নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাহিত্যকর্মী, সংবাদকর্মী এবং শ্রমজীবী
অপ্রেমের কবিতা
----------------------
আমাদের খুব ছোট একটি খাট ছিলো একসময়
আমরা সে সময় খুব জড়াজড়ি করে ঘুমোতাম।
তারপরেও আমাদের সে খাটে অনেক জায়গা
অবশিষ্ট থেকে যেতো। এখন, ক্রমশ সে খাট
আমাদের দুজনের খুব ছোট হয়ে যাচ্ছে।
আর, আমাদের ঘুমগুলোও এখন যেন এক
আণবিক ব্রিজের উপরে এসে দাঁড়িয়েছে।
আমরা এখন আর আগের মতো একে অন্যকে
জড়িয়ে ধরে ঘুমোতে পারছি না।
আমাদের পরস্পরের বালিশের ভেতর থেকেও
যেন আজ খচ্ খচ্ করে বিঁধছে শরীরে;
অঘুমের ধারালো তুলো।
তাহলে কী খাটের জায়গা সংকীর্ণতার প্রভাবে;
চাপা পড়ে গেছে আমাদের সে পাললিক প্রেম?
এমন তো কথা ছিলো না।
আমরা মনে হয় এখন, ক্রমাগত ঘুম প্রেম থেকে ছিটকে পড়ে
নির্ঘুমের দিকে হাঁটছি।
ঘামসূত্র
---------------------
তোমার আর আমার ঘামের মিলিত যে রুপ
তাকে আমি কখনোই কামসূত্র বলতে পারি না।
কামে আর ঘামে মিলে যে শিল্প হয়;
তাকে আমি ঘামসূত্র বলি।
তোমাকে পাওয়ার আশায়,
তোমার পিছনে ছুটতে যেয়ে,
শরীর থেকে আমি যে ঘাম ঝরাই;
তুমি সেটা কে পাগলামী বলতে পারো!
কিন্তু, আমি তাকে বলি - প্রেম।
তোমার আর আমার প্রেমশিল্পের মাঝখানেই কেবল
যে কাকাতোয়া পাখিটি দেয়াল হয়ে দাঁড়ায়;
তাকেই কেবল আমি কামসূত্র বলি।
(যদিও কাম আর ঘাম দুটোই শিল্প তবে, প্রেম হলো অনন্ত শিল্পের এক বেদনাময় নীল গভীরতা)
ঘুম ও গোলাপ
---------------------
এখনো ঘুমোইনি আমি
ভূতের গলিতে নাকি কিছু গোলাপ ফুটে আছে!
ঘুম গুলোকে তুলে দিলাম এইমাত্র; সিরাজগঞ্জের ট্রেনে
আমার ঘুমসমগ্র; কিছুক্ষণের মধ্যে যমুনায় নিক্ষিপ্ত হবে।
আজ রাতে আমি গোলাপ ফোটা দেখবো
তুমি কি যাবে আমার সাথে?
অরুন্ধতী
আম ও প্রেম।
----------------------
আমিও এক সময় কিশোর ছিলাম। তখন, অনেকেই আমাকে দেখে কাঁচা আম ভেবে ঢিল ছুড়তো। অনেকেই আবার ভাবতো; একটু বেড়ে উঠলেই ঢিল ছুড়া যাবে। এর পরে যখন বয়ঃসন্ধি পার হলাম; দেখলাম, চারপাশ থেকে ঢিল ছোড়া ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে। তখন অবশ্য আমিও কিছুটা পাকতে শুরু করেছি। অতঃপর, আমিও একদিন রহিমের বাগানে (বারান্দায়) একটি কাঁচা আম দেখে ঢিল ছুড়লাম। সেই থেকে আজ অব্দি আমার ঢিল ছোড়া চলছে।
ভালবাসতে বাসতে ফতুর হয়ে যাবো।
----------------------
তোমার একটি চুম্বন পেলে
আমার আর এলকোহলের প্রয়োজন পড়ে না।
আর, সেই চুমোটি যদি হয় অসমাপ্ত
তখন আমার শরীরে বাসা বাধে নিকোটিনপরী।
তুমি যদি আমাকে একবার বলো -ভালোবাসি।
তাহলে, আমি তিনটি শীতের বছর
কম্বলবিহীন উষ্ণতায় পার করে দিতে পারি।
আর, তুমি যদি আমাকে ভালো নাই বাসো!
তবে, আরতীর হাতে খুন হয়ে যেতে আমার
মোটেই আপত্তি নেই।
এসি ও লিপজেল
----------------------
ভালোবাসা জমে যায় এসি লাগানো ঘরে
লিপজেল চমৎকার কাজ দেয় তখন।
দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে শীতে
অতঃপর যা হবার; তাই হয়।
এরপরে, ক্রমাগত তাপমাত্রা বাড়তে থাকে ঘরটিতে।
এসির শীতল বাতাসও মাঝে মাঝে গরম হয়
দুজন নারী-পুরুষ একত্রে এক ঘরে থাকলে।
ঘুমের করাত
----------------------
গতকাল মাঝরাতে; ঘুমের বোতাম খুলে চেয়ে দেখি
চাঁদের ব্লাউজ উপচে, রাত গলে গলে পড়ে।
সে রাতের সাথে শরীর মন্থনে ক্লান্ত হয়ে, আমি আবার ঘুমাই
রাতের কোলে পাশ ফিরে শুতে যেয়ে
দেখি, জোছনার মুখখানি পড়ে আছে বুকের উপর।
এক ফালি মুখ যেন তার; এক ফালি চাঁদ
অতঃপর, জোছনার নাভিমূলে হাত রেখে, আমি আবার ঘুমাই।
তুমি জেগে থাকো উত্তরার ফ্ল্যাটে; অমোঘ পুষ্টিভরা রাতে
সাথে জাগে শালিকের ঝাঁক।
অথচ, আমাকে খন্ডিত করে প্রতি রাতেই ঘুমের করাত
প্রেম ও ম্যালেরিয়া
----------------------
মেজাজটা খুব খারাপ হয়ে আছে
নতুন করে কাউকে প্রপোজ করতে মন চাচ্ছে।
অফিসে সুন্দরী কলিগ না থাকলে; কাজে কি করে মন বসে?
আমার বস, তা কখনোই বুঝতে চান না
আজ আমি কোথাও যাবো না; আরতি।
আমার মেজাজটা এখন খুবই চড়া হয়ে আছে।
আজ, রোদের তাপে শরীর পোড়ে
যৌবনের তাপে পোড়ে মন।
প্রতি জন্মে নারী হতে চাই
----------------------
সব জন্মেই আমি নারীদের
ভালো করে দেখে-শুনে রাখতে শিখেছি।
নগরের নারীরা ছিলো তাই নিরাপদে
প্রথম জন্মে আমি আদম ছিলাম
ইভ এর করাল শরীর হাতড়ে হাতড়ে আমি
কখনোই প্রাণ খুঁজে পাইনি তুরাগের তিরে
অতঃপর সে আমাকে প্রথম শিখিয়ে দিলো
কি করে আদম থেকে পুরুষ হতে হয়।
আর, তাই আমি এখন মাঝে মাঝেই পুরুষ হয়ে উঠি;
যদি সে নারী আমাকে উগ্র করে তোলে।
শরীর নির্মাণের নানাবিধ উপদেশ।
----------------------
আগেতো তোমার শরীর নির্মাণ করো!
তার পরে না হয় আমাকে ডাকো।
তোমার স্তন যুগল করো; সুচাগ্র মসৃণ আর সুডৌল
মুখমণ্ডলে আনো ভরা পূর্ণিমার জোছনাময় অবয়ব
শরীরের সমস্ত পলি জমিতে ঢেলে দাও
শুভ্র দুধের রংমাখা দস্তা সার।
মনের ভেতরের কামরায় খুলে দাও
শিটকিনি দেয়া বন্ধ সব দরজা-জানালা।
তারপর নাহয় আমার নগ্নহাত
তোমার শরীর-মনে করবে খেলা আদিম শিল্প বোধে।
আমার নগ্নহাত; এতোটা নগ্ন নয় যে,
তোমার অগোছালো শরীরে হাত রেখে আমি
শুধু আগাছা ফলাবো
ক্রস ফায়া্রে আপত্তি নেই
----------------------
আমাদের সম্পর্ক গুলি এখন অমিমাংশিত থাক।
আমাদের ক্রস ফায়ারের শেষ দিনে
আমরা মেতে উঠবো দুজন আদিম সম্ভোগে পদ্মাসন মুদ্রায়।
আমরা একে একে খুলে ফেলবো আমাদের
শরীরের সব কটি করটি, অস্থি মজ্জা আর মাংসের কিমা।
তখন, আমরা দুজন শুধু দুজনের হবো
অতঃপর দুজনে মিলিত হবো আমরা শেষ মিলনে।
লোকে দেখে বলবে সবাইঃ তোদের এ কী পাপ!
আমরা তখন শুধু একে অন্যকে ভালবাসতে থাকবো।
তারপরে নাহয় আমাদের ক্রস ফায়ার হয়ে যাক
আপত্তি নেই।
প্রেম ও পিস্তল
--------------------
আমি একজন নারী পুলিসের প্রেমে পড়ে গিয়েছি।
এ কথা তাকে কখনোই বলতে পারিনি ভয়ে!
সে নারীর শরীরে; দোলনচাপার গন্ধের বদলে বারুদ থাকে।
তার হাতে গোলাপের বদলে থাকে; পিস্তল।
তবুও, তাকে আমি ভালোবেসে ফেলি প্রতিদিন
সকালের নরম রোদের মত
নয়তো রাতের নিশীগন্ধার মত।
অথচ তাকে কখনোই বলা হয়নি ভালোবাসি!
পিছে সে আমাকে হাতকড়া লাগিয়ে
টেনে হিচড়ে যদি গারদে নিয়ে যায়।
আর, আমার প্রেম যদি
তার পিস্তলের কাছে পরাজিত হয়!
পাঁজর জ্বলে; কষ্টের বেনোজলে
----------------------
এখন তুমি আমার মনে একান্ত কাঠকয়লা
হয়ে জ্বলে উঠেছ; ইটের ভাটার মত।
যখন, তোমার ভ্রু মধ্যস্থ লাল টিপেও দেখি
ছোপ ছোপ চুম্বনের দাগ।
তখন, নিজেকে কেমন অনাহুত বলে মনে হয়।
কার সে চুমো তোমার কপালে ও ঠোটে?
এসবের কিছুই বুঝিনি আমি।
তোমাকে ঠিক ঠাক মতো বুঝতে পারাটাও যেন
আমার সমগ্র জীবনের এক রক্তাক্ত হাডুডু খেলা।
তবুও তুমি আমার বাম পাঁজরেই
লেপ্টে আছো রক্ত মাংশ করটি হয়ে।
যৌবনের ত্রিকোণমিতি
----------------------
বিগত যৌবন থেকে অল্প কিছু যৌবন
ফেরত পেয়েছি গতকাল সকালে!
আজ রাতে তা ভাগাভাগি করে নিতে চাই তোমার সাথে
জোছনাময় নদীপথে নয়তো, কোন ব্যাচেলর বন্ধুর
তেল চিট-চিটে তোষকে, কমলাপুরের সর্দার কলোনির মেসে।
তারপরে, জোছনা ও জলের ভেতরে আমরা দুজনে
অবাধে সাঁতার কাটবো ভোররাতে।
আমার শরীর তোমাকে ঠিকই চিনেছে জাতিস্মর।
তাই তুমি আজ পুনরায় ফিরে এসো আমার সত্ত্বায়।
হে আমার প্রিয় প্রসন্ন সূর্যস্পর্শা নারী
তোমাকে দেয়ার জন্য এখনো কিছু যৌবন
আমার অবশিষ্ট রয়ে গেছে।
ব্যাম্বো ক্যাসেলে একটি পরী ও একটি গাধা।
----------------------
শাহবাগে পরীটির সাথে আজ আচানক দেখা হয়ে গেলো।
আমার উপরে তার রাগ (অভিমান) যেন একদমই কমে না।
আমার জামার কলার চেপে ধরে অগ্নিমূর্তি হয়ে সে বললো
-এতোদিন কোথায় ছিলে?
আমি বললাম
-রানা প্লাজার ইট সিমেন্টের ভিমের নিচে
চাপা পড়ে মরে গেছিলাম।
পরী বললো
-তুমি একটি গাধা !
আমি বললাম
-তাহলে এই গাধাকে দেওয়ানবাগীর উটের ফার্মে রাইখ্যা আসো।
পরীটি আমার চোখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো।
অতঃপর সে আমার হাতটিকে বোগলদাবা করে ধরে টানতে টানতে
বেইলী রোডের ব্যাম্বো ক্যাসেলে নিয়ে গেলো।
এদিকে ব্যাম্বো ক্যাসেলে বসে শরমা খেতে যেয়ে
আমারতো ব্যাম্বো খাওয়ার মতো অবস্থা।
ভাগ্য ভালো যে, মানি ব্যাগটি পকেটেই ছিলো।
কিছুক্ষণ পরে টের পেলাম; মানি ব্যাগের গলা কাটা গেছে।
ওদিকে পরীটি তৃপ্তির সাথে শরমা খাচ্ছে আর আমার সাথে
বাক বাকুম, বাক বাকুম করছে।
আমিও মনে মনে মুচকি হাসলাম আর ভাবলাম
-ব্যাম্বো ক্যাসেলে শুধু পরী আর আমার মতো গাধারাই আসে !
(বিঃ দ্রঃ তবুও, পরীটির প্রতি আমার ভালোবাসা একদমই কমে না)
যার গার্লফ্রেন্ড নেই; তার লেপ আছে।
----------------------
আমার এখন একটি নরম তুলতুলে লেপ আছে। গার্লফ্রেন্ড আজ আর আমার দরকার নেই। যখন আমার একটি নরম তুলতুলে গার্লফ্রেন্ড ছিলো; তখন আমার কোন লেপ ছিলো না! যদিও, লেপ আর গার্লফ্রেন্ডের সান্নিধ্য আমাকে দারুণ উষ্ণতা দেয়। এই কাঠফাটা শীতের সন্ধ্যায় তুমি নাই বা এলে আমার ঘরে। আমাকে ভালো নাই বেসে তুমি যদি অন্যকে বাসো। তাহলে, এরকম একটি নয়, ত্রিশটি শীত আমি তোমাকে ছাড়াই পার করে দিতে পারি। যদি, আমার একটি খুব উষ্ণ; নরম তুলতুলে লেপ থাকে ।
আমার সব প্রেমিকার বিয়ে হয়ে যায় !
----------------------
কলেজ জীবনে আমি এক সুন্দরী সহপাঠীর সাথে প্রেম করতাম। প্রায় তিন বছর টিকেছিলো সে প্রেম একদিন শুনলাম আমার সে সহপাঠী প্রেমিকাটির বিয়ে হয়ে গিয়েছে! বেশ কিছুদিন কষ্টে ছিলাম তখন। এরপরে, আমি যখন মাস্টার্স পরীক্ষা দেবো তখন আমার সেই সহপাঠী প্রেমিকারই ছোট বোন সবেমাত্র অনার্সে ভর্তি হয়েছে। একই ইউনিভার্সিটিতে। দেখা সাক্ষাৎ আর কথা বার্তার কোন এক ফাকে, একটা পর্যায়ে তার সাথেও আমার জমজমাট প্রেম হয়ে গেলো। এ প্রেমও চললো প্রায় এক বছর। একদিন শুনলাম, আমার সে প্রেমিকারও আচানক বিয়ে হয়ে গিয়েছে! এর পরে আমার স প্রেমিকাদের সাথে আর যোগাযোগ হয়নি অনেক দিন। আজ প্রায় দশ বছর পরে আমার সে প্রেমিকাদের সর্বকনিষ্ঠ বোনের সাথে দেখা হয়ে গেলো নিউমার্কেটে। অনেক কথা হলো। তার বোনেরা আমাকে এখনো নাকি খুব মিস করে তা তার মুখ থেকেই শুনলাম। আমি অবাক হলাম। তার সাথে আজ আমার অনেক কথা হলো। তাকে নিয়ে ড্রাইভে গেলাম, ধানমন্ডি লেকের পাড় দিয়ে দুজনে হাটলাম, ঘুরলাম আর খেলাম। অতঃপর, আবেগমথিত এক মুহুর্তে সে আমাকে জড়িয়ে ধরে প্রেমের প্রস্তাব দিলো! আমি শুধু তার চোখে চোখ রেখে হাসলাম আর মনে মনে বললাম, আমার সব প্রেমিকার বিয়ে হয়ে যায়।
(যদিও, তার বয়স এখন একুশ আর আমার মাত্র ঊন চল্লিশ !!)
আগামী কাল আমার ক্রসফায়ার হতে পারে।
----------------------
তোমার আর আমার প্রেম-ভালবাসার ভেতরে এখন মনে হয় চিরুনি অভিযান চলছে! যদিও আমি রোজ প্রায় সত্তর বার করে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেই নিজের মুখোমুখি হই। দেখি, পুরনো সেই আমি; যে তোমাকে প্রতিদিন প্রায় সত্তর বার করে ভালোবাসি। অথচ তুমি প্রায়শই বলো, আমাকে নাকি অপারেশন ক্লিন হার্ট করানো খুব দরকার! তবে কি আমাদের প্রেমের ভেতরেও এখন বাসা বেধেছে সন্দেহের পাললিক আঁধার? আমি তোমার সামনে দাঁড়িয়ে অবনত হয়ে সত্তর বার বলেছি আরতী, বোয়াল মাছের কলিজার মতো সতেজ আর নিস্পাপ আমার মন। তবুও, তুমি আমাকে প্রতিনিয়ত অপরাধী ভেবে ক্রসফায়ার করো। তোমার দেয়া আঘাতজনিত কারণে; আমার হার্টে হয়তো একদিন ঠিকই বাইপাস সার্জারি করাতে হতে পারে। এখন আমাদের পরস্পরের আলিঙ্গনের ভেতরেও খচ খচ করে বিঁধছে ক্রমাগত সন্দেহের ধারালো চাকু। এভাবে ভালোবাসা যায় না আরতী। তার চেয়ে ভালো হয়, আগামীকাল আর একটি ভূমিকম্প দিন প্রভু। ভেঙে চুরে আমার শরীর টুকরো টুকরো হয়ে যাক রানা প্লাজার মত। এতে যদি তোমার কংক্রিট মন টিস্যু পেপারের মত কিছুটা গলে!
প্রেমিকার মেয়েও আমার প্রেমিকা হয়।
----------------------
১৭ বছর পরে আমার প্রাক্তন প্রেমিকা আমাকে আজ ১৭ পৃষ্ঠার দীর্ঘ এক প্রেমপত্র পাঠিয়েছে!
প্রেমিকার মেয়েটির বয়স এখন ষোল আর তার ছোট ছেলে ক্লাস নাইন এ পড়ে। আমার এখন একচল্লিশ। প্রেমিকার মেয়েটিও ফেসবুকে আমার সাথে চ্যাট করে প্রতিদিন, আমাকে কবিতা লিখতেও উৎসাহ দেয়; মাঝে মাঝে আমার সাথে শাহবাগে এসে দেখা করে, চা ফুসকাও খায়। ঠিক যেমনটি এক সময় তার মাও করতো। সময়ের ব্যাবধানে পাল্টেছে অনেক কিছুই। আমার প্রাক্তন প্রেমিকার শরীরে এখন বেশ খানিকটা মেদও জমেছে। টাকা কড়ি আর গয়না গাটিও মনে হয় জমেছে খুব। গাড়ির চকচকে রঙ দেখে মনেহয় সে শুখেই আছে সংসার যাপনে। তবে, কীসের যেন এক অভাব রয়েছে তার? যদিও, তার স্বামীর মাথায় টাক পড়েছে খুব। আমি শুধু বদলাইনি মোটেই। এখনো আমি তাকে ভালোবাসি; তার মেয়েটিকেও। আমার বয়স এখন কমতে কমতে একেবারে আঠারোতে এসে ঠেকেছে।
আমি আর ফিরবো না ঘরে
----------------------
বিদীর্ণ জীবনের মেটালিক ভেন্টিলেটরে
হিম কুয়াশার আঁচল ধরে ঝুলে আছি আমি
সময়ের মাঝ পথে।
আমার যা কিছু; অনন্ত কামনা, যোজন যোজন
তা তোমার চোখের চাহনিতে অবাক লাবণ্যতায়
লুকোচুরি খেলে ভোরের বাতাসে।
তোমার সে প্রেম, ছিলো যত এতদিন অফুরান
আমি তার অবাধ্য বোধে ক্রমশ ভাসি
যমুনার জলে।
কিছুই যেহেতু ফেরেনা ঘরে; তাহলে
আমি কি করে ফিরে আসি
সময়ের বিরুদ্ধ স্রোতে !
দাড়ি কামানোর যন্ত্রণা।
----------------------
প্রতিদিন দাড়ি কামানোর যন্ত্রণা; আহত হবার মতোই এক বেদনা বিধুর। অফিস আমাকে করে তুলেছে দাম্ভিক এক আশ্চর্য রকমের আমলা। দিনের আলোয় নিজেকে কর্পোরেটের বানর বলে মনে হয়। শুধু, রাতের বেলায়ই আমি নিজ রুপে ফিরে আসি। তখন, গলায় থাকেনা টাই। সার্টের হাতলে থাকেনা দামি কপপিন। মেয়েটি আমার বুকে মাথা রেখে নির্ভয়ে ঘুমায়। বউ এর মুখে রাতের আঁধারেও জোছনা নামে ঘুমের ভেতরে। এই রাতটুকুই শুধু আমার, একান্ত নিজের, মানুষের মতো। অতঃপর প্রতিক্ষায় থাকি নতুন ভোরের। ততক্ষণে, চাদের ঔরসে জন্মনিয়েছে বাতিকগ্রস্থ এক যান্ত্রিক দিন। আয়নার সামনে দাড়িয়ে আমি নিজেকেই চিনতে পারিনা নিজেকে। পুনরায় মানুষ থেকে হয়ে যাই আমি অচেনা এক মুখোশমানুষ। এভাবে নিজের সত্ত্বা থেকে বার বার ফেরা বড় নির্মম হয় আমার জন্য
প্রেম এক ধরণের কোমল পানীয়।
----------------------
ভালোবাসা নিম্নগামী; তাকে উঁচিয়ে রাখতে হয়। কালের ব্রাকেটে আটকে আছে যেখানে খরা-তাপে দগ্ধ দাম্পত্য জীবন। ভালোবাসা সেখানে মাঝে মাঝে হয়ে ওঠে দারুণ ভস্মময়। দুধে যদি জল থাকে, শরীরে পুষ্টি না হয় কিছুটাই কম। ভালোবাসায় ঘাটতি থেকে গেলে, কী করে ভালোবাসা হয়? জীবন যেখানে আটকে থাকে রাস্তায়, জ্যামের মতো। রৌদ্রদগ্ধ জীবনে প্রেম তখন, দারুণ কোমল পানীয়।
অমরাবতী চাঁদ ও মেঘবালিকার গল্প।
----------------------
বালিকা, বাইরে এসে দ্যাখো। আকাশে ফুটে আছে অমরাবতী চাঁদ। তোমার আমার আর চাঁদের দ্রাঘিমার দূরত্ব যদিও গ্রিনিচ জানে। আমার অক্ষাংশ জুড়ে আছে শুধু বালিকা তোমার মেহগনি মন। আজ লিপজেল রাতে সব গুলো দরজা টোটাল খুলে রেখেছি আর ফ্রিজের কোটরে জমিয়ে রেখেছি সব টেরাকোটা আঁধারের ভাঁজ। খরগোশ পায়ে পায়ে আজ হ্যালোজেন রাতে, বালিকা আমার মোমঘরে এসো। নয়তো, তোমার জন্য জমিয়ে রাখা; আমার সব এলকোহল যৌবন আজ রাতে খোয়া যেতে পারে! শরীরের রন্ধ্রে চুমো এঁকে দিতে পারে অমরাবতী চাঁদ।
©somewhere in net ltd.