|  |  | 
| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস | 

ছবি: গুগল থেকে নেয়া।
জয়নাল সিকদার। সমাজের সবাই জনু সিদ্দার বলে ডাকতেন। ছোটখাটো শরীর বলে নিন্দুকেরা অন্য একটি নামেও ডাকতেন। সমাজের একজন শ্রমজীবী মানুষ ছিলেন। আমাদের বাড়ির পাশেই তাদের বাড়ি। আমরা তাকে কাগা(কাকা) বলে ডাকতাম। একই তল্লাটে কাছাকাছি বসবাসের সুবাদে খুব কাছ থেকে তাকে দেখার সুযোগ হয়েছে। একক কোনো পেশার লোক ছিলেন না তিনি। কৃষি কাজ, মাছ শিকার, খেজুর গাছ বা তাল গাছ থেকে রস বের করা সহ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। সমাজের প্রতিটি মানুষেরই কোন না কোন বিষয়ে হবি থাকে। জনু কাকা ও ব্যতিক্রম ছিলেন না।তার হবি ছিল সাপ ধরা। যা অত্যন্ত ভয়ঙ্কর।
আজ আমাদের গ্রাম্য হাট। চৈত্রের দুপুরে মেঘ মুক্ত আকাশে সূর্য  তীক্ষ্ণ আলো দেয়ায় প্রচন্ড ঘাম ঝরানো গরম। চৈত্রের এই দুপুরের তাপদাহ উপেক্ষা করে আশপাশের দুচার গ্রামের লোকজন হাটে আসছে। হাটের পাশেই ফসলের জমিতে বেশ বড় একটা জটলা। হাটের জমায়েত হতে ঢের বড় বৈকি ছোট নয়। হাটমুখী লোকজন ওখানে জমা হয়েছে। মাঝে মাঝে লোকজন হল্লা দিচ্ছে। ছোট্ট মানুষ বড় মানুষের ফাঁক ফোঁকড় দিয়ে সামনে গিয়ে দেখি জনু কাকা সদ্য খোঁড়া এক গর্তের থেকে গোখরা সাপ বের করে আনছে। ডান হাতে সাপের মাথা বাম হাতে লেজের অংশ। লোকজন মুহুর্মুহু হাততালি আর হল্লা দিচ্ছে।কাকি খবর পেয়ে কাপড়ের আঁচল মাথায় দিতে দিতে ছুটে আসছে আর সীমার মধ্যে থেকে কাকাকে উদ্দেশ্য করে বকাবকি করছে। কাকা তখন লোকজনের হাততালি আর হল্লা শুনে পুলকিত, রোমাঞ্চিত, শিহরিত। লোকজনের প্রশংসায় ভাসছে। কাকির বকাবকি কাকার কর্ণ কুহরে পৌঁছানো সম্ভব না। পৌঁছলে ও সেদিকে কান দেয়ার সময় কাকার নেই। সাপটাকে কাকা খেলার মাঠে এনে ঘাসের ওপর ছেড়ে দিয়ে কিছু সময় খেলা দেখালেন। কাকি ওদিকে বিপদের আশঙ্কা নিয়ে চিল্লাচিল্লি করেই যাচ্ছে। যদিও সাপ খেলা দেখে আনন্দ পাচ্ছিলাম । তবে কাকির মুখের দিকে তাকিয়ে কষ্ট ও হচ্ছিল। খেলা শেষ করে সাপটা মেরে ফেলা হলো। দুএকজন বাদে সবাই কাকার প্রশংসা করতে করতে হাটে গেল। গ্রামের কয়েকজন বয়স্ক মুরব্বি কাকাকে ভর্ৎসনা করলো। যদি তোমার কিছু হয়ে যেত তাহলে তোমার স্ত্রী, সন্তানের কী অবস্থা হতো? তোমার অবর্তমানে কে দেখতো তাদের? যাদের উৎসাহে তুমি এই ভয়ঙ্কর খেলায় মেতেছিলে তারা তোমার পরিবারের দ্বায়িত্ব নিতো? তোমার খেলা দেখানো শেষ তারা ও চলে গেছে। কাকা মাথা নিচু করে কত সময় বসে বাড়ি ফিরে গেলেন। 
দেশের সমাজে, রাজনীতিতে এ রকম হাততালি দেয়ার, বাহবা জানানোর মানুষের অভাব নেই। নিজেদের প্রয়োজনে এরা হাততালি দেয়। আবার প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে মুখ ফিরিয়ে নেয়। জনু কাকারা হারিয়ে গেলে এরা আবার তাদের হাততালি আর বাহবার মধ্য দিয়ে নতুন জনু কাকার জন্ম দেয়। কিন্তু জনু কাকারা সময় থাকতে বুঝে না।
 ১২ টি
    	১২ টি    	 +১/-০
    	+১/-০  ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯  ভোর ৪:৩২
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯  ভোর ৪:৩২
হাফিজ বিন শামসী বলেছেন: বিষ দাঁত ভাঙ্গার থেকে ও যেটা বেশী প্রয়োজন তা হচ্ছে জনু কাকাদের উদ্দেশ্যে আমাদের হাততালি বন্ধ করা।
২|  ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯  রাত ১২:২৫
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯  রাত ১২:২৫
আহমেদ জী এস বলেছেন: হাফিজ বিন শামসী,
লেখার একেবারে শেষের লাইন তিনটি একেবারেই বাস্তব। আমরাও  "জনু কাগা"র মতো সময় থাকতে বুঝিনে।
  ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯  ভোর ৪:২৯
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯  ভোর ৪:২৯
হাফিজ বিন শামসী বলেছেন: ধন্যবাদ সম্মানিত, প্রিয় ব্লগার।
৩|  ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯  সকাল ১০:৪৩
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯  সকাল ১০:৪৩
ইসিয়াক বলেছেন: দারিদ্রতা এমনই এক অভিশাপ যেখানে নূন্যতম জীবিকার প্রয়োজনে , দুমুঠো খাবারের জন্য মানুষকে দিয়ে অনেক কাজ ই এ সমাজ করিয়ে নেয়। মিথ্যা হাততালি দিয়ে উৎসাহ দেয় নিজের প্রয়োজনে । লোকটির অবস্থানে নিজের কথা যদি একবার ভাবতো । তাহলে নিশ্চয় এরকম করতো না। 
মন্তব্য টি সকালে লিখেছিলাম পোষ্ট করতে গিয়ে দেখি নেট শেষ । এখন নতুন করে মন্তব্য করলাম   
ধন্যবাদ
  ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯  দুপুর ১২:৫২
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯  দুপুর ১২:৫২
হাফিজ বিন শামসী বলেছেন: আমরা কেউই আপনার মন্তব্যের মত করে ভাবি না যদি অমন করে ভাবতাম আমাদের সমাজটা আসলে অনেক সুন্দর হতো। অনেক মূল্যবান মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। দোয়া করি, সবাইকে নিয়ে ভালো থাকুন।
৪|  ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯  সকাল ১১:০২
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯  সকাল ১১:০২
রাকিব আর পি এম সি বলেছেন: আপনার লেখাটির মাধ্যমে সমাজের বাস্তব চিত্রটিই ফুঁটে উঠেছে। আমরাও এর ব্যতিক্রম নই 
  ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯  দুপুর ১২:৫৪
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯  দুপুর ১২:৫৪
হাফিজ বিন শামসী বলেছেন: জ্বী, ঠিক বলেছেন। আমরাও হাততালি দেওয়ার কাতারে আছি।
মন্তব্যর জন্য ধন্যবাদ ভাই। দোয়া করি, সুখে থাকুন।
৫|  ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯  বিকাল ৫:৩০
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯  বিকাল ৫:৩০
রাজীব নুর বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেছেন। 
এসময় তো এরা যাযাবর হিসেবে সারাদেশ ঘুরে বেড়াতো। নৌকায় সংসার পাততো। আজ তারা প্রায় হারিয়েই গেছে।
  ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯  ভোর ৪:৩১
১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯  ভোর ৪:৩১
হাফিজ বিন শামসী বলেছেন: এখনো কিছু কিছু দেখা যায়। তবে সংখ্যায় খুবই কম।
ধন্যবাদ।
৬|  ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯  দুপুর ১:১২
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯  দুপুর ১:১২
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: 
এদের নিয়ে ভাবার কেউ নেই।
++++++++
  ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯  দুপুর ১:০৯
১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯  দুপুর ১:০৯
হাফিজ বিন শামসী বলেছেন: জ্বী, ভাবার কেউ নেই। কিন্তু উস্কানিদাতার অভাব নেই।
ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯  রাত ৯:২৩
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯  রাত ৯:২৩
পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: জনু কাকারা আজীবন অবহেলিতই থেকে যায়
সাপের খেলা দেখানো ভালো, তবে বিষদাঁত ভাঙার পর।