আগে আমারই বিচার হওয়া উচিত

২২ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৫৯

প্রথম কথা হলো জীবনে যখন থেকেই আরথিক স্বক্ষমতা অরজন করেছি এখন অনুশোচনা করি সেদিন থেকে এখনো পরযন্ত আমি বড় অপরাধে লিপ্ত আছি।এ অপরাধ হলো মানবতার বিরুদ্ধে। পৈত্রিক অনেক মূল্যবান সহায় সম্পত্তিও আমার অনূকুলে রয়েছে।যেগুলোর দিন দিন মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে আমার আরথিক অবস্হা আরো বেগবান হচ্ছে। বরতমান অনুশোচনাতে মনে হয় আমার অপরাধও আরো গুরতর থেকে অধিক গুরুতর হচ্ছে। এখন মনেহয় অতীত জীবনের অরথিক ব্যয়ের সময় এবং চলমান জীবনের ব্যয়ে আমি বড় অপরাধ করছি।আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এজন্য মহা শাস্তি আমার জন্য অপেক্ষা করছে।কারন আমি বড ধরনের একজন অপব্যয়য়কারী।প্রশ্ন হল কেন আমি বিয়ের সময় এতমূল্য দিয়ে স্বরনঅ কিনেছিলাম? কেন এত দামী শাড়ী বউকে দিয়েছিলাম ?কেন আরাম দায়ক জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়েছি?কেন আমি দামী গাড়ীতে চড়ে একক ভাবে দশজনের জায়গা দখল করি ?কেন আমি আমার ছেলেদেরকে সব ক্ষেত্রে সমুন্নত রখি?কেন তাদেরকে অধিক বেতনে তথাকথিত অভিজাত স্কুলে পড়াচ্ছি ? আজ আমার জীবন চলার বরতঅমান ব্যয় আমাকে দরুনভাবে আঘাত করছে। এটা নিশ্চিত যে, এ মহা অন্যায় এবং এ মহা অপব্যয়ের জন্য অপরাধী হব।কেনই বা হব না? আবুল বারাকাত স্যারের লেখাতে দেখতে পেলাম ৮৩ ভাগ মানুষ দরিদ্র।শুধু কি দরিদ্র, উন্নত বিশ্বের সাথে তুলনা করলে আমার মনে হয় তারা দরিদ্র সীমার নীচেই বসবাস করছে।যেখানে কোটি কোটি শিশু মানবেতর জীবন যাপন করছে যেখানে কোটি কোটি মানবকূল তার মৌলিক চাহিদার অভাবে ছটফঠ করছে সেখানে আমি স্বচ্ছলের কি কোন দায়িত্ব নেই? ধরমঅ বলেন নীতি বলেন যুক্তি বলেন এমন কোন যুক্তি আছে যা আমাকে নিরপরাধ প্রমান করবে ? বাস,ট্রেন,ষ্টেশন, রাস্ত ঘাট ও গ্রাম গঞ্জ যেখানেই যায় দেখা যায় হাজার হাজার শি্শুরা ২/১ টাকার জন্য হাতে পায়ে ধরে নতুবা চরম ঝুকিঁপূরনঅ কাজে লিপ্ত হয়ে জীবিকা অন্বেষন করছে।একদিন সিলেটের জাফলং এ স্বপরিবারে বেড়াতে গিয়ে এরকম কিছু শিশুদের দিয়ে প্রাকাশ্যে আমার কান টানিয়েছিলাম এবং তাদের সমবয়স্ক আমার মেঝো ছেলেকে দিয়ে ছবি উঠিয়েছিলাম। অনেকে তা দেখে হাসছিল। কিন্তু আমার মাঝে ছিল দরুন ক্ষোভ।আমি মনে করি তাদের কাছে আমি বড় অপরাধী।আমি কত আনন্দ কত নি্রপত্তা বলয়ে আমার ঔরষজাত সন্তানদের রেখেছি। শুধুমাত্র সে পারথক্কের কারনে আমার সন্তাদের সম বয়স্ক শিশুদের কত তুচ্ছ করছি আমার তো মনে হয় আমি সাথে সাথে মহাপাপ করছি।কেন আমি অন্ততঃ আমার ব্যয়কে কমিয়ে অসহায়দের জন্য ব্যয় করি না? কেন সম্পদের পাহাড়ের দিকে নজর দিই? এটি মানবের কোন্ স্পৃহা? এ স্পৃহার বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি কি? এ স্পৃহা তো স্বচ্ছল মানবকে মহা অপরাধী বানাচ্ছে। একজন কেন অন্যজনের জন্য নীজের মত হতে পারে না? রেল লাইন দিয়ে যাওয়ার সময় এসি রুমে বসে দেখতে পায় মানব কি করুন জীবন যাপন করছে? প্রশ্ন হয় আমি কেন কৃচ্ছতা সাধন করে আমার অবশিষ্ট স্বক্ষমতা কষ্টের সাগরে ভাসমান মানবকূলের জন্য ব্যয় করি না? কেন আমি আরথিক ভাবে নিরাপদ হওয়া সত্তেও সম্পদের পাহাড় গড়ি।সম্পদ আহরন করা অপরাধ নয়। অন্যের দূরবস্হা দেখেও আমি কেন সম্পদকে আকঁড়ে ধরে রাখি? অনুভবে যা ধরা পড়ে তাহলো তাদের ঘরে আগুন লেগেছে যথেষ্ট সুযোগ থাকা সত্ত্বেও পানি না দিয়ে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত আবাস থেকে বের হয়ে অথবা বারান্দায় দাড়িয়ে মানুষের করুন আরতঅনাদ উপভোগ করছি। এর চেয়ে নিষ্টুরতম আর কি হতে পারে ? কত নিষ্টুর আমি ! অপরাধ করলে তো দুনিয়ার শাসনেও বিচার অবধারিত। আজ মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের কথা বলা হয়, যুদ্ধ সংশ্লিষ্ট দেশে নিরপরাধ মানুষকে মেরে মেরে গনকবর দেয়া ইত্যাদি আরো অন্যান অনেক জঘন্যতম অপরাধের জন্য দায়ী ব্যক্তিকে যু্দ্ধপরাধী বা মানবতা বিরোধী অপরাধী হিসেবে International court এ বিচার করা হয়। আমি যে অপরাধের কথা বলি যে বিষয়টাকে মহাপরাধ অনুভব করে ভয় পাচ্ছি সেটা কি বিশ্ব অসহায় মানবতা নিরযাতনের বিরুদ্ধে অপরাধ নয়? মৌলভী সাহেবদের বলতে শুনি কিয়ামতের দিন সম্পদশালীর হিসাব বড় হবে। নিশ্চয়ই এরমধ্যে যৌক্তিক কারন নিহিত। কেন মনীষীরা জীবন সম্পদ বিসরজন দেয় ? কি তারা বুঝতে পেরেছিল? কেন তাঁরা মানব কল্যানে সরবস্বঅ ত্যাগ করে ? আমার তো মনে হয় মহাপরাধ তাদেরকে আঘাত করে বলেই তারা সব সম্পদ মানব কল্যানে ত্যাগ করে চলে যায়। আমি অনেক ক্ষুদ্র কিন্তু আমারও ৮৩ জনের তুলনায় লক্ষ কিছু আছে। তাই নিজেকে আজ বড় অপরাধী মনে হচ্ছে। সেজন্যই বলছি আমি বড় অপরাধি আমার বিচার করুন। এ অপরাধ থেকে আমার নিস্তার হবে বলে মনে হয় না। এই guilty অনুভব আমাকে শেষ করছে। আমি এ অপরাধ থেকে বাঁচতে চায়, আমাকে উদ্ধার করুন। ।



দয়া পূরবক



গাজী ইলিয়াছ।

০ টি +০/-০