নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবাই যখন নীরব, আমি একা চীৎকার করি \n-আমি অন্ধের দেশে চশমা বিক্রি করি।

গিয়াস উদ্দিন লিটন

এত বুড়ো কোনোকালে হব নাকো আমি, হাসি-তামাশারে যবে কব ছ্যাব্‌লামি। - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

গিয়াস উদ্দিন লিটন › বিস্তারিত পোস্টঃ

রম্যঃ হিরুইঞ্চি!

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২১


আন্তমহাদেশীয় কবি সম্মেলন উপলক্ষে রবি ঠাকুর এখন ঢাকায়। উঠেছেন ইন্টারকন্টিনেন্টালে। বিকেলের কনে দেখা আলোয় তিনি ঢাকা শহর দেখতে বেরুলেন। সাথে গুন গুন করে সুর ভাজছিলেন,"আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালো বাসি--"।

সবে দুশ কদমও এগুননি এমন সময় এক তরুণ চেঁচিয়ে উঠল—
“পাওয়া গেছেরে পাওয়া গেছে একটা এক্সক্লুসিভ জটাধারী পাওয়া গেছে! ভাইসব, এইবার ভাইরাল হবই।”

কথাটা কবির কানে যেতেই তিনি হকচকিয়ে এদিক সেদিক তাকিয়ে দ্রুত সামনে কদম বাড়ালেন। পেছনে ৪/৫ যুবকের কন্ঠ শোনা যাচ্ছে "বুড়া মিয়া খাড়ান,বুড়া মিয়া খাড়ান।"

শুরু হল দৌড়ঝাঁপ। কেউ ধরছে কবির পাঞ্জাবি,কেউ পাতলুন,কেউ দাড়ি কে একজন উনার টু-টুনিও চেপে ধরেছে সাথে বিভিন্ন ডায়লগ -ক্ষুর ল,ট্রিমার ল,দাড়ি কাট,চুল কাট।

হঠাৎ রবীন্দ্রনাথ সাহেবের মনে পড়ল,কোথায় যেন পড়েছেন ঢাকার রাস্তায় আজকাল এক নতুন ট্রেন্ড চলছে—ভবঘুরে, উন্মাদ, কিংবা রাস্তাঘাটে থাকা জটাধারীদের ধরে এনে “সামাজিক সেবা”র নামে মাথার চুল ও দাড়ি কেটে দিচ্ছে একদল সদাশয় তরুণ। কারও আশা জান্নাত কারো আশা ভাইরাল!

টুন-নির ব্যাথায় কবি ফুটপাতে লুটিয়ে পড়লেন। অনেক কষ্টে চিঁচিঁ করে বললেন,“আরে ধৈর্য ধরো! তোমরা কি করছো? আমি নোবেল বিজয়ী কবি,আমি রবিন্দ্র নাথ ঠাকুর। এ চুল দাড়ি যে আমার ব্র্যান্ড আইডেন্টিটি।

পাগলা কয় কি? বলেই যুবকরা মুহূর্তের মধ্যে ক্ষুর,কাঁচি, ইলেকট্রিক ট্রিমার বের করে ফেললো। আশপাশে দেখা গেল জনা বিশেক তামশগির যারা মোবাইল ক্যামেরায় ভিডিও করছে।
“বুড়া মিয়া চুপ চাপ বসে পড়ুন,একটু হাসুন। লাইভ দিচ্ছি। দর্শক চাইছে রিঅ্যাকশন।”

ঠাকুর শেষ চেষ্টা করলেন—
“দেখো ভাই, আমি কিন্তু নোবেলজয়ী মানুষ। এই দাঁড়ি কাটলে কিন্তু ইতিহাস পাল্টে যাবে।”

এক তরুণ হেসে জবাব দিল,
“বুড়া মিয়া ইতিহাস পাল্টে গেলে তো ভাইরাল হব আরও দ্রুত!”

ফলাফল? অল্প সময়েই রবীন্দ্রনাথ হলেন একেবারে বেল মাথা, ক্লিন শেভড। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে তিনি গভীর নিঃশ্বাস ফেলে বললেন—

“হে কাঁচি, হে ট্রিমার,
তুমি বড় নির্মম...
দাঁড়ি লইয়া করিলে যে তাণ্ডব,
ভাইরাল হইল মনুষ্যসমাজ,
হারাইল রবি—পরিচয় তাহার!”

সাথে ভাবনা উদয় হল,হায় এই বেশে আমি যদি শান্তিনিকেতনে ফিরে যাই, ছাত্ররা তো চেনবেই না উল্টো ভাববে কোন হিরুইঞ্চি বোধহয় বদনা টদনা চুরি করতে এসেছে।”

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:১১

কামাল১৮ বলেছেন: মজার সাথে লুকিয়ে আছে এক গহীন বার্তা।

২| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:২১

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: পাগল টাইপ লোকজনের চুল দাড়ি কাটা শুরু হয়েছিলো ভারতের কিছু সংস্থার দেখাদেখি। যখন কতিপয় লেবাসধারী একই কাজ শুরু করলো ভিউ র আশায় বাঙ্গু সুশীলরা ক্ষেপে গেল। লেবাসিরা এইকাজ নিজেদের বুদ্ধি থেকে করেনি। যারা শুরু করেছিলো তারা ছিলো সুশীল! শুরুতেই এটা নিয়ে প্রতিবাদ হলে এই কান্ড হতো না।

৩| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৩২

জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:




আপনি কি কখনো বুঝবেন যে, আমেরিকান ক্যু আমাদের জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে?

৪| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:১৪

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:


জাতির কপাল শনির যাত্রা তো সবে মাত্র শুরু।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.