| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সৈয়দ কুতুব
নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!
গল্পের পটভূমি ২০২০। ক্ষমতায় তখন সেই সরকার, যারা নিজেদের 'ধর্মনিরপেক্ষতার ধ্বজাধারী' এবং 'প্রগতির একমাত্র অভিভাবক' হিসেবে জাহির করত। তাদের এই প্রগতিশীলতার বড়াই প্রমাণ করতেই জন্ম নেয় এক মহৎ উদ্যোগ: শিশুদের শৈশবের সঠিক বিকাশের জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষার ৫,১৬৬ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। ফাইলটি যাত্রা শুরু করল—উদ্দেশ্য মহৎ, কিন্তু গতি যেন ইচ্ছাকৃতভাবে শ্লথ।
কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষতার এই দাবি বাস্তবে প্রশাসনের গতিতে প্রতিফলিত হলো না। জনপ্রশাসন, অর্থ বিভাগ, সচিব কমিটি—এই প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক স্তর পার হতে ফাইলটির লেগে গেল পুরো চারটি বছর (২০২০ থেকে ২০২৪-এর মাঝামাঝি)। এই দীর্ঘসূত্রিতা ছিল স্পষ্টতই কৌশলগত নিষ্ক্রিয়তা এর নগ্ন উদাহরণ। এই সময়ের মধ্যে দুইবার সাধারণ শিক্ষক নিয়োগ করা হলেও, সংগীত আর শারীরিক শিক্ষার পদগুলো 'প্রক্রিয়াধীন' স্ট্যাটাসেই রয়ে গেল। যে সরকার নিজেকে সেক্যুলার দাবি করে, সে কেন এমন একটি মৌলিক সাংস্কৃতিক অধিকারের ফাইলকে চার বছর ধরে আটকে রাখে?
তথাকথিত সংবেদনশীল পদ দুটি বারবার এড়িয়ে যাওয়া হলো। সরকার ভালো করেই জানত, এই নিয়োগ দেওয়া হলে সমাজের একটি অত্যন্ত প্রভাবশালী মৌলবাদী গোষ্ঠী ক্ষুব্ধ হবে। নিজেদের 'ধর্মনিরপেক্ষ' দাবি বজায় রাখতে উদ্যোগ নিলেও, ভোটের রাজনীতির সূক্ষ্ম হিসাব মেলাতে তারা এই সংবেদনশীল উদ্যোগটিকে ইচ্ছে করেই আমলাতান্ত্রিক জটে আটকে রাখল। গত ১৬ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও, কৌশলগত সমঝোতার কারণে এই নিয়োগ কখনো আলোর মুখ দেখেনি।
এরপর এলো জুলাই, ২০২৪-এর রাজনৈতিক পালাবদল। ক্ষমতায় এলো অন্তর্বর্তী সরকার, যারা তাৎক্ষণিকভাবে 'ডানপন্থী', 'বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত' বা 'মৌলবাদী প্রভাবযুক্ত'—এই সবকটি তকমা নিয়েই রাজনৈতিক মঞ্চে এল। আর ঠিক এই সময়ে, পূর্ববর্তী সরকারের তৈরি করা মঞ্চে নাটকটি মঞ্চস্থ হওয়ার জন্য প্রস্তুত হলো। দীর্ঘ আমলাতান্ত্রিক জটিলতা পেরিয়ে, ২০২০ সালের সেই ফাইলটি এবার দ্রুত এগোতে থাকল, এবং ২০২৫ সালের আগস্টে নতুন নিয়োগ বিধিমালায় সংগীত ও শারীরিক শিক্ষকের পদ দুটি যুক্ত হলো—এক 'সেক্যুলার' উদ্যোগের চূড়ান্ত প্রশাসনিক ফল প্রকাশ পেল এক 'ডানপন্থী' সরকারের আমলে।
মাস দুয়েক যেতে না যেতেই এলো চূড়ান্ত আঘাত। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই, সমাজের রক্ষণশীল গোষ্ঠীর তীব্র চাপের কাছে নতি স্বীকার করা হলো। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (DPE) একজন কর্মকর্তা এমন এক অদ্ভুত ও ভিত্তিহীন অজুহাত দিলেন যে, "এত অল্প সংখ্যক নিয়োগ দেওয়া বৈষম্য সৃষ্টি করবে।" সংগীত শিক্ষকের সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক শিক্ষার পদটিও বাতিল করা হলো, যেন সিদ্ধান্তের পেছনে থাকা ধর্মীয় চাপের দিকটি ধামাচাপা দেওয়া যায়। এই সিদ্ধান্ত ছিল মূলত রাজনৈতিক দায়মুক্তি এবং ভোটের সমীকরণ মেটানোর এক নির্লজ্জ কৌশল।
আর এই সুযোগটি লুফে নিল মিডিয়া আর সমালোচকরা। এখন পুরো আলোচনাটাই এমনভাবে ঘুরিয়ে দেওয়া হলো যেন, যত দোষ নন্দ ঘোষ ! মানুষ তুলনা টানছে: "দেখো, মুসলিম রাষ্ট্র সৌদি আরবে সংগীত শিক্ষক নিয়োগ হয়, তুরস্কের মতো দেশেও হয়, আর 'মৌলবাদী প্রভাবযুক্ত' অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসেই শিশুদের সাংস্কৃতিক অধিকারের পদ বাতিল করল।" এই সমালোচনার তীর সোজা গিয়ে বিঁধছে অন্তর্বর্তী সরকারের দিকে। তাদের রাজনৈতিক ভাবমূর্তি রাতারাতি কলঙ্কিত হলো।
মজার বিষয় হলো, কেউ এই প্রশ্নটি তুলছে না যে, "চার বছর ধরে যারা ফাইলটি আটকে রেখেছিল, তাদের সদিচ্ছাটা কতটা খাঁটি ছিল? গত ১৬ বছর ধরে একটি 'ধর্মনিরপেক্ষ' সরকার ক্ষমতায় থাকার পরেও কেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এমন একটি নিয়োগ আমরা কখনোই দেখতে পেলাম না? মিডিয়া বা জনমত এখন এটিও দেখছে না যে, ধর্মনিরপেক্ষতার দাবিদার সরকার নিজেই মৌলবাদী শক্তির সঙ্গে সমঝোতা করে পুরো প্রক্রিয়াটিকে ঠেলে দিয়েছে নতুন সরকারের কাঁধের ওপর।
শেষ হাসিটা হাসছে তারা, যারা পর্দার আড়াল থেকে চাপ তৈরি করেছিল, আর সেই সরকার, যারা কৌশলগত নীরবতার মাধ্যমে দীর্ঘ ১৬ বছরের প্রশাসনিক দায় এবং ব্যর্থতা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হলো। উল্টোদিকে, সেই ব্যর্থ 'সেক্যুলার' সরকারের সঙ্গেই এখন অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনামূলক সমালোচনা করে তাকে খাটো করা হচ্ছে। এভাবেই রাজনৈতিক প্রহসনের খেলায় দায়ভার কেবল বদলে যায়, আর মূল প্রশ্নগুলো হারিয়ে যায়।
০৫ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৪
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: যারা উন্নত বিশ্বে গিয়ে মৌলবাদি হচ্ছেন এর পিছনে কি কারণ থাকতে পারে?
২|
০৫ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২০
অগ্নিবাবা বলেছেন: উন্নত বিশ্বে সেকুলার সমাজে নিজ ধর্মচর্চার অবাধ সুযোগ পেয়েই কিছু মুমিন ধরাকে সরা জ্ঞান করছে, তারা এখন বসতে পেয়ে শুতে
চাইছে,জায়গায় জায়গায় শরীয়া আইন চাইছে। এর জন্যই ইউরোপ, আমেরিকা, ভারতে ডানপন্থার উত্থান ঘটছে। এইবার নমাজরত অবস্থাতেই পাছায় লাত্থি খাওয়ার সময় হয়েছে। বেইমানেরা নিজদেশে সেকুলার আইন চায় না, তারা চায় সারা বিশ্বের সেকুলার সমাজ তাদের জন্য জায়নামাজ বিছিয়ে দেবে। যত্তসব আক্কেল জ্ঞানহীন চুনাহাগা, মানব সভ্যতারে টেনে পেছনে নিয়ে তোরাবোরা গুহায় নিতে চায়।
০৫ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ভারতে তো মৌলবাদি মোদির কারণে ডানপন্থার আগ্রাসন চলছে। আপনার কেবল মুসলিম দের নিয়ে কেন চুলকানি?
৩|
০৫ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৪৮
রাজীব নুর বলেছেন: জামাত শিবির দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে দিবে না।
সংগীত মানুষকে আনন্দ দেয়, শান্তি দেয়। ভালোবাসতে শিখায়।
০৫ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫২
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: সব দোষ শেখ হাসিনার ।
৪|
০৫ ই নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৫১
অগ্নিবাবা বলেছেন: ভারতের মৌলবাদি মোদির পাছায় লাথি। খুশী হইছেন? এইবার এইবার আমার পিঠখান চুলাকায়ে দ্যান, আমার চুল্ককানি উঠছে।
০৫ ই নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:২৪
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: মলম লাগিয়ে নেন । কিনতু চারিদিকে ছড়িয়ে বেড়াবেন না । চুলকানি খারাপ জিনিস।
৫|
০৫ ই নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৫৬
অগ্নিবাবা বলেছেন: আপনেই তো টাইন্যা আনলেন, মু্মিনদের দোষগুন ব্লগে না আইন্যা চাইপ্যা যাওয়াই সওয়াবের কাম।
০৫ ই নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০০
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: যারা জোহরান মামদানির জয়কে নিজেদের জয় হিসাবে দেখছে তাদের কথা বলছেন ? হা হা ।
৬|
০৫ ই নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৩
মাথা পাগলা বলেছেন: যেখানে মানুষের বিয়া-শাদি ঠিক হলেও ১~২ বছর সময় নেয় সেখানে এধরনের সরকারি কাজ ৪ বছর আটকে ছিলো - অবাক হচ্ছেন কেন?
০৫ ই নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১০
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: বিগত ১২ বছর শেখ হাসিনার মাথায় এইটা আসলো না কেন ? ২০২০-২০২৪ সালের মাঝে দুইবার সাধারণ টিচার নিয়োগ হয়ে গেলো কিনতু বিশেষায়িত দুই পদের নিয়োগ দিতে পারলো না সরকার । আবার নাকি শেখ হাসিনার সরকার বারবার দরকার ।
। লিগের মতো ফটকা দল বাংলাদেশে কেবল আর একটাই আছে । জা-শি ।
৭|
০৫ ই নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৪
মাথা পাগলা বলেছেন: হাসিনার আমল হলে তো হাসিনাকেই দোষটা দিতেন, এখানে ইউনুসের ব্যর্থতা পান নাই যে?
০৫ ই নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১১
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ইনটেরিম সরকার কে চুমু দিয়েছি নাকি ? সবার বিষয়ে বলা হয়েছে ।
৮|
০৬ ই নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৪৮
রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে আবার এলাম। কে কি মন্তব্য করেছেন সেটা জানতে।
০৬ ই নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪০
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: শুকরিয়া ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:০৩
জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:
ব্লগে শতকরা হারে কতজন মৌলবাদী? কতজন ধর্ম নিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী? ব্লগ থেকেই বুঝা যায় যে, দেশ সভ্যতা থেকে ২০০ বছর পেছনে।