![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে সমাজকর্ম
বিভাগের ফিল্ড ওয়ার্ক চলছে । ওনাদের একটা মাঠকর্ম (ফিল্ড
ওয়ার্ক) থাকে।ছাত্র ছাত্রীদের ছোট ছোট গ্রুপে ভাগ
করে তাদের একেক এলাকার একেক
প্রতিষ্ঠানে পাঠনো হয় সমাজকর্ম বিষয়ে বাস্তব
অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য। তেমনি একটা গ্রুপকে পাঠানো হয়েছে মেরীস্টোপস এ। একেকদিন একেক যায়গায় কাজ করতে হয় আজ সমাজের এই স্তরতো কাল আরেক স্তর ৷
মেরীস্টোপসসের কার্যক্রম ঘাটছে ছাত্ররা। কাজের
ধারাবাহিকতায় একদিন তারা গেল পতিতাদের
সাথে কথা বলতে। তাদের জীবন বৃত্তান্ত, সুখ, দুঃখ
জানতে। যা দিয়ে তাদের একটি প্রতিবেদন
তৈরি করে জমা দিতে হবে।
তাদের মেরীস্টোপস এর একটি ড্রপ ইন
সেন্টারে পাঠানো হল,সেখানে প্রতি রবি বার
পতিতাদের চিকিৎসা দেয়া হয়। এছাড়া তাদের জন্য
একটি ওয়েটিং রুম রাখা হয়েছে। পতিতারা প্রতিদিন
এখানে এসে গোসল করে, টিভি দেখে, ঘুমায়, রেস্ট
নেয়।
বিকাল চারটার
মধ্যে সাজুগুজো করে বেড়িয়ে পড়ে ক্লায়েন্টদের
খোজে বুঝতে পারছি ব্যপারটা অনেকের
কাছে খটকা লাগছে। মেরীস্টোপস তাদের
ট্রিটমেন্ট করতে পারে কিন্তু তাদের জন্য
ওয়েটিং রুম রাখবে কেন? আবার গোসল করার
সুযোগ, সারাদিন ঘুমানোর সুযোগ৷
ছাত্ররা নিজেদের পরিচয় গোপন করে তাদের
সাথে মিশে যায়। এভাবে তাদের কাছ থেকে অনেক
তথ্য বের করে। তাদের সুখ-দুঃখ। এই পথে আসার
কাহিনী।
কয়েকটি পতিতা মেয়ের সাথে কথা বলা হলো৷ওখানে ২০
বছর বয়সী থেকে শুরু করে ৬০ বছর পর্যন্ত
মহিলারা রয়েছে, ,,কথোপকথনে উঠে আসে জিবনের কাহিনি.....
স্টাডি1, স্বামী বিয়ের পর দুবাই
চলে গেছে। সেও কয়েকবার বিদেশ ভ্রমণ করেছে।
তার ২ টা সন্তান
রয়েছে যারা ভালো দামী স্কুলে পড়াশুনা করে।
বর্তমানে মেয়ে ক্লাশ ফাইভে পড়ে ও ছেলে ক্লাশ
ওয়ানে। স্বামী প্রথমে তার খরচ চালালেও পড়ে আর
চালায়নি। এক সময় স্বামী তার সাথে যোগাযোগ
বন্ধ করে দেয়। পরে এক বান্ধবীর কথা শুনে সে এই
পথে পা বাড়ায়। বান্ধবী আগে থেকেই এই কাজ
করতো।
শুধু মাত্র টাকার জন্যই এই কাজে নামা?
- সন্তানদের মানুষ করতে হবে না।
বর্তমানে সে কুমিল্লা শহরের ভালো মানের
একটি বাসায় ভাড়া থাকে। বন্ধু (তারা তাদের সাথের
পতিতাদের বান্ধবী ও কায়েন্টদের বন্ধু
বলে সম্বোধন করে) কিভাবে সংগ্রহ করেন
জানতে চাইলে সে বলে বন্ধুদের কাছে ফোন
নং আছে। তারা যখন কল দেয় তখন যাই।
- রেট কেমন?
-দিনের বেলায় ৮০০ থেকে ১৫০০। যার থেকে যেমন
নিতে পারি। পার্টি ভালো পেলে টাকা বেশী। আর
কক্সবাজার বা কুমিল্লার বাইরে কোথাও
গেলে ৫০০০ টাকা। আর এখন আমি রাতে কাজ
করি না। ছেলে মেয়ে বড় হচ্ছে। তাদেরও জ্ঞান
বুদ্ধি আছে। রাতে বাইরে থাকলে তাদের মনে প্রশ্ন
দেখা দেবে।
কাজ কি হোটেলে হয়?
- না, বেশির ভাগ বন্ধুদের বাসায় হয়।
মাঝে মাঝে মেসেও হয়। আর হোটেলেও হয়।
-স্টুডেন্টদের মেস?
- না, ড্রাইভার, চাকরিজীবীদের মেস।
- তার মানে পরিচিত বন্ধুদের সাথেই শুধু হয়,
নাকি নতুন নতুন বন্ধু পান?
- না, নতুন অনেক বন্ধু হয়। কায়েন্টরা তাদের
বন্ধুদের সাথে যখন আমাদের
নিয়ে আলোচনা করে তখন তারাও উদ্বুদ্ধ হয়। এর
পর পুরান বন্ধুরা নতুনদের সাথে যোগাযোগ
করিয়ে দেয়।
- সপ্তাহে কেমন কাজ থাকে?
- ভালই। দিনে কয়েকটাও থাকে আবার
মাঝেমাঝে সপ্তাহে দুই তিনটা।
- কোন কোন লোকেরা আপাদের ডাকে?
- ভাইরে জগৎটা অনেক বিচিত্র। আপনারা যাদের
সম্মান করেন, দেখলে সালাম দেন তারাও আমাদের
ডাকে। উপরে লেবাস পড়ে থাকে ভেতরটার খবর
বোঝা যায় না। আমাদের সাথে অনেক বড় বড়
লোকেদের কানেকশন আছে। অনেক বড় বড়
রাজনীতিবিদ, প্রশাসনের অনেক বড় বড়
কর্মকর্তারাও আমদের ডাকে।
- আবার বিয়ে করলেওতো পারেন।
- একটা ছেলের সাথে সম্পর্ক হয়েছিল।
সে আমাকে বিয়ে করতে রাজিও হয়েছিল। কিন্তু
পরে প্রতারণা করছে তাছাড়া আমাদের
বিয়ে সুখের হয় না। দুই মাস আগে সব কিছু
জেনে শুনে একটা ছেলে আমাদের মত
একটা মেয়েকে বিয়ে করেছিল। প্রথম দিকে সুখ-
শান্তি হলেও পরে কথায় কথায় অতীত
নিয়ে টানাটানি করে। পরে এক সময় তাকে বেধে গরম
ছ্যাকা দিয়ে ছিল।
কুমিল্লা মেডিকেলে সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেয়
- সরকার যদি আপনাদের কাজের
ব্যবস্থা করে তবে কি এই কাজ ছেড়ে দেবেন?
- এক্ষন এই কাজ ছেড়ে দেব। সরকার যদি ৪ হাজার
টাকা বেতনের চাকরিও দেয় তবে ফ্ল্যাট
বাসা ছেড়ে কালই টিনের ঘর ভাড়া নিব। ভাই কেউ
শখে এই কাজে নামে না।
- এই পর্যন্ত কোন প্রশাসনিক জটিলতায়
পড়েননি- পুলিশ, রেব?
- যারা শুধু হোটেলে ব্যবসা করে তাদের রেট
হলো ১৫০ টাকা। এর মধ্যে আমাদের দেয়া হয় ৫০,
হোটেল ম্যানেজারের ৫০, আর র্যাব, পুলিশ ও
মাস্তানদের ৫০। প্রত্যেক মাসে টোটাল
কুমিল্লা শহরে আমাদের ইনকাম থেকে র্যব-
পুলিশের পকেটে প্রায় ৮ লাখ টাকা যায়।
তবে মাঝে মাঝে পুলিশ ডিস্টার্ব করে। এই যেমন
গত রোজার ঈদের পর পর আমি বাঙলা রেস্তোরায়
বসে চাইনিজ খাচ্ছি। সেখান থেকে আমাকে পুলিশ
ধরে নিয়ে যায়।
- বাঙলা রেস্তোরা তো আবাসিক না।
ওখানে কি করছিলেন?
- উপরে আবাসিক আছে। উপরে রেড দিয়েছিল।
পরে আমাকেও নিয়ে যায়।
- ছাড়া পেলেন কিভাবে?
- থানায় নেয়ার পর ২-৩ হাজার
টাকা দিলে ছেড়ে দেয়। আর
টাকা দিতে না চাইলে কোর্টে চালান করে দেয়।
সেখানে ২-৩ দিন রেখে মেজিস্ট্রেট ২০০
টাকা জরিমানা রেখে ছেড়ে দেয়।
- কুমিল্লার কোন কোন হোটেলে এই কাজ হয়?
- কোনটাতে হয় না বলেন, সবগুলোতেই হয়।
- শুনেছি কুমিল্লার বিভিন্ন কলেজগুলোর
ছাত্রীরাও নাকি এই কাজ করে?
- হ্যাঁ, কুমিল্লা মহিলা কলেজ,
ভিক্টোরিয়া কলেজের অনেক ছাত্রীরা আমাদের
সাথে কাজ করে। তবে টাউনের মেয়েরা না। গ্রাম
থেকে যে সব
মেয়ে কুমিল্লা এসে মেসে বা হোস্টেলে থাকে তারা
কাজ করে। কারণ অনেকে গরীব
ফ্যামিলি থেকে আসে তাই টাকার প্রয়োজন, আবার
শহরে তাদের কেউ চেনেও না। এটা একটা সুবিধা।আরেকটি স্টাডি ছিলো এইরকম... একটি ছেলের হাত ধরে সে ঘর
থেকে বেরিয়ে আসে। দুই মাস পর
ছেলেটি তাকে তাড়িয়ে দেয়। লজ্জায় আর
বাড়িতে ফিরে যাওয়া ও সম্ভব হয়নি। তাই
কুমিল্লাতে দুঃসম্পর্কের আত্মীয়ের
বাড়িতে চলে আসা। আত্মীয়র পুরা পরিবারই এই
কাজে জড়িত। তাদের প্ররোচনায় সে আজ এই পথে।
এবার তাহলে মেরী স্টোপসের ব্যাপারে জানা যাক।
তারা কেন তাদের এত সুবিধা দেয়।এখানকার একজন কর্মকর্তা ছাত্রদের জানান, তাদের লক্ষ্য হচ্ছে সমাজ
থেকে এইচআইভি এইডস তাড়ানো। আর এইডস
ছড়ানোর প্রধান মাধ্যম হলো পতিতারা। তাই ওনারা পতিতাদেরকে রেগুলার ট্রিটমেন্ট
দিচ্ছেন এবং বিভিন্ন রকম পরামর্শ দিচ্ছেন,
তারা যেন কনডম ইউজ করে।তাছাড়া
এখানকার সব ট্রিটমেন্ট বিনা পয়সায় করা হয়।যদি তাদের সাথে খারাপ আচড়ন করা হয় তাহলে সমাজে এইডস ও অন্যান্য যৌন রোগ ছড়িয়ে পরবে, শুধু মাত্র এই
শাখায় প্রায় ৪শ র মতপতিতা আসেট্রিটমেন্ট নিতে
২| ১৭ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:২৪
গাজী সুবন বলেছেন: ওদের জিবনের সত্যগুলো আসলেই সব ভয়ংকর হয়,,,,,,,,,,ধন্যবাদ, ,প্রিয় ব্লগার খেয়া ঘাট,
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই জুন, ২০১৩ ভোর ৬:১৭
খেয়া ঘাট বলেছেন: ভাইরে জগৎটা অনেক বিচিত্র। আপনারা যাদের
সম্মান করেন, দেখলে সালাম দেন তারাও আমাদের
ডাকে। উপরে লেবাস পড়ে থাকে ভেতরটার খবর
বোঝা যায় না। আমাদের সাথে অনেক বড় বড়
লোকেদের কানেকশন আছে। অনেক বড় বড়
রাজনীতিবিদ, প্রশাসনের অনেক বড় বড়
কর্মকর্তারাও আমদের ডাকে। ----------- কী ভয়ঙকর সত্য।