![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জাহিন প্রস্তুতি নিতে শুরু করল। এখন তাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য অভিনয় করতে হবে। মুষড়ে পরার অভিনয়, বিষণ্ণতার অভিনয়। ক্লাশে এসেই শুনতে পেল তার এক ক্লাসমেট অ্যাক্সিডেন্টে মারা গেছে। তাই এই অভিনয়। এটি অবশ্য তার জন্য নতুন কিছু নয়। ঠিক কবে সে বলতে পারবে না কিন্তু বেশ ছোট বেলায়ই সে বুঝতে পেরেছিল সে ঠিক অন্যদের মত নয়। মানুষের দুঃখ কষ্ট তার অপর প্রভাব ফেলে না। এমপ্যাথি নামক বৈশিষ্টটি তার মধ্যে নেই। তাই ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন দুঃখের খবর শুনে সুনিপুণ ভাবে অভিনয় করে আসছে সে। কেউ কখনও ধরতে পেরেছে বলে তো মনে হয় না। নেট ঘাটাঘাটি করে বুঝতে পেরেছে সে একজন সাইকোপ্যাথ। সাইকোপ্যাথদের মতই তার মধ্যে নেই কোন অনুকম্পা, নেই অপরাধবোধ। তার মাথা ভরতি গিজগিজ করে খুনে চিন্তা, হিংস্র পরিকল্পনা। অথচ কারও তা বোঝার উপায় নেই। সবাই তাকে জানে শান্তশিষ্ট মেধাবী ছেলে হিসেবে। দারুণ পরোপকারী, অসাধারণ বন্ধু। কেউ কল্পনাই করতে পারবে না যে যদি তার হাতে একটি পিস্তল দেয়া হয় তাহলে যে কোন কাউকে, সে বন্ধু হোক আর শত্রু হোক, চোখে চোখ রেখে গুলি করে দিতে পারবে।
আজকে আর ক্লাস হবে না। সবাই যাবে বন্ধুটিকে শেষ দেখা দেখতে। অনেকেই চলে গেছে। বাকিরাও যাবে। এই সময়ে ক্লাসে মেয়েটি ঢুকল। মেয়েটিকে জাহিন এর কেন যেন অন্যরকম লাগে। কোনদিন কথা বলেনি সে মেয়েটির সাথে। এম্নিতেও সে কথা একটু কম বলে। মেয়েটিও একটু অমিশুক। কাছের বান্ধবী ছাড়া কারও সাথে তেমন কথা বলে না। কিন্তু তাও মেয়েটিকে দেখলে কোথাও যেন খটকা লাগে জাহিনের।
মেয়েটি এগিয়ে গেল তার বান্ধবীদের কাছে। বান্ধবীরা তাকে বন্ধুর মৃত্যু সংবাদ দিল। মেয়েটি প্রথমে স্তম্ভিত হয়ে গেল। তারপর বিষণ্ণতা এসে ভর করল তার চেহারায়। কাতর হয়ে কি যেন জানতে চাইল। জাহিন অবাক হয়ে লক্ষ্য করল সে বুঝতে পারছে মেয়েটি যা করছে সবই অভিনয়। মেয়েটির প্রতিটি অভিব্যাক্তি, প্রতিটি ভঙ্গিমা তার খুবই পরিচিত। তবে কি মেয়েটাও তার মত একজন। জাহিন ভাবত সে হয়ত তার মত আর কাউকে খুঁজে পাবে না কোনদিন। তাকে সারাজীবন একাই থাকতে হবে। এখন মেয়েটিকে দেখে এক অচেনা অনুভুতি, এক অজানা সম্ভাবনা তার ভিতর এক অদ্ভুত উত্তেজনার সৃষ্টি করছে।
মেয়েটার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে ছিল জাহিন। মেয়েটা হঠাৎ তাকাল জাহিনের দিকে। দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে রইল কিছু মুহূর্ত। তারপর একই সাথে চোখ ফিরিয়ে নিল দুজন।
চারপাশে তাকিয়ে জাহিন দেখল ক্লাস প্রায় ফাঁকা হয়ে এসেছে। “কিরে যাবিনা?”- জাহিনকে জিজ্ঞাসা করল এক বন্ধু। “যাব, তোরা যা, আমি আসতেসি।“ – ক্ষীণ কণ্ঠে জবাব দিল জাহিন।
আরও বেশ কিছুক্ষন পর ক্লাস থেকে প্রায় সবাই চলে যাওয়ার পর জাহিন আস্তে আস্তে বের হল। নিচে নেমে ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার সময় দেখল মেয়েটি রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে আছে। কারও জন্য অপেক্ষা করছে। বোধহয় গাড়ির জন্য, মেয়েটা গাড়িতে যাতায়াত করে। মেয়েটির দিকে এগিয়ে গেল জাহিন। পাশে গিয়ে বলল,
“হাই।”
মেয়েটি তার দিকে এক পলক তাকিয়ে জবাব দিল, “হাই।”
কিছুক্ষণ থেমে সামনের দিকে তাকিয়েই জাহিন বলল, “মাঝে মাঝে ভাবি একটা বিরাট ভূমিকম্প দুমড়ে মুচরে দিক সবাইকে, একটা বিরাট যুদ্ধ লন্ডভন্ড করে দিক চারিদিক।“
এই বলে মেয়েটার দিকে ঘুরে তাকাল জাহিন। দেখল মেয়েটাও ঘুরে তাকিয়েছে। মেয়েটার দুচোখে কিছু খুঁজে পাওয়ার শিশুসুলভ আনন্দ, ঠোঁটের কোনে এক চিলতে হাসি।
২৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৯:৫৪
লিখব_কি_লিখব_না বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। প্রথম লেখা, তাই ভাল লেগেছে শুনে অনেক খুশি হলাম।
২| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:৪৬
দেবজ্যোতিকাজল বলেছেন: বেশ ভাল
০১ লা মে, ২০১৬ রাত ৮:৫৫
লিখব_কি_লিখব_না বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:০৪
মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: ছোট্ট কাহিনী। কিন্তু ভালো লাগল। প্লাস।
ব্লগে স্বাগতম আপনাকে।