নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সততা কে পছন্দ করি।তাই আমি সর্ততার পথে চলতে চেষ্টা করি।

Emon hasan

Emon hasan › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাল্পনিক কাহিনি……… নাম এবং চরিত্র সবই কাল্পনিক.......

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৫৯

.
মেয়েটির একটা বয়ফ্রেন্ড ছিল । স্কুল লাইফে তাদের ভালবাসার সম্পর্ক হয় । বছর দুই ভালই চলছিল তাদের ভালবাসার দিন কাল গুলো । মেয়েটি খুব করে তাকে ভালবাসত । তাকে এত টাই ভালবাসত যে সে অন্য কোন ছেলের সাথে কথাও বলত না । শুধু ওর সাথে কথা বলার জন্য পাগল ছিল ।
.
ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করত ওর সাথে একটু কথা বলার জন্য । কিছু দিন থেকে মেয়েটি ছেলেটাকে কল এর পর কল দিয়ে যাচ্ছে । শত শত কল দিত প্রতিদিন । কিন্তু ওপাশ থেকে ছেলেটি কল ধরে না । কি হল কিছুই বুঝে উঠতে পারেনি কবিতা । এমন তো হওয়ার কথা না ।
.
তাহলে এখন কেন এমন করছে দিন পার হয়ে যায়, সপ্তাহ পার হয় যায়, মাস পার হয়ে যায় কিন্তু ছেলেটির কোন আগ্রহ নাই মেয়েটির প্রতি । মাঝে মাঝে একবার কল রিসিভ করতো । তাও শুধু কল ধরে বলতো আমি ব্যাস্ত । আমাকে কল দিয়ে ডির্ষ্টাব কর না । এই বলে কলটা কেটে দিত ।
.
ফোন টা কেটে দেওয়ার সাথে সাথে এপাশে থাকা কবিতা ফোন টা কানের সাথে লাগিয়ে রাখত আর ছেলেটির কথা গুলো ভাবত আর কেঁদে দিত । কিন্তু ওপাশের ছেলেটি সেই কান্না গুলো শুনতে পেত না । মেয়েটি ছেলেটার সাথে কথা না বলে থাকতে পারে না । প্রতি রাতে কল করেই যেত ।
.
মাঝে মাঝে অটো ডায়াল দিয়ে রাখত ! সারা রাত কল দিয়েই চলত । কল দিতে দিতে এক সময় দেখা যেত ফোনের চার্জ শেষ । আবার চার্জ দিয়ে কল দিয়েই যেত কিন্তু ওপাশে থাকা নিষ্ঠুর ছেলেটা কল ধরতো না । মেয়েটি একটি রাত ও ঘুমাতে পারত না । ছেলেটির কথা ভেবে রাতে কান্না করে বালিশ ভিজিয়ে দিত ।
.
খাটের এপাশ থেকে ওপাশ করে কিন্তু চোখে ঘুম নাই । ঘুমানোর আকুল চেষ্টা । ঘুম আসবে কিভাবে মনের ঘুম নিয়ে যে অন্য একজন খেলা করছে । দিনেও অনেক কান্না করত । কবিতার বোন কবিতার কান্না দেখে ঠিক থাকতে না পেরে কান্না করে দেয় । ভালবাসার এ কি নির্মম পরিহাস শুধু কান্না আর কান্না ।
.
কিভাবে ঠিক থাকবে তা আগে জানা থাকলেও এখন জানা নেই । এই কান্না আর সহ্য হয় না । নিজের কান্না করাটা মানা যা কিন্তু বোনের কি দোষ । আর নিজের জন্য বোন কে কেন কাঁদাবো । ওর তো কোন দোষ নেই । খুব ভালবাসে আমাকে তাই আমার কান্না সহ্য করতে না পেরে নিজেও কান্না করে ।
.
ফ্যামিলির সবাই আমাকে ভালবাসে । আমার কিছু হলে তারাও ঠিক থাকতে পারে না । আমাকে ভালবাসে তাই বলে তাদের কে কেন আমার জন্য কাঁদাবো । কখনোই আমার জন্য তাদের কে কাঁদাবো না । আর আমার কান্না ও আমি থামিয়ে রাখতে পারবো না । তাই ভাবচ্ছি ওকে সুখি করে আমিই চলে যাব অজানা পথে পারি দিতে ।
.
তাই প্ল্যান করলো কাউকে আর বিরক্ত করবে না । আর কতদিন সহ্য করবো । ভালবাসার কষ্ট যে সহ্য করার মত না । এই কষ্ট গুলো মানুষের জীবনকে নষ্ট করে দেয়, শেষ করে দেয় । ভালবাসার কষ্ট গুলো এতটাই খারাপ যা না পারা যায় সহ্য করা না পারা যা কাউকে বলা । যার জন্য এত স্বপ্ন ছিল জীবনে সেই আজ আমার কথায় বিরক্ত বোধ করে ।
.
সেই স্বপ্নের নেই কোন মানে । বোনকে হাজার বার বলেছি কিন্তু বোনটা আমার কান্না দেখে আর ঠিক থাকতে পারে না । পারবেই বা কিভাবে আমি যে ওর একটা মাত্র ছোট বোন । তাই প্ল্যান মত কাজ করবো কাল সকালে । আজ রাত দুইটা বেজেছে আর কাঁদবো না । বালিশের অবস্থা অনেক খারাপ ।
.
বালিশ আর রাগ করিস না আজকেই কান্না করা শেষ । এই বালিশটার সাথে ওর জীবনের অনেক না বলা কথা শেয়ার করেছে । বালিশটা অনেক পুরনো কিন্তু বালিশটাকে কখনোই ফালায়নি কারণ বালিশ টার প্রতি তার একটা মায়া জন্মে গেছে । বালিশটা ও হয়তো ওর কান্নায় কান্না করত,
.
কিন্তু কেউই সেই কান্নার জল গুলো দেখেনি । আর শোনেনি কান্নার আওয়াজ গুলো । পরের দিন সকাল ১০টা বাজে । কবিতা বোনকে কলেজের জন্য এগিয়ে দিয়ে এসে ঘরে ঢুকলো । এরপর নিজের রুমে গেল । গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল । কারন এখন আব্বু-আম্মু চাকরিতে আছে ছোট বোন কলেজে ।
.
এখন কেউ দেখবে না । এই তো সুযোগ সাথে সাথে চেয়ার টা টেনে ফ্যানের নিচে আনলো । তারপর চেয়ারের উপরে উঠে দাঁড়ালো, বুক থেকে ওড়না টা টান দিয়ে গলা থেকে নামিয়ে ফ্যানের সাথে দুইটা প্যাচ দিল । ভয় ও করছে ? না ভয় পেলে কিছু করতে পারবো না । সাথে সাথে বাকি ওড়না নিজের গলায় বাধলো ।
.
চেয়ার টা পা দিয়ে ধাক্কা দিবে, এমন সময় বড় বোন এসে দরজা ধাক্কাছে । সাথে সাথে নেমে গেল । তারপর চেয়ার টেবিলের নিচে রেখে গিয়ে দরজা খুলে দিল । বোন ভিতরে ঢুকে কবিতা কে জিজ্ঞাস করলো, কিরে আপু ? তোর গলায় কিসের দাগ । দেখি দেখি খুব লাল হয়ে আছে । কবিতা সাথে সাথে ওড়না টেনে বলল ও কিছু না ।
.
আচ্ছা তুই কলেজ থেকে এত আগে আসলি কেন আজ । আপু তোর জন্য মনটা কেমন যেন করছিল তাই চলে আসলাম ? কবিতা বুঝতে পারলো ফ্যামিলির ভালবাসা টা কত গভীর সেই ভালবাসা ফেলে সামান্য একটা ছেলের জন্য মারা যাবে । না ! আর কখনো ফাঁসি দেওয়ার চিন্তা মাথায় আনবো না ।
.
ও বাঁচতে পারলে আমি কেন পারবো না । আমিও বাঁচতে চাই । তাই ভাবলো আর কখনো ওর কথা মনে করে কান্না করবে না । তবে একা থাকাটা আমার পক্ষে সম্ভব হবে না । একাকিত্ব থাকা যাবে না তাহলেই শুধু ওর কথা মনে পরবে । আমার একাকিত্ব টা দূর করতে হবে । একাকিত্ব দূর করার জন্য কিছু বন্ধু প্রয়োজন ।
.
যাদের সাথে হাসি-খুশি থাকতে পারি । তাহলে কষ্টের থেকে কিছু টা হলেও দূরে থাকতে পারবো । কিন্তু কিভাবে । তার কিছু দিন পর কবিতা একটা ফেসবুক একাউণ্ট খুলল, একাকিত্ব দূর করতে । সেখানে প্রতিদিন আসে কিন্তু তেমন কাউকেই খুঁজে পায় না, যে তার মনের দুঃখ গুলো বুঝবে,
.
তার কথা গুলো কারো সাথে শেয়ার করবে । কাউকে পায় না তাই বেশি সময় ফেসবুকে থাকে না । কিছু দিন পর আবার ফেসবুকে আসলো । এসে দেখে অনেক গুলো ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট আসছে সেগুলো কনফার্ম করলো । সেদিনের মত ও কাউকে পেল না । কিছু সময় থেকে চলে গেল ।
.
পরের দিন ফেসবুকে এসে গল্প পড়ছে এমন সময় "দূর আকাশের চাঁদ" নামের একটা আই ডি থেকে ম্যাসেজ আসলো--
--হ্যাঁলো ! কেমন আছেন ? আমি কি আপনার সাথে কিছু সময় কথা বলতে পারি ?
--কী কথা বলতে চান ? আর কেন ?
--মানুষের মনে কত কথাই না থাকে ।
--হুম টা ঠিক ।
--কেমন আছেন ?
--ভাল ।
.
আজকের দিনের মত এখানেই কথা শেষ । আর কথা বারালো না । পরের দিন আবার ফেসবুকে ঢুকতেই ম্যাসেজ দিল ছেলেটি--
-- আচ্ছা আপনি এত চুপ-চাপ থাকেন কেন ? মন খারাপ নাকি ?
-- কিছুটা ! তবে আপনি যেনে কি করবেন ?
-- আর কিছু না পারলে ও একটা জিনিস করতে পারবো, সেটা হল আপনার মনের কষ্ট কিছুটা হালকা করতে ।
-- তাই নাকি ! তা কিভাবে করবেন বলেন তো ?
-- আপনার মনে জমে থাকা কষ্টের কথা গুলো সব আমাকে বন্ধু ভেবে বলতে পারেন ? তারপর আমি আপনাকে বলছি ?
-- আচ্ছা তাই ?
-- হুম ! বলেন আপনার এত কষ্ট কেন ?
.
ছেলেটির নাম আকাশ !!
.
এরপর আচতে আচতে তাকে অনেক কিছুই বলছি । ছেলেটি কে যে কথা বলি তার উত্তর দিয়েই চলছে ? অন্য সব মানুষের মত বোর হয়নি কখনো কোন কথাতেই । শুধু আমার কথা শোনে আর তার সঠিক উত্তর দেয় । ভাল লাগতো ছেলেটির সাথে কথা বলে । খুব করে আমাকে কথা গুলো বুঝাত ।
.
মাঝে মাঝে অবাক হতাম । আবার মাঝে মাঝে এমন সব কথা বলতো যে, সেই কথা শুনে মনে হয় আমার বয়ফ্রেন্ডেই হয়তো ওকে আমার সাথে রিলেশন করতে বলছে । তাই আবার একা একা কান্না করত ।
.
না এই দুঃখ বার বার নিতে পারবো না । তার চেয়ে আমিই ওর থেকে দূরে চলে যাব । আবার মরার জন্য প্ল্যান করলো । রাতে বিষ খাবে । বিষের বোতল টেবিলের উপর রাখা আছে । রাত দু'টো বাজে । কিছু সময় পর বিষ খাবে । বিষের বোতলটা হাতে নিয়ে ফেসবুকে ঢুকে ছেলেটি কে শেষ বারের মত একবার জিজ্ঞাস করলো ।
--ছেলেটি বলে না আমি এমন কাউকে চিনিনা ।
--তাহলে আপনি আমার কিছু কিছু কথা বলেন কিভাবে যে গুলো শুধু আমার বয়ফ্রেন্ড যানে ।
--আমি কারো সাথে কথা বললে তার কিছু কিছু মনের কথা বুঝতে পারি ?
--ও আচ্ছা !
.
তারপর আর বিষ খাওয়া হল না । আমার ও বিশ্বাস হয় ছেলেটির উপর । আবার মাঝে মাঝে মনে হত ছেলেটি আমার খুব কাছের কেউ । আমার মনের কথা গুলো না বলতেই বুঝে যায় । এভাবে অনেক দিন কথা হল হঠাৎ এক সপ্তাহ ফেসবুকে আসেনি খুব খারাপ লাগতো খুব জেদ লাগতো কিন্তু বলতে পারতাম না ।
.
তারপর প্রতিদিন কথা হত । এভাবে পাঁচ মাস কেটে গেল । অনেকটা ফ্রি হয়ে গিয়েছি ছেলেটির সাথে । অনেক মজা করতাম প্রতিদিন । হঠাৎ একদিন আমাকে বলল--
--আমি প্রেম করবো । একা একা আর ভাল লাগে না । একটা মেয়ে খুঁজে দিয়েন তো ?
--কেন আমি আছিনা ? ( ফাজলামো করে বলেছিলাম )
--সত্যি বলছেন আপনি আমাকে ভালবাসবেন তো ? ( খুশীতে লাফানোর অবস্থা । ইমো )
--আপনার কি মনে হয় ?
--কি মনে হয় তা জানি না কিন্তু আমি আপনার ব্যাপারে সব জানি । তবে এটা বলতে পারবো আপনাকে কখনোই দুঃখ দিব না ? কারণ আপনার জীবনটা দুঃখে ভরা । আমাকে বিশ্বাস করতে পারেন ? আমি আপনাকে সুখ না দিতে পারলে ও কখনো দুঃখ দিব না ।
.
আমার মন অনেক দুঃখে ভরা । ছেলেটি সব যেনেও আমাকে ভালবাসতে চায় । তাহলে রিলেশন টা করে দেখি ।
.
আজ রিলেশনের তিন মাস পার হল । খুব ভালই কাটছে আমাদের দিন গুলো । ওকে পেয়ে খুব সুখে আছি । মানুষটা আমাকে খুব ভালবাসে ।
.
ব্যপারটা যদি এই রকম ই চলতে থাকতো তো তোহ কোন কিছুই হত নাহ কিন্তু কবিতা কিছু দিন পর থেকে ছেলেটাকে Ignore করতে শুরু করল। আর যখনই ছেলেটা তাকে জিজ্ঞাসা করত সমস্যা টা কি তখন সে বলত তার পরিবার এ সমস্যা আছে, তারপর থেকে কবিতা ছেলেটার সাথে যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ করে দিল............।
তারপর থেকে ছেলেটা মানুষিক ভাবে খুব ভেঙ্গে পরে এবং বারবার কবিতার সাথে যোগাযোগ করার অনেক চেষ্টা করে কিন্তু পারে নাহ।
বাকিটা এখন নাহ অন্য এক সময় বলব.........................................................
............................................................
..................।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.