কোনো এক বৃষ্টি-দুপুরে......

১২ ই অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৪:৩০

সেই বুড়োটা, বাজারের ব্যাগটা হাতে নিয়ে যে আজও হাঁটতে ভালোবাসে।
অথবা সেই মহিলাটাও, জীবন যার কাছে কোনোদিন সহজ হয়ে ধরা দেয় নি। রোদে পুড়ে যার ফর্সা চামড়া আজ কালচে।
সেই ছেলেটা, প্রেমে ব্যর্থ হয়ে জীবন আজ পানসে যার কাছে।
নাকি সেই মেয়েটা, কোচিং থেকে ফিরছে। প্রেম করার সময় বা ইচ্ছা, কোনোটাই যার নেই।

এঁদের মধ্যে সম্পর্ক কোথায়? এঁদের মধ্যে কোনো সম্পর্কই নেই। খুঁজলে হয়ত কোনো মিলও পাওয়া যাবে না। তবুও তারা চারজনই আজ একই ছাউনির আশ্রয়ে।

ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। অমন বৃষ্টিতে বুঝি হাঁটা যায়? দৌড়াতে থাকা দুনিয়াটা তাই হঠাৎই থেমে যায়। চলতে থাকা চার জীবনের গল্প, এসে মিলে যায় কোনো এক ছাউনির নিচে।

দৃষ্টিটা হয়ত এখনও সজাগ। কি আছে ঐ দৃষ্টিতে? জীবনের হিসাব-নিকাশ? চাওয়ার দাবী, পাওয়ার আনন্দ? নাকি না পাওয়ার হতাশা, হারানোর দুঃখ?

বুড়ো লোকটা, জীবনের গল্পের পাতাগুলো যার ভরেই গেছে প্রায়। শেষের শুরুটাও হয়ত হয়ে গেছে, শরীরে বাসা বেঁধেছে রোগ। পাশে দাঁড়ানো ছেলেটার মাঝে সে কি নিজেকে খুঁজে পায়? নাকি খোঁজে কাউকে, যে একদিন তার পাশে এমনভাবে দাঁড়িয়েছিল, আজ যে অনেক বড় হয়ে গেছে।

অথবা কোচিং শেষ করা মেয়েটা? পাশে দাঁড়ানো মহিলাটির দিকে তাকিয়ে সে হয়ত ভবিষ্যৎ-এর আভাস পায়, জীবনের যুদ্ধ আরও অনেক বাকি। নাকি ভাবে............

কি জানি, হয়ত কিছুই ভাবে না। জীবনের হিসাব-নিকাশ, সে বড় জটিল হিসাব। আর বাংলাদেশ থেকে তো বোধহয় ক্যালকুলেটর ব্যাবহারই উঠিয়ে দেবার চেষ্টা চলছে! ওসব জটিল হিসাব-নিকাশ তাই বৃষ্টির মাঝে মানায় না।

শরীরটা শুকনো, আর পায়ের স্যান্ডেল কাদা থেকে যতক্ষণ দূরে থাকে, ততক্ষণ বৃষ্টি এক অদ্ভুত মুগ্ধতার নাম। কত মানুষের প্রথম প্রেমের নামও তো বৃষ্টি!

ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে।
চিরচেনা ব্যাস্ত শহরটায় জীবন যেন থমকে আছে। আসলে যে কিছুই থেমে নেই, তা বোঝাতেই হয়ত বিকট শব্দে মেঘ গর্জে ওঠে।

সেই গর্জন শুনে চারজনই হয়ত জেগে ওঠে। এই বৃষ্টিতেও কিন্তু সবাই থেমে নেই। কিছু মানুষ এখনও ছুটছে।

যারা থেমে নেই, তাদের হয়ত থামার সময়ও নেই। যারা থেমে আছে, তারাই থেমে থাকুক। শূন্য চোখে আজ বৃষ্টি দেখুক। আজ তাদের অবসর।

এটুকু অবসরই বা ক-জনের মেলে.....?

২ টি +০/-০