নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শুকতারার সঙ্গী

জে.এস. সাব্বির

অদ্ভূত!

জে.এস. সাব্বির › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফকিরের অবিশ্বাস্য ক্যাড়ামতি !! (২য় পর্ব বা শেষ পর্ব)

২৫ শে মে, ২০১৬ রাত ১১:৩০

আর যাই হোক এই ঝাড়ফুঁকে তো বিশ্বাস করা যায় না ।তবুও যে ঘটনাটা ঘটে গেলো তাতে আমাদের চ্যাংড়া টিমের অনেকের মতই আমার বিশ্বাসএর জগতেও কোথায় যেন একটু নরবরে হয়ে গেল ।সেইখান থেকেই ফকিরবাবার বিরদ্ধে আমাদের মাতামাতিটা বন্ধ ।

প্রায় ৬মাস পর ।একটা দুর্ঘটনায় আমার গার্লফ্রেন্ডের সাথে ব্রেকআপ হয়ে গেল ।ওর কিছু ফটো ছিল আমার কাছে ।ওগুলা আমি পিসিতে রাখিনি ।একটা ছোট মেমরীতে আলাদাভাবে রেখে দিয়েছিলাম ।আমিও চাইছিলাম ফটোস গুলা দিয়ে দিতে ।সেই মতেই একদিন মেমরীটা ওপেন করলাম ।কিন্তু আমি সকড! ফাইলগুলা ওপেন হচ্ছে না ।কোন শক্তভাইরাসের আক্রমণ বুঝলাম ।কিন্তু মেয়েদের মনকে তো এইসব দিয়ে বুঝ দেওয়া সম্ভব না ।আমি আমার সর্বাত্মক চেষ্টা করলাম ।ফলাফল পেলাম না ।কয়েকজন এক্সপিএক্সপার্টদের কাছ থেকেও ফিরে আসতে হল খালি হাতে ।মাথাটা হ্যাং হয়ে ছিল ।কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না ।হঠাত্‍ই মনে পরল মোহনফকির এর কথা!

আমি কি বোকা নাকি..!এতদৌড়ঝাপ না করে ফকিরবাবার কাছে গিয়ে একটা ফুঁক দিয়ে আনলেই তো পারি ।যেই ভাবা সেই কাজ ।অনেকটা রিলাক্সমুডে হাজির হলাম ফকিরের খানকায় ।আজকে একা ।রোগী সেই 'একই' ।একটা ফুঁ দিলেই আমি নিশ্চিন্ত হতে পারি যেন!

এবারও আগের মতই রোগ বর্ণনা করলাম ।তবে চোখে আগুণ রেখে নয় চেহারায় দুর্যোগের ছাপ এঁকে ।বিনিময়ে ফকিরের চোখে আগুণ ,চেহারায় অসন্তুষ্টি আর মুখ দিয়ে যা বললেন- অন্য যেকোন মুডে থাকলে তখনই ওনার দুইগালিচা থাপ্পরের পর থাপ্পরে লাল হয়ে যেত ।কিন্তু আজকে বড় বিপদে আমি ।
-আপনি তো আগেরটা ঠিক করে দিছিলেন ফকিরবাবা(!) ,এইটা কেন না করেন !! আমি বড় বিপদে পরেই আসছি আপনার কাছে ।
-(খানিকক্ষণ মৌন থেকে..) তুমি বেয়াদবি করছো ,আমি তোমার কোন সমস্যা দেখবার পারুম না ।
-(মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল..)দেখ্ ,ভন্ডামি ছাড় !হাত পাও নিয়া বাইচ্যা থাকতে চাইলে মেমরী ঠিক কর্ ।
-এইটা বেয়াদবি করার জাগা না...ভাগো এইখান থেকে ।
-যামু তো ঠিকই ,তয় তোর ভন্ডামি যদি না বের করছি তাইলে আমিও জগু না ।
আরো খানিকক্ষণ চিল্লাপাল্লা করে চলে আসলাম ।

আজকে একা ছিলাম বলে কিছু করি নাই ব্যাটারে ।কিন্তু অবাক করার বিষয় হইলো-আমার সাথে এইভাবে কথা বলার সাহস কোথায় পেল এই ভন্ডতে!ওর শনির আখড়া কিকরে বাজানো যায় ভাবতে ভাবতেই বাসায় পুলিশ !!আমাকে না পেয়ে আব্বুর কাছে ওয়ার্নিং দিয়ে গেছে ।কিসের ওয়াকিং কি ওয়ার্নিং এর অর্থ বুঝে ওঠার আগেই বুঝলাম- ভন্ড ফকিরের প্রশাসনিক ক্ষমতা বলেই আজকে শাসিয়েছে আমারে ।সুতরাং চ্যাংড়া টিম নিয়ে ওকে ঠ্যাংয়ানোর সেই শক্তি যে আমাদের আর নেই বুঝতে বাকি থাকলো না ।

কিন্তু আমিও হাল ছাড়লাম না ।মেমরী ইস্যু বাদ এখন ।গালফ্রেন্ড তো এখন ex |মোটামুটি বুঝাইলাম ,মানলে মানছে না মানলে আঙুল চুষুক...আমার ধ্যান-ঞ্জান একটাই- ভন্ডের ভন্ডামির চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করা ।

কয়েকটা প্লান ঠিক করলাম ।প্রথমেই বরিশাল যেতে হবে ।বরিশালের ঐ হার্টের রোগীর সাথে কথা বলতে হবে ।যদি তার কাছ থেকে কিছু ক্লু পাওয়া যায় ।গুগল ম্যাপ থেকে তাদের বাড়ি আমি তখনই দেখে রেখেছিলাম ।সুতরাং তার কাছে পৌছতে আমার তেমন বেগ পাওয়ার কথা না ।

চলে গেলাম বরিশালের ঠিকানায় ।গুগল ম্যাপ আমাকে তার দরজার সামনে দাড় করালো ।
-জ্বি ,এটাকি তমুদ্দিন(সেই রোগীর নাম) সাহেবের বাসা?
উত্তরটা ভয়বহ ছিল ।তারা তমুদ্দিন নামের কাউকে চিনেনই না !আমি বিস্তারিত সত্য বললাম ।তারা আমাকে আশাহত করে ফেরত দিল ।বুঝতে পারলাম ঐব্যাটাও পুরাই ধান্ধাবাজ ।আমার সাথে সেই আলাপের পুরাই অভিনয় ছিল ।আমি আশাহত হয়ে ফিরে আসছিলাম ।বরিশাল নতুন বাসস্টান্ড থেকে বাসে উঠেছি ।মিনিট পাঁচেক পরই বাস ছাড়বে....

"বাবা আমি হার্টের রোগী ,গরিব মানুষ-অপারেশন করতে কিছু সাহায্য দেন "- একটা পাঁচটাকা কয়েকটা দুইটাকার নোট সমৃদ্ধ হাতটা আমার সামনে এগিয়ে আসলো । পকেট থেকে দুইটাকা বের করতে করতে ভিক্ষুকের মুখের দিকে তাকালাম ।তিনি তমুদ্দিন!! সেই তমুদ্দীন ।

আমি পাইলাম ,উহাকে পাইলাম ।আমি চিনলেও তিনি আমাকে চিনতে পারেন নাই ।দুইটাকা দিতে বাস থেকে নেমে পরলো ।পিছন পিছন আমিও নেমে আসলাম বাস থেকে ।কিছুটা এগুলেন ।জায়গা বেশ ফাকা ।আমি ফলো করছিলাম ।কাছে গিয়ে বললাম- "তমুদ্দীন সাহেব কেমন আছেন?" ভাল কুশলবিনিময় হল ।আমি মূল টপিকে চলে আসলাম ।উনি ঘাবড়ে গেল ।ভয় দেখিয়ে বললাম ,সব সত্যি বলবেন নয়ত সোজা পুলিশে ধরিয়ে দেব ।

যা শুনালেন- "আমি গরিব মানুষ ।ভিক্কা করেই খাই ।হঠাত্‍ একদিন ঐফকির তার হয়ে ঐভাবে অভিনয় করতে বললো ।বিনিময়ে আমারে পাঁচ হাজার টাকা দিছে ।" ভিক্ষুক চাচার কথা শুনে বুঝতে আর কিছু বাকি রইলো না ।ভন্ডামির ভন্ডগিরির রহস্য এখন উন্মোচিত ।আমি ঐ ভিক্ষুকের সব কথার ভিডিও রেকর্ড নিয়ে নিলাম ।সঙ্গে বাস কাউন্টারের কয়েকজনের জবানবন্দী যে ,"ঐ ভিক্ষুক এই এলাকায় প্রায় ৪ বছর যাবত ভিক্ষা করতেছে...." ।

কিছুটা কাকতলীয় আর ভন্ডামী দিয়ে যে সর্বরোগের মহাষৌধ ঝাড়ফুঁক দিয়ে যাচ্ছিল তার রহস্য না হয় প্রমাণিত হল ।কিন্তু আমার সেই মেমরী কান্ড?? ভিডিওফুটেজ সহ চলে আসলাম ফকিরের কাছে ।সুরসুর করে বলে দিল সব ।সেটা আসলে কাকতালীয়...সেদিন মেমরীটা আমি যেভাবে রেখে গিয়েছিলাম সেভাবেই ছিল ।ভন্ডবাবা তা ছুয়েও দেখে নাই!কিন্তু কাকতলীয়ভাবে সেদিন ঐটা ঠিক হয় যায় ।মেমরীর ক্ষেত্রে যেটা একটা স্বাভাবিক ঘটনা ।।

এরপর?? এরপর আরকি...এইভিডিও ফুটেজও নিয়ে নিলাম ।আপাতত হাজতে থাকুক ভন্ডটা , পরে দেখা যাবে...

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে মে, ২০১৬ ভোর ৬:৩৯

কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: বাহ বাহ ব্রাভো ভায়া
দেখালে যা কান্ড;
আক্কেল ট্যাক্স দিয়ে
হাজতে সে ভন্ড। :D

২৬ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১২:২৩

জে.এস. সাব্বির বলেছেন: ভন্ডটাকে ধরতে পেরে
আছি দারুণ বেশ ।
আমার পাতায় আপনাকে পেয়ে
আজ খুশির নাইকো শেষ ।।

২| ২৬ শে মে, ২০১৬ সকাল ৭:২৭

প্রন্তিক বাঙ্গালী বলেছেন: ভন্ড ধরতে অনেক কস্ট করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে। ভন্ড উন্মচিত করার জন্য।

২৬ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১২:২৯

জে.এস. সাব্বির বলেছেন: অবশেষে ভন্ড উন্মচিত হওয়ায় আমিও বেজায় খুশি ।সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।।

৩| ২৯ শে মে, ২০১৬ রাত ৯:১৪

নীলপরি বলেছেন: যাক শেষে সব ভালো হোলো । গল্প বলার স্টাইল ভালো লাগলো ।

৩০ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৬

জে.এস. সাব্বির বলেছেন: যাক শেষে সব হলো ভালো !

গল্পের স্টাইল আপনার ভালো লেগেছে জেনে তৃপ্ত হলাম ।ধন্যবাদ আপনাকে ।।

৪| ৩০ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৬

সিলা বলেছেন: আচ্ছা এটাকি সত্য নাকি এম্নি গল্প??
সত্য হলে কিন্তু দারুন একটা কান্ড হইছে হাহাহা.... মজা পাইলাম।

৩০ শে মে, ২০১৬ রাত ৯:৩৩

জে.এস. সাব্বির বলেছেন: হু ,দারুণ একটা কান্ড হইছে বটে!!!

গল্পের চরিত্র ,প্লট আর কিছু অংশ সম্পূর্ণ আমার বাস্তব অভিঞ্জতা থেকে তোলা ,বাকিটা গল্প ।বলা যায় ,গল্পের উপসংহার বাদে পুরোটাই সত্যি ।
========
হাহাহা.... প্রথম পর্বে আপনি যে থ্রেডটা মারছিলাম ,আমিতো পুরাই ঘাবড়িয়ে গেছিলাম.... ....!!! (গল্পের এই অংশটা তাই আপনাকে উত্‍সর্গ করলাম)

৫| ৩০ শে মে, ২০১৬ রাত ১০:২৮

সিলা বলেছেন: সত্যি আমাকে উত্সর্গ করলেন!!
এত্তগুলা ধন্যবাদ :)
না মানে ইএ.... আপনি প্রথম পরবে গল্পটা এমন ভাবে উপস্থাপন করলেন আমি ভাবলাম বাস্তব কাহিনী।
আর দেখেননা... আপনার লিখার নিচে (চলবে) লিখাটা খেয়াল করিনি তাই ভাবলাম আপনি.... ফকির বাবার এড করছেন
আসলে সরি :`>

৩১ শে মে, ২০১৬ সকাল ৭:১৭

জে.এস. সাব্বির বলেছেন: হ্যাঁ ,আপনাকেই উত্‍সর্গ করা হয়েছে !!!!....¡¡¡¡

আসলে সরি'টরির কিছু নাই ।প্রথম পর্বটা আমার উপস্থাপনের অপরিপক্কতাই হয়ত আপনাকে ওরকমটা ভাবতে সাহায্য করেছে ।অথবা হতে পারে-আমিও চাচ্ছিলাম প্রথম পর্ব থেকে কেউ ওরকমটা ভাবুক :-P

৬| ৩১ শে মে, ২০১৬ সকাল ৭:৫৬

শাহাদাত হোসেন বলেছেন: ঝড়ে বক মরে ফকিরের কেরামতি বাড়ে। চমৎকার লেখা ।

৩১ শে মে, ২০১৬ সকাল ১০:৪৯

জে.এস. সাব্বির বলেছেন: ঝড়ে বক মরে ফকিরের কেরামতি বাড়ে। চমেৎকার কথা!!!!!!!!!!!!!!!!!!

৭| ৩১ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৪:২৪

গেম চেঞ্জার বলেছেন: প্রন্তিক বাঙ্গালী বলেছেন: ভন্ড ধরতে অনেক কস্ট করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে। ভন্ড উন্মচিত করার জন্য।
২৬ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১২:২৯
লেখক বলেছেন: অবশেষে ভন্ড উন্মচিত হওয়ায় আমিও বেজায় খুশি ।সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।।


ভন্ডামি উন্মোচিত হলো কই? ক্যারামতি তো বরং বাড়লো।

৩১ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৮

জে.এস. সাব্বির বলেছেন: হি হি.... ঠিক বলছেন গেমু ভাই ।

ভন্ডটারে হাজতে পাঠাইয়া যে আমার ক্যাড়ামতি আরো বাড়ল... !!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.