নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

ফাহমিদা বারী

আমার ব্লগ মানে গল্প। গল্প পড়ার আমন্ত্রণ জানাই :)

ফাহমিদা বারী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফেলে আসা দিন

৩০ শে অক্টোবর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১৪



আমার ছেলের বাংলা পরীক্ষার সময় ফেসবুকে আমার পেজে লেখাটা লিখেছিলাম। আজ এখানে শেয়ার করছি।

আমার ছেলে এসএসসি ক্যান্ডিডেট, আর প্রথম পরীক্ষা বাংলা। তাই আমি একটু বিশেষভাবে ব্যস্ত। বাংলার জ্ঞান ছেলের ওপরে ঝালাই করে নেওয়ার এই তো মোক্ষম সুযোগ!
ছেলের পরীক্ষার সাজ সাজ রব দেখতে দেখতে বারবার নিজের সেই দিনগুলো ভেসে উঠছে চোখের সামনে। সেই বয়সে আমি ছিলাম পাগলা স্টুডেন্ট! পাগলের মতো পড়তাম! হায়রে! পড়ে কী উল্টে বসে আছি আল্লাহ জানেন! কিন্তু পড়াই ছিল যেন জীবনের সব।
তবে আমাদের সময়ে পড়ালেখাকে ঘিরেই অনেক মজার মজার ঘটনা ঘটত। দলবেঁধে স্যারের বাসায় পড়তে যেতাম। সাথে থাকত স্কুলের বান্ধবীরা। কাজেই স্যারের বাসায় বসে আমাদের পুটুর পুটুর আর কিছুতেই বন্ধ হতো না!
মনে পড়ে বাংলার শিক্ষক সুশীল স্যারের কথা। একদিন আমরা এতটাই গল্পে মজে গেলাম যে কিছুতেই আর থামাথামি নাই। স্যার কী পড়াচ্ছেন, কী বোঝাচ্ছেন বা কী বোঝাতে চাচ্ছেন কিছুই আমাদের মাথাতে ঢুকছে না। এক পর্যায়ে স্যার হাল ছেড়ে দিলেন। হুংকার দিয়ে বললেন, 'কালকেই আমি তোদের মাপমত ঠুলি (গরুর মুখে বেঁধে রাখা যা দিয়ে ) বানাব। পাজির দল সব! সব কয়টা ঠুলি পরে বসে থাকবি! দেখব কেমন করে কুটুর কুটুর করতে পারিস!'
ইংরেজির হক স্যার ছিলেন মহা বিপজ্জনক। তিনি সবাইকে ব্যাটা বলে সম্বোধন করতেন। কী ছেলে কী মেয়ে... সবাই তার কাছে ব্যাটা! তো উনি সপ্তাহে একটা দিন নির্দিষ্ট করে রেখেছিলেন যেদিন আমাদের সবাইকে ইংরেজিতে কথা বলতে হবে। খুব সম্ভবত সেটি ছিল মঙ্গলবার।
আমরা তো সবজায়গায় বান্ধবীরা মিলেই ব্যাচ করতাম। কাজেই সেই ব্যাচেও আমরা সব আমরা আমরাই! ধুমসে গল্প করি প্রতিদিন। কে কী মনে করল আমাদের তাতে থোড়াই কেয়ার! কিন্তু মঙ্গলবার এলেই আমরা স্পিকটি নট! একেবারে চুপ। স্যার সেদিন আমাদের গিয়ার উস্কে দেওয়ার প্রচুর চেষ্টা করতেন। আমাদের স্বাগত জানাতেন এভাবে... 'ব্যাটা টুডে ইজ দ্যা ডে অফ স্পিকিং ইংলিশ!' আমরা চুপ! স্যার আবার বলতেন, 'ব্যাটা হাউ আর ইউ ফিলিং টুডে? শেয়ার উইথ ইউর ফ্রেন্ড।' আমরা এর ওর মুখের দিকে চাইতাম! কী ফিল করছি তা তো প্রত্যেকের মুখেই জ্বলজ্বল করছে। কিন্তু আমরা সেটা আর মুখ ফুটে বলতে চাইতাম না!
থাকতাম রাজশাহীতে। রাজশাহীর গরম যে কী জিনিস, সেটা যারা সেখানে না থাকে তা বুঝতে পারবে না।
আমি আমার পড়ার টেবিলের নীচে একটা অর্ধেক পানি ভরা বালতি রেখে দিতাম। সেখানে পা চুবিয়ে পড়তাম। আমার বান্ধবি লুনা বলত, 'হুমায়ুন আহমেদকে তোমার ব্যাপারে জানানো দরকার। উনি একটা জম্পেশ গল্প লিখে ফেলতেন তোমাকে নিয়ে!'
এমনি কত কত গল্প যে জমে আছে বুকের ভেতরে! আজ কোথায় সেই সব দিন... কোথায় বা সেইসব প্রাণপ্রিয় শিক্ষকেরা। প্রায় প্রত্যেকেই পাড়ি জমিয়েছেন অন্যলোকে। মন থেকে তাদের জন্য দোয়া করি সবসময়।
ছোট্ট এই জীবনে এই স্মৃতিগুলো সত্যিই বড় অমূল্য!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.