নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা পড়িয়া রয় অবহেলায়, তাহা সমগ্রই আমার কী-প্যাডের, দূর্দান্ত গতি ছড়ায়। যদি কোন অন্ধ/বদ্ধ মনের দ্বার একবার খোলা যায়?\n

আসিফুজ্জামান জিকো

অাইন বিভাগ..

আসিফুজ্জামান জিকো › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিচ্ছিন্ন..

৩০ শে মে, ২০১৭ রাত ৩:৩৯

১)

তাহলে অন্যান্য ধর্মাবল্বীর ছেলে পুলেদের ও তো প্রায় রোযা রাখতে হচ্ছে! এক্ষেত্রে প্রতিটি রোযায় উহাদিগের জন্যে কতটি নেকি বরাদ্দ হইয়াছে?

- এ আমার কথা নয়, এত বড় ধৃষ্টতা আমাদের মেসের ঠোট কাটা মতিন ছাড়া আর কারো পক্ষেই যে সম্ভব নয় তা বুঝতে বন্ধুদের বাকি নেই বোধ করি!

কি উত্তর দিবো এখনো রোয়া না ভাঙ্গিয়া সদ্য রোদ্দুর মাড়িয়ে ঘরে ঢুকতে ঢুকতে খিট খিটে।মেজাজের মতিন বাবুর করা এ প্রশ্নের?

বললাম, বসো আগে ক্যাচ ক্যাচ কইরো নাহ!
মতিন দা বললেন, আয় তো ভাত চাপাই ?

- কথা শুনে মেজাজ সপ্ত আসমানে চড়তে চড়তেই মনে পড়লো আমাদের পঞ্চতলার মেসবাড়ীর তিন হিন্দু বন্ধু আর তাদের ছোট্ট ছোট্ট এ্যাডমিশন দিতে আসা দুটি ভাই, ওদের কোন সাড়াই তো নেই!

মতিন দা বললো ইন্টার্ভিউ আছে রানার, ছোট্ট দুই ভাই ঘরের বাইরেই বের হয়নি। রোযার মধ্যে ক্ষুধায় মারা গেলে ও যে মেসে খাবারের কথা বলা যাইবেনা, সেসব এই অল্প বিস্তর বিলুপ্ত হয়ে টিকে থাকা হিদুর ছেলেদের কারো বলে দেওয়া লাগেনা।
আর বাইরের কথা বাদ'ই দিলাম, আমার মত ঘাড় ত্যাড়াই গতকল্য হাল ছেড়ে দিয়ে ইফতারীর ভাজি-পোড়া দিয়ে উদর পূর্তি করে ফিরেছিলো বেলা তিনটায় বের হয়ে।

কারো অতি ধর্ম পালন আর তা কারো কষ্টের কারন।
তো নব্য অতি ধার্মিকেরা অবশ্যই বলতে পারবেন, আমাদের সাথে বেধর্মীরা যদি রোযা রাখেন, তাহলে কয়টি করে নেকী প্রতি রোযায় বেধর্মীরা পায়?

মতিন দা'র চাল ধোয়া শেষ, আমায় জিগেস করলো তিন জনের কতটুকু চাল লাগে?
- এই তেষ্টা পাওয়া শুষ্ক গলায় হো হো করে হাসতে পারলাম নাহ, তবে মজাটা সেই পাইছি, আমি নিজের জন্যে এক বেলার ভাত রান্না করে দুবার খেয়ে ও অাধা হাড়ি ফেলে দেবার মত হিসেবী, আর আমাকে...

এই গাধা, ডিমের পানি বসিয়েছি, ডিম দে তিনটা?

- কল্পরাজ্য থেকে ফিরেই দেখি নড়াইলের বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া জমিদার বংশের একমাত্র জমিদার উত্তর সুরী রোগাক্রান্ত খিট খিটে বদ মেজাজী মতিন বাবু ছোট ছোট দুই বেধর্মী বাচ্চার জন্যে দর দর করে ঘেমে আলুর খোসা ছাড়াচ্ছেন নিজে রোযা রেখে! আযান দিচ্ছে বাইরে, ডিম ছাড়তে ছাড়তে উকি দিলামম। মসজিদের মধ্যে ঘুমন্ত ভুড়েল কিছু হুজুর দেখতে পাচ্ছি!

মতিন দা আলু গুলো ধুয়ে আনতে হুকুম করলো;
তাকে দেব শিশুর মতই লাগছে। দেবতারা অনুরোধ করেন না সাধারণত, আদেশ করেন। আর কোন মুমুর্ষ ব্যাক্তি ও সেই আদেশ পালন করে হাসি মুখে দেহত্যাগ করে।

আমি মুমুর্ষ, বিকলাঙ্গ কিংবা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নই;
আমি ঢের টের পাচ্ছি বেসিনে লালচে মুসুড়ের ডাল ধোয়া মতিন দা'কে স্রষ্টা যে নেকী এই বেলা দিবেন, তার এক কানা কড়ি ও পায়না সুযোগে পকেট ভর্তি করা পাচ বেলা কপাল ঘষতে থাকা বস্তি আর দিনমজুরের সমস্ত পুষ্টি চুষে নিয়ে ফুলে ঢোল হয়ে থাকা নামাযীরা।

ধর্ম অনুভব করতে বলে জীবনের সমস্ত ব্যথা কে;
এ কথা ওদের বললে মুখটা ঘুরায়ে নিয়ে বিড় বিড় করে;
ওরা নাকি স্রষ্টার সাথে কথা বলে?

এখানে ও নেকি এবং ডান্ডার হিসেব হবে।
- মানুষের হাহাকার উপেক্ষা করে তুই ভণ্ড আমার সাথে কথা বলার ছল করেরে বসেছিলি?

- এই কে আছিস, এর সাজা হাবিয়ার আগুনে অনন্ত কাল ধরে!
ওই পারে তোর কি হবেরে অপরিচ্ছন্ন কেশ বিতানেরা?



২)

ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ও কক্সবাজার উপকূলকে ১০ নম্বর মহা বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

ভীড় বাড়ছে আশ্রয় কেন্দ্রে সন্ধ্যে থেকে, ভোর হতে বেশি দেরি নেই, প্রকৃতি ক্ষমা করুক।

৩)

তিনটে ১৩, একগুচ্ছ মানুষের স্টাটাস ভাসছে আমার চোখের সামনে এরা অপরিচিত তবু ও কেনো জানি খুব প্রিয়। বিশ্বাস হয় আমি একদিন হুট করে রক্ত ঝরে ঝরে রাস্তায় নেতিয়ে মরে যাবার ঠিক আগে এদের কেউ আমায় তুলে দৌড় লাগাবে! হয়তো বাচবো নয়তো স্মৃতি হয়ে ঝুলবো, তবে মানুষের উপর বিশ্বাস জন্মাবে আমার নিহত আত্বায়!
ওপার থেকে সমস্ত অনাগত শিশুকে আমি জানিয়ে দিবো, মানুষের কেমন হতে হয়? যারা এই তিনটে ২০' মিনিটে আমার চোখে ভাসছে নাহ, ওরা ও জানেনা, জন্মালেই সে মানুষ নয়।
মানুষে রুচী আসে জীবনের সংকটাপন্নতায়।
আর ঘৃণা, রোজ'ই হয়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.