নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনলাইন এক্টিভিস্ট

অনলাইন এক্টিভিস্ট

ফারহানা রোশনী

>> প্রত্যেক মুমিনের মতই ধর্ম ব্যবসায়ীদের ঘৃণা করি। আশাকরি তারা আমার কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রাখবেন।\n>> সংগত কারনেই মানবতা বিরোধী, যুদ্ধাপরাধীদের ভয়ানক অপছন্দ করি। তাদের সাঙ্গ পাঙ্গদের নৈকট্যও কাম্য নয়।\n>> সকল প্রকার ভ্রান্ত মতবাদ বিরোধী।\n>> \'ইসলাম শান্তি ও মানবতার ধর্ম \\\' এই নির্জলা সত্যি কথাটা বিশ্বাস করি। আর তাই ইসলাম কায়েমের নামে জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দিই না।\n>> খাঁটি মুমিন হওয়ার চেষ্টায় রত।\n>> আল্লাহ্‌কে পাওয়ার জন্য ব্যাকুল।\n>> সকল সৌন্দর্যের মূল আল্লাহ্‌ সুবহানু তায়ালা। তাই সেই প্রকৃত সৌন্দর্যের অন্বেষণে ব্যাস্ত।\n>> সকল প্রকার হারাম কাজকে ভয়ানক অপছন্দ করি।\n>> অশ্লীলতা চরম অপছন্দ । যারা অশ্লীল বিষয় আশয়ে অভ্যস্ত তারা দূরে থাকবেন।দেখতে পেলেই আর যাতে না দেখতে হয় তার ব্যবস্থা করতে ভুল করিনা। চিরতরে ! এই প্যারাটিতে হাইলাইট করার অপশন থাকলে কাজে লাগাতাম !\n>> চাটুকার আর ধূর্তদের অপছন্দ করি।\n>> সকল প্রকার তৈল জাতীয় বস্তু ভয়ানক অপছন্দ।\n>> কুরআন ও সুন্নাহর অনুসারী।\n>> সহিহ আক্বিদা তথা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অনুসারী।\n>> বাংলাদেশে প্রচলিত রাজনৈতিক আদর্শের কোনটিতেই ভরসা নেই।\n>> খুব সাধারণ একজন মানুষ। আরও সাধারণ হতে চাই।\n>> দ্বীনদার মানুষের সঙ্গ খুব পছন্দ করি।\n>> মানুষকে প্রচণ্ড ভালবাসি।\n>> ঝগড়া ঝাঁটি, গালি গালাজ খুব অপছন্দ।\n>> সকল প্রকার কু রিপু হতে মুক্ত থাকতে চাই।\n>>\"একজন মুমিন কখনই প্রকৃত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে নিজের জন্য যা পছন্দ করে, অন্যের জন্যও তাই পছন্দ করে\\\"। চেষ্টা করি এমন মুমিন হতে।\n>> মানুষকে একটু খানি সচেতন করাই আমার কলম ধরার উদ্দেশ্য। তবু আমার লেখা সবার ভালো লাগবে সে আশা করিনা।ভালো না লাগলে গঠনমূলক সমালোচনা কাম্য। আতলামি নয়।\n>> \"আগে আমি পৃথিবীকে বদলে ফেলার কথা ভাবতাম। এখন আমি চালাক হয়েছি। তাই নিজেকেই বদলে ফেলেছি\\\"- মাওলানা রুমি(রহঃ) এর উক্তিটির নিরন্তর প্রতিফলন চাই আমার ক্ষুদ্র এই জীবনে। তাই সেই মোতাবেক চেষ্টা করে যাই।\n>> নিরীহ শান্তিপ্রিয় মানুষ।\n>> নির্জনতা ভালবাসি। চুপচাপ থাকাই বেশী পছন্দ।\n>> সূফী ভাব দর্শনের প্রতি অনুরাগী।\n>> \\\'হিজাব নারীর মুকুট\\\' এই মর্মে বিশ্বাসী।\n>> A Cancer survivor\n>>>>>>>>>>>>>>>>>( আপডেট চলছে...)<<<<<<<<<<<<<<<<<<<<<<<

ফারহানা রোশনী › বিস্তারিত পোস্টঃ

“আপনি কেমন আছেন?”

১৮ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১২:১৪

ফেইসবুক ইনবক্সে, ওয়ালে, কমেন্টে আমাকে করা বহুল ব্যবহৃত একটি প্রশ্ন। এর জবাবে আমি সবসময় সবাইকে বলে আসছি, “আলহামদুলিল্লাহ্‌। আমি ভালো আছি”। কিন্তু এটুকু শুনে আমার শুভাকাঙ্ক্ষী বন্ধুরা স্বস্তি পান না। বিশেষ করে যখন এখনও মরণব্যাধি নামে পরিচিত ক্যান্সার নামক দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত। আমি আজ তাদের কিছুটা ধারণা দেয়ার চেষ্টা করছি।





কেমোথেরাপি চলছে। এইমাত্র নার্স একটার পর একটা ইনজেকশন হাতে দিয়ে, স্যালাইন লাগিয়ে চলে গেছে। আমি শুয়ে থেকে পুরোটাই দেখেছি। সবশেষে দিয়েছে অ্যাড্রিয়ামাইসিন। কিন্তু একি ! আমার হাতটা পুড়ে যাচ্ছে কেন ? অ্যাড্রিয়ামাইসিনের প্রভাবে আমার সমস্ত হাত জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে। ধীরে ধীরে আমার সমস্ত শরীরে পৌঁছে যাচ্ছে। সমস্ত শরীরে প্রচণ্ড জ্বলুনি। আমি পুড়ে যাচ্ছি। সহ্য করতে পারছিনা। ইচ্ছে করছে, একটানে ক্যানুলাটা খুলে ফেলি। তাহলে হয়ত নিস্তার পাব। না ! তা আমার করা উচিত হবে না। দ্রুত চোখ সরিয়ে নিই। কারণ বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকলে, বিশ্বাস নেই হয়ত নিজের উপর নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলব। প্রচণ্ড জ্বলছি আর একটু পর পর লোভীর মত ক্যানুলাটার দিকে তাকাচ্ছি। আহ ! আহ! কি কষ্ট !!





জানে খুব বমি পাবে তাই বমির ওষুধ ওরা একসাথেই দিয়ে দিয়েছে। ব্লিওমাইসিনের কাজ একটু পরই শুরু হল। প্রচণ্ড বমি পাচ্ছে। সমস্ত নাড়িভুঁড়ি ক্রমাগত দলা পাকাচ্ছে। ভীষণ ব্যাথা। ভীষণ !! সমস্ত ঠেলে বেরিয়ে আসতে চাইছে। শুয়ে থাকতে পারছিনা। ছিটকে বসে গেলাম। সজোরে নাক চেপে ধরে আছি। প্রচণ্ডভাবে হাঁপাচ্ছি। মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে হচ্ছে। সমস্ত শক্তি লোপ পেয়েছে। এতটুকু নাড়াচাড়া করবার মত শক্তি অবশিষ্ট নেই। খুব অসহায় লাগছে। মনে হচ্ছে এমন কিছুই নেই যা এই মুহূর্তে আমাকে সাহায্য করতে পারে। বার বার পেট খামচে ধরছি। বুক চেপে ধরছি। খুব জোরে। রিফ্লেক্সলি। তবুও পেট থেকে গলা পর্যন্ত বিস্তৃত প্রচণ্ড যুদ্ধটার কোন থামাথামি নেই। নাকটা আরও জোরে চেপে ধরি। কিছুতেই হার মানা যাবে না। কিছুতেই না।





থর থর করে কাঁপছি। জ্বর এসেছে কি? প্রচণ্ড শীত লাগছে। গুটিসুটি হয়ে আছি। তবু হিট রিজার্ভ করা যাচ্ছেনা। এদিকে ভেতরকার যুদ্ধের প্রকাশ হিসেবে ঘামছি আমি। এয়ার কুলারের শীতল হাওয়া অনবরত জমতে থাকা ঘামের বিরুদ্ধে সুবিধা করতে পারছেনা। প্রচণ্ড কাঁপুনি বাঁধ মানছে না। কেউ যেন অনবরত আমাকে ধরে ঝাঁকিয়ে যাচ্ছে। থামতে চাইছেনা।





সমস্ত রক্তনালীতে প্রচণ্ড যন্ত্রণা, কেমো ড্রাগ গুলোর সচল উপস্থিতি জানান দিচ্ছে। আর পারছিনা। নিদারুন হতাশায় দেখি সালাইনের ব্যাগ খালি হতে এখনও অনেক দেরি। মাত্র একটু খানি শেষ হয়েছে। আর কতক্ষণ পারব জানিনা। যন্ত্রণা চেপে রাখা আরও কষ্টকর ঠেকে। ইচ্ছে করছে চিৎকার করি। তাতে যদি কিছুটা শান্তি পাই। না। তাও করতে পারিনা। শুধু কাতরাতে থাকি। মাঝে মাঝে অস্ফুট স্বরে অব্যক্ত ব্যথাগুলি মিনতি জানায় ।





মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে নিতে, মুখ গলা সব শুকিয়ে গেছে। কেউ আমাকে একটু পানি দাও। একটু। শুধু এক ঢোক। না ! এ আমি কি করছি ! পানি খেলে যে এখন আরও বমি পাবে। আগেও হয়েছে। নাহ ! পানি খাওয়া আর হয় না। দাঁতগুলি বারবার লেগে যাচ্ছে। ভাষা জড়িয়ে যাচ্ছে। পৃথিবীর চলমান সমস্ত বস্তু স্থির হয়ে গেছে। কোন অস্তিত্বই নেই। শুধুমাত্র একটি বস্তুর অস্তিত্ব টিকে আছে। খুব ভালোভাবেই টিকে আছে। যন্ত্রণা ! প্রচণ্ড যন্ত্রণা !





তোমরা কেউ আমাকে একটু সাহায্য কর। একটু দয়া কর আমাকে। এমন কিছু এনে দাও যাতে এই যন্ত্রণা আমি আর বুঝতে না পারি। না। বিষের কথা বলছিনা। একটু খানি হ্যালোথেন তো এনে দিতে পার। আমি একটু ঘুমাতে পারব। ভীষণ শান্তিতে।





নার্স এসে জিজ্ঞেস করে, ইজ ইট পেইনিং ?কোন জবাব দিতে পারিনা। শুধু বুকের ভেতর হৃদপিণ্ডটা প্রচণ্ড জোরে চলতে থাকে। নীরব অভিমানে বুকের খাঁচা সজোরে ধাক্কায়। ডুকরে কেঁদে উঠে প্রতি মুহূর্তে বলতে থাকে, ইউ নেভার নো... ইউ নেভার নো...





আমার কি শেষ সময় সমাগত? আমি কি মারা যাচ্ছি ? তবে কি আমি আমার প্রিয় মানুষগুলোকে দেখে যেতে পারব না ? শেষ মুহূর্তেও না? নিদারুণ হতাশা গ্রাস করে আমাকে।





যন্ত্রণার সহ্যসীমার শেষ ধাপটিও পেরিয়ে গিয়ে, প্রকাশের একমাত্র মাধ্যম হিসেবে হৃদয় নিংড়ে অশ্রু হয়ে ঝরে পড়ে। অঝোরে। আমি অবিরত শুনতে থাকি ‘টপ টপ টপ’।





সেই শব্দে হঠাৎ সম্বিৎ ফিরে পাই। মনে হয়, আমি কাঁদছি ? ছি ছি ! শত ধিক্কার আমাকে! আমি তো পঙ্গু নই, জন্মান্ধ বা বধির নই। এই জীবনের অনেক গুলো বছর আমি সম্পূর্ণ নীরোগ কাটিয়েছি। তাহলে ? যে জন্মের পর থেকে এই পৃথিবীর রূপ, রস, গন্ধ সমস্ত কিছু থেকে বঞ্চিত, আমার কষ্ট কি তার কষ্টকে ছাপিয়ে যেতে পারে? কখনই না।





হ্যাঁ ঠিক আজ আমি অনেক বেশী অসুস্থ। জীবনের ভার বইতে না পেরে আমি এলিয়ে পড়েছি। কিন্তু আমার স্রষ্টা আমাকে পরম ভালবেসেই এই নিয়ামত দিয়েছেন। তা কি করে আমি ভুলে গিয়েছি। হীরা আর কয়লার মূল একই। আমার প্রিয়তম কয়লার আবরণ সরিয়ে হীরের দ্যুতিতে উজ্জ্বল করতে চাইছেন বলেই তো আমাকে এই কষ্ট সহ্য করতে হবে। পাপী বান্দাকে রাহমানুর রাহিম নিষ্কলুষ, স্বচ্ছরূপে চাইছেন। আর আমি কিনা অবুঝের মত...। ছি !





যেন এক দমকা হাওয়া আমার সামনে থেকে একের পর এক পর্দা উঠিয়ে, আমার প্রিয়তমের অভিসন্ধি জানিয়ে দিয়ে গেল। যন্ত্রণা টের পাচ্ছি এখনও। তবে তা আগের মত শক্তিশালী নয়। যে অশ্রু যন্ত্রণার ছিল, সেটিই এখন স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতার ভাষা হয়ে ঝরতে লাগল। অবিশ্রান্ত। আমি থামাতে পারছিনা। অবশ্য চাইছিওনা। ঝরুক যত ইচ্ছে।





এমন সময় নার্স এসে আবার জিজ্ঞেস করে, ইজ ইট পেইনিং?আমি সহাস্যে বলি, নো।





পুনশ্চঃ ভালো থাকাটা কক্ষনো একা শারীরিক নয়। আত্মিকও বটে। এবং আমার কাছে এটাই প্রবল ও সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১২:২৩

মনিরা সুলতানা বলেছেন: ভালো থাকাটা কক্ষনো একা শারীরিক নয়। আত্মিকও বটে। এবং আমার কাছে এটাই প্রবল ও সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ

সহমত ।

২১ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:৫০

ফারহানা রোশনী বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.