নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এলাকাটি মধ্যবিত্তদের পাড়া বলে চিন্হিত হলেও বিশাল চারতলা বাড়ীটি অত্যাধুনিক ডিজাইনেই তৈরী।তারই এক ঘরে বিধবা আমিনা বেগম শুয়ে আছেন একাকী। সাদা সফেদ শাড়ী পড়া উনাকে দেখলে মনে হয় যেন বিছানার সাথে মিশে আছেন। কারো সাহায্য ছাড়া ইদানীং নিজ হাতে কোন কিছুই করতে পারেন না। এক গ্লাস পানি ঢেলে দেয়ার জন্য হলেও কাউকে ডাকতে হয় ।অবশ্য পায়ের কাছেই বসে আছে সার্বক্ষনিক দেখাশোনার জন্য বেতনভুক এক কিশোরী পরিচারিকা।
দামী পর্দা ঝোলানো ঘরে নামকরা ফার্নিচারের দোকানের ল্যাকার পলিশ করা খাট, আলমিরা, রংগীন এল সি ডি টিভি। আমিনা বেগমের মনে পরে অনেক অনেক বছর আগে সাদাকালো পুরোনো ছোট্ট একটি টিভি কিনে এনেছিল বড় ছেলে। প্রতি সপ্তাহে একটি নাটক আর একটি বাংলা সিনেমা দেখার জন্য কি আকুলতাই না ছিল সে সময়। সেটা দেখাতেও স্বামীর কত বাধা নিষেধ।কত জেদ, কত রাগ। ছেলেমেয়েদের অভিমান আর অনুরোধে কত লুকোচুরি, কত ছলনা আওয়াজ বন্ধ করে দেখা সেই টিভি।আজ তার ঘরের টিভি বন্ধই থাকে বেশীরভাগ সময়। মাঝে মাঝে ছেড়ে দেয় শুধু কাজের মেয়েটার জন্য।
তালের পাখায় স্বামীকে আর ছোট ছোট বাচ্চাগুলোকে বাতাস করতে করতে হাত ভেঙ্গে আসতো।সে সময় ইলেকট্রিক ফ্যানের কথা ভাবাটাও ছিল দুঃস্বপ্ন। আজ মাথার কাছে হাল্কা করে ছাড়া এসি। কোনদিকে কোন আরাম আয়েশের অভাব রাখেনি তার ছেলেরা। কিন্ত একদা বিশাল সংসার এক হাতে সামলানো আমেনা বেগম আজ বয়স আর রোগের কাছে পরাজিত।শুধু শরীরই নয় মানসিক দিক দিয়েও ভেঙ্গে পরেছেন তিনি।
ইদানীং অনেক কথাই ভুলে যান। এক সময় তার স্মৃতিশক্তি ছিল আমাদের কাছে বিস্ময়কর।তার জীবনের কোন ঘটনা সে যদি বহুবার ওঁ পুনঃ উল্লেখ করতো, আমরা অপেক্ষা করতাম এই ভেবে যে এবার নিশ্চয় কিছুটা হলেও অনেকবার বলা কাহিনীটার সামান্য হলেও কিছু পরিবর্তন হবে। না কোনসময়ই সে ঘটনা থেকে একটা দাড়ি কমার ও হেরফের হতো না!
অনেক ছোটবেলায় এক গুরু গম্ভীর, রসকষহীন লোকের সাথে তার বিয়ে বলবো কি না জানি না! নাকি তার ক্রীতাদাসী হয়েছিল । কি ভাবে তার সাথে দীর্ঘ ৫৮ বছর ঘর করেছিল তা ছিল আমাদের কাছে এক বিষ্ময়। বিয়ের পরের বছর থেকেই একে একে ১১ টি সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন আমেনা বেগম। আবার দু চারটি মারাও গিয়েছিল আতুড় ঘরে। না হলে হয়তো সংখ্যা আরো বাড়তো।
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সেই বিশাল অভাবের সংসারের ঘানি টানা ছাড়া তার জীবনে চিত্ত বিনোদনের কি বন্দোবস্থ ছিল আমার জানা নেই।সরকারী চাকুরে স্বামী সারাদিন অফিস থেকে সন্ধ্যা বেলায় ফিরলে মনে হয় বাসায় একটা অঘোষিত কার্ফিউ জারী হতো।আমেনা বেগম থেকে শুরু করে কোলের বাচ্চাটিও যেন বুঝতে পারতো এখন কোন টু শব্দটিও করা যাবে না বা করা সম্ভব নয়।
কি ভাবে তার সেবা যত্ন করলে সে খুশী হবে সেই চিন্তায় সারাদিনের হাড় ভাঙ্গা ক্লান্ত পরিশ্রান্ত আমেনা বেগম ব্যাতিব্যাস্ত হয়ে পড়তেন।অপরাধী অপরাধী চেহারা নিয়ে বদনায় করে এগিয়ে দিত তার হাত মুখ ধোয়ার পানি, মুখ মোছার গামছা হাতে নিয়ে দাড়িয়ে থাকতো তার পেছনে, এরপরই চা আর নাস্তার প্লেট নিয়ে দৌড়ে আসতো একটু দুরে থাকা রান্নাঘরের মিটসেফ থেকে। তাতে বেশীরভাগ সময়ই থাকতো দুটো আটার রুটি, ভাজি আর এক কাপ গরম চা।
এতগুলো ছেলেমেয়ে নিয়ে টানাটানির সংসারে সম্বল ছিল এক ঠিকে ঝি।গুনাগাথা তিন কাজ করে চলে যেত বুয়া। তার ঘাড়ে ছিল পুরো সংসারের কাজ । উঠোনের একমাত্র পানির কল থেকে পানি এনে কাজ সব কাজ নিজ হাতে করতে হতো ।
সকালে দেখতাম লাকড়ীর চুলো ধরিয়ে এক গাদা আটা গুলিয়ে রুটি বানিয়েই যাচ্ছে আমেনা বেগম। আরেক কড়াই ভরা আলু ভাজি। তাই টানা টানি কামড়া -কামড়ি করে খাচ্ছে ছেলেমেয়েরা। কেউ পেল কেউ হয়তো পেলোই না। কেউ মাদুরে বসেছে কেউ পিড়ি পেতে বসে। কেউ বা এক কাপ চায়ের জন্য দাড়ানো ।
সন্ধ্যায় আমেনা বেগমের স্বামী সাইকেল চালিয়ে অনেক দুরের সেই অফিস থেকে ফিরে আসতো। হাত মুখ ধুয়ে চা নাস্তা নামে সেই আটার রুটি আর ভাজি খেয়ে কিছুক্ষন কাঁথা গায়ে জড়িয়ে শুয়ে বিশ্রাম নিত পুরোনো ঘুনে ধরা খাটটায়। এর পরই উঠে পড়ার টেবিলে বই নিয়ে বসে থাকা সব ছেলেমেয়েদের ডেকে নীচে পাটি পেতে বসতো পড়াতে। এটা ছিল তার প্রতিদিন সকাল বিকালের রুটিন। এর কোন ব্যত্যয় হয়নি কোনদিন।
মাঝখানে একবার আমেনা বেগমের ডাক পড়তো সবার জন্য চা আর মুড়ি কোন দিন বা টোষ্ট বিস্কিট দেবার জন্য। তার বাসার বিলাস ব্যাসনের কথা যদি কেউ চিন্তা করে সেটাও হবে এক বিস্ময়কর ঘটনা। আলাদা খাবার ঘর, বসার ঘর কি জিনিস তা তারা শুধু অন্য বাসায়ই দেখেছে। শুধু একটাই রক্ষা যে এই পাচ কাঁঠা জমি তাদের নিজেদের। নাহলে ঢাকায় ভাড়া থাকা ছিল তাদের জন্য স্বপ্নের অগোচর।
আমেনা বেগমের বাবা মা, ভাই, বোনরা যথেষ্ট স্বচ্ছল। মাঝে মাঝে স্কুটার করে এতগুলো ছেলে মেয়ে নিয়ে বাবার বাড়ী এক বেলা ঘুরে আসাটাই ছিল তার জন্য বিশাল এক আনন্দের ব্যাপার। যার স্মৃতির রেশ থাকতো অনেকদিন ধরে। বড় ভাবী কি বল্লো, বাবা কি বাজার করে আনলো, মা কি রান্না করলো, হলুদ দিতে গিয়ে মা ভুলে আবার মরিচ দিয়ে ফেল্লো। কি যে মজা হয়েছিল, কত হাসাহাসি হয়েছিল। কত সব খুটিনাটি ঘটনার স্মৃতি।
দিনের পর দিন, বছরের পর বছর যায়। ছেলে মেয়েরা আস্তে আস্তে বড় হয়ে উঠে। কিন্ত সংসারের ঘানি থেকে মুক্তি পায় না আমেনা বেগম। ওনার স্বামী এখন অবসর গ্রহন করেছেন। বাসায়ই থাকেন। বাজারটুকু করা ছাড়া হয়তো টিভি দেখছেন গাছের গোড়া খুচিয়ে পানি দিচ্ছেন। আগে অফিস থাকায় আমেনা বেগম একটু হয়তো নিঃশ্বাস ফেলার অবকাশ পেত। এখন সেটুকুও সুদুর পরাহত। মাঝখান থেকে বেড়েছে তার কাজের পরিধি।
অসম্ভব বদমেজাজী স্বামী তার নুন থেকে চুন খসলে বাড়ী মাথায় করে নিত। সামান্য কথাতেই শুনতে হয়েছে বাড়ী ছেড়ে চলে যাবার নির্দেশ।আমেনা বেগম কতবার ভেবেছে চলে যাবে বাবার বাড়ী। ধীর পায়ে এগিয়ে গিয়েছে পেয়ারা গাছের নীচে কেচি বেড়ার গেটটার দিকে।
গেটটা ঠেলতে যাবে খোলার জন্য তখুনি মনে হয়েছে এতগুলো ছেলে মেয়ে নিয়ে কার বাসায় উঠবে! যতই বড়লোক হোক তারা কি এত জন মানুষকে সারা জীবনের জন্য আশ্রয় দেবে ! আবার ওদের এখানে ফেলে যাওয়া কি সম্ভব ! মায়ের প্রান কেঁদে উঠে তীব্র বেদনায়। মানুষ কি বলবে! সমাজ কি বলবে! স্বামীর ভাত খেতে পারলোনা ! কেমন মেয়েলোক !
আবার ধীর পায়ে মাথানীচু করে গুটি গুটি পায়ে ঘরে ফিরে আসেন আমেনা বেগম। এগিয়ে গিয়ে চালের টিন থেকে পট দিয়ে চাল মেপে নিয়ে ধুতে বসে।কলের পানি আর চোখের পানি একাকার হয়ে কখন যে টপ টপ করে ঝরে পরতে থাকে হাড়ির ভেতর কারোই নজরে পরে না তা।
আস্তে আস্তে দিন কেটে বছর যায়, ছেলে মেয়েরা সবাই এখন সমাজে প্রতিষ্ঠিত। টিনের বাড়িটা ভেঙ্গে এই চারতালা বাড়িতে সবার আলাদা আলাদা ফ্ল্যাট।সবার সবকিছুই হয়েছে, সবাই যার যার সংসারে সুখী । কিন্ত আমেনা বেগমের জীবন সেই আগের মতই গৃহবন্দী এক গৃহিনী। গেলেই দেখা যেত হলুদের ছোপ লাগানো শাড়ী, পান খাওয়া ঠোটে মাথা নীচু করে বাজার গুছাচ্ছেন।কোন কিছুতেই সন্তুষ্ট নয় স্বামী।
'এত লবন কেন ? এত তেল কেন ? এত ঝোল কেন ? এত শুকনা কেন! আজ কি তরকারীতে লবন দিতে ভুলে গেছ নাকি ? এত ঝাল কেন ', বেগুন আনছিলাম না ! মাছের মধ্যে একটু বেগুন দিলে কি হতো '? মাছের মধ্যে তরকারী কেন ! মাছে কি কেউ তরকারী খায়! একটুও মজা হয় নাই'।
তার সেই অযুত পরিমান অভিযোগের কোন শেষ নেই। কেউ ওনার কোন কাজ করতে চায় না এই ভয়ে। ফলে রান্নাঘরের দায়িত্ব থেকে তার মুক্তি মেলে না।
ছেলেমেয়েরা কত দেশ বিদেশ ঘুরে কত জায়গায় যায়, তার আর কোথাও যাওয়া হয়না। বিয়ের পর থেকে সারাটি জীবন নিজের পছন্দে একটা শাড়ীতো দুরের কথা সামান্য প্রয়োজনীয় জিনিসও কিনেনি সে।বলা যায় সেই সুযোগ পায়নি। স্বামী যা এনে দিয়েছে তাই পরছে, তাতেই খুশী থাকতে হয়েছে।তা পছন্দ হোক আর না হোক।
মনে পড়লো আমার এক আত্মীয়ার কথা যার দামী দামী সব কাতান বেনারশী শাড়ীর সম্ভার দেখলে আমরা থ হয়ে যেতাম।উনার স্বামী মারা যাবার পর উনি প্রায় কলকাতা যেত আর সাধারণ কতগুলো সুতি শাড়ী কিনে এনে আমাদের ডেকে দেখাতো খুব খুশী খুশী মুখে। একদিন জানতে চাইলে বলেছিল, 'আসল কথা কি জানো, সাত বছর বয়সে বিয়ে হয়েছিল । এতটি বছর আমিতো কখনো নিজে কিছু কিনতে পারিনি। সব তোমার মামাই কিনে আনতো।আমাকে কখোনো সাথে নিতোনা।এখন আমি নিজে নিজে যাই কিনি, সস্তা দামের হলেও আমার অনেক ভালোলাগে'।
অবাক হয়ে গিয়েছিলাম তার সরল উত্তরে।
যাক বলছিলাম সেই আমেনা বেগমের কথা যার বাড়ী ছেড়ে কোথাও যাবার উপায় নেই। একবার তার মেঝ ছেলে অনেক চেষ্টা চরিত্র করে বাবাকে বুঝিয়ে নিজের ছেলে মেয়ে আর বৌ এর সাথে মাকে নিয়ে গিয়েছিল কক্সবাজার। সমুদ্রের সেই অপার্থিব সৌন্দর্য যা আমরা অহরহ দেখেও মুগ্ধ হয়ে যাই, তা দেখে উনি বিস্ময়াহত হয়ে পড়েন। এত সুন্দর ! এত সুন্দর যায়গায়ও দুনিয়াযতে আছে! দেয়াল ঘেরা টিনের তিন রুম নিয়েই যার সমগ্র পৃথিবী , চোখের সামনে সমুদ্র তার বিশাল সৌন্দর্য্য মেলে ধরলে তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে পরেন ।
তিন দিন ছিলেন সেখানে ছেলে, বৌ, নাতি নাতনী নিয়ে। যা ছিল তার সত্তর বছরের জীবনের শ্রেষ্ঠ তিনটি দিন। ফিরে এসে সবার সাথে কতদিন পর্যন্ত সমুদ্র নিয়ে তার কত বাখানি, কত বর্ননা, কি তার সৌন্দর্য্য, কি বিশাল মহিমাময় সেই সমুদ্র, সেটা ভাষায় প্রকাশ করার মত নয় এবং সত্যি উনি ভাষা খুজেও পাচ্ছিলেন না ।
এক দিন সিড়ি বেয়ে উঠছি কানে এলো আমেনা বেগমের গলার আওয়াজ, আরেকটু উঠতেই দেখি মেঝ ছেলের নাতি যার সাথে সমুদ্র দেখে এসেছিল তাকে বুকে জড়িয়ে ফিসফিস করে বলছেন ঃ
'চল দাদু আরেকবার সমুদ্দুরে যাই'
রিপোস্ট । যারা আমার এই গল্পটি পড়েন নি তাদের জন্য ।
০১ লা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৪
জুন বলেছেন: পরে ক্যান এখন কি সমস্যা
২| ০১ লা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৬
ভুয়া মফিজ বলেছেন: অহন বাড়ীত বইসা অফিস করতাছি.......ব্যস্ত!!
০১ লা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫২
জুন বলেছেন: বাড়িতে বইসা অফিস করলে কি মানুষ ব্যাস্ত থাকে নাকি !! কি যে কন
যাক ঘরের শাট ডাউন যখন শেষ হবে তখন পইড়েন কিন্ত অবশ্য অবশ্য কইরা ভুয়া
৩| ০১ লা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৮
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আহা!
কত আমেনার বেগমের জীবনের স্বপ্ন চারদেয়ালেই মাথা কুটে শেষ হয়ে গেছে১ কে রাখে তার খবর?
দারুন আমেনা উপাখ্যানে মুগ্ধতা...
আহা দাদু চলো আরেকবার সুমদুর দেখতে যাই....
অপূর্ণ স্বপ্নগাথার দারুন প্রকাশ
+++
০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৪০
জুন বলেছেন: কত আমেনার বেগমের জীবনের স্বপ্ন চারদেয়ালেই মাথা কুটে শেষ হয়ে গেছে১ কে রাখে তার খবর?
আপনি ঠিকই বলেছেন ভৃগু ।
আপনার ভালোলাগলো জেনে আমারও অনেক ভালোলাগলো । ২০১২ এর নভেম্বরে লেখা এই ছোট গল্পটি আমার নিজের কাছেও অনেক প্রিয় । তাই আবার রিপোষ্ট করা ।
ভালো থাকবেন অনেক সবাইকে নিয়ে ।
৪| ০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:১৮
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনি ইন্জ: ইব্রাহিম সাহেবকে জানতেন?
০২ রা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৯
জুন বলেছেন: ইঞ্জিনিয়ার ইব্রাহীম সাহেব আমার খুব পরিচিত একজনের আত্নীয় ।
চাঁদ গাজী সাহেব আপনি আমার লেখা নিয়ে কিছু বলেন নি ।
অবশ্য এই রকম ম্যাওপ্যাও লেখায় আপনার কিইবা বলার আছে
৫| ০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৪৬
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন:
রিপোস্ট হওয়াতে পড়ার সুযোগ পেলাম। ধন্যবাদ আপু আপনাকে। মনুস্মৃতি অনুসারে,
নারী কৈশোরে বাবার অধীনে যৌবনের স্বামীর অধীনে, বার্ধক্যে পুত্রের অধীনে বন্দিনী। এই জীবন মেনে নেওয়ার মধ্য দিয়েই সুখ। যারা এর যৌক্তিকতা খুঁজতে গেছে তাদেরকে পোহাতে হয়েছে যন্ত্রনা। কাজেই আমিনারা এই বন্দিত্বের মধ্যেও সমুদ্র দর্শনের মতো এক ঝলক মুক্ত পরিবেশে নিজেদের মনের ডানা মেলে ধরে। শিশুর মতো নির্মল অনুভূতিতে উদ্বেল হয়ে ওঠে।
অস্বীকার করব না যে মনের অজান্তেই আমরা আমাদের গৃহিণীর উপরেও বোধহয় এক ধরনের পরাধীনতা চাপিয়ে দিই।
খুব কাছ থেকে আদিবাসী সংস্কৃতি দেখার সুযোগ হয়েছিল। ব্যাকরণ সম্মত না হলে ও ওদের সমাজে মেয়েরা খুবই সম্মানের পাত্র। নারী পুরুষ উভয়ই উপার্জন করলেও সংসারের দায়িত্ব নারীর কাঁধে বার্তায়। সে ক্ষেত্রে স্বামী দেবতার টি সারাদিন মদ খেয়ে পড়ে থাকলেও মৌখিক আস্ফালন ছাড়া নারী এটাই ভবিতব্য বলে মেনে নেয়। উল্টো দিকে আমার জানা একজনও পুরুষ পায়নি যে তার স্ত্রীকে শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন করে। কিছু ভালো মন্দ দিক নিশ্চয়ই থাকবে কিন্তু সমানাধিকারের তত্ত্বে আদিবাসী সমাজ যথেষ্ট এগিয়ে।
সাবধানে থাকবেন আপু। ভালো থাকবেন; সুস্থ থাকবেন।
০২ রা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৪
জুন বলেছেন: আপনার এত সুন্দর মন্তব্য পেয়ে খুব ভালো লাগলো পদাতিক চৌধুরী । আসলেও আমাদের মা খালাদের ভেতর এমন কত জন আছে যারা সেই পথের পাচালীর অপুর মা সর্বজয়াই মনে হয় একবার পাশের গ্রাম আড়ংঘাটায় কি এক মেলা দেখেছিল সেই তার ঘর থেকে বের হওয়া আর কত খুশিই না সে হয়েছিল ।
সব সময় পাশে থেকে আন্তরিকভাবে মন্তব্য করেন , লেখা নিয়ে আলোচনা করেন যা খুবই ভালো লাগে । আগামীতেও পাশে থাকবেন সেই প্রত্যাশায় ।
৬| ০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:১৭
রাজীব নুর বলেছেন: লাকড়ির চুলা হয় না। চুলা হয় মাটির। মাটির চুলায় লাকড়ি দিয়ে আগুন জ্বালানো হয়।
০২ রা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৭
জুন বলেছেন: যাহাই বায়ান্ন তাহাই তিপ্পান্ন বলে একটা কথা শুনেছিলাম রাজীব নুর । যাহাই লাকড়ির চুলা তাহাই মাটির চুলা ।
আর শোনেন আমরা সংসারের রাজ্যের কাজ করে এসে ব্লগিং করি । অনেক সময় উত্তর দিতে কিছুটা দেরী হয়ে যায় । তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী । ভালো থাকুন সবসময় আর সাথে থাকুন লেখায় ।
৭| ০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:০৩
মা.হাসান বলেছেন: লক্ষ লক্ষ আমেনা বেগমের এই কাহিনী। তবে এটা পৃষ্ঠার একটা দিক। অপর দিকের গল্পও আছে । লেখেন খুব কম লোক। পদাতিক ভাইয়ের মতো করে বলা যায়- পুরুষ কৈশোরে মায়ের অধীনে, যৌবনের স্ত্রীর অধীনে, বার্ধক্যে পুত্রবধুর অধীনে বন্দি। সব রকমের লোকই সমাজে আছে। তবে আমেনা বেগম ভাগ্যবান, ওনার সমুদ্র দর্শনের সৌভাগ্য হয়েছিলো। আমার চার পাশে এমন প্রচুর লোক দেখি - অর্থের অভাব নেই, কিন্তু আরো অর্থের পিছনে ছুটছেন। পরিবারকে দেয়ার মতো সময় নেই। ভ্যাকেশন নামের শব্দের সঙ্গে পরিচয় নেই।
০২ রা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪১
জুন বলেছেন: আমার চার পাশে এমন প্রচুর লোক দেখি - অর্থের অভাব নেই, কিন্তু আরো অর্থের পিছনে ছুটছেন। পরিবারকে দেয়ার মতো সময় নেই। ভ্যাকেশন নামের শব্দের সঙ্গে পরিচয় নেই।
বেশ কয়েক বছর আগে আমাদের সাথে করমন্ডল এক্সপ্রেসে এক ভদ্রলোকের পরিচয়, চোখের চিকিৎসার জন্য যাচ্ছিলেন উনি। যখন সে শুনলো আমরা সপরিবারে এক মাসের জন্য দক্ষিন ভারত ঘুরতে যাচ্ছি সে খুব আফসোস করছিলো । উনিও এমন ঘুরতে চায় , কিন্ত তার স্ত্রী টাকার হিসাব করেই নাকি তা বাতিল করে দেয় প্রতিবার।
আন্তরিক মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ আপনাকে । কিরপিনের থাইল্যান্ড ভ্রমন কি আর লিখবেন না ?
খুবই উপভোগ্য ছিল পর্বগুলো ।
৮| ০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৩৯
শাহিন বিন রফিক বলেছেন:
আপনার গল্প পড়ে এক খুব কষ্টের কথা মনে পড়লো, খুব বেশি পুরাতন নয়, ২০১৮ সালে ডিসেম্বরে কক্সবাজার গেছি বন্ধুদের সাথে, হোটেলে বসে বাবাকে ফোন দিয়েছি, বললাম কক্সবাজার আসবে। বাবা বলল ঠিক আছে সময় করে একদিন যাবো। আমি বললাম আগামী শীতে তোমাকে মাকে নিয়ে যাব। বাবা ২০১৯ সালের. ২৫শে মার্চ চলে গেলেন। জানিনা আর কখনো কক্সবাজার যাওয়া হবে কিনা, গেলেও বাবাকে অনেক মিস করবো।
০২ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:০৩
জুন বলেছেন: শাহিন বিন রফিক আমার মনে হয় সবার জীবনেই এমন কিছু দুঃখ থাকে । আম্মা মারা গিয়েছেন অনেক অনেক আগে কিন্ত আব্বা কয়েক বছর আগে । আম্মার স্মৃতি ফিকে হয়ে এসেছে অনেকটা কিন্ত আব্বাকে ভুলতে পারি না । মনে হয় কেন এটা করি নাই , ওটাতো করতে পারতাম এই সব ।
মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ,
৯| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:৪৬
নেওয়াজ আলি বলেছেন: অনন্যসাধারণ লেখা।
০২ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:০৪
জুন বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে নেওয়াজ আলি ।
১০| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:৫৭
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আপু কেমন আছেন? এখন গল্প পড়ার মুডে নাই।প্রিয়তে রাখলাম পরে পড়ব।
০২ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:১০
জুন বলেছেন: আমি আছি ভালোই আপনি ?? অনেকদিন পর দেখলাম ব্লগে । ভালো আছেন তো মোস্তফা সোহেল ?
পড়েই পড়ে জানিয়েন কেমন লাগলো ।
মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ
১১| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:৩১
ভুয়া মফিজ বলেছেন: গল্পটা কার মুখ দিয়ে বলালেন, বুঝি নাই।
যাই হোক, সমাজে এরকম বদ পুরুষ বহু আছে। বউকে ভালোবাসে না, কোনদিন কোন মিষ্টি কথা, ভালোবাসার কথা বলে না.....কিন্তু সেই ঘরে বছর বছর একটা করে সন্তান জন্মায়। হাউ কাম!!! এটা কি খাওয়া, ঘুমের মতো একটা রুটিন ওয়ার্ক?
আমার মতে, এসব ইউজলেস ক্রিয়েচারকে চিকন বেত দিয়ে পশ্চাদ্দেশে বেতানো উচিত।
০২ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৪৭
জুন বলেছেন: গল্পটা কার মুখ দিয়ে বলালেন, বুঝি নাই। এইডা বুঝার দরকার কি ভুয়া ? গল্পটা বুঝতে পারছেন তো ? নাকি মাথার উপ্রে দিয়া গেলু
আপনার মন্তব্য প্রসংগে একটা কথা শেয়ার না করে পারছি না । নিজের মুখে বলতে শরম পাইতেছি তবে সবাই বলে আমার রান্না নাকি খুউউব মজা হয় বুঝলেন না ঢাকার মেয়ে কিনা তো যেটা বলছিলাম খেতে বসে যদি কখনো আমার কত্তামশাইকে প্রশ্ন করি ( সে নিজের থেকে জীবনেও বলবে না ) মাছটা রান্না কেমন হয়েছে ? কোন উত্তর নাই , চার পাচ বার জিজ্ঞেস করার পর তার উত্তর "মাছটা বাজার থেকে কে এনেছে দেখতে হবে না" ? তারপর আমি হয়তো জেদ করেই বলি "ঠিক আছে ওমুকের বাসায় মাছটা নিয়ে যাও দেখো কেমন রাধে" ? আবার হয়তো বলি তো রান্নাটা কেমন হয়েছে সেটা তো বলবা ? অনেক বার বলার পর (ছ্যাচড়ার মত) তার উত্তর " ভালো হয়েছে বলেই তো খাচ্ছি নাহলে খেতাম নাকি ! খাওয়া দেখে বোঝো না "? মনে হলো প্লায়ার্স দিয়ে অনেক কষ্টে তার পেট থেকে কথা বের করে আনতে হলো
একটু প্রশংসা করতে এত কৃপনতা মাইনষের। এদেরওঁ কি চিকন বেত দরকার ভুয়া
১২| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:৩৫
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি ভালো থাকবেন। সাবধানে থাকবেন।
০২ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৪৯
জুন বলেছেন: আপনি ভালো থাকবেন। সাবধানে থাকবেন রাজীব নুর ।
১৩| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:৪৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: খুব সুন্দর গল্প! তবে আমার মন্তব্যটা এখানে নয়, মূল পোস্টেই (শিরোনামে সামান্য হেরফের হয়েছে) রেখে এলাম।
রিপোস্ট গল্পে তাই আমার মন্তব্যটাও রিপোস্টঃ
খুব সুন্দর গল্প। এমন আমেনা বেগমদের (লক্ষ্যনীয়, গল্পের শুরুতে নামটা 'আমিনা' বেগম ছিল, পরে আমেনা বেগম হয়ে গেছে) জন্য অনেক মায়া লাগে, তাদের আত্মত্যাগের প্রতি জানাই অনেক শ্রদ্ধা!!!
'চল দাদু আরেকবার সমুদ্দুরে যাই' - এই ছোট্ট কথাটার মাঝে এক সমুদ্র হাহাকার লুকিয়ে আছে!
আগেকার দিনের দাদা-দাদী, নানা-নানীরা তাদের নাতি নাতনিদের কাছে অনেক সময় মনের কথা খুলে বলে নিজেদেরকে হাল্কা করতেন। আমার দাদীমাও আমাকে আদর করে কাছে টেনে অনেক সময় তার মনের অনেক আকুতির কথা প্রকাশ করতেন। এখন আমি আমার সাড়ে পাঁচ বছরের নাতনিটার সাথে সাত সমুদ্রের এপার হতে মনের কথা কেন, 'হ্যালো হাই' বলতে গেলেও তার সেটা শোনার সময় নেই। একটা কথাই সে খুব উচ্ছ্বাসের সাথে হাত নেড়ে নেড়ে বলে, "বাই বাই"!
আমেনা বেগমের আবার সমুদ্রে যাবার ইচ্ছে বা আকুতির কথাটা জেনে মনটা কেমন করে উঠলো! বিস্তীর্ণ সাগর সৈকতে সফেন জলরাশির আছড়ে পড়ার শব্দে অনেকেই তাদের নিজ জীবনের কান্নার প্রতিধ্বনি শুনতে পান।
আট বছর আগে পোস্ট করা এই গল্পটা পড়ে ২৭তম ভাললাগা + রেখে গেলাম!
০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৪
জুন বলেছেন: আমিনা বেগম হয়ে গেল আমেনা!! এতে বোঝা গেল কত মনযোগী পাঠক আপনি খায়রুল আহসান।
আমাদের জীবনে দাদা দাদী নানা নানীর এক বিশাল ভুমিকা ছিল। কিন্ত আমাদের জেনারেশন যখন দাদা দাদী হবে বা হয়েছে তাদের মনে নাতি নাতনীদের জন্য একই পরিমাণ ভালো বাসা রয়েছে। কিন্ত নাতি নাতনীদের দাদা দাদীদের কোলে বসে রাজপুত্তুর ডালিম কুমার ঘোড়ায় চড়ে এসে রাক্ষসের হাতে বন্দী রাজকন্যা মনিমালাকে উদ্ধার করার সেই অবসর কোথায়? তারা এখন পোকেমনে ব্যাস্ত।
তারপর ও বাই বাই করা আনায়ার জন্য অনেক ভালোবাসা।
গল্পের আমেনা বেগমের কষ্ট আপনার মনকে ছুয়ে গেছে তার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ আপনাকে।
ভালো থাকুন, নিরাপদে থাকুন এই প্রত্যাশা রইলো।
১৪| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:৪৮
ফয়সাল রকি বলেছেন: শিরোনামটা দেখে প্রথমেই মনে হলো, যদি কোনোভাবে একটা গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, কক্সবাজারের ওমুক বীচে তিন ডুব দিলে করোনা ভালো হয়! তাহলে তো কাম শ্যাষ!
০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৯
জুন বলেছেন: কত রকম গুজব যে শুনতে হবে ফয়সাল রকি তার কোন ঠিক ঠিকানা নেই। তেমনি হয়তো সমুদ্রে ডুব দেয়া। যাই হোক সমুদ্র আর সমুদ্রের বেলাভূমি এখন ডলফিন আর বিরল প্রজাতির কচ্ছপের পদচারনায় মুখর হয়ে উঠেছে। সেটাই বজায় থাকুক কিছুকাল তবে করোনার ছোবলে নয়।
১৫| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:২০
মুক্তা নীল বলেছেন: জুন আপা ,
এক সাধারন গল্পে অসাধারণ ভালো লাগা । যুগ যুগ ধরে আমেনার মতো মহিলারা ছিলো, আছে এবং থাকবে।
হয়তো কিছুটা ধরন পাল্টেছে যুগের আবর্তনে কিন্তু নারীর প্রতি এক ধরনের মানসিক অত্যাচার ও বৈষম্যমূলক আচরণ রয়েই গেছে।
মন্দের মধ্যে ভালো এই, এখনকার নারীরা অনেক প্রতিবাদী আর আগেকার দিনে নারীরা ছিলেন বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না ।
পদাতিক দা খুব সুন্দর করে মন্তব্য করেছেন ।
ভালো থাকুন ও নিরাপদে থাকুন।
০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৪
জুন বলেছেন: মুক্তানীল খুব সুন্দর এক মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে। আর পদাতিক চৌধুরী সবসময়ই খুবই সুন্দর সেই সাথে প্রাসংগিক মন্তব্য করে থাকেন। আপনার মন্তব্যও খুব আন্তরিক হয়ে থাকে।
অনেক অনেক শুভকামনা রইলো। ভালো থাকুন সবসময়।
১৬| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:৪৯
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
জুন আপা,
কর্মজীবনে আমার দুই বছর পোষ্টেং ছিলো সমুদ্রপাড়ে, সেই দুই বছরের সমুদ্রের ডাক আর সমুদ্রের প্রতি মায়া আজো ত্যাগ করতে পারিনি। সত্যি সত্যি সমুদ্র মানুষকে ডাকে। সমুদ্র মানুষকে আপন করে নেয় খুব সহজে।।
০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:০৩
জুন বলেছেন: আপনার কথায় আমারও মনে পরলো অনেক আগের কথা ঠাকুর মাহমুদ, তবে অন্য রকম। আমার ঘুম প্রিয় আব্বার কিছুদিন পোস্টিং ছিল কক্সবাজার। হিল টপ সার্কিট হাউসে থাকতেন। আমার তখন বছর দশ বারো বয়স হবো, কক্সবাজারের অনেক গল্প শুনেছি আত্নীয়দের কাছে । একদিন আব্বাকে বল্লাম আমাদের কিছুদিনের জন্য বেড়াতে নিয়ে যেতে। আব্বার ক্লাসিক উত্তর
" ঐটা একটা জায়গা হইলো নাকি বেড়ানোর জন্য ! সমুদ্রের গর্জনে ঘুমানোর জো নাই "।
মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ রইলো।
১৭| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:৫৩
মোঃমোজাম হক বলেছেন: আগে পড়িনি।
ভীষণ ভাল লিখেছেন।
ভাল থাকবেন
০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:০৬
জুন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ মোজাম ভাই বরাবরের মতই সাথে থাকার জন্য। আপনি ভালো আছেন তো?
নিরাপদে থাকুন এই দোয়া করি। আমাদের জন্যও দোয়া করবেন। বড্ড কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে সবাই যাচ্ছি। মহান আল্লাহ আমাদের উপর রহমত নাজিল করুন এই প্রত্যাশা থাক সবার।
১৮| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৫:২৯
আখেনাটেন বলেছেন: লক্ষ আমেনা বেগমেরা এভাবেই সংসারের ঘানি টেনে জাতিকে এই পর্যায়ে এনেছেন। কিন্তু চরম বাস্তবতা হচ্ছে পুরুষতান্ত্রীক সমাজে এই আমেনা বেগমদের এক কানাকড়িও মূল্য নেই। আপসোস।
এই আমেনা বেগমের মাঝে আমি আমার কাছের কিছু প্রিয় মানুষের মুখ দেখতে পেলুম, যাদের ঐ 'চল দাদু আরেকবার সমুদ্দুরে যাই' বলাটাও আর হয়ে উঠে নি নিষ্ঠুর বাস্তবতায়।
ভীষণ ভালো লাগল লেখা।
১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:৫২
জুন বলেছেন: আখেনাতেন অনেক দিন পর দেখা পেলাম আপনার। তা করোনা ভাইরাসের কারনে কি খোয়ারেন্টাইনে আছেন কি? পুরনো লেখাটি ভালো লাগায় আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন। অনেকদিন মনে হয় লেখালেখি বন্ধ রেখেছেন। মাঝে মাঝে আসবেন উকি দিতে। ভালো থাকুন আর নিরাপদে থাকুন সবসময়।
১৯| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৩
রাজীব নুর বলেছেন: কোথাও আপনি?
কোনো মন্তব্যের উত্তর নেই!!!
১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:৫৩
জুন বলেছেন: কোথায় আর থাকবো বলেন? আছি বাসাতেই
মন্তব্যে অনেক ধন্যবাদ।
২০| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫০
মলাসইলমুইনা বলেছেন: জুন,
আমাদের ঘরে ঘরে অনেক আমেনা বেগম পাওয়া যাবে সেটাতো শিওর ।কিন্তু ম্যাক্রো লেভেলেও এরকম একজন আমেনা বেগম থাকলে ভালো হতো । কিন্তু ম্যাক্রো লেভেলে আমদের সাধারণত আমেনা বেগম থাকেনা । সেখানে আমাদের আমেনা বেগমরা সহজেই হয়ে যান মহারানী ভিক্টরিয়া বা রানী ইসাবেলা ধরণের কেউ ! এই বাংলায় এই আমেনা বেগম অনেক পরিবারে পরিবারেই । যাক ইতিহাসের সাথে সম্পর্কহীন আপনার এই লেখাতেও নিজের ইতিহাস মনে হলো ।আমার ছেলে বেলার একটা সময় কেটেছে পতেঙ্গার সাগর বেলায় (আব্বার চাকুরীর কাৰণে আমরা পতেঙ্গায় থাকতাম )। জানি না কি কারণে যেন আমাদের অনেক কক্সবাজারও যাওয়া হতো । কিন্তু দেশের বাইরে চলে আসার পরে আর কখনো যাওয়া হয়নি কক্সবাজার । অনেক প্ল্যান ছিল আম্মাকে নিয়ে আমরা সবাই কক্সবাজার যাবো। সেটা আর হয়ে উঠেনি । আর হবে না কখনো । এই গল্পটা আমাদের সবারই জানা কিন্তু তবুও ভালো লাগা গল্পে ।
২১| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৮
সোহানী বলেছেন: চমৎকার একটি বাস্তবতার গল্প। এ ধরনের আমেনা অসংখ্য.............
২২| ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৫৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
স্যরি, আপনার লেখা পড়া হয়নি; আমি এসেছিলেম ইব্রাহিম সাহেবের কথা জানতে।
২৩| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৩:২৩
আহমেদ জী এস বলেছেন: জুন,
পুরোনো চাল ভাতে বাড়ে। আপনার এই রিপোস্টটিও তাই। "চলো দাদু আরেকবার সমুদ্দুরে যাই" এর ভেতরে যে মর্মন্তুদ হাহাকার তেমনই হাহাকার বাড়িয়ে দিয়ে গেলো যেন এখনকার বৈরী সময়টা -- " চলো .... একবার শহরটা ঘুরে আসি।"
বন্দী হয়ে আছি আমেনা বেগমের মতো। যা কিছু বৈভব আমেনা বেগমের জীবনে আগে ছিলোনা, এখন তা অফুরান কিন্তু প্রকৃতির কোমল পরশটি যা তাকে দুলিয়ে দিয়ে গিয়েছিলো এককালে সে জন্যে আমেনা বেগমের এখন হাহাকার। আমাদের জীবনটাও যেন এরই উল্টো রূপ হয়ে উঠেছে এখন এই ক্রান্তি কালে। বছরের পর বছর ধরে প্রকৃতির সুন্দরতার অভাব নিয়ে ( স্মরণ করুন ঐ খবরটি - সেন্টমার্টিন সমুদ্র সৈকতে একদিনেই তিন মন প্লাস্টিক বর্জ্য। ) যখন কেটেছে জীবন, ধূলোবালি ভরা বাতাস নিয়ে উন্মুক্ত এক ডাষ্টবীন শহরে কেটেছে নিত্যদিন এখন তার জন্যই হাহাকার। কখন বলা যাবে -- "একবার যেতে দেনা আমার ছোট্ট....।" কবে ....কখন.......................
জানিনে আমেনা বেগমের জীবনের স্বপ্ন চারদেয়ালেই মাথা কুটে শেষ হয়ে যাবার কথাই বললেন, না কি অপার্থিব সৌন্দর্যের এক বেলাভূমি নিয়ে পড়ে থাকা সমুদ্রের কথা বলে গিয়ে প্রকারন্তরে চারদেয়ালে আমাদের বন্দী জীবনের বাস্তবতা দেখিয়ে গেলেন!
আমেনা বেগমের মতো আমারও বলতে ইচ্ছে করে, " চলো হে মানুষ আর একবার শহরের চৌরাস্তাটায় যাই..............!!!!!!"
২৪| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২০ রাত ২:০৮
অন্তরন্তর বলেছেন: জুন আপু আপনার এ ছোট গল্পটি মনের গহীনে ছুঁয়ে গেল। আমাদের দেশের এমন আমেনার গল্প বাস্তব এবং তা আমি দেখেছি। খুব ভাল লাগল।
অফ টপিক- আপু আপনি কি থাইল্যান্ড আছেন এখন? যেখানেই থাকেন আল্লাহ যেন সকলকে ভাল রাখেন। আমি ৩০ বছর ইংল্যান্ড আছি কিন্তু তাদের স্বাস্থ্যসেবার এমন করুণ অবস্থা দেখিনি কখনো। এত ভাল স্বাস্থ্যসেবা হবার পরেও তাদের অবস্থা দেখে বাংলাদেশ নিয়ে খুব শঙ্কিত আছি। দোয়া করবেন আল্লাহ যেন পৃথিবীর সকল মানুষকে হেফাজত করেন।
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৩
ভুয়া মফিজ বলেছেন: ফার্স্ট হইলাম। পড়ে পড়ুম!!!