শত বছরের বট বৃক্ষ

১৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৭

জীবনে পূর্ণতার জন্য হাজার হাজার কাঙ্ক্ষিত বস্তু লাভ করা প্রয়োজন হয়না। লক্ষ লক্ষ চাওয়াকে পূর্ণ হতে হয়না। যদিও কারো জীবনে হাজার হাজার চাওয়া থাকে, তবে নিশ্চয় সু-নিশ্চিতভাবে এও বলতে পারি তার কাছে এমন একটি চাওয়া থাকে যে চাওয়াটি তার কাছে বাস্তব, যা অন্য চাওয়া গুলোকে নিমিষেই এড়িয়ে যেতে পারে। একটি চাওয়ার কাছে অন্য চাওয়া গুলো বিবর্ণ হয়ে যায়। বাকি চাওয়া গুলোকে তার কাছে চাওয়াই মনে হয়না। একটি চাওয়া জীবনের জন্য সব চেয়ে বড় হয়ে দেখা দেয়। একটি চাওয়ার কাছে নিমিষেই মহাবীর অ্যালেকজান্ডার রাজ্য ছেড়ে দিতে পারে।



ছোটবেলায় মানুষ হাজার হাজার স্বপ্ন দেখে। কেউ ভাবে রাজা হবে, কেউবা উজির। কেউ চালক কেউবা গাড়োয়ান। কেউ গৃহী কেউবা সন্ন্যাসী। কেউ কবি কেউবা সাহিত্যিক। কত রকম যে স্বপ্ন দেখে ইয়ত্তা নেই। হাটি-হাটি পা পা করে মানুষের বয়স বাড়তে থাকে। বয়সের সাথে সাথে চাওয়ার উঠানামা হয়। হাজার হাজার চাওয়া হারিয়ে যায় জীবনের গিরিখাতে। পেছনে পড়ে থাকে চাওয়ার ভাণ্ডার। অনেক প্রত্যাশা অপূর্ণ থেকে যায়। চাওয়া হয়ে যায় দুর্বিষহ এক কল্পনা। চাওয়া ও পাওয়ার মাঝে থাকে সুবিশাল ব্যবধান। বয়স বাড়ার সাথে সাথে আরও একটি চাওয়ার বাগান তৈরি হয়।



যে বাগানে একটি বৃন্তে দুটি গোলাপ থাকবে। গোলাপের পাপড়ি বিছানো পথে দুজন হারিয়ে যাবে অজানায়। ইচ্ছের রাজ্যে ভিজিয়ে নিবে একে অপরকে। কোন কারণ ছাড়া মুখামুখি বসে থাকবে। চোখে চোখে কথা বলবে। বুঝে নিবে চোখের ভাষা। ইশারায় ইচ্ছের রাজ্যে ডুব দিয়ে হারিয়ে যাবে হারিয়ে যাওয়ার রাজ্যে। এক বালিশে ঘুমাতে গিয়ে হাতাহাতি দিবে। কেউ একজন অন্যজনের শরীরের উপর মাথা দিয়ে ঘুমাবে। দুজনের গরম নিঃশ্বাস এক সাথে ছুটে যাবে। শিহরিত হবে একে অপরের বৃন্তের খোলা ক্যানভাসে আকা তুলির মোহনায়। অকারণে খোঁচাখোঁচি করবে। এসব কিছুর কোন কারণ থাকবে না।



চাওয়া ছিল অনেক কিন্তু একটা সময় পৃথিবী ঠাই দাঁড়িয়ে ছিল তন্দ্রার জন্য। পৃথিবী হয়েছিল এক প্রস্তরময়। সারাদিন ছুটে চলতাম জানা অধ্যায়য়ের অজানা গন্তব্যে পৌছার লক্ষ্যে। নিজের মধ্যে ছিলনা কোন ব্যাল্যান্স। সারাদিন খুঁজে বেড়াতাম আমার তন্দ্রাকে। আজ আমি ঠাই দাঁড়িয়ে আছি। আমার পৃথিবী স্থির। আমার ভালবাসা আজ শুধু আমাকে ছুঁয়ে দেয়। আমার তন্দ্রা আমাকে বুকে জড়িয়ে রাখে। আগলিয়ে রাখে আমার দুঃখ কে। আমাকে নিয়ে আঁকা স্বপ্নের বাস্তব রূপ দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।



আজ আমি বড়ই আনন্দিত, বড়ই খুশি। জীবনের চাওয়াটি ছিল আমার প্রেয়সীর কাছে ভালবাসার ডাক শুনা। তা আজ আমার হাতে এসে আমাকে রাঙিয়ে দিয়েছে। আমাকে তার ভালবাসার সুমধুর ডাকে আমাকে ভিজিয়ে দিয়েছে। তন্দ্রা তোমার সহজাত প্রবণতা থেকে আসা আমার প্রতি ভালবাসার প্রকাশ আমাকে যে কত আনন্দিত করেছে, তন্দ্রা, আমি ছাড়া আর কেউ জানেনা। ১৭ মাস স্থির হয়ে ছিল হৃদ পিণ্ডের গতি। আজ তোমার সেই ডাক হৃদ পিণ্ডকে হাজার গুনে বাড়িয়ে দিয়েছে। বেড়ে গিয়েছে জীবনের প্রতি মায়া। সত্যি কি তোমার বিরহ আমার সহ্য হয়না কিন্তু তোমার বিরহ আমাকে তোমার পানে আরও ছুটে নিয়ে যায়।



আজ আমি অনন্ত বট বৃক্ষের মত স্থির দাড়িয়ে আছি। আমার ভালবাসা আমাকে শত বছরের বট বৃক্ষের মত জীবনী শক্তি দিয়েছে। আজ আমি চির যৌবনা- দুর্বার- দুর্দান্ত। আমার পরী বট বৃক্ষে আরোহণ করে দোলা দেয়। দোলতে থাকি......................................।

০ টি +০/-০