নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনেক বিষয়ে অনেক কিছু বলতে পারব হয়তো... কিন্তু নিজের ব্যাপারে কিছু বলতে গেলেই মুখে কিছু আসে না... টাইপ ও কিছু করতে পারি না... -_-

অশান্ত কাব্য

শুভ... ভাল্লাগে গল্প করতে আর রিকশায় ঘুরতে.... ব্লগিং অন্যতম সখ... সেই উদ্দেশেই এ প্রচেষ্টা...জটিলতা সবার জীবনেই থাকে... তবুও সেগুলো পাড়ি দিয়ে এক চিলতে সুখের সন্ধানে ঘুরে বেড়াই...

অশান্ত কাব্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

আবীর এখন তন্দ্রাচ্ছন্ন

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:২৫

আবীর... উত্তরার এক সাদামাটা একটা স্কুলের ক্লাস ৯ এ পড়ে । খুবই মেধাবী । ক্লাসের ফার্স্টবয় সে ।পড়াশুনা ছাড়া বলতে গেলে যেন কিছুই বুঝে না । বন্ধুরা ওর সাথে দুষ্টামি করে... দোস্ত তোরে ওই মেয়ের সাথে জোস মানাইব ... দোস্ত ও তোর সাথে পারফেক্ট... ইত্যাদি ইত্যাদি । আবীরের মাথায় এইসব কিছুই ঢুকে না । কিন্তু একটা মেয়েকে নিয়ে ফ্রেন্ডরা একটু বেশীই চ্যাতায়... তন্দ্রা । আবীরের অলক্ষেই নামটা কেন জানি ওর মনে থাকে । সব নাম ভুলে কিন্তু ওই নামটা আর ভুলতে পারে না । সময় বয়ে যায়... নদির স্রোতের বাঁয়... ছোট্ট আবীর এসএসসি পাস করে ভালভাবেই ।



এর মধ্যে ওরা বাসা চেঞ্জ করে । সিদ্ধেশ্বরীতে ওরা বাসা নেয় । সৃষ্টিকর্তার করুণায় ভাল একটা কলেজে চান্স পায় আবীর । আবার সেই পড়াশুনা । বাসার পাশেই অনেক স্যার ম্যাডামরা পড়ান । আবীর তার বাসার নিচতলার এক স্যারের কাছে ফিজিক্স পড়ার জন্যে ভর্তি হয় । এইটা ছিল কো-এড । ছেলে মেয়ে একসাথে । প্রথম কয়েকদিন আবীর একটু বেকায়দায় পড়ে বৈকি ( :|| :|| :|| ) । আবীরের এক পুরন বন্ধু শিহাবও পড়ে তার সাথে । ভালই হল... কথা বলার মত আপাতত কাউকে তো পাওয়া গেল । মজার কথা... শিহাব পড়ানোর মাঝখানে আবিরকে বলল “দোস্ত, এই ব্যাচে তন্দ্রাও পড়ে” । আবীর হঠাৎ যেন একটা ধাক্কা খেলো । “কস কি!!!” শিহাব তখন আবীরকে দেখাল “ঐযে সামনের রো এর কোনায় বসা মেয়েটা । ” আবীর বেশ শিহরিত । যার কথা সে এতদিন শুনেছে আজ তাকে সামনাসামনি দেখবে । কিন্তু হায় সেইদিন আর তন্দ্রা একটুও পাস ফিরে না । পিছনের দিকে তাকানো তো দুরের কথা । স্যারের পড়ানো শেষ হয় । ইনট্রভারট আবীর আর অপেক্ষা করে না , ভাবে “Better luck next time… ” । সেইদিন আর দেখা পায়না আবীর ।







এর পরেরদিনের ঘটনা । আবীর এবার তাড়াতাড়ি আসে । একদম সবার আগেই । গিয়ে একদম ফার্স্ট বেঞ্চে বসে । আর অনেক আশা নিয়ে অপেক্ষা করে । একসময় আসে এক সেলওয়ার কামিজ পরা রূপসী ললনা । আবীরের আর চিনতে কষ্ট হয় না যে এই সেই । চেহারা আগে না দেখলেও চুলের কাটটা পিছন থেকে ঠিকমতই দেখেছিল সে । বসার সিটগুলা ছিল ইনডিভিজুয়াল । এসে বসে ঠিক আবীরের পাশের সিটটায় । ও মাই গড... আবীরের হৃদপিণ্ড আর কত পাম্প করবে । ভিতরে যেন এক ছোটখাটো সিডর হইতেসে । আবীর একদম রোবটের মত পুরো ক্লাসটা শেষ করে । মাঝখানে হঠাৎ ম্যাডামের ইরেজার পড়ে যায় । একদম আবীরের সিটের সামনে । কি আর করার... বেচারা কোনমতে ইরেজারটা তুলে পাশের সিটে রাখে । “থ্যাংক ইউ” । সুন্দর করে বলে তন্দ্রা । আবীর আর কি করবে । কাঁপা কাঁপা স্বরে বলে দেয় “ওয়েলকাম” ।



এভাবে দিনের পর দিন যায়... ক্লাসের পর ক্লাস যায় । আবীর আর তেমন পাশের সিটটাতে বসতে পারে না । বিকালে প্রাকটিক্যাল থাকে তার । ক্লাস শেষ করে আসতে দেরি হয়ে যায় বেচারার । কিন্তু একটু চোরা দৃষ্টি দিয়ে সবার অলক্ষে তন্দ্রাকে দেখে নেয় সে । নিজের অজান্তে সে হয়তো তার প্রেমে পড়ে যায় ।



কিন্তু লাজুক আবীর বলতে পারে না তার অনুভূতির কথা । “এইটা তার দ্বারা পসিবল না”... সে ভাবে । প্রতিদিন ক্লাসের আগে স্যারের বাসার সামনে ওয়েট করে স্যারের জন্যে । এর মাঝে হুটহাঁট একটু চোখাচোখি হয় তাদের মাঝে । কিন্তু এইটুকুই... এর বেশী আর কিছুই হয় না । কোনদিন তাদের মাঝে কোনও কথাও হয় না । একদিন শুধু হালকা কথা হয়...



আবীর ক্লাস শেষে বেরোবে । সবাই বেরচ্ছে । সে স্যারের বাসার ভিতরের দরজার সামনে দাড়িয়ে বের হবার জন্যে অপেক্ষা করছে । দরজাটা দিয়ে ভিতরের রুমে যাওয়া যায় । তো হঠাৎ তন্দ্রা আসল তার সামনে । সে জায়গা করে দিল যাতে সে বেরিয়ে যেতে পারে । কিন্তু তন্দ্রা দাড়িয়ে । কথাও নেই মুখে । একটু পরেই আবীর বুঝতে পারে সে ভিতরে যেতে চাইছে । সাথে সাথে সে দরজা ছেড়ে দাড়ায় ।

“ও আচ্ছা ভিতরে??”

-“হুম ” । তন্দ্রা বলে... তারপরে ভিতরে চলে যায় । এইটুকু কথা আবীরের মনের মধ্যে গেথে থাকে অনেকদিন ।

দেখতে দেখতে আবীরের এইচএসসি পরীক্ষা চলে আসে । স্যারও মডেল টেস্টের পর ব্যাচ ক্লজ করে দেন । শেষ দিনে একটা বিদায় আয়োজন হয় । আবীর জানতো হয়তো আর কোনদিনও দেখা হবে না । হয়ও নি আর ...



আবীর ভালভাবেই পরীক্ষা দেয় । সৃষ্টিকর্তাও তার ওপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেননি । ভাল একটা ভার্সিটি থেকে পাস করে আবীর । একটা ভাল ফার্মে চাকরিও পেয়ে যায় । এক পড়ন্ত বিকেলে সে বাসায় ফিরছিল । ফুটপাতে দাড়িয়ে আছে রাস্তা পার হবে এই আশায় । হঠাৎ সামনে দিয়ে একটা রিকশা চলে গেল । পিছনের সিটে একটি মেয়ে আর ছেলে বসে আছে আর কথা বলছে । মেঘলা কাল চুল দেখে আবীরের চিনতে তেমন কষ্ট হয় না । বাসায় ফিরে আবীর । ফ্রেশ হয়ে বুকশেলফ থেকে একটা হিমুর বই নেয় সে । বারান্দার ইজি চেয়ারটাতে গিয়ে বসে । বিকালের হালকা রোদ আসছে । আবীর বই পড়ে আর আজকের দিনটার কথা ভাবতে থাকে । ক্লান্তিতে দু’চোখে ঘুম নামে তার ।



আবীর এখন তন্দ্রাছন্ন...

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৪৭

বিকেল বলেছেন: আবীর এখন তন্দ্রাছন্ন... চমৎকার ফিনিশিং

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:০০

অশান্ত কাব্য বলেছেন: ধন্যবাদ বিকেল ভাই । :)

২| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৫৯

জেরিফ বলেছেন: +++++++

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:২৮

অশান্ত কাব্য বলেছেন: ধন্যবাদ । :-B :-B

৩| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৫

রিফাত হাসান০২২৮ বলেছেন: সবই মায়া ...তন্দ্রাচ্ছন্ন ত ...তন্দ্রা কেটে গেলে দেখবেন সব আগের মত

ভাল লাগল ...গম্প পড়ে .. :)

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৫

অশান্ত কাব্য বলেছেন: ঠিকই বলেছেন ভাই । " Life must go on" তাই না ?? 8-|

৪| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৫০

সাদা মেঘ কালো ছায়া বলেছেন: আবীরের জন্য খারাপ লাগল । :(

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:১১

অশান্ত কাব্য বলেছেন: কি আর করবেন ভাই... জগতে কত আবীর আসে কত আবীর যায়... ফেইট ছাড়া কিছুই না...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.