নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সুখী মানুষ, স্রষ্টার অপার ক্ষমা ও করুণাধন্য, তাই স্রষ্টার প্রতি শ্রদ্ধাবনত।

খায়রুল আহসান

অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।

খায়রুল আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আরব মরুর বুকে জীবিকার সন্ধানে যাওয়া পলিমাটির দেশ বঙ্গ ব-দ্বীপের কর্মঠ ছেলেদের নিয়ে কিছু কথা

১৪ ই আগস্ট, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪

২৪ মে ২০২৫ থেকে ২৪ জুন ২০২৫, গত এই একটি মাস পবিত্র হজ্জব্রত পালনের উদ্দেশ্যে মক্কা-মদীনায় অবস্থান করেছিলাম। প্রথমে গিয়েছিলাম রাসুল (সাঃ) এর শহর মদীনা শরীফে। সেখানে ৮ দিন অবস্থান করার পর চলে এসেছিলাম আজিজিয়া শহরে। আজিজিয়া থেকেই ০৫ জুন ২০২৫ তারিখে হজ্জের অবশ্যপালনীয় আনুষ্ঠানিকতাগুলো পালনের উদ্দেশ্যে মিনায় চলে গিয়েছিলাম, সেখান থেকে আরাফাত এবং মুযদালিফায় অবস্থান করার উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট সময়ে যাত্রা করেছিলাম। সেসব অবশ্যপালনীয় আনুষ্ঠানিকতাগুলো পালনের পর মক্কা শরীফে এসে হারাম শরীফের নিকট একটি হোটেলে উঠেছিলাম। মদীনায় মাসজিদে নবুবীতে, মক্কায় হারাম শরীফে এবং আজিজিয়ায় আমাদের হোটেলের নিকটস্থ একটি মাসজিদে ওয়াক্তিয়া নামাযগুলো পড়তাম। সেই মাসজিদটির নাম আমি এ মুহূর্তে মনে করতে পারছি না। হোটেল থেকে সেখানে পায়ে হেঁটে যেতে ৭/৮ মিনিট সময় লাগতো।

মদীনায় আমাদের হোটেল থেকে বের হয়ে মাসজিদে নবুবীর দিকে একেবারে সোজা চার শ’ গজের মত হেঁটে গেলে আমরা পৌঁছে যেতাম ৩১৬ নং গেইটে। এই নম্বরটি আমাদের সবার জন্য (বিশেষ করে বয়স্কদের জন্য) ছিল একটি আরাধ্য নম্বর। দলে বলে একসাথে গেলেও, এত জনমানুষের সমুদ্রে আমরা খড়কুটোর ন্যায় ভেসে পৃথক হয়ে যেতাম। তখন পথ খুঁজে পাওয়ার একমাত্র উপায় ছিল এই গেইট নং ৩১৬ খুঁজে বের করা। সেটা আমাদের নিজস্ব বুদ্ধিতে বা স্মরণশক্তিতে খুঁজে পাওয়া প্রথম প্রথম সম্ভব হতো না। এমতাবস্থায় আমাদের সহায়ক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতো মরুর বুকে জীবিকার সন্ধানে বাংলাদেশ থেকে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে আসা কর্মঠ ছেলেরা। তারা কাঠফাটা রোদে দিন দিনান্তে পরিচ্চছনতার কাজ করে যেত। তাদের মুখ দেখেই আমরা বুঝতে পারতাম ওরা আমাদের স্বদেশী, আমাদের মুখ দেখেও ওরা বুঝতো আমরা ওদের স্বদেশী। হারিয়ে যাওয়া পথের সন্ধান খোঁজার জন্য ওরাই ছিল আমাদের ফার্স্ট চয়েস। ওরাও সবসময় উদগ্রীব থাকতো পথ ভোলা পথিককে, বিশেষ করে স্বদেশী আমাদেরকে সাহায্য করার জন্য। সেই “গেইট নং ৩১৬” একেবারে মুখস্থ করে রেখেছিলাম। সেলফোনেও সেই গেইটের একটি ছবি তুলে রেখেছিলাম, যেন প্রয়োজনবোধে আরবী ভাষাভাষী পুলিশকেও সেই গেইটের ছবি দেখিয়ে সাহায্য কামনা করা যায়। অবশ্য সেটা হতো একেবারে লাস্ট এফোর্ট। ২/৩ দিনের মধ্যেই অবশ্য সেই গেইটের পথটি আমাদের সবার মুখস্থ হয়ে গিয়েছিল। তখন কারও সাহায্য ছাড়াই সকলে একা একা যাওয়া আসা করতে পারতাম।

মাসজিদে নবুবীতে যেমন “গেইট নং ৩১৬”, মক্কার হারাম শরীফে তেমনি ‘গেইট নং ৭৯’ এবং ‘পাবলিক ওয়াশরুম নং ৬’ ছিল জনসমুদ্রের মাঝে আমাদের বাতিঘর। আমাদের অবস্থান থেকে কা’বা শরীফে প্রবেশের সহজতম পথ ছিল ‘গেইট নং ৭৯’। আবার ইবাদত শেষে ফিরে আসার সময় আমাদের দিক নির্দেশক ছিল ‘ওয়াশরুম নং ৬’। তুলনামূলকভাবে মদীনার চেয়ে মক্কা শরীফে পথ খুঁজে পাওয়া কঠিনতর ছিল। তবে এখানেও আমাদেরকে অকাতরে সাহায্য করেছেন আমাদের দেশের সেই সব ছেলেপুলেরা। তবে এ প্রসঙ্গে ভারতের মুর্শিদাবাদ এবং কোলকাতা থেকে আগত কয়েকজন পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কথা না বললে ওদের প্রতি অবিচার করা হবে। ওরাও আমাদের দেশের ছেলেদের চাইতে কম সহায়ক ছিলনা। প্রথমে আমাদের স্বদেশী ভেবে ওদের সাথে সরাসরি বাংলায় প্রশ্ন করতাম, ওরাও বাংলায়ই পথ বুঝিয়ে দিত। কথাবার্তার সময় অবশ্য ওরা বলে দিত ওরা ভারতীয়, বাংলাদেশি নয়। তবে এর কারণে উভয়পক্ষের কারও কথা বোঝার ব্যাপারে কোন ব্যত্যয় ঘটতো না। জান্নাতুল বাকি যেয়ারত করে ফেরার সময় একদিন আমাকে মুর্শিদাবাদের একটি ছেলে খুব সুন্দর করে পথ বাৎলে দিয়েছিল। হারাম শরীফেও দুই একদিন ওদের সাহায্য নিয়েছি। স্বদেশী বিদেশি ওদের সকলের এই পরার্থবোধক, নিঃস্বার্থ অবদানের জন্য আমরা হাজ্জীরা সামষ্টিকভাবে ওদের কাছে কৃতজ্ঞ। আল্লাহ রাব্বুল ‘আ-লামীন ওদেরকে এ সৎকর্মের জন্য উত্তম বিনিময় দান করুন!

গত ১৫ জুন ২০২৫ তারিখে আমরা তায়েফ নগরীতে বেড়াতে গিয়েছিলাম। নানা কারণে এ শহরটি একটি ঐতিহাসিক শহর। হজ্জ্বের মূল আনুষ্ঠানিকতা পালন শেষে ততদিনে আমার ছেলে সহ কয়েকজন সহযাত্রী দেশে ফিরে এসেছিলেন, ফলে আমাদের দলটি কিছুটা হাল্কা হয়ে গিয়েছিল। দুটো মাইক্রোবাস ভাড়া করে আমরা তায়েফ গিয়েছিলাম। সময়টা গ্রীষ্মকাল ছিল বিধায় সেখানে বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দিনের আলো অনেকক্ষণ পেয়েছিলাম, তবে ফিরতে ফিরতে বেশ রাত হয়ে গিয়েছিল। পড়ন্ত বিকেলের একটি মুহূর্তে লক্ষ্য করলাম, পথের পাশে “লুক আউট পয়েন্ট” এ শত শত দর্শনার্থীদের আনন্দজোয়ার দূর থেকে একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী মনযোগ সহকারে দেখছে। তবে সে কোন মাসজিদের পরিচ্ছন্নতাকর্মী ছিল না, ছিল পথের এবং পথ সংলগ্ন ভূমির পরিচ্ছন্নতাকর্মী। দর্শনার্থীদের কেউ তখন উটের পিঠে, কেউ ঘোড়ার পিঠে চড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, অন্যেরা শুধুই ছবি তোলায় ব্যস্ত। আমি তার কাছে গিয়ে একটু আলাপ পাড়লাম। থাকা, খাওয়া বেতন ইত্যাদি নিয়ে কোন সমস্যা আছে কিনা, তা জিজ্ঞাসা করলাম। সে প্রথমে একটু আড়ষ্ট ছিল, কিন্তু পরে মন খুলে কথা বলে। ময়মনসিংহের মধুপুর এলাকায় তার বাড়ি, বাড়িতে মা জীবিত আছেন। এখানে উপার্জন করে দেশে মাকে টাকো পাঠানোয় কোন সমস্যা হয় না বলে সে জানালো। আমি যখন তাকে বললাম যে তার এলাকায় আমি বহুবার গিয়েছি, তখন এটা শুনে তার উৎসাহ অনেকটা বেড়ে গেল।

ফেরার পথে ‘মিক্বাত’ হিসেবে গণ্য একটি মাসজিদে আমরা পরিচ্ছন্ন হয়ে এহরাম পরিধান করে পুনরায় হারাম শরীফের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করি। এ যাবত যত জায়গায় আমি পথ খুঁজে পাবার জন্য কিংবা অন্য কোন জ্ঞাতব্য বিষয় জানার জন্য পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সাহায্য কামনা করেছি, তাদের মধ্যে সাহায্যের জন্য সবচেয়ে বেশি স্বতঃস্ফূ্র্তভাবে এগিয়ে আসতে দেখেছি তায়েফ থেকে ফেরার পথে দেখা এই মাসজিদের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের। ওদের মধ্যে একজন আমাকে এহরাম পরিধানে অত্যন্ত চমৎকারভাবে সহায়তা করেছিল। মাসজিদটির নাম কার্নে মানাযিল। এটি একটি মিক্বাত মাসজিদ।


ঢাকা
১৩ অগাস্ট ২০২৫
শব্দ সংখ্যাঃ ৭৮৪





সুমনের সাথে তোলা ছবি।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই আগস্ট, ২০২৫ দুপুর ১২:২৪

রবিন.হুড বলেছেন: সুন্দর অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। আপনার ক্যাপের লোগোটা পরিচিত মনে হচ্ছে। আপনি কি ডিফেন্সে ছিলেন?

১৪ ই আগস্ট, ২০২৫ বিকাল ৪:০৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ।
গত বছর Veterans’ Day তে একটি ওয়াকাথনে অংশ নিয়েছিলাম। সেখানে গিফট পেয়েছিলাম এ টুপিটা এবং একটি পোলো শার্ট।

২| ১৪ ই আগস্ট, ২০২৫ দুপুর ১:১৫

রবিন_২০২০ বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন।
আমার অভিজ্ঞতাও আপনারই মতো। শুধু মক্কা /মদিনাই নয় এয়ারপোর্টগুলোতেও বাংলাদেশী কর্মীরা খুবই আন্তরিক। আপনজনদের সান্নিধ্যহীন, কঠোর পরিশ্রমী সহজ সরল মানুষগুলো এখনো যান্ত্রিক হয়ে উঠেনি।

১৪ ই আগস্ট, ২০২৫ বিকাল ৫:১৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: আবারও ধন্যবাদ।
শুধু মক্কা /মদিনাই নয় এয়ারপোর্টগুলোতেও বাংলাদেশী কর্মীরা খুবই আন্তরিক। আপনজনদের সান্নিধ্যহীন, কঠোর পরিশ্রমী সহজ সরল মানুষগুলো এখনো যান্ত্রিক হয়ে উঠেনি। - নিঃসন্দেহে সঠিক কথাটাই আপনি বলেছেন।
১ ও ২ নং মন্তব্যের দুটো নিকই একই ব্যক্তির নাকি? কী কারণে দুটো নিক নিতে হয়েছিল?

৩| ১৪ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৩২

প্রামানিক বলেছেন: সুন্দর ভ্রমণ কাহিনী, পুরোটাই পড়লাম। খুব ভালো লাগল।

১৪ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ৯:৪৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ জানবেন।

৪| ১৪ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ১০:০৫

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: আল্লাহ আপনার ওমরাহ কবুল করুন। আমাদের জন্য দোয়া করবেন।

১৫ ই আগস্ট, ২০২৫ সকাল ১০:০২

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনি আমার দোয়ায় সামিল হলেন।

৫| ১৪ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ১১:০৪

বিজন রয় বলেছেন: বাহ! সুন্দর।

আপনি অনেক বিষয় নিয়ে লিখতে পারেন।

১৫ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ৯:৪৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: লেখার অনেক বিষয়ই আছে। কিন্তু সময়ের ঘাটতি সবসময়ই প্রবল।

৬| ১৫ ই আগস্ট, ২০২৫ ভোর ৬:৩০

ঢাকার লোক বলেছেন: আলহামদুলিল্লাহ, এবারের প্রচন্ড গরমে সুস্থ থেকে হজ সম্পন্ন করে সবাই দেশে ফিরে গিয়েছেন, আল্লাহকে ধন্যবাদ ! আল্লাহ আপনাদের হজ কবুল করুন।
সৌদি আরবে খেটে খাওয়া লোকগুলো দেশের হাজি সাহেবদের একটু বিশেষ সম্মানের চোখেই দেখে এবং যথাসাধ্য সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসে। আল্লাহ ওদেরকেও উত্তম প্রতিদান দিবেন ইনশাল্লাহ !

১৭ ই আগস্ট, ২০২৫ ভোর ৫:৫২

খায়রুল আহসান বলেছেন: এ বারের হজ্জ্বেই ছিল সর্বাধিক গরম। মনে হতো, মাথার খুলি ফেটে বোধহয় মগজগুলো দিগ্বিদিক ছড়িয়ে পড়বে। তথাপি বলবো, গত বছরের ন্যায় যেন হাজ্জীগণ অধিক সংখ্যায় হীট-স্ট্রোকে মারা না যান, সে বিষয়ে মক্কা ও মদীনা উভয় পবিত্রস্থানে সৌদি সরকার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রেখেছিলেন। হাজ্জীদের সুবিধার্থে বিনামূল্যে বিতরণ করা ঠাণ্ডা পানি ও জুসের ছিল ছড়াছড়ি। যে যত বেশি চায়, খেতে পারে এবং সাথে নিতেও পারে।
"সৌদি আরবে খেটে খাওয়া লোকগুলো দেশের হাজি সাহেবদের একটু বিশেষ সম্মানের চোখেই দেখে" - অবশ্যই। শুধু ওরাই নয়, কর্তৃপক্ষও বেশ সম্মানের সাথে আচরণ করে, বিশেষ করে মদীনাবাসী কর্তৃপক্ষের আচরণ ও আতিথেয়তা হাজ্জীদেরকে অনেক মুগ্ধ করেছে।
পোস্ট পড়ে সময় করে সুন্দর মন্তব্য রেখে যাবার জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
আশাকরি আপনি সুস্বাস্থ্যে আছেন। আপনার জন্য নিরন্তর দোয়া রইলো, আপনিও আমার জন্য দোয়া করবেন। ঢাকার লোক কখনো ঢাকায় ফিরলে অবশ্যই আমাকে জানাবেন।

৭| ১৫ ই আগস্ট, ২০২৫ সকাল ১০:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: বাহ। গ্রেট।

১৭ ই আগস্ট, ২০২৫ সকাল ৭:২৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ।

৮| ১৬ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ১১:২৭

নীল-দর্পণ বলেছেন: ৩১৬ নং গেইট! আসলে কতগুলো গেইট তবে জানেন? আমরা যখন গিয়েছিলাম ২৫ নং গেইট ছিল আমাদের চিহ্ন। আর মক্কায় হেরেম থেকে বের হবার সময় ওয়াশরুমের ৫ নং গেইট!
একদিন আমি আর কন্যাদ্বয়ের বাবা মাতাফ থেকে বের হবার সময় আলাদা হয়ে গেলে একজন আব্দুল আজিজ গেইটে আর একজন ফয়সাল গেইটে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলে পরে এক হয়েছিলাম। আপনার লেখা পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিল আরো অনেক কিছু নিয়েই লিখবেন। হুট করেই পড়া শেষ হয়ে গেল।

কেমন আছেন? সময় সুযোগ করে আরো লিখবেন সেখানের গল্প অভিজ্ঞতা এই আশা রাখছি।

১৭ ই আগস্ট, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: "আসলে কতগুলো গেইট তবে জানেন?" - আমার মনে হয়, এখন মাসজিদে নবুবীতে ৫০০ এর মত গেইট আছে। তবে এটা অনুমান মাত্র, নিশ্চিত নই।
মাতাফ থেকে বের হবার সময় আমরাও প্রায়ই একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতাম। এতে প্রথম প্রথম আমার স্ত্রী খুব ভয় পেয়ে যেত। পরে অবশ্য ও আমার চেয়েও ভালভাবে পথ খুঁজে বের করতে পারতো। তবে এর পেছনে শক্তি ও সাহসের যোগানদার ছিল ঐ পরিচ্ছন্নতাকর্মীর দল।
হুট করেই পড়া শেষ হয়ে গেল - হুম। আসলে কয়েকদিন থেকেই হজ্জ্বের স্মৃতি রোমন্থনের সময় সাহায্যকারী পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কথা স্মরণ করে মনটা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতায় ভরে উঠেছিল। তাদের কথা স্মরণ করেই এ পোস্টটা লিখেছি। সময় পেলে পুরো হজ্জ্বের বিবরণ নিয়ে একটি সিরিজ লেখার ইচ্ছে আছে।

৯| ১৭ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ৩:৫০

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



এই ভ্রমণকথাটি পড়তে গিয়ে মনে হলো আমি যেন নিজেই হজ্জযাত্রার এক গুরুত্বপুর্ণ অভিজ্ঞতার ভেতরে
হেঁটে বেড়াচ্ছি। আপনি হজের আনুষ্ঠানিকতার বাইরেও যাত্রাপথে দেখা শোনা ছোট ছোট মানবিক ঘটনার
মধ্য দিয়েও হজ্জের অন্তর্নিহিত সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলেছেন। বিশেষ করে আমাদের দেশের পরিচ্ছন্নতাকর্মী
তরুণদের অকৃত্রিম সহযোগিতা ও আন্তরিকতার দিকটি লেখায় জীবন্তভাবে উঠে এসেছে। তাদের ঘাম ঝরা
পরিশ্রমের আড়ালে থাকা নিঃস্বার্থ মানবিকতা যেন হজ্জযাত্রীদের পথ খুঁজে পাওয়ার বাতিঘর হয়ে উঠেছে।
আপনার কৃতজ্ঞতার স্বীকারোক্তি পাঠক হিসেবে আমার মনেও গভীর আবেগ জাগিয়েছে।

আরও ভালো লেগেছে যে আপনি সীমান্তের উর্দ্ধে মানবিকতার মিলনকেও স্থান দিয়েছেন । বাংলাদেশের
ছেলেদের মতোই ভারতের মুর্শিদাবাদ ও কলকাতার শ্রমিকদের সহায়তার প্রসঙ্গটিও সুন্দরভাবে তুলে
ধরেছেন। এতে মনে হয়েছে, আল্লাহর ঘরের দিকে যাত্রায় সবাই আসলে একই উদ্দেশ্যে, একই ভ্রাতৃত্বের
সূত্রে বাঁধা।

সবশেষে, তায়েফ ভ্রমণ ও কার্নে মানাযিল মিক্বাত মসজিদে দেখা সেই পরিচ্ছন্নতাকর্মীর সহায়তার বর্ণনা
লেখাটিকে আরও গভীর করেছে। মনে হলো, পবিত্র হজ্জ কেবল আচার অনুষ্ঠানের সমষ্টি নয়, বরং মানুষে
মানুষে এই আন্তরিক সহযোগিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধই এর সবচেয়ে বড় শিক্ষাগুলোর একটি।

পবিত্র হজ্জ সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করে পবিত্র দেহমন নিয়ে দেশে ফিরে আপনার মুল্যবান অভিজ্ঞতা শেয়ার করার
জন্য ধন্যবাদ ।

শুভকামনা রইল ।

১৮ ই আগস্ট, ২০২৫ সকাল ১১:২০

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার এমন চমৎকার মন্তব্যটি দিয়ে যেন এ পোস্টটা পরিপূর্ণতা পেলো! অশেষ ধন্যবাদ।
"আরও ভালো লেগেছে যে আপনি সীমান্তের উর্দ্ধে মানবিকতার মিলনকেও স্থান দিয়েছেন" - আমরা সকলেই একই স্রষ্টার সৃষ্ট। সে কারণে বিশ্বের সকল মানুষ একটা ভ্রাতৃত্ববন্ধনের মাঝে আবদ্ধ। হজ্জ্ব ও উমরাহে গেলে এ ভ্রাতৃত্বের বন্ধনটা টের পাওয়া যায়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.