নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কালাম আজাদ

কালাম আজাদ কক্সবাজার

মানবধর্ম ও সাম্যবাদী রাজনৈতিক দর্শনে বিশ্বাসী

কালাম আজাদ কক্সবাজার › বিস্তারিত পোস্টঃ

কক্সবাজারের নাট্যচর্চা: একাল- সেকাল

১৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ২:৪৫

মানব সভ্যতার অগ্রগতি সাধিত হয় উৎপাদন ব্যবস্থার বিকাশের সাথে এবং এর উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে সংস্কৃতিসহ সভ্যতার অন্যবিধ উপাদান। উৎপাদনের সম্পর্কসমূহের সমহারই অর্থনীতি- যা সমাজের ভিত্তি। যার উপর দিয়ে গড়ে ওঠে উপরিকাঠামো। উৎপাদনের সুত্রপাত মূলত কৃষি ব্যবস্থা থেকে। কৃষি ব্যবস্থা প্রথমে ছিল নিছক রোপন ব্যবস্থা। পরে লাঙলের মাধ্যমে ভূমি কর্ষণ ব্যবস্থার সুত্রপাত। হল বা লাঙল কৃষি কাজের প্রধান হাতিয়ার। উৎপাদনের জন্য যা করা হয় তা হল কর্ষন। এই কর্ষনই জীবনের মৌলিক ভিত্তি তৈরী করে এবং তার উপরে নির্ভর করে যা কিছু বিকাশ করে যেমন রীতি-নীতি, পোষাক-পরিচ্ছদ, আইন-কানুন, সংস্কার-বিশ্বাস ইত্যাদিও হয় এই উৎপাদনের ব্যবস্থার উপরি কাঠামো। সে জন্য এ গুলোর সম্মিলিত নাম হয় কৃষ্টি, যা কর্ষণ শব্দ থেকে জাত। আর এই কর্ষণ থেকে সংস্কৃতির সুত্রপাত। মানুষের সৃষ্টিশক্তির পরিচয় তার সংস্কৃতিতে। এই সৃষ্টিশক্তির জন্যই মানুষ। মানুষ অন্যজীব থেকে স্বতন্ত্র। অন্যজীব প্রকৃতির বশ;কিন্তু মানুষ প্রকৃতিকেও বশে আনতে পারে,সৃষ্টি করতে পারে। সে কৃতি বা সৃষ্টির দ্বারা মানুষ। মানুষ তাই সংস্কৃতি। আর মানুষেরা সে সব রীতিনীতি,কলা-কৌশল মেনে চলে সংস্কৃতিকে ধারণ করে। তাই E.B tailor এর মতে বলা যায়- Culture is that complex whole which includes knowledge’s beliefs, arts, morals law, custom and any other capabilities and habits acquired by man as a member of society'' (জ্ঞান, বিশ্বাস, কলা, নীতি, আইন, প্রথা এবং সমাজের সভ্য হিসেবে আহরিত অন্যান্য যোগ্যতা ও অভ্যাসের সমষ্টিকে সংস্কৃতি বলে)। এই বিচারে আর্ট বা শিল্পকলাও সংস্কৃতির অংশ। শিল্পকলা হলো সাহিত্য, চিত্রকলা, নৃত্য, সংগীত (যন্ত্র ও কণ্ঠ), ভাস্কর্য ও স্থাপত্য। আমি বক্ষমান নিবন্ধে কক্সবাজারের নাট্যচর্চা বিষয়ে আলোচনার প্রয়াসি হচ্ছি।

সমুদ্রতীরবর্তী কক্সবাজারের নান্দনিক সাংস্কৃতিক চর্চায় ভুমিকাও কম নয়। যদিও আমি কক্সবাজারের সাংস্কৃতিক চর্চার পুর্ণাঙ্গ ধারণা দিতে পারবনা তথাপি কক্সবাজারের সাংস্কৃতিক চর্চার ধারাবাহিকতার ইতিহাস প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক আলোচনা করার চেষ্টা করা গেল-সাংস্কৃতিক চর্চার বিভিন্ন অংশের মধ্যে নাট্য, সংগীত চিত্রকলা প্রভৃতি শাখার মধ্যে নাটক একটি সমৃদ্ধ শাখা। কক্সবাজারে কখন কোথায় নাট্যচর্চার শুরু হয় তা সঠিকভাবে বলা না গেলেও বৃটিশ আমলে এখানে নাট্যচর্চা শুরু হয় বলে জানা যায়। ১৯২৩ সালের জানুয়ারীতে চকরিয়ায় সর্বপ্রথম নাটক মঞ্চস্থ হয়। সেক্সপিয়রের “হ্যামলেট” নাটক মঞ্চায়নের মধ্য দিয়ে কক্সবাজারের নাট্যচর্চা শুরু হয়। এরপর ১৯২৭ সালে চকরিয়া এম.ই স্কুলে মঞ্চায়িত হয় ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ নাটকটি।

ত্রিশের দশকে ‘রামু ক্লাব’ নামে একটি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমান রামু থানার উত্তরদিকে উমেশ ধূপীর ভিটায় দানবীর খিজারী দালালের আর্থিক সহায়তায় ক্লাবঘরসহ স্থায়ী মঞ্চ সম্বলিত বৃহদাকার একটি মিলনায়তন নির্মিত হয়। উক্ত মিলনায়তনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নাট্যকর্মী এনে নাটক মঞ্চায়ন করা হতো। এ সময় মঞ্চায়িত নাটকের মধ্যে সিরাজ উদ্দৌলা, টিপু সুলতান, আমিনা সুন্দরী প্রভৃতি উল্লেখ যোগ্য।

চল্লিশের দশকের প্রথম দিকে জীবন খাস নবিশ নামে একজন সংস্কৃতিবান এস.আই রামু থানায় বদলী হয়ে আসেন। তাঁর উৎসাহ ও উদ্দীপনায় রামুর নাট্যচর্চা আরো গতিশীল হয়। এ সময় জাকের আহমদ চৌধূরীর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘রামু বাজার ড্রামাটিক এসোসিয়েশন’। এখানে উল্লেখ করার দরকার যে, জাকের আহমদ চৌধূরী সম্ভবত রামুর প্রথম মুসলিম নাট্যকর্মী। তাঁর সাথে রামুর নাট্যাঙ্গনে যারা অবদান রাখেন তাদের মধ্যে রয়েছে - রাজ কিশোর চক্রবর্তী, রেবতী মোহন বড়–য়া, শ্রীধন বড়–য়া, রাস বিহারী চৌধূরী, শচীন বড়–য়া, জীবন খাসনবীশ, রমনী গাঙ্গুলী, দীনেশ বড়–য়া মহাজন। পর্যায়ক্রমে ১৯৪৭ সনে দেশবিভাগের পর কক্সবাজারে নাট্যচর্চার প্রাণ সঞ্চারিত হয়। যথেষ্ট সমস্যা বিদ্যমান সত্ত্বেও সুধীজন, ছাত্র, যুবা, চাকুরীজীবীসহ অনেকে নাট্যচর্চা করে যাচ্ছেন। ১৯৪৭ সালে এডভোকেট জ্যোতিশ্বর চক্রবর্তী কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরীর সম্পাদক থাকাকালে তৎকালীন মহকুমা হাকিম আবুল খায়েরের পৃষ্ঠপোষকতায় কাছারী পাহাড়ে (বর্তমান কোর্ট বিল্ডিং) ‘মহারাজ নন্দকুমার’ নাটকটি মঞ্চায়নের মাধ্যমে কক্সবাজার শহরে নাট্যচর্চা শুরু হয়। এ নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করে যারা দর্শকদের দৃষ্টি কেড়েছিল তাদের মধ্যে দেবপ্রসাদ ভট্রাচার্য, ওবাইদুল হাকিম, নজিবুর রহমান, নলিনী দত্ত, প্রবোধ কুমার রক্ষিত, নিরোদ চক্রবর্তী, অমরেন্দ্র নাথ মজুমদার, মনমোহন সেন, বজল আহমদ প্রমূখ। এ সময়ে মঞ্চায়িত নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘কংক্যবতীর ঘাট’, ‘মেঘে ঢাকা’, ‘মোহমুক্তি’, ‘জীবন ষ্ট্যাচ’ু, ‘নাটক নয় ফাঁস’, ‘ক্ষুধা’,‘পথের শেষে’, ‘মনিকান্চল’, ‘আলোড়ন’, ‘সম্রাট শাহজাহান’, ‘সিরাজদৌল্লাহ’, ‘আরঙ্গজেব’ প্রভৃতি।

১৯৪৯ সালে কক্সবাজারের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম পুরোধা ওস্তাদ আবু বকর সিদ্দিকী শরীক হলে সাংস্কৃতিক অঙ্গন আরো বিকশিত হয়। অতঃপর ১৯৫৬ সালে একে এম জাকারিয়া মহকুমা হাকিম হিসাবে যোগদানের পর তাঁর ব্যক্তিগত পৃষ্টপোষকতায় পাবলিক লাইব্রেরীর ‘জর্জ ও মেরী’ হলে ‘টিপু সুলতান’ নাটক মঞ্চস্থ হয়। এতে বিভিন্ন চরিত্রে অংশগ্রহণ করেন- মৌলভী ফরিদ আহমদ, দেব প্রসাদ ভট্টাচার্য, ওবাইদুল হক, বজল আহমদ, নিরোদ বরণ চক্রবর্তী, মকবুল আহমেদ, আব্দুল হাকিম, প্রবোধ কুমার রক্ষিত, মনতোষ কুমার চৌধূরী, এডভোকেট সুরেশ চন্দ্র সেন, মোজাম্মেল হক চৌধুরী, আব্দুর রহিম চৌধূরী, এড. মোহাম্মদ আলী, সাইমুম শমশের, অমরেন্দ্রনাথ মজুমদার, প্রবোধ কুমার রক্ষিত, দুলাল পাল, বিশ্বেশ্বর ভট্টাচার্য প্রমুখ।

১৯৫০ সালে নুনিয়াছড়া আবুল কাসেমের প্রযোজনায় ‘সিরাজদৌল্লাহ’ নাটকটি মঞ্চায়িত হয়। এতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করে যারা দর্শকদের দৃষ্টি কাঁেড়ন তাদের মধ্যে রয়েছে- এড.ছালামত উল্লাহ, জয়নাল আবেদীন, আলতাজুর রহমান, মোহাম্মদ আজিজ, মুহম্মদ নাসির উদ্দীন, লিয়াকত আলী,বদিউল আলম প্রমুখ।

১৯৫০ সালে ১৬ ডিসেম্বর দেব প্রসাদ ভট্টাচার্য’র পরিচালনায় ‘সিরাজের স্বপ্ন’ নাটকটি কক্সবাজার হাই স্কুলে মঞ্চায়িত হয়। এ নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন- সলিমুল্লাহ, আবুল কালাম আজাদ (তৎসময়ে ৫ম শ্রেণীর ছাত্র ও বর্তমান সিনিয়র আইনজীবী), আবুল মঞ্জুর (বর্তমান কানাডা প্রবাসী), ইউ সুয়ে জান, সেলিম রাহগীর, ছালামত উল্লাহ (বর্তমান সিনিয়র আইনজীবী), জয়নাল আবেদীন প্রমুখ। কক্সবাজার হাইস্কুলে এ নাটকটি মঞ্চায়নের মধ্য দিয়ে স্কুলে নাট্যচর্চার ইতিহাস শুরু হয়। তাছাড়া ১৯৫৬ সালের শুরুর দিকে দেব প্রসাদ ভট্টচার্য কক্সবাজার হাইস্কুলে শিক্ষকতার করার সময়ে ‘চন্দ্রগুপ্ত’ নাটক মঞ্চস্থ হয়। এ নাটকে সক্রিয়ভবে অংশগ্রহণ করেছিলেন এড. ছালামত উল্লাহ, কবি সেলিম রাহগীর, অধ্যাপক নূর আহমদ এডভোকেট, লিয়াকত আলী, মুহাম্মদ নাসির উদ্দিনসহ স্কুলের কয়েকজন ছাত্র। এ সময়ে ‘সিরাজদ্দৌলা’, ‘ঝিলিমিলি’ (স্কুল), ‘মার্চেন্ট-অব-ভেনিস’, ‘মীর কাসেম’, ‘জাহাঙ্গীর’, ‘সাহজাহান’, ‘বিশ বছর আগে’, ‘মহুয়া’, ‘শিরি-ফরহাদ’, ‘উদয়নালা’, ‘সিরাজের স্বপ্ন’ প্রভৃতি নাটক মঞ্চায়িত হয়। আর এসব নাটকে পরিচালনায় ও নাট্য অভিনয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন- ওবাইদুল হাকিম, ডাঃ কবীর আহমদ, অধ্যাপক শাহ জাহান মনির, অধ্যাপক নূর আহমদ, পেটান আলী, সেলিম রাহগীর, মোহাম্মদ আলী, নেজামুল হক, এড.আবুল কালাম আজাদ, শওকত, কাসেম, কালু, বদিউল আলম, মকবুল আহমদ, আব্দুল হাকিম, গোলাম কিবরিয়া প্রমুখ। তখনও নাট্যাভিনয়ে মেয়েরা এগিয়ে না আসায় স্ত্রী চরিত্রে ওবাইদুল হক, নুরুল হুদা চৌধূরী, দুলাল পাল, প্রবোধ কুমার রক্ষিত, অমূল্য চক্রবর্তী, আতিকুল্লাহ প্রমুখ অভিনেতারা অভিনয় করে দর্শক মাতিয়ে তুলতেন।

১৯৫৬ সালের ২৬ মার্চে কক্সবাজার ইনষ্টিটিউট ও পাবলিক লাইব্রেরীর সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘সঙ্গীত সমিতি’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গঠিত হয়। তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক এ কে.এম জাকারিয়া এবং এস.ডি.এম সি.ও এন রহমান প্রতিষ্ঠানের সম্পাদক ছিলেন। এ সময় পৌর এলাকা টেকপাড়ায় নাট্যানুষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ধুম পড়ে যায়। ১৯৫৬-১৯৫৭ সময়ে ‘লায়লী-মজনু’, ‘টিপু সুলতান’, ‘সিরাজদৌল্লাহ’, ‘মহুয়া’, ‘সিন্ধু বিজয়’, ‘সোহরাব-রুস্তম’, ‘উল্কা’, ‘গ্রামের দাঙ্গা’, ‘পলাতক বই’, ‘জীবন সংগ্রাম’, ‘আড্ডা’ প্রভৃতি নাটক মঞ্চস্থ হয়। আর এসব নাটকে অভিনয় করেন- ওবাইদুল হাকিম, দেবপ্রসাদ ভট্টাচার্য, মো. হাসান, জয়নাল আবেদিন, এড.সুরেশ চন্দ্র সেন, এড,জ্ঞানেন্দ্র লাল চৌধুরী (একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের শহীদ), হরি চৌধুরী, মকবুল নাজির, নিরোধ চক্রবর্তী, গোপাল ভট্টাচার্য, শিশির নন্দী, প্রফূল্ল রক্ষিত, ফিরোজ আহমদ চৌধুরী, অহিদুল আলম,শামশুল হুদা, কবি সেলিম রাহগীর, ডাঃ কবীর আহমদ, ড.শাহজাহান মনির, মফিজ, গোলাম নবী, পেটান আলী, জাফর আলম, গোলাম কিবরিয়া, মোহাম্মদ আলী, আব্বাছ উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ। এসব নাটক পরিচালনা ও প্রযোজনায় যাদের হাত বেশী তাদের মধ্যে এড. মমতাজুল হক, এড. বঙ্গিম রক্ষিত, এড. বোধেন্দু ভট্টচার্য, এড. এখলাছুর প্রবীর প্রমুখ।

মহকুমা প্রশাসক এ.কে.এম জাকারিয়া একজন সংস্কৃতিমনা ব্যক্তি ছিলেন। তিনি কক্সবাজারের মহকুমা প্রশাসক হিসেবে যোগদানের পর কক্সবাজারের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নতুন আমেজ ফিরে পায়। ঘন ঘন নাটক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানাদিতে মুখরিত হয়ে উঠে লাইব্রেরীর শিলনায়তন। এই সময় মঞ্চস্থ হয়‘ টিপু সুলতান’, ‘সিরাজের স্বপ্ন’, ‘মীর কাসেম’, ‘জাহাঙ্গীর’, বিশ বছর আগে’ প্রভৃতি নাটক। তাঁর তত্ত্বাবধানেই পাবলিক লাইব্রেরীতে কবি জসিমউদ্দীনসহ নামকরা শিল্পীদের সংব^র্ধনা দেওয়া হয়। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিক বদিউল আলম বলেন- ‘ মহকুমা অফিসার জনাব একেএম জাকারিয়ার আমন্ত্রনে কক্সাবাজার সফরে এসেছিলেন পল্লীকবি জসিমউদ্দীন ও প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী সোহরাব হোসেন। তাদের সম্মানে লাইব্রেরীতে আয়োজন করা হয় সম্বর্ধনা সভার। সেই সভায় সঙ্গীত পরিবেশন করেন রামু খিজারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকও সঙ্গীতজ্ঞ বাবু জগনানন্দ বড়–য়া।’(বদিউল আলম ১৯৮৭ঃ ১০)

১৯৫৮ সালে এম জে আর খান কক্সবাজার মহকুমা প্রশাসক হয়ে আসেন। তিনিও একজন সঙ্গীত প্রিয় মানুষ ছিলেন। তাঁর সার্বিক প্রচেষ্টায় কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরীর উদ্যোগে আয়োজন করা হয় রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী। তাঁর আমন্ত্রনে অতিথি শিল্পী হিসেবে অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিটিভির প্রথম কন্ঠশিল্পী ফেরদৌসি রহমান ও মোস্তফা জামান আব্বাসী।

১৯৫৮ সালে আবুল কালাম আজাদ ও দুলাল পাল’র পরিচালনায় মঞ্চায়িত হই। ‘আড্ডা’, ‘কুঁয়াশা’ প্রভুতি নাটক। এসব নাটকে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন- কবীর আহমদ, আবুল কালাম, খুরশেদ আলম (প্রয়াত এডভোকেট), গোলাম নবী, অমুল্য চক্রবর্তী, নেজাম, বক্তিয়ার আহমদ, সিরাজুল মোস্তফা, বকর, ফখরুদ্দিন, লালু, গোলাম হাসান প্রমুখ।

১৯৬০ সালের প্রথম দিকে কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরীর ‘জর্জ এন্ড মেরী’ (বর্তমান শহীদ সুভাষ) হলে দু’দিনব্যাপী ‘বন্ধুর চরিত্র’ নাটকটি কক্সবাজার হাই স্কুলের উদ্যোগে মঞ্চায়িত হয়। এতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন নুর আহমদ, সেলিম রাহগীর, সুভাষ দাশ, লিয়াকত আলী, শামসুল আলম, বদিউর রহমান প্রমুখ। ষাটের দশকে পুরাতনদের সঙ্গে আরো অনেক নতুন মঞ্চাভিনেতা এসে যোগ দেয়। এদের মধ্যে নুরুল হুদা চৌধুরী, অনিল বরণ চৌধুরী, এ.বি ধর, আবুল মনজুর, মোশতাক আহমদ, নেপাল ভট্টাচার্য, ইব্রাহিম খলিল, অজিত ্েদ এবং নুরুল ইসলাম বাচ্চু প্রমুখ। এই সময়ে ঐতিহাসিক নাটক মঞ্চায়নের পাশাপাশি সামাজিক নাটক ও মঞ্চায়িত হয়েছিল। এ সময় নাট্যাভিনয় ও নির্দেশনা-পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন দুলাল পাল। তাঁর পরিচালনায় ‘নাটক নয় ফাঁস’, ‘ক্ষুধা, পথের শেষে, ‘বাদশা’, ‘বিশ বছর আগে’, ‘এরাও মানুষ’,‘মানময়ী গালর্স স্কুল’, প্রভৃতি নাটক সাফল্যজনকভাবে মঞ্চায়িত হয়। এ সময়ে মঞ্চায়িত অন্যান্য নাটকের মধ্যে ‘কেরানীর জীবন’,‘কালো অধ্যায়’,‘রক্তাক্ত গোলাপ’, ‘মাটির মায়া’,‘নিস্কৃতি’, ‘বারো ঘন্টা’, ‘টিপু সুলতান’, ‘সম্রাট শাহা জাহান’, ‘উদয়নালা’, ‘মহারাজ প্রতাপাদিত্য’,‘পলাশীর পরে’ প্রভৃতি উল্লেখ যোগ্য ।

১৯৬৪ সালে কক্সবাজার মডেল হাই স্কুল (বর্তমান সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়) এর বার্ষিক নাটক নাট্যকার নুরুল মোমেন রচিত ‘যদি এমন হতো’ তৎকালীন ইংরেজী শিক্ষক শাহনেওয়াজ আহমদ জাহাঙ্গীর (বর্তমান সিনিয়র আইনজীবী)’র পরিচালনায় মঞ্চায়িত হয়। আর এ নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন- সুভাষ দাশ (একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের শহীদ), নুরুল আজিজ চৌধুরী, ফয়েজুল আজিম জেকব (বর্তমান চবি চারুকলা বিভাগের অধ্যাপক ও প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী), বদর উদ্দিন, সিরাজুল মোস্তফা, রাখাল মিত্র, একেএম নুর আহমদ প্রমুখ।

১৯৬৪ সনের দিকে পেশাদার মঞ্চাভিনেত্রিদের এনে নারী চরিত্রে অভিনয়ের সুচনা করা হয়। যথাযথ সম্মানীর বিনিময়ে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিশেষত পূর্ণিমা সেন (চট্টগ্রাম), আলো পালা (চট্টগ্রাম), কুমিল্লা থেকে গীতাশ্রী, জয়শ্রী, চিত্রনায়িকা চন্দনা, চলচিচত্র নায়িকা শাবানা, জহুরী, সুবর্র্ণা মোস্তাফা, তন্দ্রা ভট্টাচার্য, চিত্রনায়িকা কবরী (বর্তমান এম পি) ও বাণী সরকারসহ আরো কয়েকজন কক্সবাজারের বহু নাটকে অভিনয় করে সুনাম কুড়িয়ে গেছেন ।

১৯৬৩-১৯৬৪ সালে সেলিম রাহগীর, ডাঃ কবীর আহমদ ও শামশুল হুদার পৃষ্টপোষকতায় মঞ্চায়িত হয় ‘বাগদত্তা’, ‘দেবী সুলতানা’, ‘বাঁশের বাশী’, ‘এক মুঠি অন্ন চাই’, ‘রুপবান’ প্রভৃতি নাটক। আর এ সব নাটকে অভিনয় করেন- নেপাল ভট্টাচার্য, ডাঃ কবীর আহমদ, সেলিম রাহগীর, এডঃ নুর আহমেদ প্রমূখ। ১৯৬৭ সালে কক্সবাজার শহরে টেকপাড়ায় পৃথক নাট্যচর্চা শুরু হয়। ১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘টেকপাড়া যুব সংঘ’ সংগঠন থেকে নিয়মিত নাট্যচর্চা করা হত। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই প্রতি বছর দুই ঈদে টেকপাড়া প্রাইমারী স্কুলে মঞ্চ তৈরী করে নাটক মঞ্চায়ন করেন। এ সংঘ থেকে যে সব নাটক মঞ্চায়িত হয়েছিল তার মধ্যে ‘শাহাজান’, ‘পানিপথ’, ‘ইরান দুহিতা’, ‘আনার কলি’, ‘ঈশা খাঁন’, ‘গায়ের ছবি’, ‘বোবা কান্না’, ‘পরিণতি’, ‘হারানো মানিক’, ‘জীবন সংগ্রাম’, ‘আড্ডা’, ‘ভারাটে চাই’, ‘মুক্তাহার’, ‘সিরাজউদ্দৌলা’ প্রভৃতি নাটক সফলভাবে মঞ্চায়িত হয়েছিল। টেকপাড়ায় মঞ্চায়িত নাটকে যারা অবদান রেখেছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অধ্যাপক সিরাজুল মোস্তফা,আবুল কালাম আজাদ, নেজামুল হক, গোলাম কিবরিয়া, ওসমান গণি, খোরশেদ আলম, কবীর আহমদ, জাফর আলম, আবদুল হাকিম, সেলিম বাহগীর, মোহাম্মদ আলী, আবু হায়দার ওসমানী, সানাউল্লাহ প্রমূখ। একালের জনপ্রিয় ‘মা’ চরিত্রে সফল অভিনেত্রী খালেদা আকতার কল্পনা টেকপাড়া মঞ্চে অভিনয় করে তাঁর নাট্য ও অভিনয় জীবন শুরু করেন। এ সময় কল্পনার বাবা সরকারী কর্মচারী হিসেবে কক্সবাজারে বসবাস করতেন।

১৯৬৭ সালে উস্তাদ গোলাম মুত্তাদিরের পরিচালনায় শিশু কিশোর নাটক মঞ্চায়নের সূচনা হয়। তাঁর রচিত ‘শপথ’ ও ‘আশার মানিক’ নামক দুটো তিনি নিজস্ব পরিচালনায় কক্সবাজার হাইস্কুলে মঞ্চায়িত করেন। এ দুটো নাটকে অভিনয়কারীদের মধ্যে- রঞ্জন পাল, আবদুল মতিন আজাদ, স্বপ্না ভট্টাচার্য, মাহবুবুর রহমান, রাখাল মিত্র, খোকা, মাফরোহা সুলতানা মেরী, মাহরুফা সুলতানা বেলী প্রমূখ। গোলাম মোক্তাদিরের মাধ্যমে কক্সবাজারের এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হয় যা সকলকে নাড়া দেয়। তিনি প্রথম মহিলা দিয়ে নারী চরিত্রে চিত্রায়ণ করে সফল মঞ্চায়িত করিয়েছিলেন। এর আগে নাটকে অভিনয়ের ক্ষেত্রে পুরুষরা পালন করত নারীর দায়িত্ব অর্থাৎ পুরুষরাই নারী চরিত্রে অভিনয় করতেন।

স্বাধীনতা উত্তরকালে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক অঙ্গন তরুণদের উদ্যম প্রাণচাঞ্চল্যে মুখরিত হয়ে উঠে। পাবলিক লাইব্রেরী হয়ে উঠে প্রাণবন্ত। আর এ সময়ে ঢাকা ও চট্রগ্রামের নাট্যচর্চার ঢেউ কক্সবাজারের নাট্যাঙ্গনকে আলোড়িত করে। এ সময় নাটক নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা তথা নাটকের নান্দনিক চিন্তা চেতনা তরুণ মানসে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। বিশেষ করে গণনাট্য আন্দোলন এবং গ্র“প থিয়েটার চেতনায় যুব সমাজ সংগঠিত হয়ে উঠে। তখন থেকেই পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে দর্শনীয় বিনিময়ে নাট্যচর্চা শুরু হয় এবং ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও নাট্যচর্চায় এগিয়ে আসে। ১৯৭২ সালের শুরুতে প্রতিষ্ঠিত হয় পিনাক শিল্পী গোষ্ঠী। পিনাক শিল্পী গোষ্ঠী প্রযোজিত নাটকের মধ্যে ‘নির্বাসনে’, চোরাগলি মন, ‘শুভব্বিাহ’, ‘এখন দুঃসময়’, ‘সূর্য মহল’, ‘বারো ঘন্টা’ প্রভৃতি নাটক মঞ্চায়ন সূধী সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণে সমর্থ হয়। কিন্তু সংগঠনটি বর্তমানে বিলুপ্ত।

পিনাক শিল্পী গোষ্ঠীর পরেই কক্সবাজারে প্রথমবারের মত গ্র“প থিয়েটার ভিত্তিক সংগঠন ‘ব্যতিক্রম নাট্য সংস্থা’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্যতিক্রমী প্রত্যয়ে ব্যতিক্রমই প্রথম নাটককে যৌথ শিল্প কর্ম হিসেবে গ্রহণ করে কক্সবাজারের নাটকে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় অবর্তীণ হয়। ব্যতিক্রম নাট্যসংস্থা প্রতিষ্ঠায় যারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন তাদের মধ্যে অধ্যাপক মুফীদুল আলম, অধ্যাপক সিরাজুল মোস্তফা, এড.আবুল কালাম আজাদ, অধ্যাপক সোমেশ্বর চক্রবর্তী প্রমূখ। এদের প্রযোজিত নাটক- অধ্যাপক মুফীদুল আলম রচিত নাটকত্রয় যথাক্রমে ‘কবন্ধ’, ‘পাষাণ’ এবং ‘লাবনী পয়েন্ট’, ‘সমাপ্তি অন্যরকম’, ‘জননীর মৃত্যু চাই’, ‘ছায়াছবির অঙ্গনে’, ‘হৃদয় ঘটিত ব্যাপার স্যাপার’, ‘হরিন চিতা পাল’, ‘এবার ধরা দাও’, প্রভৃতি নাটক মঞ্চায়িত হয়ে নাটকের ক্ষেত্রে প্রত্যয়ের প্রতিফলন ঘটাতে সক্ষম হয়।

অতীত এবং বর্তমান দর্শকের চিন্তা-চেতনাকে ধারণ করে ১৯৭২ প্রতিষ্ঠিত হয় নবারুণ নাট্য সংস্থা। এ সংগঠনের উদ্যোগে মঞ্চায়িত নাটকের মধ্যে ‘প্রদীপ শিখা’, ‘শুভ বিবাহ’, ‘সূর্য মহল’, ‘সাগর সেঁচা মানিক’ প্রভৃতি। তবে অবশ্য এর পূর্বে ১৯৭০ সালে মোস্তাফা মিয়ার তত্ত্বাবধানে সম্পাদন বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য নিয়ে ‘নব আর্য অপেরা’ নামে যাত্রাদল গঠন হয়েছিল। এ যাত্রাদল ১৯৮০ পর্যন্ত কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ‘টিপু সুলতান’ সম্রাট আকবর, ‘আলোমতি প্রেম কুমার’, ‘রহিম বাদশা’, ‘রুপবান কন্যা’, ‘গরীব কেন মরে’, ‘লায়লী মজ্নু’, ‘সিদুঁর দিয়ো-না মুছে’, ‘কে দেবে কবর’ প্রভৃতি যাত্রাপালা প্রদর্শন করা হয়েছিল। এ যাত্রাপালায় নাট্যাভিনয় করেন এডঃ মন্জুরুল ইসলাম, শামশুল আলম, হায়দার আলী, আবদুল মালেক আজাদ, শামসুল আলম, নুরু চৌকিদার, ডা. আনছার আলী, মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, জাফর আলম প্রমূখ।

১৯৭৩ সালে শহরকেন্দ্রিক নাট্যচর্চার পাশাপাশি কক্সবাজার কলেজেও নাট্যচর্চা শুরু হয়। অধ্যাপক সোমেশ্বর চক্রবর্তী ও অধ্যাপক মঞ্জুরুল হক হেলালের নির্দেশনায় ‘রুপোর কৌটা’ নাটকটি পাবলিক লাইব্রেরীর মিলনায়তনে মঞ্চায়িত হয়। সূচনা হয় কক্সবাজার কলেজে (তখন সরকারী করন হয়নি) নাট্যচর্চার ইতিহাস। অধ্যাপক মঞ্জরুল হক হেলাল এবং অধ্যাপক সিরাজুল মোস্তফা’র যৌথ নির্দশনায় কক্সবাজার সরকারী কলেজ চত্বরে ১৯৭৭ সনে সর্বপ্রথম ‘জনৈকের মহাপ্রয়াণ’ এবং পরে ‘লাশ’৭৪’ মঞ্চায়িত হয়। পরবর্তীতে অধ্যাপক সিরাজুল মোস্তফা‘র নির্দেশনায় কক্সŸাজার কলেজ ‘ওরা কদম আলী’, ‘ওর আছে বলেই’, ‘গলাকাটা লাশ’, ‘কবর হুজুর কখন মরবে’, ‘সুঁচ’, ‘টিপু সুলতান’, ‘মহারাজ প্রতাপাদিত্য’, স্বয়ম্বরা প্রভৃতি নাটক মঞ্চায়িত হয়। এসব নাটকে যারা অভিনয় করেন তাদের মধ্যে অধ্যাপক মুফীদুল আলম, অধ্যাপক মকবুল আহমেদ, অধ্যাপক মনজুরুল হক হেলাল, অধ্যাপক একেএম নুরুল হক চৌধুরী, প্রফেসর এম এ বারী, অধ্যাপক মনোজ সেন, নাসিমা আক্তার লিপি, যমুনা দাশ, তোফায়েল আহমদ (সাংবাদিক ও আইনজীবী), মহিবুল্লাহ, করিম উদ্দিন ইউসুফ, লূৎফেন্নছা, সত্যপ্রিয় দৌলন চৌধুরী, তৌহিদুল আলম, এস,এম আকতার চৌধুরী (অধ্যাপক আকতার চৌধুরী), মাফরোহা সুলতানা মেরী, আবু হায়দার ওসমানী, পারুল, মাসুদা মোর্শেদা আইভি, শামীম ইকবাল, এরশাদ উল্লাহ, এ কে.এম.ফারুক আহমদ রকি, অরুপ বড়–য়া তপু, মোজাম্মেল হক, প্রমূখ। এর ধারাবাহিকতা ১৯৮৬ পর্যন্ত বজায় থাকে। ১৯৮৭ সালে প্রতিক্রিয়াশীল ছাত্র ছাত্রসংগঠন ছাত্র সংসদে প্রবেশ করলে এখনো পর্যন্ত কোন নাটক মঞ্চায়িত হয়নি। যা একটি সরকারী কলেজের জন্য খুবই দুঃখজনক।

১৯৭৬ সালে অধ্যাপক মুফীদুল আলম রচিত প্রযোজিত ও পরিচালিত মৌলিক নাটক ‘কবন্ধ’ ও ‘লাবণী পয়েন্ট’, মাঝে বিরতি দিয়ে একই সাথে পাবলিক লাইব্রেরী মঞ্চে মঞ্চায়িত হয় এবং হিন্দি সাহিত্যের দিকপাল কৃষ্ণ চন্দ্রের গল্প অবলম্বনে রচিত ‘পাষাণ’ নাটকটি বর্তমান জেলে পার্কে অনুষ্ঠিত প্রদর্শনী মঞ্চে মঞ্চস্থ হয়। ‘কবন্ধ’ ও ‘লাবণী পয়েন্ট’ নাটকে সর্বপ্রথম কক্সবাজারস্থ মহিলা শিল্পী তৎকালীন সরকারী কলেজের ছাত্রী খালেদা বিলকিস (শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সার রচিত ও আব্দুল্লাহ আল মামুন পরিচালিত ‘সারেং বউ’ ছায়াছবিতে প্রতিনায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।) ‘পাষাণ’ নাটকের নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন কক্সবাজার কলেজের ছাত্রী আখতার।

১৯৭৭ সালে শুদ্ধতম নাটকের প্রতিশ্র“তি নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘রং বেরং নাট্য গোষ্ঠী’। এই সংস্থার নিবেদিত নাটকের মধ্যে ‘অগ্রাহ্য’, ‘দন্ডোৎসব’, ‘হুজুর কখন মরবে’, ‘প্রেক্ষিত সাজাহান ও একাল’, ‘কাফন’, ‘দুই হুজুর’, ‘পৃথিবীর ঘরে ঘরে’ প্রভৃতি নাটক দর্শকের ভিন্ন ধরণের স্বাদ প্রদানে সমর্থ হয়। আর এ সব নাটকে নাট্য অভিনয় করেন- শাহীন, শাহানা মজুমদার, স্বপ্না ভট্টাচার্য, এম.এস.মার্শাল, রতন দাশ, বিশ্বজিত সেন, বাবুল পাল, মোঃ ফারুক, মফিজুল হক প্রমূখ।

১৯৭৮ সনে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘এক পা সামনে নাট্যগোষ্ঠী’, ‘নাট্যসংস্থা অর্ণব’। এ সংগঠনদ্বয়ের মঞ্চায়িত নাটকের মধ্যে ‘এবার ধরা দাও’, ‘সেনাপতি’, ‘সামনে যাই থাক ট্রেন চলবে’, ‘ফলাফল’, ‘নিুচাপ’, ‘আয়নায় সুন্দর মূখ’, ‘একাত্তরের তেলেসমাতি’, ‘জননীর মৃত্যু চাই’, ‘আয়না’ প্রভৃতি নাটক মঞ্চায়িত করে দর্শকদের দৃষ্টি কাড়ে। এ সময় প্রতিষ্ঠিত ঝংকার শিল্পী গোষ্ঠী, গ্যাংচিল, সমকাল নাট্য ও সাহিত্য সম্প্রদায়, সপ্তরুপা, পূর্বাচল প্রভৃতি সংস্থা নাট্য প্রযোজনায় সার্থক অবদান রেখেছিলেন।

১৯৭১-১৯৮০ সাল পর্যন্ত উপরোক্ত প্রতিষ্ঠানের যারা সরবকর্মী ও পৃষ্ঠপোষকতায় এবং নাট্যাভিনয়ে যারা অবদান রাখেন অধ্যাপক মুফীদুল আলম, সোমেশ্বর চক্রবর্তী, অধ্যাপক মনজুরুল হক হেলাল, অধ্যাপক একে এম নুরুল হক চৌধুরী, সমশের বেলাল, এড.আবুল কালাম আজাদ, অধ্যাপক সিরাজুল মোস্তাফা, দুলাল পাল, আবদুল হাকিম, অমিত চৌধুরী, পীযূষ চৌধুরী, নুরুল আবছার, শাহানা, এস.এম মার্শাল, আতাহার ইকবাল, ছানাউল্লাহ, করিম উদ্দিন ইউসুফ, নুরুল মুকতাদির, প্রিয়তোষ পাল পিন্টু, সন্ধ্যা ভট্টচার্য, জসিম উদ্দিন, হেলাল উদ্দিন চৌধুরী, আবদুল মতিন আজাদ, আবুল কালাম, জসিম উদ্দিন বকুল, প্রদীপ চক্রবর্তী, কানন দাস, ইলা চৌধুরী, হোসেন আরা স্বপ্না, যমুনা পাল, উষা ভট্টাচার্য, শাহীদ চৌধুরী প্রমুখ। ১৯৮০ সালে কক্সবাজার টাউন হলে মঞ্চায়িত হয় আজম ওবায়দুল্লাহ রচিত ‘মিছিল আসছে’। এ নাটকে অভিনয় করেন মোহাম্মদ সিরাজুল হক, মমতাজ উদ্দিন বাহারী, আবুল কালাম এডভোকেট, মোহাম্মদ নাযিম উদ্দিন, এডভোকেট মোস্তফা কামাল চৌধুরী, তোফাইল উদ্দিন, শাহেদ কামাল, জামাল উদ্দিন, আকবর উদ্দিন প্রমূখ।

১৯৮২ সনে পাবলিক লাইব্রেরী হল ময়দানে মঞ্চায়িত হয় ‘ওরা আছেই বলে’। এ নাটক মঞ্চাভিনয়ে যারা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন তাদের মধ্যে- এন এম হাবিব উল্লাহ, আবু হায়দার ওসমানী, অরুপ বড়ৃয়া তপু, তৌহিদুল আলম, তাপস রক্ষিত, জসীম উদ্দিন বকুল, সন্তোষ শর্মা, মুহসিন উদ্দিন আনোয়ার, এ কে এম ফারুক আহমদ রকি, ইয়াছিন মোহাম্মদ শামশুল হুদা, আবুল কাশেম প্রমূখ।

১৯৮৫ সালে ‘ঝিনুক শিল্পি গোষ্ঠী’ ‘রং বেরং নাট্য গোষ্ঠী’সহ কয়েকটি সংগঠনের সমন্বয়ে ‘কক্সবাজার থিয়েটার’ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯৮৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৩৯টি নাটক সাফল্যজনকভাবে প্রযোজনা করেছে। কক্সবাজার থিয়েটার প্রযোজিত নাটকের মধ্যে- ‘ইঙ্গিত’, ‘সুবচন নির্বাসনে’, ‘এখানে নোঙ্গর’, ‘রাজনিদ্রা’, ‘মেঘ ও রাক্ষস’, ‘রয়েল বেঙ্গল’, খোরশেদ আলম রচিত ‘মানবনা এই বন্ধন’ এবং আলিমুদ্দিনের দুঃস্বপ্ন, টু ইডিয়টস, ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’, ‘মানুষ ভূত’, ‘হ্যাম্যলেট’, ‘মনপুরা’, ‘শাহাজাহান’ প্রমূখ। নাট্য প্রযোজনা ছাড়াও নাট্য প্রশিক্ষণ ও নাট্য বিষয়ক ওয়ার্কশপের মাধ্যমে কক্সবাজার থিয়েটার নতুন নতুন নাট্যকর্মী তৈরী করার ব্যাপারে বেশ যতœবান ছিলেন। ১৯৯৫ সালে কক্সবাজার থিয়েটার থেকে সেন্টার ফর এশিয়ান থিয়েটারের তত্ত্বাবধানে সুইডেনের স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্য বিভাগের অধ্যাপিকা ক্রিষ্টিনা ইগ্রেনর পরিচালনায় একটি লেকচার প্রদান করা হয়। কক্সবাজার থিয়েটারের আমন্ত্রনে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কুষ্টিয়ার নাট্যসংস্থা এসে তাদের উল্লেখযোগ্য নাটক প্রদর্শন করেছে। এদের ব্যবস্থাপনায় কলকাতার লহরী সাংস্কৃতিক সংগঠন পাবলিক লাইব্রেরী হলে ‘রক্তকরবী’ নাটকসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে দর্শকদের নজর কাড়ে। কক্সবাজার থিয়েটারে এ পর্যন্ত তিন বার সপ্তাহব্যাপী নাট্যোৎসবের আয়োজন করা হয়।

আশির দশকের শুরুতে অর্থাৎ ১৯৮৪ সনে শুদ্ধতম নাটকের প্রতিশ্র“তি নিয়ে রিঙ্গণ থিয়েটার (প্রাথমিক নাম রিঙ্গণ নাট্য গোষ্ঠী) জন্ম লাভ করে। রিঙ্গণ থিয়েটার প্রযোজিত নাটকের মধ্যে ‘তালতলার উপাখ্যান’, ‘ রাজা এলেন রাজাকার’, ‘ফেরাতে এসোনা’, ‘সাহজাহান’ প্রভৃতি নাটক। ১৯৮৪ সালের ২৬ শে মার্চ উপলক্ষ্য করে প্রতিষ্ঠিত হয় ধ্র“পদী-৪। এ সংগঠন হিসেবে যারা সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন তার মধ্যে হেলাল উদ্দিন চৌধুরী, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, এ কে এম ফরিদ আহমদ, আবু তাহের চৌধুরী, প্রিয়তোষ পাল পিন্টু প্রমূখ। এদের প্রযোজিত নাটক যথাক্রমে ‘সেনাপতি’, এখানে নোঙ্গর’ ইব্লিস’, মাননীয় মন্ত্রির একান্ত সচিব’, মলকা বানু’, ‘ওদের ধরিয়ে দিন’ (মাষ্টার শাহ আলম রচিত) প্রমুখ।

শিক্ষা-সাহিত্য- সংস্কৃতি চর্চা উন্নত করার লক্ষে প্রতিষ্ঠিত হয় শিশু কিশোর সংগঠন সৈকত খেলাঘর আসর। এ আসর প্রতিষ্ঠায় যারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন তাদের মধ্যে আষীশ ধর, সুবিমল পাল পান্না, দোলন চাঁপা চৌধুরী, নীলা পাল, রনজিত দাশ, তৌহিদুল আলম, শিবানী ধর, তাপস রক্ষিত, অরুপ বড়–য়া তপু, ইসমাঈল মার্শাল, করিম উদ্দিন ইউসুফ প্রমূখ। সৈকত খেলাঘর আসরের উদ্যোগে মঞ্চায়িত নাটকের মধ্যে ‘এরা শপথ, ‘বকুল পুরের স্বাধীনতা’, ‘বন্দি ছেলে’, ‘মন্টুর পাট শালা’, ‘টোকাই, শোকার্ত শহীদ মিনার, নৌকা বিলাস প্রভৃতি নাটক। এসব নাটক কিশোরদের সঙ্গে বড়দেরও প্রশাংসা কুড়াতে সক্ষম হয়।

১৯৮০-১৯৯০ পর্যন্ত সে সব নাট্যকর্মী ও নাট্যনির্দেশনায় গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখেন তাদের মধ্যে অধ্যাপক এন.এম হাবিব উল্লাহ, নুরুল আবছার, সমশের বেলাল, মোঃ শাহজাহান, আবু হাযদার ওসমানী, অরুপ বড়ুয়া তপু, সত্য প্রিয় দোলন, স্বপন ভট্রাচার্য, সুশান্ত পাল বাচ্চু, আবুল কাশেম বাবু, মোঃ হোছাইন মাসু, সজল ধর, জাহেদুল ইসলাম, তৌহিদুল আলম, বিশ্বজিৎ পাল বিশু, কামরুল হাসান, এ.কে ফারুক আহমদ রকি, বিশ্বজিত সেন, আশরাফুল হুদা সিদ্দিকী জামশেদ, উত্তম পাল, সুবিমল পাল পান্না, ইয়াছিন মুহাম্মদ শামদুল হুদা, এ কে এম ফারুক আহাম্মদ রকি, আবুল কাসেম প্রমুখ।

১৯৯১ সলে প্রতিষ্ঠিত হয় কক্সবাজার থিয়েটার মঞ্চ। কক্সবাজার থিয়েটার মঞ্চ প্রযোজিত নাটকের মধ্যে ‘উজান পাল’, ‘১৯৭১’, ‘জুতা আবিষ্কার’, ‘ক্রসবাঁধ’, ‘মানুষ ভূত’ প্রভৃতি নাটক মঞ্চায়িত করে কক্সবাজার নাট্য অঙ্গণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।

১৯৯১ সনে ৯০’র এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা সাইফুদ্দিন আহমেদ মানিক (মানিক বৈরাগী), অধ্যাপক সুুকুমার দত্ত, পিজি ভট্টাচার্য, ফাতেমা বেগম, মাসুদ সরওয়ার প্রমূখের তত্ত্বাবধানে জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন মাতামুহুরী খেলাঘর আসর প্রতিষ্ঠিত হয়। এ সংগঠন কর্তৃক প্রযোজিত ও নির্দেশিত নাটকের মধ্যে ‘ক্ষুদিরামের দেশে’, ‘অবশেষে জেনারেল’ (অভীক ওসমান রচিত), ‘সাহজাহান’, ‘টিপু সুলতান’, ‘স্মৃতি৭১’, ‘ওরা কদম আলী’ প্রভৃতি নাটক মঞ্চায়িত হয়।

‘নাটক হোক গণমানুষের হাতিয়ার' শ্লোগানকে সামনে রেখে ১৯৯৪ সনে ঝিনুক নাট্য গোষ্ঠি। এদের প্রযোজিত ও নির্দেশিত নাটকের মধ্যে ‘নির্বাচনী প্রেম’, ‘আমাদের সন্তান’, ‘স্বাধীনতার ময়না তদন্ত’, ‘এই সেই কণ্ঠস্বর’, ‘কন্ঠক বলয়’, ‘স্বাধীনতা একটা রক্তাক্ত বিলাপ’, ‘চাঁদ মিঞার বাইস্কোপ’, ‘চন্দ্রধরের পালা’, নীল সমুদ্রের ঝড়,’ মানুষ ভূত প্রভৃতি নাটক। ঝিনুক নাট্য কেন্দ্রের ব্যানারে ২৫ আগষ্ট ১৯৯৪ তিন দিন ব্যাপী নাট্যবিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করে। প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে এ পর্যন্ত ১৪ টি নাটক ঝিনুক নাট্য কেন্দ্রের উদ্যোগে প্রযোজিত হয়। আর এ সব নাটকে অভিনয় ও পৃষ্ঠপোষকতায় যারা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে তাদের মধ্যে আবুল কাশেম বাবু, নাছির উদ্দিন, বিপুল সেন, স্বপন ভট্টাচার্য, কামরুল হাসান, সাইফুল ইসলাম, অনিল দত্ত প্রমুখ।

‘নাটক হোক গণমানুষের মুক্তির উচ্চারণ’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে ১২ ডিসেম্বর ১৯৯২ সনে গণমূখ থিয়েটার প্রতিষ্ঠিত হয়। গণমূখ থিয়েটার প্রযোজিত নাটকের মধ্যে ‘যায় দিন ফাগুন দিন’, ‘মাদারীর খেলা’, ‘নাটকের শুরু’, ‘ক্ষুদিরামের দেশে’ প্রভৃতি।

১৯৯১ সালের ২৩ নভেম্বর গান নাটক গণসংগীত দিয়ে কক্সবাজারের গণমানুষের মুক্তি প্রয়াসে প্রতিষ্ঠিত হয় হেমন্তিকা সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী। এইচ এম রিয়াজ শহীদ, সুজন কল্যান বড়–য়া, অনিল দত্ত, টুটুল পাল, সুভাশিষ বড়–য়া পিকু, উত্তম নন্দী, জহির উদ্দিন, লিনা বড়–য়া, রিকা বড়–য়া, সাইফুদ্দিন আহমেদ মানিক, লিটন পাল, প্রদীপ পাল প্রমুখ হেমন্তিকা সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসেন। সে থেকে শুরু করে এ যাবৎ পর্যন্ত হেমন্তিকা নিজস্ব রচিত নাটক মঞ্চায়ন করেছেন। তার মধ্যে এইচ এম রিয়াজ শহীদ নির্দেশিত গীতিআলেখ্য ‘বকুলপুরের স্বাধীনতা, সত্যপ্রিয় চৌধুরী দোলন রচিত মহারাণীর কান্ড (২০০৪), জসিম উদ্দীন রচিত ও নির্দেশিত ‘একাত্তরের শকুন’ (২০১১), ‘জাতিশত্রু, ‘দূরে আলো’, শামসুর রাহমানের ‘তোমাকে পাওয়া হে স্বাধীনতা’। আর এসব নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন অনিল দত্ত, আবু বকর ছিদ্দিক খোকন, আবদুল নবী, মঞ্জু বড়–য়া, লিটন সৈকত দেবনাথ, সাহেদ, আবু সুফিয়ান এনাম, হারুন অর রশিদ, নারগিস আক্তার রনি, অজয় মজুমদার, রিফাত হোসেন নির্যাস, রুনা আক্তার, কনা দাশ, লিটন কান্তি দে মিন্টু, তাকবিন আক্তার কলি, মরিয়ম আক্তার প্রমুখ।



১৯৯২ সনে সেপ্টেম্বরের শুরুতে কিশোর থিয়েটার প্রযোজিত ও মঞ্চায়িত নাটকের মধ্যে ‘হাতেম আলীরা স্বপ্ন দেখে’, ‘সুমনের নাটাই’(১৯৯৫), ‘পদ্মাপারের সাজু’(৮৭,৯২), ‘অনেক বৃষ্টি অনেক রোদ’(১৯৯০), ‘নতুন জোয়ার’(১৯৯৪), সংবাদ শিরোনাম(১৯৯৩), কুতুবদিয়ার আ.স.ম. শাহরিয়ার রচিত ‘মুকুট বিড়ম্বনা’‘(১৯৯৩), উপদ্রুত স্বপ্নেরা’(১৯৯৪), ‘মানুষ মানুষের জন্য (২০০৫), ‘দস্যি ছেলের কান্ড’(২০০১), একটু মেঘের ছায়া’(২০০২), ‘সেভেন ক্রিকেট’(২০০৭) প্রভৃতি। ১৯৯৬ সানের ১৬ ডিসেম্বর পাবলিক লাইব্রেরী দৌলত ময়দানে মঞ্চায়িত হয় উখিয়ার মাষ্টার শাহ আলম রচিত ‘ওদের ধরিয়ে দিন’ আর এ নাটকে যারা অভিনয় করেন তাদের মধ্যে আবুল কাশেম, মোজাম্মেল হক আযাদ, সিরাজুল কবির বুলবুল, আমানুল হক বাবুল, শামসাদ রেজা মুন্নী, হারুন-আল-রশিদ, পারভিন আকতার প্রমূখ।

১৯৯৮ সনে পাবলিক লাইব্রেরীর শহীদ দৌলত ময়দানে মঞ্চায়িত হয় মাস্টার শাহ আলম রচিত,প্রযোজিত ও পরিচালিত ‘মাথিনের প্রেম কাহিনী’। এ নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন- আবদুল কুদ্দুস রানা, পারভীন আকতার, জিয়াউল হক আযাদ, হুসনে আরা বেবী, দীলিপ মল্লিক, দীপক মল্লিক, সুজন বড়–য়া, সিরাজুল কবির বুলবুল শামসাদ রেজা মুন্নী, হারুন-আল রশিদ প্রমূখ। এ নাটকটি মঞ্চায়িত করার সময় দর্শকদের অশ্র“র জল টলমল হয়েছিল বলে জানা যায়।

১৯৯৯ সালের শুরুতে ডুলাহাজারায় ‘নাট্য হোক প্রগতি ও মানব মুক্তির হাতিয়ার’ শ্লোগানকে সামনে রেখে আমির উদ্দিন বুলবুল, মাহফুজুল করিম, আবুল ফজল প্রমূখের উদ্যোগে বৈশাখী নাট্যসংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়। এ সংগঠন থেকে প্রতিটি দিবস বিভিন্ন স্কুলে নিয়মিত নাট্যও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করতেন। বৈশাখী নাট্য সংগঠন প্রযোজিত নাটক‘ ক্ষুদিরামের দেশে,’ ‘পতন, ‘ওরা কদম আলী’, ‘মুকুট বিড়ম্বনা’, ‘দস্যি ছেলের কান্ড’জরিন্ াসুন্দরী’,‘রুপবান’, ‘শহীদে কারবালা’, প্রভৃতি নাটক মঞ্চায়িত হয়। আর এসব নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন- আহমদ হোছন, কবির আহমদ(কালা সোনা), আব্বাছ মিয়া, জাফর আলম, শামসুল আলম, মনিন্দ্র মাস্টার, আবু সুফিয়ান দফাদার, বাবুল চন্দ্র শীল, বাবু মোহনদে প্রমুখ। বৈশাখী নাট্য সংগঠনটি বর্তমানে নিস্ক্রিয়।

২০০৪ সালের শুরুতে সোহিনী শিল্পী গোষ্ঠীর উদ্যোগে কামরুল হাসানের নির্দেশনায় মঞ্চায়িত হয় জাতিসত্তার কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা রচিত ‘মৈনকুমার ও তামাটে কিশোর’ নাটকটি। এ নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন- বিপুল সেন, মো. নাছির উদ্দিন, সাইফূল ইসলাম আদর, আবুল কাসেম, সাইফুল ইসলাম কাজল, রিংকু বড়ুয়া, শেখ ফেরদৌস আক্তার রিমি, তছলিমা আকতার প্রমুখ।

২০০৭ সালে কয়েকটি সাংস্কৃতিক সংগঠন মিলে ‘সম্মলিত সাংস্কৃতিক জোট’ গঠিত হয়। এ সংগঠনের উদ্যোগে ২০০৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ৭ দিন ব্যাপী নাট্যোৎসব হয়। এ সংগঠন থেকে যে সব নাটক মঞ্চায়িত হয়- ‘চাঁদকুমারী’, ‘টু-ইডিয়টস’, ‘ময়ুর সিংহাসন’, ‘সম্পর্কের আবর্তে’, ‘মৈনকুমার ও তামাটে কিশোর’, ‘নীল সমুদ্রের ঝড়’, ‘মাধবী’, ‘টাকা দে’, ‘ওরা আছেই বলে’, সিরাজ উদ্দৌলাহ, ময়ুর সিংহাসন, মানুষ ভূত, বার্মাইয়া সুন্দরী ইত্যাদি। সম্মিলিত জোটের পরিচালনা, নির্দেশনা ও নাট্যাভিনয়ে যাঁরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন- ইকবাল মুহাম্মদ শামশুল হুদা, মোহাম্মদ আলী জিন্নাত, তাপস রক্ষিত, ইউসুফ মোহাম্মদ শামসুল হদা, ইয়াছিন মুহাম্মদ শামশুল হুদা, অরুপ বড়ুয়া তপু, রনজিত দাশ, জাহেদ সরওয়ার সোহেল, অনিল দত্ত, নজীবুল ইসলাম, আশরাফুল হুদা ছিদ্দিকী জামশেদ, দীপক শর্মা দীপু, রহমান মুফিজ, মুহাম্মদ সেলিম রেজা, মাহবুবুর রহমান, বাবুল পাল, শ্যামা পাল, নাজমুল করিম জুয়েল, সুব্রত, মোবারক আলী মনির, গিয়াস উদ্দিন মুকুল প্রমুখ।

২০০১-২০১৩ পর্যন্ত কক্সবাজার শহরের নাট্য আন্দোলন, অভিনয়ে যারা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন তাদের মধ্যে অধ্যাপক অজিত কুমার দাশ, নুরুল হুদা চৌধুরী, ইকবাল মুহাম্মদ শামশুল হুদা, এডভোকেট অরুপ বড়ুয়া তপু, মোহাম্মদ আলী জিন্নাত, রনজিত দাশ, সত্যপ্রিয় চৌধুরী দোলন, আশরাফুল হুদা ছিদ্দিকী জামশেদ, জাহেদ সরওয়ার সোহেল, নজিবুল ইসলাম, ইউসুফ মুহাম্মদ শামশুল হুদা, কামরুল হাসান, বিপুল সেন, নাছির উদ্দিন, পিকলো, পরেশ কান্তি দে, সুশান্ত পাল বাচ্চু, অনিল দত্ত, রহমান মুফিজ, কল্লোল দে চৌধুরী, জয়ন্তী বড়ুয়া, কনিকা বিশ্বাস, দীপক শর্মা দীপু, রিপন বড়ুয়া অর্ণব, তাপস বড়ুয়া, রুমি দে, রিনা আক্তার, সোমা পাল, রিংকু বড়ুয়া, আবুল মনজুর, আজিজুল হক চৌধুরী, সৈয়দ হোসেন ডালিম, আবু বকর ছিদ্দিক খোকন, আবদুল নবী, মঞ্জু বড়ুয়া, লিটন সৈকত দেবনাথ, সাহেদ, আবু সুফিয়ান এনাম, হারুন অর রশিদ, নারগিস আক্তার রনি, অজয় মজুমদার, রিফাত হোসেন নির্যাস, রুনা আক্তার, কনা দাশ, লিটন কান্তি দে মিন্টু, তাকবিন আক্তার কলি, মরিয়ম আক্তার, আবদুর রহিম, দেবাশীষ দাশ, সাইফূল ইসলাম আদর, সাইফুল ইসলাম কাজল, তছলিমা আকতার, মাহমুদুল হক মুন্না, বাবুল পাল, শ্যামা পাল, জিকু, কালাম আজাদ, শাহেদ আবুল আলা, শাহেদ বিন কামাল, মুমু, ইসমত আরা ইসু, শাহানা মজুমদার চুমকি, মোবারক মনির, আমান উল্লাহ, আবিদা নুর চৌধুরী মুমু, আবু দাউদ চৌধুরী রিপন, গিয়াস উদ্দিন মুকুল, রুনা বড়ুয়া বাপ্পি, আশুতোষ রুদ্র, মোহাম্মদ হানিফ, নাজমুল করিম জুয়েল, মফিজুর রহমান মুফিজ, মহীউদ্দীন প্রমুখ।

কক্সবাজার শহরকেন্দ্রীক নাট্যচর্চার পাশাপাশি উপজেলা পর্যায়েও নাট্যচর্চা হয়। উখিয়া উপজেলার প্রথম মঞ্চায়িত ‘পানি পথের যুদ্ধ’ নাটক। ১৯৬৭ সালে উখিয়া হাই স্কুল প্রাঙ্গনে মঞ্চায়িত এ নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন- ফয়েজ বাঙালী, সিরাজুল হক সিকদার, এয়াকুব আলী মাস্টার, নজু মিয়া কন্ট্রাক্টর, ফতেহ আলী মুন্সী, কবির মিয়া, খাইরুল বশর চৌধুরী, বশির উল্লাহ, জাকের হোছেন মুন্সী প্রমুখ। ১৯৬৭-১৯৭০ সময়ে মঞ্চায়িত নাটকের মধ্যে ‘শিরি-ফরহাদ’, টিপু সুলতান, ‘শহীদে কারবালা’, রুপবান,মলকা বানু (সুচরিত চৌধুরী রচিত), ‘লায়লী মজনু’, ‘অপারেশন’ প্রভৃতি।

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে উখিয়া নাট্যচর্চার পুরোদমে শুরু হয়। ১৯৭১-১৯৭৯ পর্যন্ত সময়ে মঞ্চায়িত নাটকের মধ্যে- ‘ ১৯৭১’, বেদের মেয়ে জোছনা, ‘ফেরারী সম্রাট’, ‘বিজয় নিশান’,‘সাগর সেঁচা মানিক ’,স্মৃতি ৭১’ প্রভৃতি। আর এসব নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন ইয়াকুব আলী মাস্টার, সাধন মোহন দে, সিরাজুল হক বি এ ,সুলতান আহমেদ (সিনিয়র আইনজীবী ও কবি), রফিক উদ্দিন বাবুল(সাংবাদিক), মাস্টার শামসুল আলম, মাস্টার শাহ আলম, পরিমল বড়ুয়া, আবদুল মালেক আজাদ, বাদশা মিয়া চৌধুরী, দিদারুল আলম চৌধুরী, হাজী নুরূল হক, আবু বকর ছিদ্দিক, আবদুল মোনাফ প্রমুখ।

আশির দশকের উখিয়ার নাট্যচর্চার ক্ষেত্রে নতুন ইতিহাস শুরু হয়। অন্যান্য সময়ের মত অন্যজনের নাটকের ওপর নির্ভর করতে হয়নি। নিজস্ব রচিত নাটক মঞ্চায়িত করে আসছে। এ ধারার নাট্যচর্চা শুরু হয় ১৯৮৬ সালে। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসকে উপলক্ষ্য করে মাস্টার শাহ আলম রচিত ‘কবরের বুকে হিজল তরু’ উখিয়া হাই স্কুলে মঞ্চায়িত হয়। এ নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন ফয়েজ বাঙালী, রুহুল আমিন মেম্বার, জাহানারা বেগম,রেজিয়া বেগম. সন্তোষ বড়ুয়া, শীলানন্দ, দীপক মল্লিক, ফরিদুল আলম, জাহেদা বেগম, মোজাম্মেল হক আজাদ, কোহিনুর আকতার, আবু আহমদ প্রমুখ। এ ছাড়া মাস্টার শাহ আলমের লেখা নাটক আশির দশক থেকে বর্তমান পর্যন্ত বিভিন্ন দিবস উপলক্ষ্যে নাটক মঞ্চায়িত হয়েছে এ রকম -‘একটি তারা একটি গোলাপ’(১৯৮৮), ‘শুকনো ক্ষতে রক্ত’ (২৬ মাচ১৯৮৯),‘শয়তানের কামড়’(১৯৮৯), ‘স্বাধীনতা যুদ্ধের কঙ্কাল’(১৯৯০), ‘অতঃপর ধানের শীষ’(১৬ ডিসেম্বর ১৯৯২), ‘সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ চাই’(১৯৯৮), আরকাইন্যা সুন্দরী’(২০০০), ‘ভুলের মাশুল’(২০০২), ‘একাত্তরের মলিন জ্যোতিষ্ক’(২০০৩), ‘হাইস্যা বর হাতের লাঠি’(২০০৪), ‘বিয়া হা গরালী’(২০০৮) প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। আর এ সব নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন- নুরুল আলম সরকার, বশির আহমদ, ফিরোজ বাঙাল, মোজাম্মেল হক আজাদ, মুজিবুল হক আজাদ, জিয়াউল হক আজাদ, সিরাজুল কবির বুলবুল, শামসাদ রেজা মুন্নী, হারুন আল রশিদ, পারভীন আকতার, শিউলি আকতার, নুরুল হক, শায়লা শারমিন রনি, এস.এম.জসিম, খোরশেদ আলম সুজন,কালাম আজাদ, নিধু ঋষি, আবদুল হামিদ তালুকদার, হিল্লোল দাশ, দীপক মল্লিক, জাকের হোসেন জাকের, মর্জিনা আকতার, সামিরা আকতার, জুলেখা বেগম,বুলবুল আকতার মনি, রেহেনা আকতার, নাসির উদ্দিন,হেকিম জাফর,ইমতিয়াজ সুলতান জনি, গিয়াস উদ্দিন,রিয়াজুল হক,মোসলেহ উদ্দিন,নাজিম উদ্দীন,ইদ্রিস, মো.হোসেন, রফিক মাহমুদ, হোসেন মো. জুলু, আফিয়া মুবাশ্বিরা মীম, ফরিদুল আলম প্রমুখ।

মহেশখালী উপজেলায় ১৯৮১ সালে স্কুলভিত্তিক নাট্যচর্চা শুরু হয়। ১৯৮১ সালে ইউনুছখালী নাসির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়’র উদ্যোগে প্রতিবছর দুটি করে নাটক মঞ্চায়িত হতো ছাত্র-শিক্ষক মিলে। আখতার আহমদ,সাইফুল্লাহ খালেদ এর যোথ পরিচালনায়ও নিদের্শনায় মঞ্চায়িত নাটকের মধ্যে-‘‘সাগর সেঁচা মানিক’,সিরাজউদৌল্লাহ’, ‘মলকা বানু’, ‘স্মৃতি ৭১’,‘আলোড়ন’, ‘সিন্ধু বিজয়’ প্রভৃতি। এ সব নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন- সাইফুল্লাহ খালেদ,মাস্টার আবু সৈয়দ, জয়নাল আবেদীন, গোলাম কুদ্দুছ চৌধুরী, আবদুশ শুক্কর, আবুল হোসেন মাস্টার, ওসমান গনি, নুরুল ইসলাম খান, মাস্টার মমতাজ প্রমুখ।

১৯৮৪-১৯৮৬ সময়ে কালারমার ছড়া উচ্চ বিদ্যালয়েও প্রতিটি বছরে দুইটি এবং বিভিন্ন উৎসবে নাটক মঞ্চায়ন করেন। এদের মঞ্চায়িত নাটকের মধ্যে ‘বিজয় নিশান’, ‘লাশ ৭৪’, ‘গরীবের ছেলে’, ‘সোহরাব-রুস্তম’, ‘ওরা আছেই বলে’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। আর এ সব নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন- সাইফুল্লাহ খালেদ,সৈয়দ লকিতুল্লাহ, মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, নুরুল আবসার, খালেদ মাহবুব মোর্শেদ (কবি-প্রাবন্ধিক), সুলজিৎ রুদ্র, মনজুর আহমদ, ওসমান সরওয়ার,দিলিপ দাশ প্রমুখ।

১৯৮৫ সালে কুতুবদিয়া সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্যোগে ‘এবার ধরা দাও’, ‘সুবচন নির্বাসনে’, স্বয়ম্বরা প্রভৃতি নাটক মঞ্চায়িত হয়। এসব নাটক পরিচালনা ও নাট্য নির্দেশনায় ছিলেন কণ্ঠ শিল্পী শেখ মোরশেদ আহমেদ এবং পৃষ্টপোষকতায় ছিলেন তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান মনজুর আলম সিকদার। যারা নাট্যভিনয় করেন তাদের মধ্যে শেখ মোরশেদ আহমদ, অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, গোপা রানী, সুরেশ দে, সিরাজুল হক, নুর আল আলম, আবদুল মান্নান, তাওলাদ হোসেন প্রমুখ।

কক্সবাজার জেলায় জন্মগ্রহণকারী যারা চলচ্চিত্র ও টিভি অভিনেতা হিসেবে গুরুত্বপুর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছেন তাদের মধ্যে রয়েছে একালের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র খলনায়ক ইলিয়াস কোবরা (বাহারছড়া, টেকনাফ), খালেদ মনসুর চৌধুরী (বাজারঘাটা,কক্সবাজার), কাউসার চৌধুরী, টিভি নাট্যাভিনেতা জসিম উদ্দিন (বাহারছড়া-কক্সবাজার), জাহেদ সরওয়ার প্রমুখ।





(বিঃদ্রঃ-এ লেখা প্রস্তুত করতে বিভিন্ন ব্যক্তি ও লেখকের সাথে ব্যক্তিগত যোগাযোগ করা হয়েছে। তাঁদের নিকট হতে প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক বক্ষমান নিবন্ধটি সাজানো হয়েছে। তারপরও অসতর্কতা কিংবা অন্য কোন কারণে তথ্য/তত্ত্ব/উপাত্ত বাদ কিংবা ভুল হয়ে থাকে, তাহলে লেখকের সাথে যোগাযোগ করার জন্য সবিনয় অনুরোধ করা হল। (০১৮১৪৪৯৫৪৬৬)



দোহাই-

১. বদিউল আলম (স); ‘নয়ান’ বর্ষ ১, সংখ্যা-১, ডিসেস্বর ১৯৮৭, কক্সবাজার ইনষ্টিটিউট ও পাবলিক লাইব্রেরী ।

২. বদিউল আলম (স); কক্সবাজারের ইতিহাস; জুন ১৯৯০, কক্সবাজার ফাউন্ডেশন,কক্সবাজার।

৩. ড. জাফার আহমাদ হানাফী (স); উর্মি, জুন ১৯৯৬, কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।

৪. শাহ আলম নিপু ও আকাশ মাহমুদ (স); কালধারা (চট্টগ্রামের সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চা সংখ্যা),সেপ্টেম্বর ২০০৬,কালধাারা পরিষদ,চট্টগ্রাম।

৫. মালিক সোবহান;কক্সবাজার চরিত-কোষ, জুলাই ২০০৭, কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমী, কক্সবাজার।

৬. বাবু রহমান; চট্টগ্রামের সঙ্গীত সমাজ, পুষ্পকরথ (হাফিজ রশিদ খাঁন সম্পাদিত), নভেম্বর ২০০৯, চট্টগ্রাম।

৭. কালাম আজাদ, কক্সবাজারের সাংস্কৃতিক পরিসন্ডল ও সঙ্গীত সমাজ, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১০, বর্ষ-২৫, সংখ্যা-১৬৫, দৈনিক পুর্বকোণ।





লেখক: প্রকাশনা সম্পাদক, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, কক্সবাজার জেলা সংসদ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.