নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলো –অন্ধকারে যাই- মাথার ভিতরে স্বপ্ন নয়,- কোন এক বোধ কাজ করে! স্বপ্ন নয়- শান্তি নয়-ভালোবাসা নয়, হৃদয়ের মাঝে এক বোধ জন্ম লয়! আমি তারে পারি না এড়াতে, সে আমার হাত রাখে হাতে; সব কাজ তুচ্ছ হয়,-পণ্ড মনে হয়। -জীবনানন্দ দাশ

কুশন

আমার জন্ম ফরিদপুরের সালতা গ্রামে। বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসী। আমার বাবা একজন কৃষক। বাবার সাথে বহুদিন অন্যের জমিতে কাজ করেছি।

কুশন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার আত্মজীবনী- ২

০৮ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:৩৭


ছবি- গুগল

আমি দেখতে সুন্দর। সবাই আমাকে ভালবাসে। কিন্তু তারা আমার আসল রুপটা দেখে নি। আসলে আমিই আমার আসল রুপটা দেখতে দেই না। স্বযতনে লুকিয়ে রাখি। তবে বুদ্ধিমানরা কিছুটা বুঝে যান। আমার এক সহকর্মী আমাকে বলেছিলো- কুশন তুমি এত কুটিল আর জটিল কেন? আমি মানুষকে খুব বাজে কথা বলি। কারো ভালো আমার সহ্য না। আমি ভালো মানুষদের পিছনে লেগে থাকি। ঘরে বাইরে সব জাগায়। এজন্য আমার ঘরের মানুষরা আমাকে সঠিক পছন্দ করে না। আমি কত লোকের ক্ষতি করেছি তার হিসাব নেই। খুব চতুরতার সাথে আমি মানুষের পেছনে লাগি। তারপর তার ক্ষতি করি। এটা আমার দীর্ঘদিনের অভ্যাস। আমার সাথে ফাইট দিয়ে কেউ পারে না। আগামী দিন গুলোতেও কেউ পারবে না।

আমি যখন মন্দ কাজ করি- তখন বেশ কিছু মন্দ মানুষ আমাকে সাপোর্ট করে। মন্দের সঙ্গে মন্দ মিলবে এটাই স্বাভাবিক। ঝামেলা পাকানোর জন্য কিছু মন্দ মানুষ আমাকে বরাবর'ই সাপোর্ট করে। বহু ভালো লোককে আমি ঘর ছাড়া করেছি। এলাকা ছাড়া করেছি। মামলা দিয়েছি। কারাগারে পাঠিয়েছি। পুলিশ দিয়ে হেরেজমেন্ট করিয়েছি। আমার চামচা দিয়ে মাইর পর্যন্ত খাইয়েছি। এত এত খারাপ কাজ করার পরও আমার জয়-জয়কার। কারন এই সমাজটা মন্দ মানুষদের জন্য। ভালো মানুষরা শুধু গর্তে পড়ে। আসলে গর্তে পড়ে না, আমি আমরা তাদের গর্তে ফেলে দেই। তারপর দূর থেকে মজা দেখি। আসলে বদমাইশি করতে মজা লাগে। বদমাইশি আমার নেশার মতোন রক্তের সাথে মিশে গেছে। অনেক-অনেক অপরাধ করেও আমার কখনও অপরাধবোধ হয় না। কাকে কাকে আমি শাস্তি দিব তার লিস্ট করেছি। শাস্তি ওদের পেতেই হবে। ক্ষমা আমি করবো না।

আমার মায়ের মৃত্যুর চার বছর আগে আমি জানতে পারি- এতদিন যাকে বাবা বলে ডাকতাম তিনি আমার বাবা নন। অর্থ্যাত আমার বাপের ঠিক নাই। যার বাপের ঠিক নাই সে কি করে ভালো মানুষ হবে? সে তো জটিল মানুষ হবে। এটাই স্বাভাবিক। সে এখন ইচ্ছে করে মানুষের সাথে লাগবে, মানুষের ক্ষতি করবে, অন্দমন্দ কথা বলবে। সমাজে ভালো কাজের জন্য মানুষের সাপোর্ট পাওয়া যায় না। কিন্তু মন্দ কাজের জন্য সাপোর্টের লোকের অভাব হয় না। মনে হয়, আমার মতো ওদেরও বাপের ঠিক নাই। যদি ওদের বাপ থাকতো তাহলে ওরা কি করে আমাকে মন্দ কাজে তাল দেয়! আমার চেয়ে ওরা বেশি খারাপ। যারা আমাকে মন্দ কাজে উৎসাহ দেয়। আর দূর থেকে এক ছাগল এসব মন্দ কাজ দেখেও চুপ করে থাকে। সঠিক পদক্ষেপ নেয় না। আসলে জ্ঞানের অভাব।

আমার বাপ আসলে ভালো মানুষ ছিলো না। সে মিথ্যাবাদী মানুষ ছিলো। কোনো দিনও কথা দিয়ে কথা রাখতে পারে নাই। বাপের কাছে দুই শ' টাকা চেয়েও কোনো দিন পাই নি। এমনও হয়েছে টানা একমাস দুই শ' টাকা চেয়ে গেছি, দেয় নি। ছয় মাস পড়ে গিয়ে একশ' টাকা দিয়েছে। কিন্তু আমার বাপ বন্ধুবান্ধব নিয়ে মদ খেয়েছে। বিলাসি জীবনযাপন করেছে। অথচ নিজের ছেলের দিকে ফিরে টাকায় নি। ছেলের পড়ালেখার খোঁজ খবর নেয় নি। বরং আমার মাকে ছাড়া আর দুটা বিয়ে করেছে। আমার বাবা তার মৃত্যুর দশ বছর আগেও একটা বিয়ে করেছে। সেখানে আবার তিন ছেলে মেয়ে। বাবার মৃত্যুর পড় তারা ভয়ঙ্কর কষ্টে আছে। এক বছরের বাড়ি ভাড়া জমেছে। বাড়িওলা রোজ চিল্লাচিল্লি করে। খারাপ গালি দেয়। আসলে সব হলো নিয়তি।

আমি সম্পূর্ন নিজের যোগ্যতায় এত দূর এসেছি। এখন আমি আমেরিকায় থাকি। যদিও লেখাপড়া করেছি অস্ট্রেলিয়াতে। কাজ করি আর টাকা জমাই। প্রতিমাসে দেশে সামান্য কিছু টাকা পাঠাতে হয়। আমেরিকাতে আমার নিজের একটা দোতলা বাড়ি আছে। বাড়ির সামনে এবং পেছনে আমি বাগান করেছি। বেশ ভালো ফল এবং সবজি পাই। এত ফল সবজি আমার লাগে না। আমি প্রতিবেশীদের বিলিয়ে দেয়। দুইটা বেশ দামী গাড়ি আছে আমার। করোনা না থাকলে এতদিনে আরেকটা গাড়ি আর আরেকটা বাড়ি কিনে ফেলতাম। অবশ্য এখনও কিনতে পারি। লুইস নামে একটা মেয়ের সাথে আমার খুব ভাব হয়েছে। খিস্টান মেয়ে। দারুন সুন্দরী। সপ্তাহে একদিন মেয়েটার সাথে প্রেম করি। মেয়েটা একদম পুতুলের মতো সুন্দর।

আগে একবার বলেছি, আবারও বলি আমি ছিলাম গ্রামের ছেলে। আমার গ্রামের নাম ছিলো সালতা। অতি দরিদ্র গ্রাম। এখন আমাদের গ্রামে দুইটা স্কুল ও একটা কলেজ আছে। কিন্তু আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমাদের গ্রামে কোনো স্কুল কলেজ ছিলো না। স্কুলে যেতাম দুই গ্রাম পার হয়ে। তারপর বিশাল এক বিল পার হতে হতো। বিল পার হয়ে স্কুলে পড়তে যেতাম। প্যাঁককাঁদা মাড়িয়ে স্কুলে যেতে হতো। খুব কষ্ট করেছি আমি। খুব। এখন আমাদের গ্রামের বেশির ভাগ রাস্তা পাকা। প্রচুর রিকশা আর অটো চলে সারাদিন রাত। পুরো গ্রামে একটা বেড়া আর ছনের ঘোর খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমাদের ঘরটা ছিলো মাটির। এখন আমি বিশাল বড় বাড়ি করেছি। প্রতি বছর গ্রামের মসজিদে আমি টাকা দেই। মাদরাসায় টাকা দেই। বাচ্চাদের খেলার সরঞ্জাম কিনে দেই।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৫৪

ইসিয়াক বলেছেন: ছবি দেখেই তো ভয় লাগছে B-)) । মিঃ কুশন আপনার আত্নজীবনীতে এতো ভয়ঙ্কর ছবি এ্যাড করেছেন কেন?

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৪৫

কুশন বলেছেন: ছবিটা খুব ভয়ঙ্কর নয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.