![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মানুষ, আমি বাঙালি। আমার মানবিকতা, আমার সংস্কৃতির উপর আঘাত হানতে চাওয়া, ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাওয়া প্রাণী মাত্রই আমার কাছে পিশাচ। আমার দেশের উপর আঘাত হানতে চাওয়া প্রাণীদের পালনকারী, প্রশ্রয়দানকারী মাত্রই আমার কাছে পিশাচ, রাক্ষস। হোক সে যে কোনো সাম্প্রদায়িক কিংবা ঢেঁড়স চাষ পরামর্শক।
আমরা অনেকেই হয়তো জানি না যে পৃথিবীর অন্যতম রোমান্টিক শহর ভেনিস আসলে এক অদৃশ্য বনভূমির ওপর ভাসছে? না, একদম না ,আমি কল্পনার কথা বলছি না, বরং বাস্তব ইতিহাস ও প্রকৌশলের এক অসাধারণ কীর্তির কথা বলছি, যা প্রায় ১,৫০০ বছর ধরে সমুদ্রের বুকে দাঁড়িয়ে আছে।
ঐতিহাসিকদের ধারণা, ৪২১ খ্রিস্টাব্দের দিকে ভেনিসে প্রথম বসতি স্থাপন শুরু হয়। মূল ভূখণ্ডে যেসব মানুষ যুদ্ধে ও হানাহানিতে নিরাপদ আশ্রয় হারাচ্ছিল, তারা সমুদ্রের মাঝে ছোট ছোট দ্বীপে চলে আসে। দ্বীপগুলো ছিল কাদা ও বালুর সংমিশ্রণে নরম পলি মাটি, তাই মাটিতে সরাসরি কোন স্থাপনা দাঁড় করানো প্রায় সম্ভব ছিল । তাই তখন তারা অনেক চিন্তা ভাবনা করে নিয়ে আসে এক যুগান্তকারী সমাধান, কাঠের পাইল ফাউন্ডেশন।
দক্ষ নির্মাণ শ্রমিকরা সমুদ্রের তলায় হাজার হাজার কাঠের খুঁটি পুঁতে দিলেন। প্রধানত ব্যবহৃত হলো আল্ডার কাঠ এক ধরনের গাছ যা পানির নিচে অক্সিজেনের অভাবে পচে না। মাঝে মাঝে ওক ও লার্চ কাঠও ব্যবহার হলো।
খুঁটিগুলো গেঁথে দেওয়া হলো এমন গভীরে, যাতে তারা কাদার নরম স্তর পেরিয়ে শক্ত মাটির স্তরে পৌঁছে যায়। পাইলগুলোর মধ্যে গড় ব্যবধান রাখা হলো প্রায় অর্ধ মিটার, আর অনেক স্থানে তিন মিটার পর্যন্ত গভীরে ঢুকিয়ে দেওয়া হলো।
ধীরে ধীরে হাজার নয়, লাখ লাখ কাঠের পাইল সমুদ্রতলে দাঁড়িয়ে এক অদৃশ্য বনভূমি তৈরি করলো, যার ওপর বর্তমান ভেনিস শহর দাঁড়িয়ে আছে।
আপনি হয়তো ভাবছেন, এত কাঠ এত বছর ধরে কীভাবে টিকে রইল? উত্তর আর কিছুই না বিজ্ঞান ও প্রকৃতির যৌথ সম্মেলিত জাদু। পানির নিচে অক্সিজেনের ঘাটতি থাকায় কাঠে পচন ধরেনি। বরং সমুদ্রের পানির খনিজ পদার্থ ধীরে ধীরে কাঠের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জমে সেটিকে একপ্রকার পাথরের মতো শক্ত করে দিয়েছে। এই প্রক্রিয়াকে বিজ্ঞানীরা বলেন খনিজীকরণ ।
শুধুমাত্র সেন্ট মার্কস ক্যাম্পানাইল তৈরিতে লেগেছিল প্রায় ১ লক্ষ কাঠের পাইল। আর বিশাল বাসিলিকা দি সান্তা মারিয়া দেলা সালুতে দাঁড় করাতে ব্যবহার হয়েছিল ১০ লাখের বেশি পাইল! ভাবুন তো প্রতিটি খুঁটি হাতের শ্রম ও সরঞ্জাম দিয়ে সমুদ্রের নিচে বসানো হয়েছে, আধুনিক যন্ত্রপাতি ছাড়াই।
আজও ভেনিস দাঁড়িয়ে আছে সেই জলমগ্ন বনভূমির ওপর, যা দেড় সহস্রাব্দ আগে নির্মিত হয়েছিল। প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষ এই শহরের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়, কিন্তু খুব কম মানুষ জানে তাদের পায়ের নিচে লুকিয়ে আছে মধ্যযুগীয় প্রকৌশলের এই মহাকাব্য।
ভেনিস কেবল একটি শহর নয় এটি মানুষের সৃজনশীলতা, বিজ্ঞান ও প্রকৃতির এক অসাধারণ মিলনের যৌথ ফল। হয়তো ভবিষ্যতে প্রযুক্তি আরও উন্নত হবে, কিন্তু পানির নিচে কাঠের পাইলের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা ভেনিসের গল্প চিরকাল এক বিস্ময় হিসেবেই থাকবে।
১২ ই আগস্ট, ২০২৫ সকাল ১১:৩৪
কিরকুট বলেছেন: আমার কাছে এটা বিস্ময়ের কিছু না । মানুষ যুগ যুগ ধরে সৃষ্টির সাথে জড়িত । এক কালের সৃষ্টি অন্য কালের কাছে বিস্ময় হয়ে উঠবে এটাই স্বাভাবিক ।
২| ১১ ই আগস্ট, ২০২৫ বিকাল ৫:০৫
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
১২ ই আগস্ট, ২০২৫ সকাল ১১:৩৪
কিরকুট বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ ।
৩| ১১ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ৯:৫৭
বিজন রয় বলেছেন: এধরনের পোস্ট অনেক ভালো লাগে।
আশাকরি আরো এমন লেখা পোস্ট করবেন।
১২ ই আগস্ট, ২০২৫ সকাল ১১:৩৫
কিরকুট বলেছেন: চেষ্টা থাকবে ।
৪| ১২ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ১:২৩
লোকমানুষ বলেছেন: সত্যিই বিস্ময়কর যে দেড় সহস্রাব্দ আগে ভেনিসের নির্মাতারা এমন স্থায়ী সমাধান বের করেছিলেন, যা এখনো আধুনিক স্থাপত্যকেও তাক লাগিয়ে দেয়। কাঠের পাইলের খনিজীকরণ প্রক্রিয়া যেন প্রকৃতি নিজেই ইঞ্জিনিয়ার হয়ে কাজ করেছে—যার ফলে কাঠ প্রায় পাথরের মতো শক্ত হয়ে টিকে আছে। মনে পড়ছে, কয়েক বছর আগে খনিজীকরণ পদ্ধতিতে একটি ড্রেসকে সংরক্ষণ ও সাজানো হয়েছিল, আর এখানেও সেই একই বিজ্ঞান শহরকে অক্ষত রেখেছে। সত্যিই, তৎকালীন স্থাপত্যবিদ্যার দূরদর্শিতা আজও অনন্য।
১২ ই আগস্ট, ২০২৫ সকাল ১১:৩৫
কিরকুট বলেছেন: মানুষ প্রকৃতি থেকেই শেখে ।
৫| ১২ ই আগস্ট, ২০২৫ সকাল ১০:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: ভেনিস গুরুত্বপূর্ন না মক্কা ??
১২ ই আগস্ট, ২০২৫ সকাল ১১:৩৬
কিরকুট বলেছেন: আমার কাছে আমার বিছানা গুরুত্বপুর্ন ।
৬| ১২ ই আগস্ট, ২০২৫ সকাল ১০:২০
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: সুন্দর ও অজানা তথ্য শেয়ারের জন্য ধন্যবাদ।
১২ ই আগস্ট, ২০২৫ সকাল ১১:৩৬
কিরকুট বলেছেন: ঠিক অতটা অজানা না । ধন্যবাদ ।
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই আগস্ট, ২০২৫ দুপুর ১২:১৯
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ভেনিসের গল্প চিরকাল এক বিস্ময় হিসেবেই থাকবে। আসলেই তাই।