| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সৈয়দ কুতুব
নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!
শুরুটা ছিল এক অচিন্তনীয় আবেগে। ২০১৭ সালের সেই রাতে, সীমান্ত পেরিয়ে যখন লাখো মুখ, চোখে ভয়ের ছায়া, হাতে অল্প কিছু কাপড় আর বুকভরা আশ্রয়ের আশা নিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছিল, তখন পুরো দেশ এক সুরে গাইছিল মানবতার গান। কেউ ধর্মীয় দায়িত্বে, কেউ মানবিকতার মোড়কে রাজনৈতিক সুবিধার লোভে। আওয়ামী লীগ তখন দেখছিল আন্তর্জাতিক প্রশংসার সুযোগ, বিএনপি চাইছিল ক্ষমতার বাইরে থেকেও নৈতিক উচ্চতা, জামায়াত খুঁজছিল ধর্মীয় জনপ্রিয়তার পরিত্রাণ। কিন্তু ইতিহাস প্রমাণ করেছে , যে দেশ নিজের নিরাপত্তাকে আবেগে ভাসিয়ে দেয়, সে একদিন আবেগের জোয়ারেই ডুবে যায়। আমরা ভেবেছিলাম অতিথি এসেছে, কয়েক মাসে ফিরে যাবে; কিন্তু অতিথি এখন স্থায়ী নাগরিক, আর আমরাই দিন দিন হয়ে উঠছি অস্থায়ী রাষ্ট্র।
সবচেয়ে বড় কৌতুক হলো, যে চীন শুরু থেকেই এই নাটকের পরিচালক, এখন সে-ই দর্শকের আসনে বসে হাততালি দিচ্ছে। চীনা রাষ্ট্রদূতের হাসিমাখা মুখে শোনা যায় অতি পরিচিত সংলাপ: “রোহিঙ্গা ইস্যু খুব জটিল, একা চীনের পক্ষে সমাধান সম্ভব নয়।” কথাটি যতটা নরম, এর ভেতরের বার্তা ততটাই নির্মম। চীনের যুক্তি হলো : পশ্চিমারা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে পরিস্থিতি জটিল করেছে, জাতিসংঘের সংস্থাগুলো ‘নিরাপদ প্রত্যাবাসন’ চাপিয়ে সমস্যা আরও বাড়িয়েছে। কিন্তু চীনের প্রতি পাল্টা প্রশ্ন কেউ করে না : যদি সত্যিই সমাধান চান, তবে কেন জান্তার পেছনে আপনার টাকা, অস্ত্র ও কূটনৈতিক ঢাল? কেন প্রতিটি প্রস্তাবে আপনি জাতিসংঘে ভেটো দেন? উত্তর সহজ: চীনের জন্য রোহিঙ্গা সংকট একটি মানবিক বিপর্যয় নয়, এটি কৌশলগত বিনিয়োগ। জান্তা টিকলে তাদের বন্দর, খনি ও করিডর টিকে। গণতান্ত্রিক মিয়ানমার মানে চীনা প্রভাবের পতন, তাই চীনের কাছে এই সংকট যত দীর্ঘস্থায়ী হয়, তত লাভজনক।
মিয়ানমারের অভ্যন্তরে আজ তিন শক্তি মিলে রোহিঙ্গাদের জীবনকে পরিণত করেছে এক নিষ্ঠুর অনন্ত কারাগারে। প্রথম শক্তি জান্তা, যাদের নীতি জাতিগত নির্মূল। দ্বিতীয় শক্তি আরাকান আর্মি, যারা জান্তাবিরোধী হলেও রোহিঙ্গা-বিরোধী, কারণ তারা রাখাইনকে কেবল রাখাইনদের জন্য রাখতে চায়। তৃতীয় শক্তি হলো সেই অদৃশ্য আন্তর্জাতিক রাজনীতি, যেখানে পশ্চিমারা মানবাধিকারের কথা বলে, কিন্তু প্রত্যাবাসনের সময় এমন শর্ত চাপায় যা কখনোই পূরণযোগ্য নয়। এই তিন শক্তি মিলে রোহিঙ্গাদের জন্য এমন এক “স্টেটলেস লুপ” তৈরি করেছে, যেখান থেকে মুক্তি মানেই নতুন বন্দিত্ব।
বাংলাদেশ এই নাটকে কেবল এক ট্র্যাজিক চরিত্র। একদিকে মানবিকতার দায়, অন্যদিকে বাস্তব রাজনীতি। চীনকে চটালে অর্থনীতি ঝুঁকিতে, পশ্চিমাদের রাগালে কূটনীতি অচল। ফলে সরকার বারবার একই মন্ত্র জপছে: “আমরা চেষ্টা করছি।” সেই চেষ্টা এখন এক প্রকার কূটনৈতিক শোকগাথা, যার শ্রোতা কেবল দাতা সংস্থা আর মানবাধিকার কর্মীরা। ভারতও তার নীরব চুপ করে রয়েছে। তারা জান্তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখে, কারণ তাদের ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ প্রকল্প মিয়ানমারের স্থিতিশীলতার ওপর নির্ভরশীল। রোহিঙ্গা যদি ফেরত যায়, রাখাইনে যুদ্ধ বাঁধবে; আর যদি না ফেরে, তাদের সাথে মিয়ানমারের রিলেশন ভালো থাকবে । পরের অবস্থাই ভারতের জন্য কৌশলগত সুবিধা।
পশ্চিমা দেশগুলোও এই কাহিনিতে এক ধূর্ত নাট্যকার। তারা মানবাধিকারের ঢাল তুলে জান্তাকে গাল দেয়, কিন্তু প্রত্যাবাসনের পথে এমন সব শর্ত রাখে, যাতে প্রক্রিয়া কখনোই শুরু না হয়। তাদের দ্বিচারিতা চীনের জন্য স্বর্গীয় উপহার। কারণ যতদিন রোহিঙ্গা থাকবে বাংলাদেশে, ততদিন আন্তর্জাতিক আলো মিয়ানমারের ওপর নয়, ঢাকার ওপর পড়বে। আর চীন তখন শান্তভাবে মিয়ানমারের বন্দরগুলোয় নিজের পতাকা ওড়ে রাখবে: মানবিক বিপর্যয়ের ধোঁয়ার ভেতর দিয়ে।
এখন বাংলাদেশের রাজনীতিবিদরা জানেন, তাঁরা এক পরাজিত হাতে খেলছেন। যে টেবিলে চীন,জান্তা ও পশ্চিমা শক্তি বসে আছে, সেখানে বাংলাদেশের চেয়ারটা শুধুই প্রতীকী। এই বাস্তবতায় মানবিকতা এখন বিলাসিতা, আর কূটনীতি একপ্রকার থিয়েটার। শরণার্থী ক্যাম্পগুলো যেন আমাদের ভবিষ্যতের আয়না যার ভেতরে অসহায় মুখ, বাইরে আন্তর্জাতিক মঞ্চ। আমরা এখন কেবল এক দেশের নাগরিক নই, আমরা বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী প্রজাতন্ত্রের ব্যবস্থাপক।
চীন আমাদের কাঁধে হাত রেখে বলছে, “ধৈর্য ধরুন।” আমরা জানি, এই ধৈর্য একদিন রাষ্ট্রের সীমানা গলিয়ে দেবে, অর্থনীতি শুষে নেবে, নিরাপত্তাকে ক্ষয় করবে। কিন্তু তবু আমরা হাসি, কারণ এই হাসিই আমাদের শেষ কূটনীতি। হয়তো একদিন ইতিহাস লিখবে: বাংলাদেশ ছিল সেই দেশ, যে মানবিকতার নামে নিজের অস্তিত্ব বন্ধক রেখেছিল। আর চীন? আসলে, এই ফাঁদ থেকে বেরোনোর রাস্তা একটাই: যেদিন চীন তার নীতি বদলাবে। আর সেই দিনটি সম্ভবত কোনো চীনা পঞ্জিকাতেই লেখা নেই !
২৯ শে অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৯:১৭
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: একেকজনের দশজন করে সন্তান আছে। বাংলাদেশে তারা সন্তান জিহাদ করছে ।
২|
২৯ শে অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৯:১৬
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
আমি মনে করি, বাংলাদেশের কোন সরকারই রোহিঙ্গাদের শরনার্থী সিচুয়েশনকে ভালো ভাবে ট্যাকল করতে পারছে না।
আমি কয়েক বছর আগে সামুতে লিখেছিলাম, রোহিঙ্গাদের সস্তা শ্রম ব্যবহার করে ঐখানে জাতিসংঘ ও পশ্চিমা সহায়তায় গার্মেন্টস ও ঔষধের কারখানা করা যাবে।
এই কাজটাই করছে ইউরোপ। ইউখ্রেনীয়দের ক্ষেত্রে।
২৯ শে অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৯:১৮
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: বাংলাদেশের কোনো সরকার পারবে না ।
৩|
৩০ শে অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১২:৫৫
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: রোহিঙ্গাদের ঠিকমত অস্ত্র ট্রেনিং দেয়া হলে বাংলাদেশে দক্ষিণ এশিয়ার বাঘ বনে যেতো।এই রকম ফ্রী জনগোষ্ঠী বর্তমান সময়ে পাওয়া দুষ্কর।
৩০ শে অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১:০০
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনার এই আইডিয়া হানিকারক ।
৪|
৩০ শে অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১:০৫
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: তা না হলে আপনি এই লক্ষ লক্ষ অদক্ষ জনগগোষ্ঠীকে কিভাবে কাজে লাগাবেন? তাদের কি সারাজীবন বসিয়ে বসিয়ে খাওয়াবেন? আর মানুষের পক্ষে কি কোন কিছু না করে শুধু বসে বসে খাওয়া সম্ভব?
৩০ শে অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১:১৩
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: কি কাজে লাগানো যায় সেটা সরকারের পক্ষ থেকে আসতে হবে।
৫|
৩০ শে অক্টোবর, ২০২৫ ভোর ৬:২৮
ক্লোন রাফা বলেছেন: আমি এর বিপক্ষে ছিলাম। বলেছিলাম মানবতা শুধু আমরা কেনো দেখাবো। যে সমস্যা সৃষ্টিতে আমাদের বিন্দুমাত্র ভুমিকা নেই ‼️যারা এর বেনিফিসিয়ারি তাদের দায় আছে। এই জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসনের। চিন, ভারত,আমেরিকা এই সমস্যার সৃষ্টি করেছে। রোহিঙ্গাদের ভুমিতে বিভিন্ন প্রজেক্ট করছে এরা।এর বাইরে ইউরোপের স্বার্থ ও আছে মায়ানমারে। আমরা তাদের কাছ থেকে ক্রয় করে সাহায্য করতে পারি।
আমি বলেছিলাম এরা যাবে না। বসে বসে খাবার এবং ঘর পেলে কে যেতে চায় অনিশ্চিত জীবনে⁉️
৩০ শে অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ১০:২৩
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: এরা আসলেই যাবে না।
৬|
৩০ শে অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ৭:২৫
অগ্নিবাবা বলেছেন: আল্লাহ কোনো কাজের না। এদের খ্রিস্টান মিশনারিদের হাতে ছেড়ে দেন, ওরাই পড়াশোনা ও কাজের মাধ্যমে মানুষকে সুখে রাখবে। ক্ষমতা, দয়া, মানবাধিকার বা আয়-উন্নতির দিক দিয়ে বিচার করলে দেখা যায়, আল্লাহর তুলনায় গড (God) অনেক এগিয়ে আছেন। এদের এই একটাই পথই খোলা আছে। আল্লাহ এদের রক্ষা করতে চান না।
৩০ শে অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ১০:২৫
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ইহা এক প্রকার হাস্যকর ও তারছেড়া মন্তব্য।
৭|
৩০ শে অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ৯:০৩
কামাল১৮ বলেছেন: ওদের ইউক্রেন এবং রাশিয়া পাঠিয়ে দিলে তাদের সৈন্য সমস্যার কিছুটা সমাধান হবে।আমরাও সমস্যা মুক্ত হবো।যদিও বিষয়টা অমানবিক হয়ে যায়।
৩০ শে অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ১০:২৬
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধে কে তাদের পাঠাবে?
৮|
৩০ শে অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ১০:৪৫
আদিত্য ০১ বলেছেন: আপনাদের ডাস্টবিন শফিক্কা ও পতিতা ফারুকি ভিউ ব্যবসায়ী খালেদ মহিউদ্দিনরে দিয়া নাটক মঞ্চায়ন করতে চাইছিলো, যে খালেদ শেখ হাসিনা ইন্টারভিউ নিতে চাইলো তাতে সে জেইলেও যাব আর তার সাধে নুনুসের গুজবটীম দিয়ে ছড়াইলো শেখ হাসিনা অসুস্থ। বাহ! কি নাটক! কি স্ক্রীপ্ট, এর চাইতে সানি লিউনিকে দিয়ে একটা ভিডিও বানাইলেও জনগন খাইতো।
কিন্তু সেই নাটক মঞ্চে আনার আগেই শেখ হাসিনার ইন্টারভিউ নিছে রয়টার্স, ইউকে ইন্ডেপেন্ডেন্ট, এএফপি। সার্ভিস, গাভদুল্লা, ডার্বি নাসির আর চুমা শফিক্কা ডাক দিছে "এই তোরা রাজু তে আয়"
৩০ শে অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ১১:১৪
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: শেখ হাসিনা ইন্টারভিউ দিলেই কি না দিলেই কি ?
উনার ফেরার উপায় নেই ।
৯|
৩০ শে অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ১০:৪৯
আদিত্য ০১ বলেছেন: জাশি ঢাবিয়ান, কাউঠালদের কি অবস্থা, সামুতে পাকিবীর্যদের দখলে ছিলো। এগুলা সব আবার গর্তে ঢুকবে শীগ্রই। এবার গর্তে ঢুকে লাভ নাই। গর্তে পানি দিয়ে যেভাবে ইদুর নিধন হয়, ঠিক তেমনই পাকি শাবকমুক্ত বাংলাদেশ করা হবে। আর সামুত মামুলি ব্যাপার
৩০ শে অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ১১:১৪
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: সবাই আছেন কম-বেশি ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৯:০০
জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:
রোহিংগা পুরুষেরা সস্তা শ্রমিক, এদেরকে কাজে লাগানোর দরকার।