![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মানুষ, আমি বাঙালি। আমার মানবিকতা, আমার সংস্কৃতির উপর আঘাত হানতে চাওয়া, ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাওয়া প্রাণী মাত্রই আমার কাছে পিশাচ। আমার দেশের উপর আঘাত হানতে চাওয়া প্রাণীদের পালনকারী, প্রশ্রয়দানকারী মাত্রই আমার কাছে পিশাচ, রাক্ষস। হোক সে যে কোনো সাম্প্রদায়িক কিংবা ঢেঁড়স চাষ পরামর্শক।
আমরা আজ এক এমন পৃথিবীতে বাস করছি, যেখানে জনসংখ্যা ৮০০ কোটির ঘর ছাড়িয়েছে। অথচ একটা সময় ছিল যখন গোটা পৃথিবীতে মাত্র ১২৮০ জন মানুষ ছিল। এই সংখ্যা হয়তো শোনা মাত্রই অবিশ্বাস্য মনে হয়, কিন্তু মানব ইতিহাসে এমন সময় এসেছিল – এক মহামারি, এক দুর্যোগ, কিংবা এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরে – যখন মানবজাতি প্রায় বিলুপ্তির মুখে এসে দাঁড়িয়েছিল।
প্রাথমিক জনসংখ্যা সংকট: সত্য, ইতিহাস, ও অনুমানঃ
বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, আনুমানিক ৭০,০০০ বছর আগে একটি ভয়াবহ ঘটনার কারণে মানব জনসংখ্যা একসময় মাত্র কয়েক হাজার বা তারও কমে নেমে এসেছিল। আফ্রিকার বাইরে মানব সম্প্রসারণের শুরুর দিকে, টোবা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত কিংবা মহাবিপর্যয় মানবসভ্যতার অস্তিত্ব বিপন্ন করে দেয়। গবেষণায় এমনকি দেখা গেছে, জনসংখ্যা একসময় মাত্র ১২০০-২০০০ জনে নেমে এসেছিল – যাকে বলে “population bottleneck”।
বেঁচে থাকার লড়াই আর টিকে থাকার কৌশল
এই ১২৮০ জন (ধরি আমাদের গল্পে এই সংখ্যাটি), যারা হয়তো আফ্রিকার সাভানা বা দক্ষিণ এশিয়ার কোনো উপকূলে বিচ্ছিন্নভাবে টিকে ছিল, তাদের প্রত্যেকটি পরিবার মানবজাতির ভবিষ্যতের প্রতিনিধিত্ব করেছিল। তারা প্রকৃতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, শিকার করেছে, গুহায় আশ্রয় নিয়েছে, আগুন জ্বালাতে শিখেছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তারা একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেছে, গোষ্ঠী গঠন করেছে, এবং ধীরে ধীরে সংখ্যায় বেড়ে উঠেছে।
চাষাবাদ ও বসবাস: কৃষিবিপ্লবের গতি
আনুমানিক ১২,০০০ বছর আগে মানুষ কৃষিকাজ আবিষ্কার করে, এবং এটাই ছিল জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রথম বড় বাঁক। এখন আর শুধু শিকার করে বা ফলমূল খেয়ে বেঁচে থাকতে হতো না – খাদ্য মজুত করা যেত। ফলে মানুষ গ্রামে বসবাস শুরু করলো, এবং শিশুদের বেঁচে থাকার হার বাড়তে লাগলো।
সভ্যতা গড়ে উঠলো, জনসংখ্যা বাড়লো
মিশর, ব্যাবিলন, সিন্ধু, চীন – এসব প্রাচীন সভ্যতার বিকাশ জনসংখ্যাকে হাজারে থেকে লক্ষে, আর পরে কোটিতে পৌঁছে দেয়। কিন্তু এই বৃদ্ধির হার ছিল ধীর, কারণ রোগ, যুদ্ধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রায়ই জনসংখ্যা কমিয়ে দিত।
আধুনিক যুগে বিস্ফোরণ: শিল্পবিপ্লব ও চিকিৎসা
১৮ শতকের শিল্পবিপ্লবের পর থেকে পৃথিবীর জনসংখ্যা রীতিমতো বিস্ফোরণ ঘটায়। ১৯০০ সালে যেখানে জনসংখ্যা ছিল প্রায় ১৬০ কোটি, ১৯৫০ সালে তা দাঁড়ায় প্রায় ২৫০ কোটিতে, আর ২০০০ সালের মধ্যে তা ৬০০ কোটিতে পৌঁছে যায়। এই বৃদ্ধির মূল কারণ – খাদ্য উৎপাদনের উন্নতি, অ্যান্টিবায়োটিক ও টিকা, শিশুমৃত্যুর হার কমে যাওয়া, এবং সাধারণ স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন।
ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ: জনসংখ্যা বনাম টেকসই পৃথিবী
আজ, জনসংখ্যা ৮০০ কোটির কাছাকাছি। আমরা যেমন প্রযুক্তিতে উন্নত হয়েছি, তেমনই পরিবেশগত সংকট, সম্পদের সীমাবদ্ধতা, ও জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের সামনে এক কঠিন প্রশ্ন রেখে দিয়েছে – এতো মানুষকে আমরা কতদিন ধরে টিকিয়ে রাখতে পারবো?
১২৮০ জন থেকে ৮০০ কোটিতে পৌঁছানোর এই ইতিহাস কেবল সংখ্যা নয়, এটি মানবজাতির প্রতিকূলতার মধ্যে বেঁচে থাকার, অভিযোজনের, ও উন্নয়নের এক জ্বলন্ত দলিল। এই যাত্রা দেখায়, আমাদের মধ্যে কত অদম্য শক্তি ছিল এবং এখনো আছে , শুধু প্রয়োজন সচেতনতা, সহানুভূতি এবং একটি টেকসই ভবিষ্যতের প্রতি প্রতিশ্রুতি।
২| ২৪ শে জুলাই, ২০২৫ দুপুর ১:৩৫
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: পড়লাম।
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে জুলাই, ২০২৫ সকাল ১১:৫৬
রাজীব নুর বলেছেন: জানলাম।
ধন্যবাদ।