নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লিখতে এবং পড়তে ভীষণ ভালবাসি। এক কথায় বইয়ের পোকা। খুব খুশি হই, যখন কেউ আমার লেখা পড়ে।

ফয়সাল হোসেন শুভ

শিক্ষানবীস

ফয়সাল হোসেন শুভ › বিস্তারিত পোস্টঃ

তনু হত্যাকান্ড, একটা পক্ষের বিশেষ একটা থিওরি এবং আমার কিছু কথা

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:০৬

তনু হত্যাকান্ড নিয়ে বিশেষ একটা মহল প্রচারণা চালাচ্ছে দেখলাম - এই ঘটনার সাথে নাকি সেনাসদস্য অথবা সেনা কর্মকর্তারা জড়িত। এ ধরনের প্ররোচনায় কেউ কান দেবেন না দয়া করে। কারণ এটা কোন সেনা কর্মকর্তার পক্ষেতো দুরের কথা, কোন সেনাসদস্যের পক্ষেও করা সম্ভব নয়।
প্রথমত, এক বছর অথবা দুই বছর মেয়াদী মৌলিক সামরিক প্রশিক্ষণকালে শিক্ষানবীশ সেনাসদস্য অথবা সেনা কর্মকর্তাদের শুধু যুদ্ধকৌশল আর অস্ত্রচালনাই শেখানো হয় না; তাদেরকে জীবনটাকেই নতুনভাবে চালাতে শেখানো হয়। খাদ্যাভ্যাস থেকে শুরু করে টয়লেট ব্যবহার পর্যন্ত সবকিছু নতুনভাবে শেখায় এই সময়টায়। একে সেনা পরিভাষায় বলা হয় - শরীর হতে সিভিল রক্ত বের করে সামরিক রক্ত প্রবেশ করানো। এই 'রক্ত প্রবেশ করানো' প্রক্রিয়ায় নারীকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করতেও শেখায় আবার নতুন করে। মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অবদান থেকে শুরু করে বর্তমান বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী সহ প্রতিটি বিভাগে নারীদের অবদান ও অবস্থান দেখিয়ে দেয়া হয় চোখে আঙ্গুল দিয়ে। সুতরাং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোন সদস্যের পক্ষেই এই জঘণ্য কাজ করা সম্ভব নয়।
দ্বিতীয়ত, একাডেমিক্যালি শিক্ষা দিয়ে সেনা সদস্যদের মধ্যে নারীর প্রতি সম্মানসূচক দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টিসহ যাবতীয় আইনশিক্ষাদানের মাধ্যমে সুশৃঙ্খল, স্বচ্ছ সেনাদল হিসেবে গড়ে তোলার পরেও সেনাসদস্যদের জন্য রয়েছে 'বাংলাদেশ আর্মি এক্টস'। সবাই জানেন সেনাবাহিনীর আইন এবং আইনপ্রয়োগ, দুটোই অনেক কড়া। একজন বেসামরিক ব্যাক্তি কোন অপরাধ করে যে পরিমাণ সাজা পায়, একজন সেনা সদস্যকে একই অপরাধ করে বেসামরিক ব্যাক্তিটির দ্বিগুনেরও বেশি সাজা খাটতে হয়! তাহলে কেউ কেন জেনেশুনে ডাবল বাঁশ গ্রহন করার কাজ করবে, বলুন?
তৃতীয়ত, একটা সেনানিবাসের মধ্যে শুধু ইউনিফর্ম পরা সেনা সদস্যরাই থাকেন না। ওখানে বেসামরিক অনেক মানুষও থাকে। তাই কিছু ঘটলেই 'বড় মিয়া ঘটাইছে' নীতিতে চলা ঠিক নয়।
সর্বোপরি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে গরু-ছাগল পালন করা হয় না। এখানে গরু ছাগল ধরে এনে মানুষ করা হয়। মৌলিক সামরিক প্রশিক্ষণে একজন সামরিক সদস্যের জীবনযাপনের পুরো প্রক্রিয়াটাই আমূলে পরিবর্তন করে দেয়া হয়। এছাড়াও একজন সেনা সদস্যের সম্পূর্ন সেনাজীবনের বেশিরভাগটাই কাটে প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে। তাই, এই ধরণের জঘণ্য কাজ কোন সেনা সদস্য করবেনা নিশ্চিত থাকুন। মনে রাখবেন, সেনাবাহিনীতে অনেক লেডি অফিসার এবং লেডি সৈনিক আছেন; একজন পুরুষ সেনা সদস্যের চেয়ে তাঁরা কোন অংশেই কম যান না। নারীরা ইচ্ছা করলে এবং পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা পেলে যে কি করে ফেলতে পারে; সেটা সেনা সদস্যরা অন্যদের চেয়ে অনেক ভাল করেই জানে। সম্মানটা নারীদের প্রতি আপনাতেই আসে।
সেনাবাহিনীর কাজ দেশ থেকে ময়লা পরিস্কার করা; দেশের মাটিকে ময়লা করা না।
এত কিছুর পরেও যদি কোন সেনা সদস্য এই নোংরা কাজটা করেও থাকে, তবে তাকে কেউ বাঁচাবে না। সেনাবাহিনীতে বাপকেও ছেড়ে কথা বলার নিয়ম নাই। এই ধরণের কীটকে সেনাবাহিনীতে জায়গা দেয়া হয় না। শপথগ্রহণের পরেও এই ধরণের কাজ করা মানে শুধু নিজের সাথেই নয়; নিজের পবিত্র ইউনিফর্মের সাথে, পবিত্র দায়িত্বের সাথে, বাহিনীর সাথে এমনকি দেশের সাথে চরম বেঈমানী করা। আর সেনাবাহিনীতে এর শাস্তি যে কি মাত্রার কঠোর, তা কোন সিভিলিয়ান কল্পনাও করেনা কখনও। দোষী ধরা পড়বেই, সে যে গাছেরই ফল হোক। তবে ভিত্তিহীন দোষারোপ না করে প্রমানসহ অভিযোগ পেশ করাটাই যুক্তিযুক্তি নয় কি? শুধু শুধু অযৌক্তিক যুক্তি দিয়ে নিজের জ্ঞান, বিবেক এবং শিক্ষাকে অন্যের কাছে ছোট করে পেশ করার কোন মানে হয়?
তনু আপনার বোন, তনু আমার বোন। তনু আমাদের বোন। যাঁরা ওকে এই নৃশংসভাবে হত্যা করেছে, তাদের কঠোরতম বিচার হোক সেটা আপনিও চান, আমিও চাই, সবাই চায়। তবে তাই বলে উপযুক্ত প্রমাণ ব্যাতিত মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে দিয়ে বিশেষ একটা দলকে ছোট করার চেষ্টা করাওতো ঠিক না।
তনুর আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। যারা এই জঘণ্য কাজ করেছে, তাদের কঠোরতম শাস্তি হোক। ইনশাল্লাহ, ধরা তারা পড়বেই। পাপ কখনো তার বাপকেও ছাড়েনা।
সবাই ভাল থাকবেন। নতুন বছরটা ঝড়ঝঞ্ঝামুক্তভাবে কাটুক, এই কামনাই থাকল। আল্লাহ সবার মধ্যে বিবেকদান করুন। সবাইকে হেদায়েত দিন।
আমিন।।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:০৯

সুপ্ত আহমেদ বলেছেন: যুক্তি গুলো ভালো লাগলো কিন্তু কিছুটা দিমত আছি।" একে সেনা পরিভাষায় বলা হয় - শরীর হতে সিভিল রক্ত বের করে সামরিক রক্ত প্রবেশ করানো।" ভাইয়া আমি বলছি না যে তনু হত্যা এর কাজ আর্মিরা করেছে। তবে ৯৯,৯৯% এর ভিতর .০১% তেও ঘাপলা থাকে। একটা কথা নিশ্চয় জানেন হাজার বছর কুত্তার লেজ বাঁশের চোঙ এর ভিতর রাখলেও কিন্তু কুত্তার লেজ সোজা হয় না। সো যে লুইচ্ছা সে লুইচ্ছাই থাকবে আজিবন। সেটা কোন ডিফেন্স বা সাধারণ মানুষই হোক না কেনো। সবশেষে- যারা এই জঘণ্য কাজ করেছে, তাদের কঠোরতম শাস্তি হোক।

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:২৪

ফয়সাল হোসেন শুভ বলেছেন: ধন্যবাদ। ভাল যুক্তি। তবে সেনাবাহিনীতে অসম্ভবকে সম্ভবে পরিণত করা হয়। একজন পরিশুদ্ধ এবং পরিশীলিত মানুষে পরিণত করা হয় প্রশিক্ষণ দিয়ে দিয়ে।

২| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৩

কামাল - বলেছেন: The peoples raise finger to army, now army's duty to prove that peoples are wrong.

৩| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৬

আব্দুল্লাহ তুহিন বলেছেন: কে এই তনু?

জাতি ভুলে গেছে..

৪| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:৫৪

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
খালি সেনাবাহিনী সেনাবাহিনী!
সেনাবাহিনীটা কি জিনিষ?
পুলিশ বা আনসারের মত সেনাবাহিনীও রাষ্ট্রের একটি বেতনভুক্ত বাহিনী। কিন্তু আমাদের দেশের নষ্ট রাজনীতিতে পাকি আদলে রাষ্ট্রীয় এই গুরুত্বপুর্ন সংস্থাটি সরকারের নিয়ন্ত্রনের অনেকটা বাইরে বিপুল ক্ষমতাধর আলাদা সত্তায় পরিনত হয়েছে।
আলোচিত হত্যাকান্ডের আলামত ধামাচাপা/ভিন্নখাতে নেয়ার ক্ষমতাধর কালোহাতের প্রচেষ্টা সুরু থেকেই লক্ষ করা যাচ্ছে। DNA আলামত লাপাত্তা করে দায়সারা ময়নাতদন্ত -- এরপর দ্রুত কবরস্থ, পিতা-মাতাকে ক্যান্টনমেন্টে আটকে রাখা এর প্রমান।
কালোহাত এখনো দৃশ্ব্যমান। ভিকটিমের পিতা-মাতাকে জোরপুর্বক ক্যান্টনমেন্টে আটকে মুখ বন্ধ রেখেছে, তদন্ত ভিন্নখাতে নিতে কালোহাতের প্রভাবও স্পষ্ট।

যারা মনে করছে প্রকৃত দোষী চিহ্নিত হলে সেনাবাহিনীর ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হতে পারে, তাদের ধিক্কার জানাই।

৫| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৫

সুপ্ত আহমেদ বলেছেন: একমত হাসান ভাইয়ের সাথে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.