![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সালফে সালেহীন, ইমামগণ এবং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আকীদা। এই আকীদা যে পোষন করবেনা সে পথভ্রষ্ট বাতিল:
১)আল্লাহ তায়ালা ৭ আসমানের উপর আরশে আছেন। কিন্তু তার জ্ঞান, রহমত, শক্তি সর্বত্রবিরাজমান।যদি কেউ বলে আল্লাহ সর্বত্রবিরাজমান তাহলে সে ইসলাম থেকে বেড়িয়ে যাবে।
২)আল্লাহর আকার আছে। তবে কোন সৃষ্টির সাথে সাদৃশ্য নেই। কোরআন ও হাদিসে যেভাবে আল্লাহর হাত, পা, চেহারা, চোখের কথা এসেছে তা কোন রূপ তাবিল বা ব্যাখা করা যাবেনা অথবা কুদরতি ও বলা যাবেনা। যদি এরূপ কেউ করে তাহলে সে পথভ্রষ্ট।
৩)আল্লাহ দেখেন ও শুনেন। কিন্তু কিভাবে দেখেন ও শুনেন আমরা জানিনা।
৪)আল্লাহ কথা বলেছেন মুসা(আ)সাথে। কিভাবে কথা বলেছেন এই নিয়ে আমরা বিতর্কে লিপ্ত হবনা।
৫)আল্লাহ মিথ্যা বলেন না, মিথ্যা বলার ইচ্ছা ও পোষন করেননা।
৬)কোরআন আল্লাহর বানী। কোরআন সৃষ্ট নয়। যদি কেউ বলে কোরআন সৃষ্ট তাহলে সে ইসলাম থেকে বেরিয়ে যাবে।
৭)আল্লাহ ছাড়া কেউ গায়েব জানেনা। যদি কেউ বলে অমুক তমুক কিংবা রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গায়েব জানে তাহলে সে কাফের। ৮)রাসুলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)মাটির তৈরি। যদি কেউ বলে নূরের তৈরি তাহলে সে শির্ক করল।
৮)রাসুলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মারা গিয়েছেন। যদি কেউ বলে রাসুলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)জীবত তাহলে সে কুফরী করল। তবে নবীদের দেহ মাটি খায়না।
৯)রাসুলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শেষ নবী ও রাসুল। যদি কেউ খাতমে নবুওয়াত অস্বীকার করে তাহলে সে কাফের।
১০)রাসুলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে যদি কেউ গালি দেয় কিংবা অসম্মান করে তাহলে সে কাফের এবং তাকে হত্যা করতে হবে।
১১)নিজের জীবন, মা বাবা এবং সবকিছু থেকে রাসুলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে বেশী ভালবাসতে হবে অন্যথায় সে মুমিন নয় সে মুমিন নয়।
১২)এই উম্মতের মধ্যে রাসুলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর পর শ্রেষ্ঠ ব্যাক্তি হল আবু বক্কর(রাদিআল্লাহু আনহু),তারপর হল উমার(রাদিআল্লাহু আনহু),এরপর হল উসমান(রাদিআল্লাহু আনহু)এবং এরপর হল আলী(রাদিআল্লাহু আনহু)।
১৩)সাহাবীদের গালি দেয়া কবিরা গুনাহ। কেউ গালি দিলে তাকে কঠিন শাস্তি দিতে হবে।
১৪)ইমান বাড়ে ও কমে।
১৫)কবিরা গুনাহগার ব্যাক্তি ইসলামের গন্ডি থেকে বের হয়ে যায়না। যদি সে তাওবা করে মরে তাহলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিবেন আশা করা যায়। আর যদি তাওবাহ করার সুযোগ না পায় তাহলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা ও করে দিতে পারেন শাস্তিও দিতে পারেন। মোট কথা কবিরাহ গুনাহগার ব্যাক্তি চিরস্থায়ী জাহান্নামী নয়।
১৬)তাকদিরের উপর বিশ্বাস করা।
১৭) সকল প্রকার তাবিজ শিরক, তবে সুন্নাহ সমর্থিত ঝার-ফুক জায়েজ রয়েছে।
১৮) কুরআন-সুন্নাহর বিরোধী, বা কুরআন-সুন্নাহর সাথে সংঘর্ষ রয়েছে এমন ফতওয়া যত বড় আলেম ই দিক না কেন, তা গ্রহন করা যাবে না।
১৯) সাহিহ বা হাসান হাদিসের উপর আমাল করা যাবে। কোন অজুহাতেই জইফ বা জাল হাদিসের উপর আমাল করা যাবে না।
২০) দ্বীনের মধ্যে নতুন কোন ইবাদাত সৃষ্টি করা যাবে না, কেউ সৃষ্টি করলে তা প্রত্যাখ্যাত করতে হবে।
২১) আল্লাহ্কে কেউ দেখেনি। মেরাজ সশরীরে হয়েছিল, রাসুল(স) আল্লাহ্র সাথে কথা বলেছেন তবে তিনি আল্লাহ্কে দেখেননি।
২২) কোন বেক্তির ওয়াসিলা দিয়ে দুয়া করা জায়েজ নেই।
২৩) পীর, সুফি, আওলিয়া আল্লাহ্র কাছে পৌঁছানোর মাধ্যম নয়।
২৪) আল্লাহ্কে ডাকতে কোন মাধ্যম লাগে না।
২৫) আমি শিয়া না ,সুন্নি না, হানাফি না, শাফেই না, হাম্বলি না, মালিকি না, আহলে হাদিস না, সালাফি না, কাদেরিয়া না,চিশতিয়া না,নাকশবন্দিয়া না, মুজাদ্দেদিয়া না, কাদিয়ানী না। আমার পরিচয় আমি একজন মুসলিম।
----আল্লাহ পাক আমাদের বোঝার আর মানার তৌফিক দান করুন।।।
০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৫৩
আল কুরআন মানবতার সমাধান বলেছেন: জাজাকাল্লাহু খাইরান
২| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:২৯
সোহানের রোজনামচা বলেছেন: সময়োপযোগী পোস্ট।সত্যিই খুব ভালো হয়েছে শরীয়াহ ভিত্তিক এই লেখাটি। আরো লিখবেন আশা করি।
০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৪
আল কুরআন মানবতার সমাধান বলেছেন: দোয়া করবেন, ইনশাআল্লাহ্ আরও লিখব।
৩| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩২
েফরারী এই মনটা আমার বলেছেন: "তোমরা যদি সত্যবাদি হও দলীল পেশ করো "।-সুরা বাক্বারা আপনার পোষ্টটির নিচের বিষয় গুলোর দলীল দিন। ১)আল্লাহ তায়ালা ৭ আসমানের উপর আরশে আছেন।২)আল্লাহর আকার আছে।কোরআন ও হাদিসে যেভাবে আল্লাহর হাত, পা, চেহারা, চোখের কথা এসেছে তা কোন রূপ তাবিল বা ব্যাখা করা যাবেনা অথবা কুদরতি ও বলা যাবেনা। যদি এরূপ কেউ করে তাহলে সে পথভ্রষ্ট।৭)আল্লাহ ছাড়া কেউ গায়েব জানেনা। যদি কেউ বলে অমুক তমুক কিংবা রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গায়েব জানে তাহলে সে কাফের। ৮)রাসুলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)মাটির তৈরি। যদি কেউ বলে নূরের তৈরি তাহলে সে শির্ক করল।৮)রাসুলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মারা গিয়েছেন। যদি কেউ বলে রাসুলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)জীবত তাহলে সে কুফরী করল। ১৭) সকল প্রকার তাবিজ শিরক,১৯) কোন অজুহাতেই জইফ উপর আমাল করা যাবে না।২১) আল্লাহ্কে কেউ দেখেনি। মেরাজ সশরীরে হয়েছিল, তিনি আল্লাহ্কে দেখেননি।২২) কোন বেক্তির ওয়াসিলা দিয়ে দুয়া করা জায়েজ নেই।) পীর, সুফি, আওলিয়া আল্লাহ্র কাছে পৌঁছানোর মাধ্যম নয়। দলীল দিতে না পারলে মিথ্যা,মনগড়া,অসত্যকে সত্যের সাথে মিশিয়ে পরিবেশন বিরতথাকুন। "সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত কোরো না।"-কুরআন শরীফ
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৯
আল কুরআন মানবতার সমাধান বলেছেন: আল্লাহ্ কোথায় ??? এই উত্তরে আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষই বলবে আল্লাহ্ সর্বত্র বিরাজমান । আসলে কি তাই ? তহলে কি আল্লাহ্ টয়লেট, হিন্দুদের দেব-দেবীর মধ্যেও বিরাজমান ? (নাউযুবিল্লাহ) যারা বলে আল্লাহ্ সর্বত্র বিরাজমান তারা কুর’আন থেকে সূরা বাকারার ১১৫ আয়াত কে দলিল পেশ করে, সেখানে আল্লাহ্ বলেনঃ “আল্লাহ্ জন্যে পূর্ব ও পশ্চিম; অতএব তোমরা যে দিকেই মুখ ফিরাও সে দিকেই আল্লাহর মুখ; কেননা আল্লাহ্ (সর্বদিক) পরিবেষ্টনকারী পূর্ণ জ্ঞানবান ।”(সূরা বাকারা ১১৫) আসুন দেখি তাফসির দেখি এই আয়াতের তাফসির ইবনে কাসিরে, ‘আল্লাহ্ তা’আলা হতে কোন জায়গা শূন্য নেই’ এর ভাবার্থ যদি আল্লাহ্ তা’আলার ‘ইলম’ বা অবগতি হয় তবে তো অর্থ সঠিক হবে যে, ‘কোন স্থানই আল্লাহ্ পাকের ইলম হতে শূন্য নেই ।’ আর যদি এর ভাবার্থ হয় ‘আল্লাহ্ তা’আলার সত্তা’ তবে এটা সঠিক হবে না ।’ (তাফসির ইবনে কাসির প্রথম খন্ড ৩৭২-৩৭৩ পৃষ্ঠা)
সুতরাং আল্লাহ্ সর্বত্রবিরাজমান এই কথা সঠিক নয় । কারণ আল্লাহ্ কুর’আনের ৭ টির মত জায়গায় ঘোষণা করেছেন আল্লাহ্ আরশে আছেন । আয়াতগুলো পেশ করা হল মিলিয়ে নিন ।
(১) আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক হচ্ছেন সেই আল্লাহ যিনি আসমান ও যমীনকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হন’ (আ‘রাফ ৭/৫৪)।
(২) ‘নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ, যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হন’ (ইউনুস ১০/৩)।
(৩) ‘আল্লাহই ঊর্ধ্বদেশে আকাশমন্ডলী স্থাপন করেছেন স্তম্ভ ব্যতীত- তোমরা এটা দেখছ। অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হ’লেন’ (রা‘দ ১৩/২)।
(৪) ‘দয়াময় (আল্লাহ) আরশে সমাসীন’ (ত্ব-হা ২০/৫)।
(৫) ‘তিনি আকাশমন্ডলী, পৃথিবী এবং এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সমস্ত কিছু ছয় দিনে সৃষ্টি করেন; অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হন। তিনিই রহমান, তাঁর সম্বন্ধে যে অবগত আছে তাকে জিজ্ঞেস করে দেখ’ (ফুরক্বান ২৫/৫৯)।
(৬) ‘আল্লাহ তিনি, যিনি আকাশমন্ডলী, পৃথিবী ও এতদুভয়ের অন্তর্বর্তী সবকিছু সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে। অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হন’ (সাজদাহ ৩২/৪)।
(৭) ‘তিনিই ছয় দিনে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর আরশে সমাসীন হয়েছেন’ (হাদীদ ৫৭/৪)।
এ থেকে প্রমাণিত যে, আল্লাহ্ আরশে সমাসীন, সর্বত্র তাঁর সত্তা বিরাজমান নয় । বরং তাঁর ক্ষমতা সর্বত্র বিরাজমান । এ প্রসঙ্গে রাসূল (সাঃ) এর অনেক সহিহ সনদে হাদিস রয়েছে ।তার মধ্যে একটি হচ্ছে,
বিদায় হজ্জের ভাষণে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) সাহাবীগণকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, “তোমরা আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে, তখন কি বলবে ? ঐ সময় উপস্থিত সাহাবিগণ বলেছিলেন, আমরা সাক্ষ্য দিব যে, আপনি আপনার দায়িত্ব পালন করেছেন । এ কথা শুনার পর আল্লাহর রাসূল (সাঃ) তাঁর হাতের আঙ্গুল আসমানের দিকে উত্তোলন করে বলেছিলেন, হে আল্লাহ্ ! তাদের কথার উপর সাক্ষি থাকি ।” (সহীহ মুসলিম হা/১২১৮ ‘হজ্জ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১৯)
মু’আবিয়া বিন আল-হাকাম আস-সুলামী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, ‘আমার একজন দাসী ছিল । ওহুদ ও জাওয়ানিয়্যাহ (ওহুদের নিকটবর্তী একটি স্থান) নামক স্থানে সে আমার ছাগল চরাত । একদিন দেখি, নেকড়ে আমাদের একটি ছাগল ধরে নিয়ে গেছে । আমি একজন আদম সন্তান (সাধারণ মানুষ)। তারা যেভাবে ক্রুদ্ধ হয় আমিও সেভাবে ক্রুদ্ধ হই । কিন্তু আমি তাকে এক থাপ্পর মারি । অতঃপর রাসূল (সাঃ)-এর নিকট আসলে একে আমি সাংঘাতিক (অন্যায়) কাজ বলে গণ্য করি । তাই আমি বলি যে, হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ)! আমি কি তাঁকে আযাদ করব না? তিনি বললেন, তাঁকে আমার কাছে নিয়ে আস ।আমি তাকে আল্লাহ্ রাসূল (সাঃ) কাছে নিয়ে আসলাম । রাসূল (সাঃ) তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আল্লাহ্ কোথায় ?সে বলল, আসমানে । তিনি(সাঃ) তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আমি কে ? তখন সে বলল, আপনি আল্লাহর রাসূল (সাঃ) । তখন নবী (সাঃ) বললেন, তকে মুক্তি দিয়ে দাও, কারণ সে একজন ঈমানদার নারী’ । (সহীহ মুসলিম হা/৫৩৭ ‘মসজিদ সমূহ ও ছালাতের স্থানসমূহ’ অনুচ্ছেদ)
এখানেও সহীহ হাদিস থেকে প্রমাণ পেশ করা হল ।
আল্লাহ্ কোথায়??? এই প্রসঙ্গে চার ইমাম এর বক্তব্যঃ
১. ইমাম আবূ হানীফা(রহঃ) বলেনঃ ‘যে বলবে যে, আল্লাহ্ আসমানে আছেন, না যমীনে তা আমি জানি না, সে কুফুরি করবে । কেননা আল্লাহ্ বলেন, রহমান আরশে সমাসীন । আর তাঁর আরশ সপ্ত আকাশের উপর।’ ( ইজতিমাউল জুযুশিল ইসলামিয়্যাহ, পৃষ্ঠা ৯৯)
২. ইমাম মালেক (রহঃ) বলেন, ‘আল্লাহ্ আকাশে উপর এবং তাঁর জ্ঞানের পরিধি সর্বব্যাপী বিস্তৃত । কোন স্থানই তাঁর জ্ঞানের আওতার বহির্ভূত নয়’ । (তদেব, পৃঃ ১০১)
৩. ইমাম শাফিঈ (রহঃ) বলেনঃ ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ছাড়া কোন (হক্ক) উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ (সাঃ) আল্লাহর রাসূল । আর আল্লাহ্ আকাশের উপর তাঁর আরশে সমাসীন । তিনি যেমন ইচ্ছা তাঁর সৃষ্টির নিকটবর্তী হন এবং যেমন ইচ্ছা তেমন নীচের আকাশে অবতরণ করেন’ । (তাদেব, পৃঃ ১২২)
৪. ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ)-এর পুত্র আব্দুলাহ বলেন, ‘আমার বাবাকে জিজ্ঞেস করা হল যে, আল্লাহ্ তাঁর সৃষ্টি থেকে দূরে সপ্তম আকাশের উপরে তাঁর আরশে সমাসীন । তাঁর ক্ষমতা ও জ্ঞানের পরিধি সর্বত্র বিস্তৃত । এর উত্তরে তিনি (ইমাম আহমাদ) বলেন, হ্যাঁ! তিনি (আল্লাহ্) আরশের উপর সমাসীন এবং তাঁর জ্ঞানের বহির্ভূত কিছুই নেই ।(তদেব, পৃঃ১৫২-১৫৩)।
সুতরাং, যারা মাযহাবের দোহাই দিয়ে প্রতিষ্ঠা করতে চাইবে যে, আল্লাহ্ সর্বত্রবিরাজমান, তাদের কথা ভিত্তিহীন হিসেবে প্রমাণিত হল চার ইমামের বক্তব্যের কারণে ।
আল্লাহ্ আমাদের সকলকে সহীহ আকিদা গ্রহনের তাওফিক দান করুক যাতে আমাদের আমল আল্লাহর কাছে গ্রহনযোগ্যতা লাভ করে, আমিন ।
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪১
আল কুরআন মানবতার সমাধান বলেছেন:
وَمَا مُحَمَّدٌ إِلاَّ رَسُولٌ قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلِهِ الرُّسُلُ أَفَإِن مَّاتَ أَوْ قُتِلَ انقَلَبْتُمْ عَلَى أَعْقَابِكُمْ وَمَن يَنقَلِبْ عَلَىَ عَقِبَيْهِ فَلَن يَضُرَّ اللّهَ شَيْئًا وَسَيَجْزِي اللّهُ الشَّاكِرِينَ
আর মুহাম্মদ একজন রসূল বৈ তো নয়! তাঁর পূর্বেও বহু রসূল অতিবাহিত হয়ে গেছেন। তাহলে কি তিনি যদি মৃত্যুবরণ করেন অথবা নিহত হন, তবে তোমরা পশ্চাদপসরণ করবে? বস্তুতঃ কেউ যদি পশ্চাদপসরণ করে, তবে তাতে আল্লাহর কিছুই ক্ষতি-বৃদ্ধ ি হবে না। আর যারা কৃতজ্ঞ, আল্লাহ তাদের সওয়াব দান করবেন। [সুরা ইমরান: ১৪৪]
وَمَا جَعَلْنَا لِبَشَرٍ مِّن قَبْلِكَ الْخُلْدَ أَفَإِن مِّتَّ فَهُمُ الْخَالِدُونَ
আপনার পূর্বেও কোন মানুষকে আমি অনন্ত জীবন দান করিনি। সুতরাং আপনার মৃত্যু হলে তারা কি চিরঞ্জীব হবে? [সুরা আম্বিয়া: ৩৪]
كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ الْمَوْتِ وَنَبْلُوكُم بِالشَّرِّ وَالْخَيْرِ فِتْنَةً وَإِلَيْنَا تُرْجَعُونَ
প্রত্যেককে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে। আমি তোমাদেরকে মন্দ ও ভাল দ্বারা পরীক্ষা করে থাকি এবং আমারই কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে। [সুরা আম্বিয়া: ৩৫]
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৫
আল কুরআন মানবতার সমাধান বলেছেন:
নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নূরের তৈরী, না মাটির তৈরী?
আমাদের মনে রাখতে হবে, সৃষ্টির উপাদানের উপর ভিত্তি করে কোন ব্যক্তির মর্যাদা নির্ণয় করা সরাসরি কুরআন ও হাদীছ বিরোধী কথা। কারণ মহান আল্লাহ বলেই দিয়েছেনঃ. ‘নিশ্চয় আল্লাহর নিকট তোমাদের মধ্যে ঐব্যক্তি বেশি সম্মানিত যে তোমাদের মধ্যে সর্বধিক তাক্বওয়াশীল’ পরহেযগার”। (সূরা হুজুরাত: ১৩)
নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ হে
মানব মণ্ডলি! নিশ্চয় তোমাদের প্রতিপালক এক, সাবধান! কোন আরবীর আজমীর (অনারব) উপর, কোন আজমীর আরবীর উপর প্রাধান্য নেই। অনুরূপভাবে কোন লাল বর্ণের ব্যক্তির কালো ব্যক্তির উপর, কোন কালো ব্যক্তির লাল বর্ণের ব্যক্তির উপর প্রাধান্য নেই। প্রাধান্য একমাত্র তাকওয়া পরহেযগারিতার ভিত্তিতে হবে। ‘নিশ্চয় আল্লাহর নিকট তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তি বেশি সম্মানিত যে তোমাদের মধ্যে সর্বধিক তাক্বওয়াশীল’-পরহেযগার (আহমাদ প্রভৃতি, হাদীছ ছহীহ। দ্রঃ শাইখ আলবানীর গায়াতুল মারাম, পৃঃ১৯০, হা/৩১৩)।
এ জন্যই তো আযরের মত মূর্তী পুজারী মুশরিক ব্যক্তির ঔরষজাত সন্তান ইবরাহীম (আলাইহিস্ সালাম) অন্যতম শ্রেষ্ঠ নবী, শুধু কি তাই মহান আল্লাহর খলীল তথা অন্তরঙ্গ বন্ধুও বটে, তার মিল্লাতের অনুসরন করার নির্দেশ আমাদের নবীকেও করা হয়েছে। পক্ষান্তরে নূহ নবীর মত একজন সম্মানিত ব্যক্তির ঔরষজাত সন্তান কাফের হওয়ার জন্য নিকৃষ্ট ব্যক্তি। বীর্য থেকে মানুষ সৃষ্টি হলেও মানুষই বীর্য অপেক্ষা উত্তম। এমনকি তুলনা করাটাও অনর্থক। আদী পিতা আদম (আলাইহিস্ সালাম) মাটির তৈরী হলেও মাটির থেকে তিনি সন্দেহাতীতভাবে উত্তম, এমনকি তুলনা করাটাও বাহুল্য কাজ..। আবু লাহাব সম্মানিত কুরাইশ বংশের হয়েও অতি নিকৃষ্ট কাফের, যার শানে আল্লাহ সূরা মাসাদ (লাহাব) নাযিল করেছেন। মহান আল্লাহ এই সূরায় বলেনঃ পরম করুনাময়, দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু। ‘আবু লাহাবের দুটি হাত ধ্বংস হোক, সে নিজেও ধ্বংস হোক। তার সম্পদ, ও যা সে উপার্জন করেছে -কোনই কাজে আসেনি। সে অচিরেই লেলিহান অগ্নিতে প্রবেশ করবে। এবং তার স্ত্রীও-যে ইন্ধন বহন করে, তার গলদেশে খর্জুরের রশি নিয়ে। (সূরা আল মাসাদ{লাহাব})
এ থেকেই অকাট্যভাবে প্রতীয়মান হয় যে, মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব তার জন্মের উপাদানের উপর ভিত্তিশীল নয়। বরং এই শ্রেষ্টত্ব এবং সম্মান তাক্বওয়ার ভিত্তিতে হয়ে থাকে। কাজেই নবী নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নূর থেকে সৃষ্টি না হয়ে মাটি থেকে সৃষ্টি হওয়া তাঁর জন্য মোটেও মানহানিকর বিষয় নয় যেমনটি অসংখ্য বিদআতী তাই ধারণা করে বসেছে। বরং নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাটির তৈরী হয়েও সৃষ্টির সেরা ব্যক্তিত্ব, সর্বাধিক মুত্তাক্বী-পরহেযগার। সমস্ত সৃষ্টি কুলের সর্দার, নবীকুল শিরোমণী, আল্লাহর খালীল-অন্তরঙ্গ বন্ধু। আল্লাহর অনুমতি সাপেক্ষে হাশরের মাঠে মহান শাফাআতের অধিকারী, হাওযে কাউছারের অধিকারী, সর্ব প্রথম জান্নাতে প্রবেশকারী। মাক্বামে মাহমূদের অধিকারী, রহমাতুল লিল আলামীন, শাফিঊল লিল মুযনিবীন। এসব বিষয়ে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের মাঝে কোনই দ্বিমত নেই। ইহাই ছাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈনে ইযাম, আইম্মায়ে মুজতাহিদীনের বিশ্বাস। যুগ পরম্পরায় এই বিশ্বাসই করে আসছেন সকল সুন্নী মুসলিম।
‘সৃষ্টির উপাদানের ভিত্তিতে ব্যক্তি শ্রেষ্ঠত্ব অজর্ন করে’ এটা ইবলীস শয়তানের ধারণা ও দাবী মাত্র। এই অলিক ধারণার ভিত্তিতেই সে আগুনের তৈরী বলে মাটির তৈরী আদমকে সিজদাহ করতে অস্বীকার করে ছিল। অথচ আল্লাহ অন্যান্য ফেরেশতাদের সাথে তাকেও আদমকে সিজদা করার নির্দেশ করে ছিলেন। তার উচিত ছিল আদমকে সেজদা করা কিন্তু সে তা না করে নিজ সৃষ্টির উপাদানের খোড়া যুক্তি দেখিয়ে নিজেকে উত্তম ও আদম (আলাইহিস্ সালাম)কে অধম মনে করে আদমকে সিজদা করা থেকে বিরত হয়ে ছিল।
মহান আল্লাহ সূরা আরাফে তার ঘটনাটি এইভাবে উদ্ধৃত করেছেনঃ ‘আর আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, এর পর আকার-অবয়ব তৈরী করেছি। অতঃপর আমি ফেরেশতাদেরকে বলেছি-আদমকে সেজদা কর, তখন সবাই সেজদা করেছে, কিন্তু ইবলীস সে সেজদাকারীদের অন্তর্ভূক্ত ছিল না। আল্লাহ বললেনঃ আমি যখন নির্দেশ দিয়েছি, তখন তোকে কিসে সেজদা করতে বারণ করল? সে বললঃ আমি আমি তার চাইতে শ্রেষ্ঠ। আপনি আমাকে আগুন দ্বারা সৃষ্টি করেছেন, আর তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটি দ্বারা। বললেনঃ তুই এখান থেকে নেমে যা। এখানে অহঙ্কার করার অধিকার তোর নাই। অতএব তুই বের হয়ে যা। নিশ্চয় তুই হীনতমদের অন্তর্ভূক্ত। (সূরাহ আল্ আরাফঃ১১-১৩)
অতএব যারা সৃষ্টির উপাদানের ভিত্তিতে ব্যক্তির শ্রেষ্ঠত্ব সাব্যস্ত করার পক্ষপাতি তাদের উপর্যুক্ত আয়াতগুলি থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত, চিন্তা করা উচিত যুক্তিটি কোন্ ভদ্রলোকের? ‘নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে নূরের তৈরী গণ্য করা হলে তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ হবে, আর মাটির তৈরী গণ্য করলে সেই শ্রেষ্ঠত্ব বিলুপ্ত হবে, তাতে তার মানহানী হবে’ মর্মের যুক্তিটি শয়তানের যুক্তির সাথে মিলে কিনা চিন্তা-ভাবনা করার উদাত্ত আহ্বান রইল।
নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে নূরের তৈরী জ্ঞান করা, বা এই বিশ্বাস করা যে, তিনিই সর্ব প্রথম সৃষ্টি, যেমন ভারত উপ মহাদেশের হানাফী জগতের সকল ব্রেলভী সম্প্রদায় এবং দেওবন্দীদের কেউ কেউ এই বিশ্বাসই করে থাকেন- এসব বিশ্বাস জাল এবং বাতিল হাদীছ নির্ভরশীল (দ্রঃ ছহীহাহ, ১/৮২০, ৪৫৮ নং হাদীছের অধীন আলোচনা দ্রষ্টব্য)। নবী(ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাটির তৈরী এই বিষয়ে অতীতে ছালাফে ছালেহীনের মাঝে কোনই বিতর্ক ছিল না। এখনও যারা প্রকৃত আলেম তারাও এই মর্মে ঐক্যমত যে নবী (ছাল্লাল্লাহু আআইহি ওয়া সাল্লাম) মাটির তৈরী মানুষ ছিলেন, তিনি অন্যান্য সকল মানুষের মত পিতা-মাতার মাধ্যমে পৃথিবীতে এসেছেন। তারা এটাও বিশ্বাস করেন যে, মানুষ মাটির তৈরী, ফেরেস্তা নূরের এবং জ্বিনজাত আগুনের তৈরী যেমনটি স্বয়ং নবী বলেছেন (মুসলিম,যুহদ ও রাক্বায়িক্ব অধ্যায়,হা/৫৩৪) । কারণ এই মর্মে কুরআন ও হাদীছের বাণী একেবারে স্পষ্ট। এর পরও বিদআতে যাদের আপাদমস্তক নিমজ্জিত,তারা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর বিষয়ে বিতর্ক উঠায়। তারা বলতে চায়, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাটির তৈরী নন, বরং তিনি নূরের তৈরী, তার ছায়া ছিল না..ইত্যাদি ইত্যাদি। তাই আমরা বিষয়টির ফায়ছালা সরাসরি কুরআন ও নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর হাদীছ থেকে নিব। কারণ মহান আল্লাহ বলেনঃ ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর, রাসূলের আনুগত্য কর, এবং তাদের কর যারা তোমাদের (ধর্মীয় বা রাষ্ট্রীয় বিষয়ে) নেতৃত্ব দাকারী, আর যদি তোমরা কোন বিষয়ে বিতর্ক কর, তবে বিষয়টিকে আল্লাহ এবং তদীয় রাসূলের দিকে ফিরিয়ে দাও, ইহাই উত্তম এবং ব্যাখ্যার দিক দিয়ে সর্বোৎকৃষ্ট’। (আন্ নিসাঃ ৫৯)
মাটি থেকে নবীর সৃষ্টি হওয়ার প্রমাণঃ
(ক) কুরআন থেকেঃ
আমার নিকট আশ্চর্য লাগে যে বিদআতীরা কেমন করে মহান আল্লাহর দ্ব্যর্থহীন বাণীকে অস্বীকার করে বলে যে, নবী (ছাল্লাল্লাহু আআইহি ওয়াসাল্লাম) মাটির তৈরী নন, বরং নূরের তৈরী। কারণ মহান আল্লাহ একাধিক স্থানে বলেছেন যে নবী (ছাল্লাল্লাহু আআইহি ওয়া সাল্লাম) সৃষ্টিগত দিক থেকে بشر তথা আমাদের মতই একজন মানুষ।
যেমনঃ
সূরা কাহাফে মহান আল্লাহ এরশাদ করেনঃ (হে রাসূল!) ‘আপনি বলে দিন, আমি তো তোমাদেরই মত এক জন মানুষ, আমার নিকট এই মর্মে ওহী করা হয় যে, তোমাদের উপাস্য এক ও একক, অতএব যে নিজ প্রতিপালকের দিদার লাভের আশাবাদী সে যেন সৎকর্ম করে এবং নিজ প্রতিপালকের ইবাদতে অন্য কাউকে শরীক না করে’। (সূরা আল্ কাহাফঃ ১১০)
অন্যত্রে মহান আল্লাহ বলেনঃ ‘আপনি বলুন আমি আমার প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ণনা করছি। একজন মানব, একজন রাসূল বৈ আমি কে? (সূরা বনী ইসরাইল: ৯৩)
তিনি আরো বলেনঃ ‘নিশ্চয় আল্লাহ মুমিনদের বড় উপকার করেছেন, যেহেতু তাদেরই মধ্য থেকে একজনকে রাসূল হিসাবে পাঠিয়েছেন যিনি তাদের নিকট তাঁর আয়াতসমূহ তিলাওত করেন, তাদেরকে পরিশুদ্ধ করেন, এবং তাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দান করেন, যদিও তারা ইতোপূর্বে স্পষ্ট গুমরাহীতে নিমজ্জিত ছিল। (সূরাহ আলে ইমরানঃ ১৬৪)
তিনি আরো বলেনঃ তোমাদের নিকট আগমন করেছে, তোমাদেরই মধ্যকার এমন একজন রাসূল, যার কাছে তোমাদের ক্ষতিকর বিষয় অতি কষ্টদায়ক মনে হয়, যিনি হচ্ছেন তোমাদের খুবই হিতাকাঙ্খী, মুমিনদের প্রতি বড়ই স্নেহশীল, করুনাপরায়ণ। (সূরা তাওবা: ১২৮)
তিনি আরো বলেনঃ এ লোকদের জন্যে এটা কী বিস্ময়কর হয়েছে যে, আমি তাদের মধ্য হতে একজনের নিকট অহী প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তুমি লোকদেরকে ভয় প্রদর্শন কর এবং যারা ঈমান এনেছে তাদরকে এই সুসংবাদ দাও যে, তারা তাদের প্রতিপালকের নিকট (পূর্ণ মর্যাদা) লাভ করবে, কাফেররা বলতে লাগলো যে, এই ব্যক্তি তো নিঃসন্দেহে প্রকাশ্য যাদুকর। (সূরা ইউনুস: ২)
তিনি আরো বলেনঃ তিনিই নিরক্ষরদের মধ্য থেকে একজন রাসূল প্রেরণ করেছেন তাদের নিকট, যিনি তাদের কাছে পাঠ করেন তাঁর আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমত, যদিও তারা ইতোপূর্বে স্পষ্ট গোমরাহীতে লিপ্ত ছিল। (সূরা-আল্ জুমুআহ: ২)
আল্লাহ আরো বলেনঃ আমি তোমাদের মধ্য হতে এরূপ রাসূল প্রেরণ করেছি যে, তোমাদের নিকট আমার নিদর্শনাবলী পাঠ করে ও তোমাদেরকে পবিত্র করে এবং তোমাদেরকে গ্রন্থ ও বিজ্ঞান শিক্ষা দেয়, আর তোমরা যা অবগত ছিলে না তা শিক্ষা দান করেন। (সূরা বাকারা ১৫১)
এখানে মহান আল্লাহ বলেই দিয়েছেন যে, নবী (ছাল্লাল্লাহু আআইহি ওয়া সাল্লাম) ঐসব লোকদেরই একজন, তিনি তাদের বাইরের কোন লোক নন। কাজেই ঐসব লোক যদি নূরের তৈরী হন, তাহলে নবী(ছাল্লাল্লাহু আআইহি ওয়া সাল্লাম)ও নূরের তৈরী হবেন, আর যদি তারা নূরের তৈরী না হন তবে তিনিও নূরের তৈরী হবেন না এটাইতো স্বাভাবিক। আসলে বিদআতীরা কুরআন ও ছহীহ হাদীছ আয়ত্ব করতে এবং এর সঠিক ব্যাখ্যা অনুধাবন করা থেকে চির ব্যর্থ, তাই তারা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে কুরআন ও হাদীছ বিরোধী কথা বলে যে, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাটির তৈরী নন, বরং তিনি নূরের তৈরী। অথচ এভাবে তারা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে অধিক সম্মান দিতে গিয়ে আরো তাঁকে খাটো করে দিয়েছে। কারণ নূরের তৈরী ফেরেশতার উপর আল্লাহ মাটির তৈরী আদম (আলাইহিস্ সালাম)কে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। তাদেরকে দিয়ে আদমের সিজদা করিয়ে নিয়েছেন। (দ্রঃসূরা আল বাকারাহ: ৩৪, সূরা আল্ আ’রাফ: ১১) তাহলে কার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হল? নূরের তৈরী ফেরেশতাদের নাকি মাটির তৈরী আদম (আলাইহিস্ সাল্লাম)এর? অবশ্যই মাটির তৈরী আদম (আলাইহিস্ সালাম) এর শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হল। তবে আমরা তর্কের খাতিরে এটা বললেও আমাদের বিশ্বাস, আদম (আলাইহিস্ সালাম) ফেরেশতাদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে ছিলেন তাঁর ইলমের মাধ্যমে। আর এটা একমাত্র আল্লাহর অনুগ্রহেই হয়ে ছিল। তিনিই আদমের প্রতি অনুগ্রহ করে ফেরেশতাদের চেয়ে তাকে বেশি ইলম দান করে ছিলেন।
আমি বিশ্বের সকল বিদআতীকে বলতে চাই, এক লক্ষ চব্বিশ হাজার নবী ও রাসূল (অনেকে বলেনঃ নবী ও রাসূলদের সর্ব মোট সংখ্যা হলঃ এক লক্ষ চব্বিশ হাজার, মতান্তরে দুই লক্ষ চব্বিশ হাজার। এভাবে বলে থাকেন, এটা প্রমাণ করে তারা ঐমর্মে নবী এর কোন হাদীছ অবগত হন নি। মুসনাদ আহমাদ, ছহীহ ইবনু ইব্বান প্রভৃতিতে নবী ও রাসূলদের সর্ব মোট সংখ্যা একলক্ষ চব্বিশ হাজার বলা হয়েছে, আরো বলা হয়েছে তাদের মধ্যে রাসূলদের সংখ্যা সর্ব মোট ৩১৫ জন দ্রঃ মুসনাদ আহমাদ ৫/১৭৯,হা/২১৫৯২, ছহীহ ইবনু হিব্বান, হা/ প্রভৃতি হাদীছ ছহীহ, সিলসিলাতুল আহাদীছ আছ ছহীহাহ ) এর মধ্যে শুধু নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিভাবে নূরের তৈরী হলেন? যদি তাঁকে নূরের তৈরী না বলায় তার মান খাটো করা হয়,তবে বাকী এক লক্ষ তেইশ হাজার নয়শো নিরানব্বই জন নবী রাসূলকে মাটির তৈরী বলে কি তাদের মান খাটো করা হয় না? নাকি তারাও নূরের তৈরী? কৈ কোন বিদআতীকে তো বলতে শুনি না যে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মত বাকী সমস্ত নবী, রাসূলগণও নূরের তৈরী! বরং তারা এমনটি শুধু নবী মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ক্ষেত্রেই বলে থাকে। সুতরাং বাকী সমস্ত নবীকে মাটির তৈরী বলায় যেমন তাদের মান হানী হয় না, তদ্রƒপ আমাদের নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কেও মাটির তৈরী বলায় তার মানহানী হবে না। তবে কেন বিষয়টি নিয়ে এত বাড়াবাড়ি?
এমনকি অনেক মূর্খ বিদআতী নবীকে যারা মাটির তৈরী মানুষ বলে তাদের সকলকে কাফের ফাৎওয়া মেরে দেয়! একজন মুসলিমকে কাফের বলা কী এতই সহজ? না, কখনই নয়, বরং এই বিষয়টি অতীব জটিল এবং সুকঠিন। কারণ একজন মুসলিম ব্যক্তিকে কাফির ফাৎওয়া দেওয়ার অর্থই হলঃ সে জীবিত অবস্থায় থাকলে তার সাথে তার স্ত্রীর সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে। নিজ মুসলিম সন্তান-সন্ততির উপর তার অবিভাবকত্ব চলবে না। সে মৃত্যু বরণ করলে তাকে গোসল দেওয়া যাবে না, কাফন পরানো যাবে না, তার জানাযা ছালাত আদায় করা যাবে না। তার জন্য মাগফেরাতের দুআ করা যাবে না, মুসলিমদের কবরস্থানে তাকে দাফন করা যাবে না। তার কোন মুসলিম আত্মীয় স্বজন তার মীরাছ পাবে না, বরং তার সমুদয় ধন-সম্পদ সরকারী বায়তুল মালে জমা হয়ে যাবে। পরকালে সে জাহান্নামে চিরস্থায়ীভাবে বসবাস করবে…প্রভৃতি। আর যদি সে প্রকৃত অর্থে কাফের না হয় তবে কাফের ফাৎওয়া দাতা আল্লাহর উপর মিথ্যারোপকারী বলে গণ্য হবে ফলে সে সর্বাধিক যালিমে পরিণত হবে। আর তার একমাত্র বাসস্থান হবে জাহান্নাম (দ্রঃ আরাফঃ)। এবং তাকে অন্যায়ভাবে কাফের বলার জন্য নিজেই কাফিরে পরিণত হবে (বুখারী প্রভৃতি)। এ থেকেই প্রতীয়মান হয় বিষয়টি কত জটিল এবং সুকঠিন। এজন্যই বড় বড় ওলামায়েদ্বীন মুসলিম ব্যক্তিকে সহজে কাফের বলেন না,বরং সে ক্ষেত্রে বহু সতর্কতা অবলম্বন করে থাকেন) তাদের এই মূর্খামীদুষ্ট ফাৎওয়া অনুযায়ী সালাফে ছালেহীনের সকলই কাফের গণ্য হবে। কারণ তারা সৃষ্টি গত দিক থেকে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে মাটির তৈরী মানুষই মনে করতেন। তাঁরা আদৌ তাঁকে নূরের তৈরী গণ্য করতেন না।
—
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৩
আল কুরআন মানবতার সমাধান বলেছেন: আয়শা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সঃ) বলেছেন, “যে বেক্তি তোমাকে বলে মুহাম্মদ (সঃ) স্বীয় প্রতিপালককে দেখেছেন, অবশ্যই সে মিথ্যা বলল। কেননা তিনি(আল্লাহ) বলেছেন চক্ষুরাজি কখনো তাকে দেখতে পায় না। আর যে বেক্তি তোমাকে বলে মোহাম্মাদ (সঃ) গায়েব জানেন, অবশ্য সেও মিথ্যা বলল। কেননা তিনি (আল্লাহ্) বলেন, গায়েব জানেন একমাত্র আল্লাহ্। বুখারি ১০ম খণ্ড, হাদিস নাম্বার ৬৮৭৬
৪| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৩৫
মোঃ আলমগীর কবির বলেছেন: ভাই,
সুন্দর কথা বলেছেন,
অনেক উপকারে আসবে।
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:২২
এম এ কাশেম বলেছেন: সুন্দর এবং শরীয়াহ ভিত্তিক উপকারী তথ্য।