![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গুণীজনেরা বলেন, ব্লগ লেখা মানে ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো। আমার অনেক মোষ তাড়ানোর ইচ্ছা আছে। সমাজের অসঙ্গতি দেখলে মনটা বিদ্রোহ করতে চায়। উপায় না দেখে তখন মোষ তাড়ানোর চেষ্টা করি। দেখা যাক কতদূর কি করা যায়। কারন , ব্যস্ততা আমাকে দেয়না অবসর। ব্যস্ততার ফাঁকে চেষ্টা থাকবে ব্লগে সচল থাকার।
মতিঝিল থানায় যখন পৌঁছালেন রহমান সাহেব, তখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল প্রায়। থানায় প্রবেশের সময় তিনি একটু সন্দিহানই ছিলেন পরিবর্তনের ব্যাপারে। আফটার অল পুলিশ তো। কিন্তু ভেতরে প্রবেশ করে সকল সন্দেহের অবসান হল তার। রুমে ঢুকতেই ওসি সাহেব বেশ খাতির করলেন তাকে। সারাদিন আজ থানায় কোন অভিযোগ জমা পড়েনি বলে ওসিকে বেশ চিন্তিত মনে হল। দেশে নাকি সব অপরাধ বন্ধ হয়ে গেছে! কেউ একটা জি ডি ও করতে আসেনি আজ। ওসি ভেবেছিলেন রহমান সাহেব বুঝি কোন অভিযোগ নিয়ে এসেছেন। কিন্তু তাকে নিরাশ হতে হল। কোন কাজ না করে বসে বসে বেতন নেওয়াটা বিরাট প্রেস্টিজ কন্সারন হয়ে দাঁড়ালো ওসি সাহেবের জন্য। রহমান সাহেবকে অনুরোধ করলেন অন্তত একটা জি ডি এন্ট্রি করে যেতে। অনুরোধে ঢেঁকি গিলতে একটি জি ডি করে ফেললেন রহমান সাহেব- ব্রোকার হাউসে আজ বি ও একাউন্ট খোলার পর এটি সচল হতে দুইদিন সময় লাগাতে তিনি আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ওসি সাহেব বিষয়টি বেশ আমলে নিলেন মনে হল, হন্তদন্ত হয়ে তিনি বের হয়ে গেলেন ব্যাপারটি তদন্ত করতে। রহমান সাহেবও হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন – যাক বাবা, পুলিশের যন্ত্রণা থেকে তো বাঁচা গেল।
থানা থেকে বের হয়ে রহমান সাহেব গণভবনে যাবার সিদ্বান্ত নিলেন। ড্রাইভার তাকে পঙ্খীরাজের মত উড়িয়ে নিয়ে আসলো গনভবনে। এখানেও আজ অত্ত্যাধিক ভিড়। প্রধান মন্ত্রী সাধারণ জনগণের সাথে সাক্ষাৎ করছেন আজ। জনগণ প্রধান মন্ত্রীকে কাছে পেয়ে তাদের সুখ দুঃখের কথা বলে যাচ্ছেন আর তিনি বেশ আগ্রহ সহকারে শুনছেন সব।
মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, আমদের স্বপ্নের পদ্মা সেতু নিয়ে যে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে আমরা এর অবসান চাই। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু দেশের জন্য কতটুকু মঙ্গলজনক এ ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট সন্দিহান। সাধারণ জনগণ ট্যাক্স দিতে দিতে ফতুর হয়ে যাবে, মুখ থুবড়ে পড়বে দেশের অর্থনীতি ও উন্নয়ন অবকাঠামো । এ ভাবে পদ্মা সেতু আমরা চাইনা।
কিন্তু মোবাইলে তো আমি বেশ সাড়া পেয়েছি। অনেকেই পদ্মা সেতুর জন্য টাকা দিতে চেয়েছে।
বেয়াদবি মাপ করবেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, যারা ফোন করেছে তারা সব আপনার দলীয় লোক। এটা সাধারণ জনগণের মতামত নয়। প্রয়োজনে আপনি জনমত যাচাই করে দেখতে পারেন।
প্রধান মন্ত্রীকে কিঞ্চিৎ চিন্তিত মনে হল।
আপনারা এখন কি চান ?
আমরা চাই বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নেই পদ্মা সেতু নির্মাণ হোক, আর পদ্মা সেতুর অর্থ ছাড়ে সৃষ্ট জটিলতার জন্য দায়ী ব্যাক্তিবর্গ যথাযথ শাস্তি পাক।
ঠিক আছে, তাই হবে। আপনাদের ম্যান্ডেট নিয়ে আজ আমি দেশের প্রধান মন্ত্রী। জনগণের মতামতের মূল্য আমাকে দিতেই হবে।
মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, আমাদের আরেকটি আরজ আছে। আমরা আপনার মন্ত্রীসভায় বিরোধী দলেরও অংশগ্রহণ চাই, সংসদকে কার্যকর দেখতে চাই।
অতি উত্তম প্রস্তাব, বিষয়টি নিয়ে আমিও ভেবেছি। আগামী সপ্তাহে বিরোধী দলীয় নেত্রীর সম্মানে আমি ইফতার পার্টির আয়োজন করেছি। ঐদিন তাঁর দলকে কিছু মন্তনালয়ের দায়িত্ব নিতে তাঁকে অনুরোধ জানাবো আমি। আশা করি আমার প্রস্তাব তিনি সাদরে গ্রহণ করবেন। আমরা সকল দলকে সাথে নিয়ে এদেশের উন্নতির জন্য আমৃত্যু প্রয়াস চালিয়ে যাবো। আপনারা শুধু আমাদের পাশে থাকবেন। জনগণের সহযোগিতা পেলে দেশের চেহারা বদলে দেওয়া অসম্ভব কোন ব্যাপার নয়।
করতালিতে প্রধান মন্ত্রীকে বাহবা দিলো সবাই। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে প্রায়। রহমান সাহেব আর দেরী করলেন না। তার আর বুঝতে বাকী রইলনা, দিন বদলের পালা সত্যি সত্যি শুরু হয়ে গেছে দেশের সর্বস্তরে। আজ সকালে বোটানিক্যাল গার্ডেনে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি বার বার মনে পড়ছে তার। বিষয়টি প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করার জন্য তার যেন আর তর সইছেনা। ট্যাক্সি ক্যাব নিয়ে দ্রুত বাসার পথ ধরলেন তিনি। বাসার সামনে পৌঁছে ভাড়া মেটাতে গিয়ে আরেকবার ধাক্কা খেলেন রহমান সাহেব; ড্রাইভিং সীটে বসা লোকটি আর কেউ নয়, স্বয়ং সকাল বেলার সেই দেবদূত!একটা ঘোরের মধ্যে ছিলেন বলে আগে ঠিক মত খেয়াল করা হয়নি।
তাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে দেবদূত বললেন, “ ভাড়া দিতে হবেনা, তুমি ভাল থেকো। আর বিষয়টা নিজের মধ্যেই গোপন রেখ”।
এরপর দেবদূত দ্রুত গাড়ি স্টার্ট দিয়ে চোখের পলকে সামনের গলিতে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। রহমান সাহেব বাসার কলিং বেল চাপা মাত্রই স্ত্রীর ঝামটা খেয়ে সম্বিৎ ফিরে ফেলেন।
“ এই, তুমি আমার নাকে ব্যাথা দিচ্ছ কেন, হয়েছে কি তোমার? ওঠো তাড়াতাড়ি । আজ যে শুক্রবার মনে আছে? নাস্তা সেরে বাজারে যেতে হবে”।
ধড়মড় করে বিছানা হতে উঠে বসলেন রহমান সাহেব। স্ত্রীকে দেখে বুঝলেন এতক্ষণ স্বপ্ন দেখছিলেন তিনি।
চোখ ডলতে ডলতে বিরস বদনে বাথরুমের দিকে চললেন রহমান সাহেব। সাপ্তাহিক বাজারে যেতে হবে আজ। ভাগ্যিস স্বপ্নে কাঁচা বাজারে যাওয়ার সুযোগ পান নি। তাহলে একটু আগে দেখা সুখ স্বপ্নটা ধূলিসাৎ হয়ে যেত এক নিমিষেই। তিনি মনঃস্থির করলেন আজ আর বাজারে যাবেন না। বাসা থেকে বেরও হবেন না কোথাও। হোকনা আরও দীর্ঘায়িত ভোরের এই সুখ স্বপ্নের রেশ।
রহমান সাহেব রিটায়ার করেছেন ক’ দিন আগে। লোকমুখে তিনি শুনেছেন ভোরের স্বপ্ন নাকি সত্যি হয়! আজও তাই কাক ডাকা ভোরে প্রত্যহ রহমান সাহেব চলে আসেন বোটানিক্যাল গার্ডেনে। যদি দেখা মেলে সেই দেবদূতের, যে তাকে দেখিয়েছিল দেশের সর্বস্তরের আমূল বদলে যাওয়া তথা সত্যিকারের মেটামরফো সিস।
২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪০
এম ই জাভেদ বলেছেন: ধন্যবাদ । আমার ব্লগে স্বাগতম।
২| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৯
মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্ বলেছেন: এবার মন্তব্য করি, সুন্দর লিখেছেন আপনি শুধু সুন্দর নয় অনেক সুন্দর!!! আপনি লেখা-লেখি চালিয়ে যান, আপনার গল্প দিয়ে কিছু মানুষকে হলেও স্বপ্ন দেখান! শুভকামনা রইল।
২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৩৬
এম ই জাভেদ বলেছেন: মন্তব্য শুনে অনুপ্রাণিত হতে ইচ্ছে হচ্ছে। কিন্তু ভাই গল্প লেখা অনেক কঠিন কাজ।
আমার এটা কতটুকু গল্প হল তা বুঝতে পারছিনা। তবে আপনার মন্তব্য আমাকে আরও গল্প লিখতে স্বপ্ন দেখাচ্ছে এটা মানতে দ্বিধা নেই।
আশা করি গল্পকারদের কেউ আমার দুর্বলতা ধরিয়ে দিবেন সমালোচনা করে। তবেই আমি শিখতে পারব।
আপনার ভাল লাগাকে আমি অমর্যাদা করছি না খালিদ ভাই
ভাল থাকবেন।
৩| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:২৪
মোমেরমানুষ৭১ বলেছেন: চমৎার একটি দিবা স্বপ্ন দেখলাম। কিছুটা সময়ের জন্য হলেও আমিও রহমান সাহেব হয়ে গিয়েছিলাম। চমৎার লিখেছেন।
২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৫২
এম ই জাভেদ বলেছেন: হা হা হা। স্বপ্ন স্বপনই থেকে যায়। এ রকম দিবা স্বপ্ন কখনো পূরণ হবার নয়।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৪
পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: সুন্দর গল্প
শুভকামনা +