা মনে হলে আমার কস্ট হয়। তারা পৃথিবীতে প্রিয় মানুষগুলোর ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হলো। আত্মহত্যা করার আগে আমাদের একটিবার চিন্তা করা উচিত, শুধুমাত্র একটি ব্যর্থতার জন্য এতোগুলো ভালোবাসার মানুষগুলোকে কষ্ট দেওয়া তো ঠিক না। যারা আত্মহত্যার চিন্তা করে তাদের প্রতি অনুরোধ, “আপনারা মরার আগে একটি বার প্রিয় মানুষগুলোর মুখগুলোর কথা একটু ভাবুন, বাবা-মায়ের কষ্টের কথা ভাবুন। এককেন্দ্রিক চিন্তা বাদ দিয়ে সার্বিক চিন্তা করুন। মনে রাখবেন, ‘পৃথিবী হয়তো আপনার কাছে কিছুই না, কিন্তু অনেকের কাছে আপনিই তার পৃথিবী।’
১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩২
দিগন্ত জর্জ বলেছেন: তা ঠিক বলেছেন। তবে দুঃখের সময়টায় একা থাকলেই আত্মহত্যার প্রবণতাটা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। তখন অন্য কারো সহচার্য খুবই দরকার।
২| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২৬
প্রামানিক বলেছেন: পৃথিবীর কষ্ট পাওয়া থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যই মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। এটা কারোরই কামনা করা উচিৎ নয়।
১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৫
দিগন্ত জর্জ বলেছেন: ওই কষ্টের সময়টাই কাটানো খুব কষ্টের। এর থেকে বের হতে পারলেই জীবনে জয়ী হওয়া সম্ভব। আমি আত্মহত্যার ঘোর বিরোধী। আপনাকে ধন্যবাদ।
৩| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৫
মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: অনেক সুন্দর লিখেছেন। অনেক কিছু আমরা না বুঝেই করে ফেলি, পরে অনেক পস্তাতে হয়, কিছু ক্ষেত্রে তো তারও সুযোগ নেই। আত্মবিশ্বাস কখনো হারাতে নেই, দিন শেষে সব কিছু ঠিক হবেই। একটু কষ্টের অপেক্ষা মাত্র।
১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:১৩
দিগন্ত জর্জ বলেছেন: আত্মবিশ্বাস কখনো হারাতে নেই, দিন শেষে সব কিছু ঠিক হবেই" একদম সত্যি কথা বলেছেন। সময়ই সবকিছুর নিরাময়কারী।
৪| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৫৩
আশরাফুল নবী ওসমানী বলেছেন: atto hotta moha pap
২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:০৮
দিগন্ত জর্জ বলেছেন: একদম সত্য কথা বলেছেন।
৫| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:১৪
রাজীব নুর বলেছেন: পরাজিত মানুষ আত্মহত্যা করে।
০৯ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:১৮
দিগন্ত জর্জ বলেছেন: ব্যর্থতা জীবনেরই একটা অংশ। তাই বলে জীবন শেষ করে দেয়ার কোন মানে হয় না।
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২০
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: অাত্মহত্যা করার সময় মানুষ ঘোরের মধ্যে থাকে । হিতাহিত জ্ঞান থাকেনা । মাঝে মাঝে এমন কিছু সময় অাসে, যখন অাত্মহত্যাকেই মুক্তি মনে হয় । সবাই এই সময়টা কাটাতে পারেনা ।