![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মানুষ, আমি বাঙালি। আমার মানবিকতা, আমার সংস্কৃতির উপর আঘাত হানতে চাওয়া, ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাওয়া প্রাণী মাত্রই আমার কাছে পিশাচ। আমার দেশের উপর আঘাত হানতে চাওয়া প্রাণীদের পালনকারী, প্রশ্রয়দানকারী মাত্রই আমার কাছে পিশাচ, রাক্ষস। হোক সে যে কোনো সাম্প্রদায়িক কিংবা ঢেঁড়স চাষ পরামর্শক।
বাংলাদেশে মেয়ে হয়ে জন্ম নেওয়া মানে জীবনের শুরু থেকেই অসংখ্য অদৃশ্য বাধা অতিক্রম করা। ধনী বা গরিব পরিস্থিতি আলাদা হলেও মূল চ্যালেঞ্জগুলো প্রায় একই।
নারীদের জন্য সমাজে শালীন ও সভ্য হওয়ার একটি পূর্বনির্ধারিত কাঠামো আছে। এই কাঠামোর বাইরে পা রাখলেই শুরু হয় সামাজিক আদালত যেখানে বিচারক সবাই, কিন্তু ন্যায়বিচার নেই। পরিসংখ্যান বলে ব্র্যাকের ২০২৩ সালের এক জরিপে দেখা গেছে, ৭৮% নারী জানিয়েছেন তারা পোশাক বেছে নেওয়ার সময় চারপাশের মানুষের প্রতিক্রিয়া নিয়ে ভাবেন এবং ভয় পান ।
আগে স্কুল বা কলেজের সামনে মৌখিক হয়রানি ছিল স্বাভাবিক দৃশ্য, এখন একই মানসিকতা চলে এসেছে অনলাইনে, আরও মারাত্মক ভাবে। বাংলাদেশে ২০২৪ সালের সাইবার ক্রাইম ডেটা অনুযায়ী, অনলাইনে হয়রানির শিকারদের মধ্যে ৭০% নারী।
যখন কোনো নারী যৌন সহিংসতার শিকার হন, অপরাধীর শাস্তি দাবির বদলে ভিক্টিমের অতীত, পোশাক বা জীবনধারা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের রিপোর্ট (২০২৩) অনুযায়ী, গত বছরে নথিভুক্ত ধর্ষণ মামলার মাত্র ৩% এ অপরাধীর শাস্তি হয়েছে।
নারীর শরীর নিয়ে মন্তব্য এখানে একধরনের বিনোদন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেউ ওজন বাড়ালে বা কমালে, গঠন বদলালে সংবাদ, গসিপ, মন্তব্য সব শুরু হয়। WHO এর মতে, বিশ্বে ৪০% নারী জীবনের কোনো না কোনো সময়ে বডি শেইমিংয়ের শিকার হন। বাংলাদেশে এ নিয়ে সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান নেই, তবে অনলাইন জরিপে ৮২% নারী বলেছেন, তারা শরীর নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য শুনেছেন।
আন্তর্জাতিক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় প্রায়ই দেখা যায় প্রচলিত গড়নের বাইরে থাকা নারীরা জয়ী হচ্ছেন। এটা প্রমাণ করে সৌন্দর্য মানে কেবল শারীরিক মাপ নয়, বরং আত্মবিশ্বাস, ব্যক্তিত্ব ও দক্ষতার সমন্বয়।
নারীদের প্রতি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বাধা মানে দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীর শক্তি অব্যবহৃত রাখা। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের লিঙ্গ বৈষম্য প্রতিবেদন ২০২৪ এ বাংলাদেশ ১৪৬ দেশের মধ্যে ৫৯তম স্থানে, কিন্তু অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ ও সুযোগ এর সূচকে স্থান ১৪২। এর মূল কারণ নারীর কর্মক্ষেত্রে প্রবেশে সামাজিক বাধা।
নারীর প্রতি সম্মান কোনো অতিরিক্ত সুবিধা নয় এটি মৌলিক মানবাধিকার। নারীকে ছোট করা মানে আসলে পুরো সমাজের আকার ছোট করে দেওয়া। সমান সুযোগ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হলেই উন্নয়ন বাস্তবে সম্ভব হবে।
©somewhere in net ltd.