নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাবীব_ফরিদপুর

হাবীব_ফরিদপুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাঈদীর ধর্মান্তর প্রক্রিয়া ও কিছু প্রশ্ন

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:১৯













সাঈদীর ধর্মান্তর প্রক্রিয়া ও কিছু প্রশ্ন



সাঈদী সম্পর্কে সম্প্রতি কিছু প্রচারণা দেখা যাচ্ছে যে সে ৬০০ এর অধিক হিন্দু-ধর্মাবলম্বীকে মুসলিম বানিয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু সাঈদীর মতো বিতর্কিত ব্যক্তির কোন দিকটি দেখে ধর্মান্তরিত হয়েছে এ বিষয়টি আমাকে ভাবিয়েছে



বিশ্বে মুসলিম মিডিয়া ও খ্রিস্টান প্রভাবিত মিডিয়াগুলোর সংবাদ পর্যালোচনা করলে ধর্মান্তরের অন্যতম কারণ দেখতে পাই বিবাহ। পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে অন্য ধর্ম থেকে মুসলিম ধর্ম গ্রহণকারী দেশের প্রথম স্থানে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ আফ্রিকা, দ্বিতীয়টি ভারত(দক্ষিণ, ইউপি ও মহারাষ্ট্র)। মুসলিম থেকে খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরে প্রথম ইন্দোনেশিয়া দ্বিতীয় রাষ্ট্রটির নাম অনেককেই হয়তো অবাক করবে; পাকিস্তান।



ব্রিটিশদের প্রায় ৩০০ বছরের রাজত্বে ভারতবর্ষে এত ধর্মান্তরের ঘটনা ঘটেনি যতটা ঘটেছে ব্রিটিশদের চলে যাবার পর। গত ৪০ বছরে পাকিস্তানে এ ধর্মান্তরের সংখ্যা ৫০,০০০ [সূত্র: আই.আর.এফ-ডট-নেট(ইন্ডিয়া), আইপিসিআই(দক্ষিণ আফ্রিকা)]।



আর একটি মজার তথ্য হল ধর্মের রাজনীতি-করণ অব্যাহত থাকলেও পাকিস্তানে ধর্ম-ভিত্তিক দলগুলো ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হয়েছে। সম্ভবত সেনাবাহিনীর রোষানলকে ধর্মীয়-রাজনীতিকরা মান্য করে।



একথা অস্বীকার করা যাবে না শেখ আহমেদ দীদাতের মতো অনেক ইসলামী ব্যক্তিত্ব তাদের প্রচার ও ব্যক্তিত্বের গুণে এক্ষেত্রে আশাতীতভাবে সফল হয়েছেন।



প্রসঙ্গ সাঈদী:



সাঈদীর রাজনীতিতে হাতেখড়ি জামাতের মাধ্যমে নয় আল-বদর হিসাবে তাই এ নদী জামাতের মোহনাতেই মিলিত হয়। সাঈদীর নাম আসলেই প্রথমে মনে আসে ১৯৭১ সালে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব জাফর ইকবাল ও হূমায়ূন আহমেদের পিতা ফয়জুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের কথা। দেলোয়ার হোসেন শিকদার কোন শিক্ষাগত যোগ্যতার বলে আল্লামা বা মাওলানা বা আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী ব্যক্তিত্বের টাইটেল ব্যবহার করে আমি খুব অবাক হই।



সাঈদীর ওয়াজ:



বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে ওয়াজের যে প্রচলন তা একটি নির্দিষ্ট শ্রেণীর লোককেই শুধু আকৃষ্ট করে; যদিও পরিবর্তন হচ্ছে। সাঈদীদের ওয়াজ সে রকমই।



কোথায় যেন লেখা পড়েছি, "সাঈদী কত মানুষকে মুসলিম বানিয়েছে, আমার মতো কতজনকে নবী প্রেমে কাঁদিয়েছে... এখন জেলে..." লেখক মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য লিখেছে কি-না জানিনা; তবে তাদের/মূলত তার ওয়াজের মূল বৈশিষ্ট্য : (আপনারা শুনে সত্যতা যাচাই করুন):



১. মানুষকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করা,



২. ধর্ম ভিত্তিক মিথ্যা/বানোয়াট কৌতুককে নিজের জীবনের ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করা (যেমন আমি এক নামাজিকে জিজ্ঞেস করলাম দোয়া মাসুয়া জানেন, নামাজি বলে হ্যাঁ জানি ঈদের নামাজে পড়া হয়...);



৩. আল্লাহ নিয়েও তামাশা করা হয়;



(সাঈদী: সকল প্রশংসা কার নামে? ওয়াজ শ্রোতারা বলে আল্লাহর নামে...... সংসার ভাঙবো কার নামে? শ্রোতারা বলে আল্লাহর নামে......। ওয়াজকারী ও শ্রোতা সকলেই মজা পায়।



৪. "একটি দল আল্লাহর পথে, ইসলামের পথে.. অন্য একটি দল ইসলামের বিরুদ্ধে..."



এই কথা বলার ক্ষমতা আল্লাহ কাউকে দেননি। কোন বিভক্তি না থাকা সত্ত্বেও আল্লাহ তার নবী(স:)কে কোরআনে বলেছেন, ও মুহাম্মদ বিভক্তির ক্ষেত্রে আপনার করণীয় কিছু নেই...আমি শেষ বিচারের দিনে তা নির্ধারণ করবো...."





যে ব্যাপারে নবীকে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে তা সাঈদী সুনির্দিষ্ট কোন উদ্দেশ্য নিয়ে বলেছে অথবা তার জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা রয়েছে।



৫. "অমুক দলকে ভোট দেয়া ফরজ..."।



ফরয নির্ধারণের অধিকার শুধুমাত্র আল্লাহ ও রাসুলের।



৬. কেয়ামতের ময়দানের কিছু ভয়াবহ চিত্র বর্ণনা ছাড়া রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত করার লক্ষ্যেই ওয়াজ করা হয়।



৭. সাম্প্রদায়িক উস্কানি একটি সাধারণ ঘটনা।



"এ রকম একটা লোক ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে, আল্লায় তারে বিদায় করি দিছে। আমরা ওইটার নাম নিলাম না পবিত্র মাহফিলে। দেশে মরলে খুবই অসুবিধা হইত। আল্লাহ শয়তানেরে বিদায় করছে।"



"যদি শান্তি পেতে হয় তবে খ্রিস্টান আর ইহুদিদের জাতিসংঘের মুখে লাথি মেরে মুসলমানদের জাতিসংঘ করতে হবে।"



"আমাদের দেশের রেডিও এবং টেলিভিশনে বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ পড়া হয়। তারপর বলে, ‘বিশ্বের সকল সৃষ্টির মঙ্গল হোক। ওং শান্তি, ওং শান্তি’। আমি বলেছি এভাবে যদি কেউ ‘ওং ওং’ করতে করতে রক্তবমিও করে তবুও শান্তি প্রতিষ্ঠা হতে পারে না।) এবং মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশকে একটা তালেবানি ধরনের রাষ্ট্রে পরিণত করা। যেখানে নন-মুসলিম থাকলেও তারা একটা নির্জীব, ক্লীব হয়ে থাকবে। তাদের কোনো মত থাকবে না, পথ থাকবে না। আমরা যেটা বলে দেব বা স্টেট যেটা বলে দেবে সেটাই মানতে হবে। এদের কোনো রাষ্ট্রীয় অধিকার থাকবে না, নাগরিক অধিকার থাকবে নাÑ এটাই তারা চায়।" [বক্তব্যের সূত্র ম্যাগাজিন 'সাপ্তাহিক']





উল্লেখ্য হযরত মুহাম্মদ(স:) এর চারিত্রিক উদারতা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের কাছে দৃষ্টান্ত-স্বরূপ ছিল যে চরিত্রকে আল্লাহ দৃষ্টান্ত/মডেল/অনুসরণীয় হিসাবে ঘোষণা করেছেন। তুলনা করুন সাঈদী কেমন অনুসরণকারী?



"জাতীয়তাবাদ কার তৈরি- আল্লাহর না মানুষের? পুঁজিবাদ কার তৈরি- আল্লাহর না মানুষের? সমাজতন্ত্র কার তৈরি- আল্লাহর না মানুষের? ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ কার তৈরি- আল্লাহর না মানুষের? মানুষের তৈরি করা এসব মতবাদকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য যারাই সংগ্রাম করে, যারাই লড়াই করে আল্লাহ্পাক বলেছেন তারা লড়াই করে শয়তানের পথে।"



সাঈদী কার পথে কোন পথে?



৮. বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হয় ওয়াজকারীদের আর্থিক সহায়তা করলে কি সওয়াব পাওয়া যাবে তার উপর।



বাংলাদেশ ছাড়াও প্রবাসীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অর্থের উৎস সম্পর্কে তাদের কোন জবাবদিহিতা করতে হয় না।



ইসলাম মূলত মিশনারি রিলিজিয়ন যদিও বাস্তবে এটি অনুসরণ করে খ্রিস্টান সম্প্রদায়। বিশ্বে বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান ছাড়া কোন দেশের ধর্ম প্রচারকরা রাজনীতিতে সংশ্লিষ্ট হয়ে ধর্মকে বিতর্কিত করেনা। ইসলাম কোন সীমানা/ভূখণ্ডের কোন ভূমিকা নেই। উম্মাহ বা কমিউনিটি ধারণাই প্রধান। প্রত্যেকের জবাবদিহিতা ব্যক্তিগত পর্যায়ের, দলগত নয় কারণ ব্যক্তি পরিশুদ্ধ হলেই সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত হবে। উপরন্তু বিভক্তি, ধর্মীয় কারণে দল/উপদল হারাম।



বাংলাদেশের জনসাধারণ অসাম্প্রদায়িক। সকল ধর্মের লোকদের এই সম্প্রীতিই ইসলামের স্বরূপ। সাঈদীর মতো বিতর্কিত, হীন রাজনৈতিক মানসিকতা একজন মানুষের মাঝে এমন কি আছে যে মানুষ ধর্মান্তরিত হয়েছে?



বাস্তবতা জানা গেল এরকম: ১৯৭১ সালে ধনাঢ্য হিন্দুদের মালামাল লুট করা হতো আর সহায়সম্বলহীন সংখ্যালঘুদের জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করে পাক-সেনাদের দেখানো হতো।



"ভারত ফেরত হিন্দুরা কড়া পাকিস্তান ভক্ত", "..জন হিন্দু রেজাকার বাহিনীর কৃতিত্বে মুগ্ধ হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছে..", "নওমুসলিমরা পাকিস্তান রক্ষায় আল-বদর বাহিনীকে সহায়তায় বদ্ধ পরিকর.." ১৯৭১ সালে এই ধরণের শিরোনামে দৈনিক পাকিস্তান ও সংগ্রামে প্রকাশিত সংবাদ বা উপসম্পাদকীয় একটি সাধারণ ঘটনা ছিল।



২০০১-২০০৬ এ সময়কালে আবার সাঈদী কর্তৃক ধর্মান্তরের ঘটনা ঘটেছে।



শাহরিয়ার কবিরের প্রামাণ্যচিত্র ‘জিহাদের প্রতিকৃতি’তে যে চিত্র ফুটে উঠেছে তা ভয়াবহ।




অবশ্যই কেউ কারও ধর্মে হস্তক্ষেপ করতে পারে না আবার কেউ জোর করে ধর্মান্তরিত করতে কিংবা ধর্মান্তর ঠেকাতে পারে না। কিন্তু যদি তা প্রশ্ন-সাপেক্ষ হয় তবে তা উদ্বিগ্ন হবার মতো ব্যাপার কারণ এতে ইসলামের ইমেজ খারাপ হবার সম্ভাবনাই বেশী।



ধর্মান্তরিতরা সকলেই পিরোজপুরের কেন?



সাঈদীকে জামাত শিবিরের কেউই আঞ্চলিক নেতা বলবে না। বরং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী ব্যক্তিত্ব বলতে পছন্দ করে। ওয়াজে তার চরিত্রের যে পরিচয় পেয়েছি তাতে কেউ ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হবে না একথা বলার অপেক্ষা রাখে না। পিরোজপুর জামাতের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম ও সাঈদীর ভাই মোস্তফা সাঈদী ছিল সর্বেসর্বা। তাদের দোর্দণ্ড প্রতাপে প্রশাসনসহ সবকিছুই হাতের মুঠোয় ছিল। তাদের অপশাসনের কথা পিরোজপুরবাসী ভুলতে পারবে কিনা জানিনা।



সাঈদী পিরোজপুরে রাজনৈতিক কার্যক্রম ও জামাত-শিবিরের প্রভাব বাড়ানো ছাড়া তেমন কোন কাজই করেনি। তার ব্যক্তিত্ব বিতর্কিত।



তাহলে কেন অত-জন ধর্মান্তরিত হয়েছে বলে প্রচার চলে?



২০০২ সালে জামাত আন্তর্জাতিক ইসলামী ব্যক্তিত্ব শেখ আহমেদ দীদাতকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানায়। সাঈদী ও মাওলানা তারেক যোগাযোগ করে। সাঈদীর অপকর্মের ইতিহাস জেনে তিনি প্রত্যাখ্যান করেন। এর অববহিত পরে ৭১ ও ২০০১ এর লুটপাটের পর আন্তর্জাতিক খ্যাতির লক্ষ্যে ধর্মান্তরিত হবার ঘটনা প্রচার শুরু হয়।



ধর্মান্তরিতদের অনেকে পরবর্তীতে এ্যামনেস্টি সহ বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনে অভিযোগ জানায় যে হত্যার হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক তাদের ধর্মান্তরিত করা হয়েছে। কিছু ধর্মান্তরের নাটক পাকিস্তানের আরওএস এবং লস্করে তৈয়বার সদস্যদের দ্বারা মঞ্চায়িত হয় বলে জানা যায়।



মঞ্চস্থ অভিনেতারা ছাড়া ধর্মান্তরিত সকলেই পিরোজপুরের।



আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই ব্যক্তিত্বের খ্যাতি কি শুধুমাত্র তার নির্বাচনী এলাকায় সীমাবদ্ধ যেখানে সে সবচেয়ে কম সময় দিত? জোট সরকারের আমলে এ বিষয়গুলো ধামাচাপা দিতে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করা হয়।



ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ভাইস চেয়ারম্যান, সর্বদলীয় মানবাধিকার কমিটি লর্ড এরিক এভবরি এক চিঠিতে সরকারকে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানিয়ে লেখেন,

"আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এটা নির্ভর করছে সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার ওপর। বিশেষভাবে যারা মানবাধিকারে বিশ্বাস করেন। আরো নির্দিষ্টভাবে সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের অধিকার ও মর্যাদার প্রতি যারা বিশ্বাসী। তাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে"



ইসলামের ইতিহাস বিভাগের এক শিক্ষক (নাম মনে নেই) টিভিতে বলেছিলেন, "আমাদের দেশের ভক্তরা অতি ভক্তিতে শিরক-এ-রুবুবিয়াত করে।" সাঈদী/জামাত-ভক্তদের ক্ষেত্রে। তারা ভাবে সাঈদী-নিজামীরা নিষ্পাপ।



জেগে জেগে ঘুমালে কিছু করার আছে কি?



মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:২২

পলাশমিঞা বলেছেন: বড়ই অকৃতজ্ঞ লোক!

২| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৫৬

বিদ্রোহী রণক্লান্ত ৭১ বলেছেন: কনসার্ট হইলে সাধুবাদ, আর ওয়ায মাহফিলে মৌলবাদ

৩| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৫৮

সুমন এম রহমান বলেছেন: হাবিব ,আপনি অনেক গুছিয়ে লিখেছেন,. তবুও বেশ কিছু বিষয়ে দ্বিমত পোষন করি।
১। সাঈদির যুদ্ধাপরাধ নিয়ে যে কথগুলো বলছেন, সেগুলো প্রমানের অপেক্ষায় আছে। সেটা সে করে থাকলে শাস্তি পাবে। এটা নিয়ে কথা বলব না। তবে শুধু একটা কথা বলি , গনপতি হালদারকে মারার কেসে যে সাঈদীকে জড়ানো হয়েছে এমন কোনো কথা আমি সত্যিই শুনিনি। কারন গনপতির ভাই অমলেন্দু হালদার এখনও মঠবাড়িয়া কে এম লতীফের শিক্ষক। আমি দীর্ঘদিন তাদের সঙ্গ পেয়েছি। কিন্তু তার হত্যাকান্ড নিয়ে সাঈদির নাম শুনিনি। শুনেছি ওখানকার বর্তমান সরকারদলীয় এমপি ডা.আনোয়ার হোসেনের বাবা , জনাব এসাহাক হাজির নাম। বিশ্বাস না হলে গিয়ে দেখেন। তবে পারের হাট বসে উনি তখন কি করেছে সত্যিই আমি জানিনা। হয়"ত উনি দায়ী। এবং সেটা হলে বিচার হোক।
২। ওয়াজ প্রসঙ্গে:- ঘন্টার পর ঘন্টা ওয়াজ করলে অনেকসময় বিরক্তিকর লাগে। সাঈদি অনেক হাস্যরসের মাধ্যমে ওয়াজ প্রকৃয়াটাকে শ্রুতিমধুর করতেন। মানুষ দুর দুরান্ত থেকে তার ওয়াজ শোনার জন্য আসত। এই আকর্ষনেই। মজা, বা মস্করাগুলো আল্লাহর বিরুদ্ধে ছিল বলে মনে করিনা। পিরোজপুরে সাম্প্রদায়িক সম্পৃতি ছিল এবং আছে। কিন্তু ওখানে আওয়ামী এমপি আউয়াল বিশ্বাস করেন, মহা ক্যাডার। ওনারাই পিরোজপুর দখলে রেখেছিল। এমনকি বিএনপি আমলেও। সেখানে এমনিতেই বেশিরভাগ লোক হিন্দু। আউয়াল মিয়া আর তার ভাই মালেক মিয়াকে ভয় পায় না এমন কেউ সেখানে নাই।

৩। বিশ্বব্যাপী মুসলমানরা যে মার খাচ্ছে সেটা নিয়ে কথা বলাটা উস্কানী কিভাবে হল? উনি যুদ্ধাপরাধী হলে বিচার হোক, কিন্তু চান্স পেয়ে ইহুদিবাদী কথা ছড়াবেন , এটা কেমন কথা!

৪। যারা ধর্মান্তরিত হয়েছে বেশিরভাগই চট্রগ্রামের। আর পিরোজপুরে তার নিজের এলাকায় হিন্দু বেশি। বেশি হিন্দু যেখানে সেখানে ধর্মান্তরিত হওয়ার চান্স ও বেশি। খানজাহান আলী যখন এসেছিলেন সেই এলাকায় তখন এক দিনে ২০০০০ লোক ধর্মান্তরিত হয়েছিল। তো সেটা খারাপ কিভাবে।
আপনি প্রমান করতে চেয়েছেন যে তিনি ভয় দেখিয়ে লোকজনকে ধর্মান্তরিত করেছিলেন। ভুল । মহা ভুল। তার দুই টার্মের এমপি জীবনের অন্তত এক টার্ম আমি পিরোজপুরে ছিলাম। বিশ্বাস করেন , যে কয়টি মারামারি হয়েছে সেটা পিরোজপুর কলেজকেন্দ্রীক , এবং শিকদার বংশের ছেলেরা কেরেচে। তারা সবাই আওয়ামী লীগ। আমি নাম বলছি, লিটন শিকদার, মামুন শিকদার( পরে বিএনপি নেতা মুক্তাকে প্রকাশ্যে হত্যা করে ) আরো আছে সাগর শিকদার, সব নাম এখন আর মনে পড়ছে না। খোজ নিলে সব পাবেন। পিরোজপুরের রাজনীতি টাউন হল কে কেন্দ্র করে হয়। কিন্তু সেখানে সাঈদিকে কখোনো যেতে দেখেছি বলে তো মনে হয় না। পিরোজপুরের নতুন বাসষ্টান্ড ও সেই সংলগ্ন মসজিদ ও মসিদবাড়ী মন্দিরটি অনেক কষ্ট করে সাঈদির করতে হয়েছে। সুতরাং বেহুদা দোষ দেয়ার চান্স পেলেই দেয়া ঠিক না। সে যুদ্ধাপরাধী হতে পারে। তার বিচার হোক। কিন্তু তাই বলে ইচ্ছে মত খারাপ বলবেন, যা করে নি তাও বলবেন , এটা কেমন কথা। আরো বিষয় আছে, সাঈদির এমপিত্বের সময় কেমন ছিলেন, এটা ওখানকার হিন্দুদের জিজ্ঞেস করে দেখবেন। প্লিজ জিজ্ঞেস করবেন।
অন্তত এমপি হওয়ার পরে সে যে ক্ষমতার অপব্যাবহার করেনি এটা আমি নিজে দেখেছি। আর সেটা যদি এখন অস্বীকার করি , তাহলে ভুল হবে।
তবে ধর্ম তো একটা ভীতি, মানুষ ধর্মভীরু। সাঈদি ধর্মের কথা বলতো বলে অনেক কিছুতে মানুষ ভয় পেত। যেমন এক লোক রাতে আউয়াল সাহেবের হয়ে নির্বাচনি ওয়ার্ক করতে যাচ্ছে। রাত ৯ টায় সে তড়িঘড়ি করে বাসায় ফিরে আসল। তার যু্ক্তি হল, আল্লাওয়ালা এক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে রাতে নামব। যদি সাপে কামড়িয়ে মেরে ফেলে তো দোজখে যাব। থাক দরকার নাই। এটা অন্য জিনিস। ধর্ম যদি ভন্ডামী হয় সেই দোষে তো সাঈদি দোষী ই। সেই ভীতি টা জনগনের মধ্যে ছিল। এখনও আছে। পিরোজপুরের সাত টা থানায় ই আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তায় ধ্বস নেমেছে। গিয়ে নিজে দেখে আসুন না।

৪| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৫৯

অবাঞ্চিত বলেছেন: সাঈদী ১টা ভন্ড। ইস্লামের নামে ব্যবসা করাই এদের কাজ

৫| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৮:০৬

amhabib বলেছেন: sumon m rahman jotil bolecen.

৬| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৮:২০

বিকল্প ধারা বলেছেন: সুমন এম রহমান বলেছেন: হাবিব ,আপনি অনেক গুছিয়ে লিখেছেন,. তবুও বেশ কিছু বিষয়ে দ্বিমত পোষন করি।
১। সাঈদির যুদ্ধাপরাধ নিয়ে যে কথগুলো বলছেন, সেগুলো প্রমানের অপেক্ষায় আছে। সেটা সে করে থাকলে শাস্তি পাবে। এটা নিয়ে কথা বলব না। তবে শুধু একটা কথা বলি , গনপতি হালদারকে মারার কেসে যে সাঈদীকে জড়ানো হয়েছে এমন কোনো কথা আমি সত্যিই শুনিনি। কারন গনপতির ভাই অমলেন্দু হালদার এখনও মঠবাড়িয়া কে এম লতীফের শিক্ষক। আমি দীর্ঘদিন তাদের সঙ্গ পেয়েছি। কিন্তু তার হত্যাকান্ড নিয়ে সাঈদির নাম শুনিনি। শুনেছি ওখানকার বর্তমান সরকারদলীয় এমপি ডা.আনোয়ার হোসেনের বাবা , জনাব এসাহাক হাজির নাম। বিশ্বাস না হলে গিয়ে দেখেন। তবে পারের হাট বসে উনি তখন কি করেছে সত্যিই আমি জানিনা। হয়"ত উনি দায়ী। এবং সেটা হলে বিচার হোক।
২। ওয়াজ প্রসঙ্গে:- ঘন্টার পর ঘন্টা ওয়াজ করলে অনেকসময় বিরক্তিকর লাগে। সাঈদি অনেক হাস্যরসের মাধ্যমে ওয়াজ প্রকৃয়াটাকে শ্রুতিমধুর করতেন। মানুষ দুর দুরান্ত থেকে তার ওয়াজ শোনার জন্য আসত। এই আকর্ষনেই। মজা, বা মস্করাগুলো আল্লাহর বিরুদ্ধে ছিল বলে মনে করিনা। পিরোজপুরে সাম্প্রদায়িক সম্পৃতি ছিল এবং আছে। কিন্তু ওখানে আওয়ামী এমপি আউয়াল বিশ্বাস করেন, মহা ক্যাডার। ওনারাই পিরোজপুর দখলে রেখেছিল। এমনকি বিএনপি আমলেও। সেখানে এমনিতেই বেশিরভাগ লোক হিন্দু। আউয়াল মিয়া আর তার ভাই মালেক মিয়াকে ভয় পায় না এমন কেউ সেখানে নাই।

৩। বিশ্বব্যাপী মুসলমানরা যে মার খাচ্ছে সেটা নিয়ে কথা বলাটা উস্কানী কিভাবে হল? উনি যুদ্ধাপরাধী হলে বিচার হোক, কিন্তু চান্স পেয়ে ইহুদিবাদী কথা ছড়াবেন , এটা কেমন কথা!

৪। যারা ধর্মান্তরিত হয়েছে বেশিরভাগই চট্রগ্রামের। আর পিরোজপুরে তার নিজের এলাকায় হিন্দু বেশি। বেশি হিন্দু যেখানে সেখানে ধর্মান্তরিত হওয়ার চান্স ও বেশি। খানজাহান আলী যখন এসেছিলেন সেই এলাকায় তখন এক দিনে ২০০০০ লোক ধর্মান্তরিত হয়েছিল। তো সেটা খারাপ কিভাবে।
আপনি প্রমান করতে চেয়েছেন যে তিনি ভয় দেখিয়ে লোকজনকে ধর্মান্তরিত করেছিলেন। ভুল । মহা ভুল। তার দুই টার্মের এমপি জীবনের অন্তত এক টার্ম আমি পিরোজপুরে ছিলাম। বিশ্বাস করেন , যে কয়টি মারামারি হয়েছে সেটা পিরোজপুর কলেজকেন্দ্রীক , এবং শিকদার বংশের ছেলেরা কেরেচে। তারা সবাই আওয়ামী লীগ। আমি নাম বলছি, লিটন শিকদার, মামুন শিকদার( পরে বিএনপি নেতা মুক্তাকে প্রকাশ্যে হত্যা করে ) আরো আছে সাগর শিকদার, সব নাম এখন আর মনে পড়ছে না। খোজ নিলে সব পাবেন। পিরোজপুরের রাজনীতি টাউন হল কে কেন্দ্র করে হয়। কিন্তু সেখানে সাঈদিকে কখোনো যেতে দেখেছি বলে তো মনে হয় না। পিরোজপুরের নতুন বাসষ্টান্ড ও সেই সংলগ্ন মসজিদ ও মসিদবাড়ী মন্দিরটি অনেক কষ্ট করে সাঈদির করতে হয়েছে। সুতরাং বেহুদা দোষ দেয়ার চান্স পেলেই দেয়া ঠিক না। সে যুদ্ধাপরাধী হতে পারে। তার বিচার হোক। কিন্তু তাই বলে ইচ্ছে মত খারাপ বলবেন, যা করে নি তাও বলবেন , এটা কেমন কথা। আরো বিষয় আছে, সাঈদির এমপিত্বের সময় কেমন ছিলেন, এটা ওখানকার হিন্দুদের জিজ্ঞেস করে দেখবেন। প্লিজ জিজ্ঞেস করবেন।
অন্তত এমপি হওয়ার পরে সে যে ক্ষমতার অপব্যাবহার করেনি এটা আমি নিজে দেখেছি। আর সেটা যদি এখন অস্বীকার করি , তাহলে ভুল হবে।
তবে ধর্ম তো একটা ভীতি, মানুষ ধর্মভীরু। সাঈদি ধর্মের কথা বলতো বলে অনেক কিছুতে মানুষ ভয় পেত। যেমন এক লোক রাতে আউয়াল সাহেবের হয়ে নির্বাচনি ওয়ার্ক করতে যাচ্ছে। রাত ৯ টায় সে তড়িঘড়ি করে বাসায় ফিরে আসল। তার যু্ক্তি হল, আল্লাওয়ালা এক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে রাতে নামব। যদি সাপে কামড়িয়ে মেরে ফেলে তো দোজখে যাব। থাক দরকার নাই। এটা অন্য জিনিস। ধর্ম যদি ভন্ডামী হয় সেই দোষে তো সাঈদি দোষী ই। সেই ভীতি টা জনগনের মধ্যে ছিল। এখনও আছে। পিরোজপুরের সাত টা থানায় ই আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তায় ধ্বস নেমেছে। গিয়ে নিজে দেখে আসুন না।

৭| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৮:৩৫

নিষ্‌কর্মা বলেছেন:

কেবল মাত্র এই উপমহাদেশেই ধর্ম নিয়ে রাজনীতি চলে এমন প্রকাশ্যভাবে। এইটা আমাদের সমাজ এবং জাতিকে পেছনের দিকে টেনে রাখছে। আর যারা ধর্ম্ভিত্তিক রাজনীতি করছেন, তারাও এমন পুরানো কথা বলেন [ কেননা ধর্ম ১৪০০ বছর আগেকার, তার পুনঃলিখন সম্ভবপর নয় ] যা শুনলে যে কেউই ভয় পেতে পারেন।

তাই ধর্মকে ব্যক্তিগত ব্যবহার এবং কিছু কিছু সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য রেখে দিলে ভালো হয়। ব্যক্তিগত পর্যায়ে ধর্মকে ব্যবহার করা হলে যদি মানুষ বদলাতে পারে, তাহলেই কেবল ইসলামী রাষ্ট্র হতে পারে।

খেয়াল করে দেখুন, মদিনাতে কিন্তু ইসলামি রাষ্ট্র ছিল না! চার খলিফারাও কিন্তু ইসলামি রাষ্ট্র চালান নাই। ইসলামি রাষ্ট্র বলতে যা বোঝায় তা আসলে বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্র! যার গোড়া পত্তন করে গেছেন অন্যতম সাহাবী মু'আইবিয়া।

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১০:১২

হাবীব_ফরিদপুর বলেছেন: কেবল মাত্র এই উপমহাদেশেই ধর্ম নিয়ে রাজনীতি চলে এমন প্রকাশ্যভাবে। এইটা আমাদের সমাজ এবং জাতিকে পেছনের দিকে টেনে রাখছে।-- সহমত ।
মদিনাতে কিন্তু ইসলামি রাষ্ট্র ছিল না! চার খলিফারাও কিন্তু ইসলামি রাষ্ট্র চালান নাই। ইসলামি রাষ্ট্র বলতে যা বোঝায় তা আসলে বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্র! যার গোড়া পত্তন করে গেছেন অন্যতম সাহাবী মু'আইবিয়া। --- থট প্রোভকিং .....

৮| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১১:০৩

নাগরিক দর্পণ বলেছেন: নিষ্‌কর্মা বলেছেন: খেয়াল করে দেখুন, মদিনাতে কিন্তু ইসলামি রাষ্ট্র ছিল না! চার খলিফারাও কিন্তু ইসলামি রাষ্ট্র চালান নাই। ইসলামি রাষ্ট্র বলতে যা বোঝায় তা আসলে বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্র! যার গোড়া পত্তন করে গেছেন অন্যতম সাহাবী মু'আইবিয়া।

আপনার এই বক্তব্যের সাথে দ্বীমত। মদিনাতে যে রাষ্ট্র ছিল সেটিই ইসলামি রাষ্ট্র। এখনকার ইসলামী দলগুলো তেমন রাষ্ট্র চায় কিনা জানি না। তবে, আপনার কেন মনে হল যে চার খলিফা ইসলামী রাষ্ট্র চালাননি জানাবেন কি?

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ১০:৪৮

হাবীব_ফরিদপুর বলেছেন:
এইডা দেখছেন ?

৯| ০১ লা মে, ২০১২ বিকাল ৩:৫৭

মেহেদীহাসান- বলেছেন: ভাই আপনি খুবই সুন্দর লিখেছেন । আল্লাহ আপনাকে আরও গ্ঙানী করুক .....

১০| ০১ লা মে, ২০১২ বিকাল ৪:১৮

শিপু ভাই বলেছেন:
খুব সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছেন ভাই। প্রিয়তে রাখলাম।
+++++++++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.