মোদের গরব, মোদের আশা

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:০৬

আজ আর মোবাইলের ক্যালেন্ডার খুলে তারিখ দেখতে হচ্ছে না। অনলাইনে এসেই বুঝে গিয়েছি আজ কত তারিখ! ব্লগে, স্ট্যাটাসে, প্রোফাইল পিকচারে শুধুই ভাষার প্রতি ভালোবাসা, শহীদের প্রতি ভালোবাসা, দেশের প্রতি ভালোবাসা, মানুষের প্রতি ভালোবাসা......ভালোবাসায় ঘেরা আমাদের চারপাশ!
এত ভালোবাসার ভীড়েও কিছু অবাঞ্চিত প্রশ্ন আমাদের কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে!
--আমরা কি বাংলা বলা ভুলে যাচ্ছি?
- আমি বলি, না! আমরা বাঙ্গালি! বাংলা আমাদের অস্তিত্ত্বে মিশে আছে, আমরা কেন বাংলা ভুলে যাবো! আমরা কিছুই ভুলিনি। যে ছেলেটা/মেয়েটা হরদম ইংরেজি বলছে সেও কিন্তু কথার মাঝে আটকে গিয়ে বলছে, "ইয়ে মানে! I mean!" তারমানে বাংলা বলা আমরা ভুলে যাইনি, বরং বিপদে পরলে বাংলার কাছেই আমরা সবার প্রথমে আশ্রয় খুঁজি।
-- তবে কি আমরা অকৃতজ্ঞের মত বাংলা বানান ভুলে যাচ্ছি?
- আমি বলি, না! আমরা অকৃতজ্ঞ নই। বানান আমাদের ভুল হচ্ছে, ব্যাকরণে আমরা আটকে যাচ্ছি, কিন্তু আমরা অকৃতজ্ঞ নই। অকৃতজ্ঞ হলে আমরা ভাষাগত এই সমস্যাগুলো নিয়ে এত চিন্তিত হতাম না। অন্যের বাংলায় ভুল নিয়ে কষ্ট পেতাম না। ভাষায় উন্নতি ঘটাতে আপ্রাণ চেষ্টা করতাম না।
-- কেনো তবে একটি দিনের জন্য ভাষার প্রতি ভালোবাসা! প্রতিদিন নয় কেনো?
- আমি বলি, প্রতিদিন ভালোবাসি না কে বলেছে! আমরা প্রতিদিন ভালোবাসি। প্রতিদিন ভালো না বাসলে কষ্ট করে নিজের প্রেমিক/প্রেমিকাকে ভুলে ভালোবাসা দিবসে "লাভ ফর বার্ন্ট পিপল" ক্যাম্পেইন চালাতাম না, বাংলাদেশ ক্রিকেট খেলায় জিতলে অতি-আনন্দে রেলিং ছাড়া ছাদে উঠে চেঁচাতাম না। বাঙ্গালির ভালোবাসা আর আবেগ নিয়ে যদি সন্দেহ করি তাহলে তো ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসই বদলে যাবে!
-- তাহলে সমস্যাটা কোথায়?
- আমি বলি, সমস্যাটা মোটেও আমাদের জাতীয়তাবোধের নয়। সমস্যাটা আমাদের পরিচর্যায়, সমস্যাটা আমাদের মানব-বৈশিষ্ট্যে। আমরা মানুষ তাই আমরা সবসময় সমান পরিচর্যা করতে পারি না। আমরা মানুষ তাই আমরা নেতিবাচক দিকটা আগে দেখি।
-- সমাধান কোথায়?
- আমি বলি, সমাধান সহজ যদি আমরা ইতিবাচক দিকগুলো আগে দেখে আশ্বস্ত হই। যদি আমরা অন্যের ভাষা নিয়ে চিন্তা না করে নিজের ভাষার উন্নতি দিয়ে পরিবর্তনের সূচনা করি।

"আমিই তো একটুকরো বাংলাদেশ! আমিই তো একটুখানি বাংলা ভাষা! আমাকে দিয়েই তো হতে পারে শুভ-সূচনা!"

(নিজের ভুলগুলোর জন্য আমি দুঃখিত, আমি নিজেও চেষ্টা করছি উন্নতির। ধন্যবাদ।।)

২ টি +১/-০