খেলা

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৫৪

পিচ্চি থাকতেই আমি একটু উপর থেকে দেখতে পছন্দ করি; বয়সের তুলনায় একটু বেশি লম্বা ছিলাম বলেই হয়ত। কতবার চোর-পুলিশ খেলার সময় হঠাৎ নিজেকে আবিষ্কার করেছি অন্য এক খেলার মাঝে, কতবার অযথাই খেলার মাঝে উঠে বসেছি দর্শকের সারিতে; শুধু একটু উপর থেকে দেখব বলে। দিনে দিনে এই নতুন খেলা আমাকে পেয়ে বসেছিল, খেলা দেখার খেলা।



তারপর অনেক অনেক দিন পারি দিয়েছি, তারপর আরও কিছু দিন...আরও কিছু... এর মাঝে বহুদিন আমি আর মাঠে নামিনি, শুধুই দেখেছি। আমার অবস্থানটা যদিও আর ঠিক মাঠের পাশে নেই, অনেক-অনেক উপরে উঠেগেছি। সেই সাথে পরিবর্তন এসেছে আমার মাঝেও, খেলা দেখার মজা শেষ হয়ে গেছে বহুদিন হল। আমি এখন বাস্তবতা দেখা শুরু করেছি, এ এক অদ্ভুত খেলা, নিয়ম গুল আমার অজানা, উদ্দেশ্য গুল-ও অস্পষ্ট, কিন্তু খেলোয়াড় গুল...এদের আমি ভালই চিনি। উত্তেজনা ধরে রাখতে না পেরে শেষ দিকে মাঝে মাঝে আমিও নেমে এসেছি, অর্থহীনতার খোঁজে।



আর এভাবেই আমার পরিচয় হল বহু পুরনো সেই সব ছোটবেলার খেলার সাথে, নিতান্তই আগ্রহের বশে দু-একবার উকিঝুকি মারলাম। বহুদিনের প্রবাসী যেভাবে তাঁর বস্তা পচা ভুরি নিয়ে মুখে রঙ্গিন চশমা পরে টুপ করে গ্রামের মাঠে নেমে পরে, আমিও নেমে পরলাম। অর্থহীনতাকে ভুলে, বেশ খানিকটা মাটি-ধুল মাখিয়ে ক্লান্ত শরীরে ফিরলাম আমার জীর্ণ আরাম কেদারায়। সারা গায়ে ধুলো মেখে বিজ্ঞের ভাব নেয়া যায় না। ঠিক তখনই প্রথম অন্তরদন্দের সূত্রপাত। দ্বৈত সত্ত্বার ক্লান্তিহীন ঝগড়া... ধুলোমাখা শরীর আর বুড়িয়ে যাওয়া মন এর ঝগড়া। এর মাঝেই কখন যে এক তৃতীয় সত্ত্বা টুপ করে মাটিতে পরে গেছে কেউই খেয়াল করে নি। তাঁর সদ্য সৃষ্ট কাচা মন ধুলোর পূজারী, নির্দ্বিধায় সে সোজা ছুটে গেল খেলার মাঠে...তাকে আর ফিরিয়ে আনা গেল না।



এরপর থেকে মাঝে মাঝে ভাবি, অন্য কেউ আবার আমাদের এই তিনটি সত্ত্বার খেলা দেখে মিট মিট করে হাসছে না তো ?

০ টি +০/-০