বন্ধ ঘরের গল্প

১০ ই মে, ২০১৪ রাত ৮:৫৬

ঘরটা বেশ বড়ই । বাবা-মার অর্থনৈতিক অবস্থা অতটাও খারাপ নয় , ঘরটা বড়ই হবার কথা । কেমন জানি ভ্যাপসা একরকম গরম , একটা গুমোট ভাব পুরো ঘরটায় । একরকম কিছুটা নোংরাই পরিবেশ । বাইরের বাতাসও যেন ঘরটায় ঢুকতে চায় না । জানালা খুলে রাখলেও তাই ঘরটায় বাতাস ঢোকে না । বেশিরভাগ সময় দরজাটা বন্ধ থাকে ঘরের । কি করে ছেলেটা ঘরের ভেতর ?



একটা মোটামুটি উচ্চ মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির ছেলে কেমন থাকে ? লজিকালি , খুব ভালো থাকার কথা । তার নিজের একটা ঘর থাকে , পড়ার মত কাপড় থাকে , ভালো ভালো খাবার থাকে ।



লেখাপড়া নিয়ে তেমন কোনো চিন্তাই থাকে না তার । কলম একটা চাইলে তিনটা এসে যায় , দরকার মত খাতা পেয়ে যায় , বই-পত্রের কথা ছেড়েই দিলাম । হ্যাঁ , খুব ভালো থাকার কথা তার ।



তাই এমন ফ্যামিলির একটা আঠারো বছরের ছেলে যদি বলে তার মন খারাপ , বেশিরভাগ মানুষ সেটা আদিখ্যেতা হিসেবে নেয় । আঠারো বছরের একটা ছেলের মন খারাপ থাকবে কেন ? কিসের চিন্তা তার ? সে কাজ করে না , কোনো অজানা খরচের দিকও থাকার কথা না । সে খায়-দায় , ঘুমায় , আর মাঝেমাঝে লেখাপড়া করে ? তার মন খারাপ থাকবে কেন ?



কেউ তার কথা যেন বুঝতেও পারে না , চায়ও না হয়ত । আর তাই আঠার বছরের ছেলেটা হঠাত্‍ একা হয়ে যায় । একসময় মা-বাবার গা ঘেঁষে থাকা ছেলেটা হঠাত্‍ই যেন খুব দূরে সরে যায় । এই একা ছেলেটার সঙ্গী হয় তার অগোছালো , নোংরা ঘরটা ।



ঘরটা বেশ বড়ই । কেমন জানি ভ্যাপসা একরকম গরম , একটা গুমোট ভাব পুরো ঘরটায় । একরকম কিছুটা নোংরাই পরিবেশ । বাইরের বাতাসও যেন ঘরটায় ঢুকতে চায় না । জানালা খুলে রাখলেও তাই ঘরটায় বাতাস ঢোকে না । বেশিরভাগ সময় দরজাটা বন্ধ থাকে ঘরের । বাবা-মার চোখে এই বন্ধ দরজাটা খুব সহজেই পড়ে । তাদের প্রশ্ন , "দরজা আটকে ছেলেটা সারাটা দিন করেটা কী ?"



ছেলেটা হয়ত কিছুই করে না । সে একা থাকে , কারণ ইদানিং তার একা থাকতে ভালো লাগে ।

০ টি +০/-০