নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি জানিনা আমি কে?

সুলাইমান হোসেন

সামুতে যা প্রকাশযোগ্য নয় তা আমার ব্যক্তিগত ব্লগে লিখে রাখি যেমন আত্মজীবনি,কবিতা ইত্যাদি https://hridoyeralo.blogspot.com/

সুলাইমান হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

চূড়ান্ত সফলতার ডাক ১ম পর্ব :তওবা

২০ শে জুলাই, ২০২৫ রাত ১২:২৮

চূড়ান্ত সফলতার ডাক ১ম পর্ব
তওবা
তওবা হলো এলমে মারেফাতের প্রথম ঘাটি,আবার এটাই শেষ ঘাটি।বালেগ হওয়ার পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত কোনো মানুষই তওবা থেকে অমুখাপেক্ষী হতে পারেনা।
নবিজি সাল্লাল্রাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দৈনিক সত্তর থেকে একশত বার তওবা করতেন।
একটি সহিহ হাদিসে আছে,প্রত্যেক আদম সন্তানই গুনাহগার,গুনাহগারদের মধ্যে উত্তম সে যে তওবা করে।
তওবা কি?
তিনটি শর্ত যদি পাওয়া যায়, তাহলে তওবা পূর্ন হবে,এর কোনো একটি শর্ত অনুপস্তিত থাকলে তওবা হবেনা,
১।তৎক্ষনাৎ গুনাহ ছেড়ে দেওয়া।
২।গুনাহের জন্য মনে মনে লজ্জিত হওয়া,অনুতপ্ত হওয়া,এস্তেগফার করা।
৩।ভবিষ্যতের জন্য দৃঢ় সংকল্প অথবা অঙ্গিকার করা,যে এই গুনাহ জীবনে আর কোনোদিন করবনা।(দেখুন,এহইয়া,তবলীগে দ্বীন)
যদি আবারও গুনাহ হয়ে যায় তাহলে আবারও তওবা করতে হবে।
তওবার প্রকারভেদ:
বিভিন্ন মানুষের জন্য তওবাও বিভিন্ন রকম হয়।
সাধারন মানুষ সুধু পাপ থেকে তওবা করেন।আর বিশেষ মানুষেরা অথবা আরিফরা অলসতা উদাসিনতা থেকে তওবা করেন।
সাধারন মানুষের তওবা,
যারা আরিফ নয়,তাদের দ্বারা পাপ কাজ হয়ে যায়,তারা পাপ থেকে তওবা করেন,
এরা হলো আসহাবুল ইয়ামিনদের দল। আসহাবুল ইয়ামিনদের মধ্যেও মর্যাদায় অনেক তারতম্য রয়েছে,সবার মর্যাদা সমান নয়,কারো মর্যাদা বেশি আবার কারো কম।সুতরাং যার যার মর্যাদা অনুযায়ী তওবাও সেরকমই হয়ে থাকে।
আরিফদের তওবা
আরিফদের তৌবা বিস্ময়কর। তারা সাধারন মানুষের মতো পাপে লিপ্ত হয়না,তাহলে তারা কি থেকে তওবা করেন।
ইমাম গাজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহির তবলীগে দ্বীন কিতাবে আছে,(আমি স্মৃতিশক্তি থেকে লিখছি,হুবহু কিতাবের উদ্ধৃতি নয়)
আরিফরা একঘাটি থেকে অন্য ঘাটিতে প্রত্যাবর্তন করতে থাকেন।যখন তারা নিন্ম জগত থেকে উঁচু জগতের দিকে ভ্রমন করেন,তখন তারা নিন্ম ঘাটি বা নিন্ম জগত থেকে তওবা করতে থাকেন।তারা প্রতি মুহুর্তে আগের মূহুর্তের থেকে একধাপ এগিয়ে যান।এবং সামনে এমন আলো দেখতে পান,সেই আলোর তুলনায় পেছনের ঘাটিগুলো অপূর্ণাঙ্গ মনে হয়,এবং এতদিন তারা এই আলোতে না এসে নিজের ক্ষতি করেছেন এমন একটা অনুভব অনুশোচনা তৈরি হয়।হাকিকতে এটাকেই তওবা বলা হয়।নবীজি যে সত্তর থেকে একশতবার তোওবা করতেন,তার রহস্য এটাই ছিলো,কারন নবীজির দ্বারা বায্যিক কোনো গুনাহ হতোনা,অভ্যান্তরিন গুনাহ থেকেও তিনি পবিত্র ছিলেন।তাহলে তিনি কি থেকে তওবা করবেন।উত্তর সেটাই যা আগে বললাম।

তওবা কবুল হওয়ার আলামত

তওবা—এটা শুধুমাত্র মুখে বলা নয়, বরং হৃদয়ের গভীর থেকে ফিরে আসার এক আত্মিক আহ্বান। পাপের আঁধার থেকে নূরের পথে যাত্রার নাম তওবা। তবে কিভাবে বুঝব, আমাদের তওবা কবুল হয়েছে কি না?

ইসলামিক মানদণ্ড ও আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলামত বা চিহ্ন পাওয়া যায়, যা একজন তওবাকারীর জীবনে প্রতিফলিত হয়—

১. গুনাহের প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি হওয়া

আগে যে পাপে আনন্দ পেত, এখন তা মনে হলেই ঘৃণা ও অনুশোচনায় হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ে।

২. নেক আমলের প্রতি ঝোঁক ও আকর্ষণ

দিল নেক কাজের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে। নামাজ, কোরআন, যিকির—সবকিছুতেই আত্মা প্রশান্তি খোঁজে।

৩. সাপ যেমন পুরনো খোলস ত্যাগ করে, তওবাকারীও গুনাহ ত্যাগ করে

একজন সত্যিকারের তওবাকারী তার অতীত পাপগুলোকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে নতুন এক জীবন শুরু করে।

৪. গরুর দুধ যেমন দোহনের পর আর ফেরানো যায় না, তেমনি সে আর ফিরে যায় না পাপের পথে

তওবাকারীর মন এতটাই পরিশুদ্ধ হয় যে সে আর গুনাহের দিকে ফিরতে চায় না, চাইলেও পারে না।

৫. আচরণে কোমলতা আসে

তার ব্যবহারে, কথায় ও আচরণে বিনয়, সহনশীলতা ও সৌন্দর্য প্রতিফলিত হতে থাকে।

৬. সর্বাঙ্গীন সৌন্দর্য দেখা দেয়

তওবাকারীর দেহ, মন, চিন্তা ও চালচলনে এক অনুপম সৌন্দর্যের জন্ম হয়।

৭. উর্ধ্বজগতের প্রতি এক রহস্যময় সফর শুরু হয়

সে এক অদৃশ্য সফরে পা রাখে—যেখানে সিরাতুল মুস্তাকিম নামক পথের উপর সে অবিচল থাকে।
এই পথই আখিরাতে ‘পুলসিরাত’ নামে পরিচিত। দুনিয়াতে যে ব্যক্তি তওবার মাধ্যমে এই পথ ধরে, সে আর ফিরে তাকায় না।


---

একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা

এই সব আলামত পাওয়া মানে এই নয় যে, তা সহজসাধ্য কাজ।
তওবা করা সহজ হলেও, তওবার উপর অটল থাকা কঠিন।
এর জন্য চাই ধারাবাহিক মুজাহাদা, আন্তরিকতা, আত্মসমালোচনা এবং সর্বোপরি আল্লাহর রহমত।


---

আসুন, আমরা প্রত্যেকে নিজের জীবনে এই আলামতগুলো অন্বেষণ করি।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে কবুলকৃত তওবাকারী বানান—আমিন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.