উপন্যাস: মোমবাতির আগুন (প্রথম পর্ব)

২২ শে নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৪০

: আপু! এ্যাই আপু! কি মজা! কি মজা! কি সুন্দর আমাদের দুলাভাই!!
: আরে তোর আবার কি হল ?
: তোমার বিয়ে! তোমার বিয়ে!! চাচা-চাচি তোমার বিয়ে দেখছেন। এক হুজুর-মানুষের সাথে। কি সুন্দর চেহারা আপু। তুমি পাগল হয়ে যাবে।
: আসলে তু-ই পাগল হয়ে গেছিস। কি আবোল তাবোল বকছিস।
: না আপু! সত্যি বলছি। আজ চাচা-চাচির কাছে দুলাভাইয়ের ছবি দেখলাম। আপু, একেবারেই রাজপুত্তুর। সত্যিই তোমায় বেশ মানাবে। (ফারিয়া দুই হাতে তার বড় আপুর গলা জড়িয়ে ধরে দুষ্টামি করে বলল।) কিন্তু আপু! গাল ভরা কালো দাড়ি! তুমি চুমো দিবে কোথায়?
: ফা-রি-য়া! এখন তুই আমার হাতে মার খাবি। যা এখান থেকে বলছি। আমি হুজুর-মানুষ বিয়ে করলে তো। জীবন গেলেও আমি হুজুর বিয়ে করব না।
সায়মা আব্দুর রশীদ সাহেবের বড় মেয়ে। খুবই আদরের মেয়ে। মাস্টার্সের ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েছে সবেমাত্র কদিন হল। পরীক্ষার পর আত্মীয়স্বজনের বাড়িতেও যাওয়া হয়নি। সায়মার মনটা এদিক ওদিক ছুটাছুটি করছে। কবে সে নানু বাড়ি যাবে। আত্মীয়স্বজনের বাড়ি থেকে একটু বেড়িয়ে আসবে।
আব্দুর রশীদ সাহেব ইংরেজি শিক্ষিত হলেও তার দ্বীনদারি চোখে পড়ার মত। সরকারি চাকুরী শেষে এখন তিনি অবসর। মসজিদেই অধিকাংশ সময় কাটান। কয়েকদিন ধরে তিনি চিন্তিত, মেয়ের বয়স হয়েছে। ভাল একটি পাত্রের হাতে মেয়েকে তুলে দিতে পারলেই তিনি এক পর্যায়ের দায়িত্ব মুক্ত হন। আজকালের এ যুগে ভাল ছেলে পাওয়া খুবই কঠিন। সে যেন সোনার হরিণ। শিক্ষিত ছেলে পাওয়া গেলেও দ্বীনদার ছেলে পাওয়া তো বলতে গেলে একেবারেই কঠিন। এটাই এখন আব্দুর রশীদ সাহেবের দিনরাতের ভাবনা।
* * *

সায়মা দাদির কাছে গিয়ে বলল,
: দাদি! দাদি! তোমরা একি শুরু করে দিয়েছ?
: আমি আবার কি করলাম রে ভাই?
: ফারিয়া বলল, তোমরা নাকি...
: ও বুঝেছি তোর বিয়ের কথা বলছিস। দাদু ভাই! ছেলেটা খুব ভাল। যেমন পড়াশুনায় তেমনি আমল আখলাকে। আশা করি ওর কাছে তুই যথাযথ মর্যাদা পাবি।
: দা-দি! তুমিও সেই একই কথা বলছ। দা-দি! আমারও তো একটা পছন্দের বিষয় আছে?

২ টি +০/-০