তুমি – আমি

১৯ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১:২০

আজকে সকালে যখন তোমার সাথে দেখা হল, তখন কি তুমি ভেবে দেখেছ যে আমাদের সব সমস্যা ঠিক হয়ার পর আজকে আমাদের প্রথম একান্ত সাক্ষাত ছিল? আমি জানি তুমি এইসব বিষয় নিয়ে মোটেও চিন্তিত নউ। কিন্তু আমি এগুলো ভাবি। এগুলো ভাবি বলেই দেখা করার সময় মনে করে তোমার জন্য এক গুচ্ছ গোলাপ কেনার কথা আমি ভুলি না। সেই গোলাপ গুচ্ছের মধ্যে ২টা গোলাপের কলি ছিল, তা কি তুমি খেয়াল করেছ? আমার ধারনা তুমি করনি। জান গোলাপের পাপড়ি খুব কম সময়ের মধ্যে ঝরে যাবে হয়তবা, কিন্তু কলি থেকে ফুল ফোটার জন্য সময় প্রয়োজন, সেই ফুল ফুটতে ফুটতে এবং তা ঝরে পরার আগেই হয়ত তোমার জন্য আর একটা গোলাপ কলি নিয়ে হাজির হব।

তোমার মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, প্রতিবার তোমার সাথে দেখা হলেই আমি কেন তোমার সাথে আমার সেলফি তুলি। আসলে তোমার সাথে পার করা প্রতিটি মুহূর্তই আমার কাছে অনেক আবেগময়। তুমি যখন সাথে থাক না, ওই মুহূর্ত গুলো তখনও আমার সাথেই থাকে, তাই যখন সেগুল দেখতে ইচ্ছা করে, তখন ছবি গুলো বের করে দেখি। মনের ভিতর যে কি ধরনের শান্তি লাগে তা বলে বুঝাতে পারব না আমি।

তুমি আজকে আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলে, চিড়িয়াখানায় এসে আমি খুশি হয়েছি কি ন। সত্য কথা বলতে আমি অনেক খুশি হয়েছি, কারন তুমি তো জানই, বয়সে যত বরই হইনা কেন, মনের দিক থেকে এখনও আমি স্কুল পরুয়া!! কিন্তু আমার আজকের খুশিটা ঠিক এই কারনে না, আজকে আমি অনেক খুশি কারন, এই প্রথমবার আমরা সারাটা দিন এক সাথে পার করলাম, কি পরিমান যে ভাল লাগছে এটা চিন্তা করে, তোমাকে আমি বলে বুঝাতেপারব না। আমাকে একটা পুরো দিন উপহার দেয়ার জন্য তোমাকে এত্ত গুলা ধন্যবাদ।

তুমি কি একটা জিনিস আজকে খেয়াল করেছ, চিরিয়াখানায় তোমাকে অনেক কিছুর সাথে তুলনা করলেও, মন থেকে কিন্তু একটা জিনিসের সাথেই তুলনা করেছি, যেটা তোমাকে দেয়া আমার নাম টার সাথে সম্পর্কযুক্ত, দেখি খুজে বের করতে পার কিনা প্রাণীটা কোনটা?

লেকের ধারে যখন তুমি আমি বসে ছিলাম, আর তুমি আমার কাধে মাথা রেখে আমার ফোনে তোলা ছবি গুলা দেখছিলা, তখন আমার মনে কি চলছিল জান? তখন নিজেকে কেন যেন পৃথিবীর সব থেকে সুখী মানুষ মনে হচ্ছিল। আর সেই সাথে এই মনে হচ্ছিল, এভাবে হয়ত সারা জীবন আমি তোমার সাথে কাটিয়ে দিতে পারব। কিন্তু তার পর হটাত মনে পরে যে আমরা চিড়িয়াখানায় অবস্থান করছি, আর আমি বাস্তব জীবনে ফিরে আসি!

আজকে যদি আমরা বোটানিক্যাল গার্ডেন না যেতাম তাহলে হয়ত দিনটা অপূর্ণই থেকে যেত। তুমি তো জানই, গাছ পালা আমার কত্ত ভাল লাগে!! আমার মুখের দিকে তাকিয়ে তুমি আমাকে ওখানেও যে নিয়ে যাবা, তা আসলেই আমি ভাবি নি। তবে তুমি বল, ওখানে না গেলে কি তুমি বিনা টিকিটের সেই মুভি টা দেখতে পারতা?? একে তো মেঘলা আকাশ, বিকেলের ঝিরি ঝিরি হাওয়া, চারিদিকে সুধু সবুজ গাছ পালা, তোমার হাত ধরে হাটার সময় আমি ভুলেই গিয়েছিলাম যে আমরা ঢাকাতেই আছি!! তুমি বল, তুমি যদি আমার সাথে প্রেম না করে অন্য কারো সাথে করতা, তাহলে কি সে তোমাকে জঙ্গলে ভরা পদ্ম পুকুরে নিয়ে নামত? আমি সাতার জানলে ঠিকই তোমার জন্য একটা পদ্ম নিয়ে আসতাম, কিন্তু কি করব গো বল, আমি যে সাতার পারি না! তবে পুকুর থেকে ওঠার সময় তুমি যদি ওভাবে ধপাস করে পরে না যেতে, তাহলে হয়ত আনন্দ টা পূর্ণতা পেত না!

তবে আজকে আমি উবলব্ধি করলাম, তোমার অবচেতন মনে যে আমার জন্য অনেক বেসি ভালবাসা ঘর বাধতে শুরু করেছে। না হলে যখন অই পুচ্চিটা আমার সাথে ফাইজলাম করছিল, তখন তুমি ওরে ওভাবে ঝারি মারতা না। কারন আগেও এমন অনেকবার হয়েছে, প্রত্যেকবার তুমি পরিস্থিতির মজা নিয়েছিলে। কিন্তু এইবার নাও নাই। আমার জন্য, আমার পাসে এসে দারিয়েছিলে!

তুমি যান, বাসা ফেরার পথে যখন আমরা জ্যাম এ আটকে গেলাম না, তখন প্রথমবারের মত ঢাকা শহরটাকে ধন্যবাদ দিতে ইচ্ছা করছিল। মনে হচ্ছিল যেন প্রতিটা সিগন্যালেই এমন জ্যাম পরে! তুমি জানালার পাসে বসে বিষণ্ণ চোখে বাইরে কি দেখছিলে গো? জাই দেখ না কেন, সোডিয়াম আলো যখন তোমার মুখে পরছিল, তখন না তোমাকে পরীর মত সুন্দর লাগছিল।

আমি জানি, আমরা হয়ত নাটক – সিনেমার জুটিদের মত অত আবেগ প্রবন না, কিন্তু বিশ্বাস কর, আমি তোমাকে অনেক বেসি ভালবাসি। নাটকে ওঁরা অভিনয় করে, কিন্তু আমি সব কিছুই করি মন থেকে।

০ টি +০/-০