নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এম ই জাভেদ

প্রত্যেক মানুষই প্রতিভা নিয়ে জন্মায়, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা ধরে রাখতে পারেনা

এম ই জাভেদ

গুণীজনেরা বলেন, ব্লগ লেখা মানে ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো। আমার অনেক মোষ তাড়ানোর ইচ্ছা আছে। সমাজের অসঙ্গতি দেখলে মনটা বিদ্রোহ করতে চায়। উপায় না দেখে তখন মোষ তাড়ানোর চেষ্টা করি। দেখা যাক কতদূর কি করা যায়। কারন , ব্যস্ততা আমাকে দেয়না অবসর। ব্যস্ততার ফাঁকে চেষ্টা থাকবে ব্লগে সচল থাকার।

এম ই জাভেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে চাই নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন আর ব্যক্তিগত সচেতনতা

০৭ ই মে, ২০১৩ রাত ১১:৩৫



উচ্চ রক্তচাপ একটি নীরব ঘাতক। পৃথিবীতে ২৫ বছরের উর্ধে জনসংখ্যার শতকরা ৪০ ভাগ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত। বিশ্বে প্রতি বছর ১৭.৩ মিলিয়ন মানুষ উচ্চ রক্তচাপ এবং এর আনুষঙ্গিক জটিলতায় মৃত্যু বরণ করে। নিম্ন এবং মধ্য আয়ের দেশগুলোতে শতকরা ৮০ ভাগ লোকের মৃত্যুবরণের কারন উচ্চ রক্তচাপ।



উচ্চ রক্তচাপের কারনঃ



উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হতে পারেন যে কেউ, যে কোন সময়। তবে উচ্চ রক্তচাপের জন্য মূলত পারিবারিক বা বংশানুক্রমিক কারন, অতিরিক্ত ওজন, কায়িক পরিশ্রমের অভাব, অতিরিক্ত মানসিক দুশ্চিন্তা ইত্যাদিকে দায়ী করা হয়।





উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণঃ





(১) মাথা ব্যথা

(২) ঘাড় ব্যথা

(৩)চোখে ঝাপসা দেখা বা অস্বস্তি বোধ।

(৪) চোখ, কিডনি, বা হৃদযন্ত্রের স্থায়ী ক্ষতি হয়ে পক্ষাঘাত হতে পারে।



হৃদপিণ্ডের চাপঃ





হৃদপিণ্ডের চাপ দুই ধরনের হয়ে থাকে। সিস্টোলিক চাপ এবং ডায়াস্টোলিক চাপ।





সিস্টোলিক চাপঃ





এ ক্ষেত্রে হৃদপিণ্ড সংকুচিত হয়, রক্তচাপ বাড়ে এবং ধমনী গুলো সংকুচিত হয়। সুস্থ সবল হৃদপিণ্ডের সিস্টোলিক চাপ কমপক্ষে থাকা উচিত ১২০ এর কম। ১২০-১২৯ হলে স্বাভাবিক এবং ১৩০-১৩৯ মাত্রার চাপকে স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি বলে ধরে নিতে হবে।



ডায়াস্টোলিক চাপঃ





এ ক্ষেত্রে হৃদপিণ্ড শিথিল বা প্রসারিত হয়। রক্ত চাপ কমে এবং হৃদপিণ্ড রক্তে পূর্ণ হয়ে যায়। ডায়াস্টোলিক চাপ কমপক্ষে থাকা উচিত ৮০ এর কম। ৮৫ এর কম হলে তা স্বাভাবিক এবং ৮৫-৮৯ মাত্রার চাপ হলে তাকে স্বাভাবিকের তুলনায় একটু বেশি বলে গণ্য করতে হবে।



উচ্চ রক্ত চাপের প্রকারভেদঃ



সিস্টোলিক, ডায়াস্টলিক

(১) গ্রেড-১ ( মৃদু উচ্চ রক্তচাপ)ঃ ১৪০-১৫৯, ৯০-৯৯

(২) গ্রেড-২ (মাঝারি উচ্চ রক্তচাপ)ঃ ১৬০- ১৭৯ , ১০০-১০৯

(৩) গ্রেড-৩ ( অত্যন্ত বেশি)ঃ ১৮০ বা বেশি, ১১০ বা বেশি



উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনের উপায় ঃ



উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ যোগ্য রোগ। একটু সচেতন থাকলে এটি সহজে প্রতিরোধ করা সম্ভব। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে জীবন যাত্রার নিয়ন্ত্রণ একান্ত জরুরী। স্বাস্থ্যকর জীবন যাত্রায় অভ্যস্ত হয়ে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আমাদের জীবন যাত্রায় একটু পরিবর্তন বয়ে আনতে পারে উচ্চ রক্তচাপ মুক্ত সুস্থ জীবন।





জীবনযাত্রা পরিবর্তন পদ্ধতিঃ





(১) ওজন নিয়ন্ত্রণঃ প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে ওজন বৃদ্ধির আনুপাতিক হারে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়। নিজ উচ্চতা এবং দেহ গঠনের উপর ভিত্তি করে ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যারা উচ্চ রক্ত চাপের ঔষধ খান, নিয়ন্ত্রিত ওজন তাদের ক্ষেত্রে ঔষধের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয়।





(২) নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রমঃ সপ্তাহে ন্যুনতম ৫ দিন ৩০-৬০ মিনিটের ব্যায়াম রক্ত চাপ ৪-৯ মিঃ মিঃ পর্যন্ত কমাতে পারে। যারা ইতিমধ্যে উচ্চ রক্ত চাপে আক্রান্ত তাদের ক্ষেত্রে এটি রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হিসাবে কাজ করে।







(৩) পুষ্টিকর খাবার গ্রহনঃ পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস ১৪ মিঃ মিঃ পর্যন্ত রক্ত চাপ কমাতে পারে। দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় শস্য জাতীয় খাবার, প্রচুর ফল মূল এবং শাক এর পরিমান বৃদ্ধি করে কোলেস্টেরল সমৃদ্ধ খাবার কমাতে হবে। না খেয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা না করে বরং প্রতিবেলায় পরিমিত খাদ্য গ্রহনের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।







(৪) অতিরিক্ত লবন পরিহারঃ খাবার গ্রহনের সময় অতিরিক্ত লবন পরিহারে রক্তচাপ ২-৮ মিঃ মিঃ পর্যন্ত কমে আসতে পারে। প্যাকেট জাত খাবার কেনার সময় প্যাকেটের গায়ে সোডিয়াম লবনের পরিমান দেখে কেনা উচিত। পাতে আলগা লবন নেয়া এবং অতিরিক্ত লবন সমৃদ্ধ খাদ্য যেমন –পনির, পটেটো চিপ্স, শুঁটকী ইত্যাদি পরিহার করা উচিত।







(৫) ধুম পান পরিহারঃ ধূমপানের অন্যান্য ক্ষতিকর প্রভাবের পাশাপাশি তা ১০ মিঃ মিঃ পর্যন্ত রক্ত চাপ বাড়াতে পারে। তাই প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে।







(৬) অতিরিক্ত চা / কফি পান পরিহারঃ রক্তে ক্যাফেইনের পরিমান বেড়ে গেলে তা অনিদ্রা, ক্ষুধামান্দ্য রোগের কারন হতে পারে। ফলশ্রুতিতে বাড়তে পারে রক্ত চাপ।







(৭) দুশ্চিন্তা পরিহারঃ অকারন দুশ্চিন্তা রক্ত চাপ বাড়ায়। জীবনের যে সকল ঘটনাবলী মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে তা নিয়ে অহেতুক টেনশন না করে যার যার ধর্ম মতে প্রার্থনায় মনোনিবেশ করলে দুশ্চিন্তার প্রবনতা কমে আসে।







(৮) নিয়মিত রক্ত চাপ মাপাঃ যাদের উচ্চ রক্ত চাপ আছে তাদের নিয়মিত রক্তচাপ মাপা এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক মাত্রার ঔষধ গ্রহন করা উচিত। অনেকে ঔষধ সেবনের পর রক্ত চাপ স্বাভাবিক দেখে হঠাৎ ঔষধ বন্ধ করে দেয় যা মারাত্মক ক্ষতিকর। এতে স্ট্রোকের ঝুঁকি ২০-৪০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। উচ্চ রক্ত চাপের রোগীদের স্মরণ রাখা উচিত যে পরিমিত মাত্রার ঔষধ দ্বারা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায়, কিন্তু ঔষধ বন্ধ করা কিংবা ঔষধের মাত্রা বাড়ানো কমানো শুধু মাত্র ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী করতে হবে।







(৯) উচ্চ রক্তচাপ সম্পর্কে পরিবারের সদস্যদের অবগত করাঃ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হয়ে অনেকে নিজের রোগ চেপে থাকেন এবং পরিবারের সদস্যদের কাছে প্রকাশ করেন না। ফলশ্রুতিতে পরিবারের সদস্যগণ অজ্ঞতাবশত রোগীর জীবনে উচ্চ রক্ত চাপের ঝুঁকি বাড়াতে পারেন। এর ফলে ঘটতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা। তাই পরিবারের সকলের সাথে উচ্চ রক্ত চাপ নিয়ে কথা বলুন, এর প্রতিকার আর প্রতিরোধ সম্পর্কে নিজে জানুন এবং অন্যদের ও জানতে সাহায্য করুন।





“ রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে যার, নিরাপদ জীবন তার” – এ শ্লোগান নিয়ে এ বছর উদযাপিত হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস- ২০১ ৩ ; উচ্চ রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রনে চাই এর ক্ষতিকর প্রভাব, প্রতিকার ও প্রতিরোধ সম্পর্কে সকল স্তরে সচেতনতা বৃদ্ধি। আসুন আমরা সকলে সচেতন হই। উচ্চ রক্তচাপের রাহু থেকে নিজেকে মুক্ত রাখি এবং অন্যকেও এ ব্যাপারে সজাগ করে তুলি।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই মে, ২০১৩ ভোর ৫:২০

তিতাস একটি নদীর নাম বলেছেন: ভাল তথ্য

০৮ ই মে, ২০১৩ বিকাল ৩:১৭

এম ই জাভেদ বলেছেন: B-) ধন্যবাদ

২| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১১:৫৪

প্রত্যাবর্তন@ বলেছেন: সচেতনতামূলক পোস্ট ।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪২

এম ই জাভেদ বলেছেন: খুব বেশি সমস্যায় না পড়লে রক্তচাপ নিয়ে আমরা খুব একটা মাথা ঘামাইনা । অনেক ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তি মাইল্ড স্ট্রোকের স্বীকার হলে ও টের পান না। তাই আমাদের কোন প্রকার দুর্ঘটনা ঘটার আগেই সচেতন হতে হবে। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.