একা___________

০৫ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৩

হাঁটছিলাম একা একা, আমার একা হাটার অভ্যাস বহু দিনের। জন্ম অবধি আমি একা একা হাটতে শিখেছি। কোলাহল আমার মোটেও পছন্দ না। তখন থেকে আজ পর্যন্ত কোলাহল ত্যাগ করে এসেছি। একা একা থাকতে শিখেছি, চলতে শিখেছি, বাঁচতে শিখেছি। নিজের কাছে সবসময় নির্জনতাকে সত্য মনে হত। কোলাহলকে কেমন জানি কৃত্রিম লাগত। জীবনের সময়গুলো একা কাটাতে গিয়ে তেমন কোন বন্ধু হয়ে উঠেনি। কারো সাথে তেমন সখ্যতা গড়ে উঠেনি। যদিও মাঝপথে আমার জীবনের সেরা একজনকে পেয়েছি। তার থেকে অন্যকে কাউকে ভাবতে পারিনা। সেই আমার জীবনে পরম পাওয়া। আজ এই সময়, তাকে ভাবতে গিয়েই তার ফোন পেলাম। এমন সময় তার খুব প্রয়োজন ছিল। জীবনের ফেলে আসা দিনের মত আজও হাঁটছি তেমনি ভাবে। আর হাটতে হাটতে ক্লান্ত হয়ে নির্জন এলাকায় এসে একটা বরই গাছের নিচে এসে দাঁড়িয়েছি। সূর্যটা আকাশে দেখা যাচ্ছেনা সকাল থেকে কেমন জানি লুকোচুরি খেলছে আমার সাথে। ঠিক আমার সাথে আবার নাও বলা যায়। বরই গাছটা বেশ বড়সড় না হলেও মাঝামাঝি সাইজের। এমন বর্ষার মাঝেও বরই গাছের পাতা নাই। কাঁটায় ভরা অনেক ডাল ছড়িয়ে আছে বড়সড় জায়গা জুড়ে। বেশ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি, খুঁটিনাটি পরীক্ষা করতে আরম্ভ করলাম। একটু আগে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি আরম্ভ হয়েছে। কোথায় যেন শূন্যতা অনুভব করছি। বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা আমাকে ছুঁয়ে যাচ্ছে। টিনের ছালে পড়া টুপটাপ শব্দের মত করছে আমার গহীনে। মনে হচ্ছে কোথায় কি যেন খুঁজছি। কাকে যেন ডাকছি। কোথায় কে যেন আমাকে উঁকি দিয়ে ডাকছে। হৃদয়ের প্রতিটি পরতে পরতে অস্থিরতা অনুভূত হচ্ছে। হঠাৎ খেয়াল করলাম, বরই গাছটিকে কোন এক নিষ্ঠুর কাটুরিয়া অর্ধ কাঁটা করে পেলে রেখেছে। যা আজও মৃত হয়েও দাঁড়িয়ে আছে। বৃষ্টিকে নিজের চোখ থেকে পড়া আগুনের ফুলকি মনে হচ্ছে।

(আমার জীবনে এমন সময় পার করছি)

০ টি +০/-০