![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি খুবই ভাল, সেইসাথে চরম ভদ্র এবং গোছালো একটা ছেলে।\nকি বিশ্বাস হইল বিশ্বাস না হইলে ঠিকই ধরছেন, আমি পুরাই\nউল্টা!!!\nনিজের সম্পর্কে কিছু কথা যদি বলতেই হয় তাহলে প্রথমেই\nযে কথাটি বলব তা হলো- আমি নিতান্তই মধ্যবিত্ত পরিবারের\nএকটি ছেলে। ছোটবেলা থেকেই অনেক আদর-আল্হাদে বড়\nহয়েছি এবং এখনও হচ্ছি।বাবা-মা আমার কাছ থেকে অনেক\nকিছু আশা করে।যদিও তাদের আশা আমি পূরন করতে পারব\nকিনা জানিনা।
তামান্নার খুব টেনসন হচ্ছে। বাসা থেকে পালিয়ে যাচ্ছে । পালানোর
কোন ইচ্ছে ছিল না । শুধুই আগ বাড়িয়ে ঝামেলা করা। কিন্তু
পরিস্থিতি পালিয়ে যেতে বাধ্য করলো । অপূর্বের সাথে সম্পর্কটা বাসা থেকে মেনে নিবে না । ঠিক আছে, কিন্তু তাই বলে জোর
করে আরেকজনের সাথে বিয়ে দিয়ে দিবে । এটা কেমন
কথা । তাই এই কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া । ব্যাগ আগেই গুছিয়ে শেফালীর বাসায় রেখেছিল । কখন পালাবে সেটা নিয়ে দ্বিধায় ছিল ।
রাতে পালানো যেত, তবে বাসায় তখন মানুষ থাকবে । রিস্ক বেশি হয়ে যায় । তাই খুব সকালে বেরিয়ে পড়লো । কারও
ঘুম ভাঙ্গার আগেই । বাসা থেকে বের হয়েছি এটা অপূর্বকে জানানো দরকার । হাঁদারামটা নিশ্চয়ই এখনো ঘুমোচ্ছে ।
আলসেমীর চূড়ান্ত দৃষ্টান্ত অপূর্ব । কি করে যে এমন বোকা আর কেয়ারলেস ছেলের প্রেমে পড়লো, সে ভেবে পায়
না ।
- হ্যালো
- উহ্ কে? অপূর্ব ঘুমঘুম মুখে বললো।
- " তুমি এখনো ঘুম থেকে উঠোনি?"
রাগান্বিত কন্ঠে তামান্না বললো।
- কে কে? আরে নাহ এই
যে আমি উঠে গেছি। রাস্তায় আছি।
- তোমার এই একই মিথ্যা আর কতদিন
বলবা?
অপূর্ব জিভ কাটলো। আজকের মতো একটা দিনেও বেহুশোর মতো ঘুমিয়েছে। গতরাতে বিয়ে নিয়ে অনেক চিন্তা-ভাবনা করলো । কিছুতে সমস্যার সমাধান খুঁজে পেল না । আজও উঠতে দেরি হয়ে গেল। অবশ্য ওর সবসময়ই এমন দেরি হয়। এটা নতুন কিছু না।
- কোথায় আসবো... বাসস্টপ?
- বাসস্টপ কেন? আগে কাজি অফিসের
সামনে আসো। বিয়ে না করে তোমার
সাথে যাবো না।
- এখন কাজি অফিসে?
- হ্যা, কোন সমস্যা?
- না..মানে সাক্ষীর একটা বিষয় আছে তো।
যোগাড় করতে হবে না?
- আমি উর্মী, সাথী আর শেফালী কে বলছি।
তুমি সৌরভ আর সাকিব কে আসতে বলো।
- আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে। আসছি।
কাজী অফিসে চেয়ারে বসে আছে তামান্না। যার সাথে বিয়ে হবার
কথা সে এখনো পৌঁছোয় নি।তামান্নার ভালো লাগছে না। কেমন অস্বস্তি লাগছে। হার্ট বিট বেড়ে গেছে। আগে কখনো এমন পরিস্থিতির সামনে এসে পড়েনি । তাই একটু ঘাবড়েও
গেছে। অস্বস্তির আরেকটি কারন শাড়ি । কি মনে করে যে আজ
শাড়ি পরে আসলো । সৌরভ দেখেই ফোঁড়ান কেটে বললো,
"একেবারে বউ সেজে এসেছেন দেখি। ভালোই হলো আসল বিয়ের ফ্লেভারটা একটু পাবেন" তার খুব লজ্জা পাচ্ছিল । শাড়ি পরার বিশেষ কারন আছে । যদি আজ অপূর্বর বাসায়
সরাসরি যাওয়া হয়, তবে শাড়িই সবচে উপযুক্ত পোষাক। নতুন বউ শাড়ি ছাড়া বেমানান লাগে। কিন্তু এই শাড়িই শেষমেষ কাল হয়ে দাঁড়ালো । একে তো ঠিকঠাক
গোছগাছ রাখা কঠিন, অপরদিকে সে আবার আনাড়ি ।
অপূর্ব জোরে জোরে হাটছে ।
হাটছে না বলে দৌড়োচ্ছ বললেও ভুল হবে না ।
তামান্না যে এমন পাগলামী করবে তা এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না ।
প্রচন্ড
রোদ । ঘামে ভিজে একাকার । বিয়ে করে সে উঠবে কোথায় ।
এখনও নিজের দায়িত্বই পুরোপুরি নিতে পারেনি।
সে কি করে আর একজনের দায়িত্ব নেবে। বাসায় উঠবে?
তখন কি হবে? নানা প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল । সময়
যতো গড়াচ্ছে চিন্তাগুলো জট
পাকিয়ে যাচ্ছে । আর সমাধানের পথ সরু থেকে সরুতর ।
অপূর্ব আর তামান্না কাজী অফিসে । একটু আগে অপূর্ব ফিরেছে। কাজী সাহেব রেজিস্ট্রি খাতাটা তামান্নার দিকে এগিয়ে দিলেন । তামান্না স্বাক্ষর
করতে গিয়ে থমকে গেল । সে ঠিক করছে তো?
প্রশ্নটা আচমকা মাথায় চলে আসলো । বাবা-মা, ভাই-বোন, আত্মীয়-বন্ধু সবাইকে ছেড়ে থাকতে হবে । সে পারবে তো?
নাকি এটি ভুল সিদ্ধান্ত । হুটহাট করে আবেগী সিদ্ধান্ত?
বাবার শরীর ভালো না। তামান্নার
এভাবে পালিয়ে যাওয়া কিছুতেই মেনে নিবেন না । অনেক কষ্ট পাবেন । কিন্তু প্রকাশ করবেন না।
নীরবে কেঁদে যাবেন। তামান্না পৃথিবীর সবার কষ্ট সহ্য করতে পারবে । তবে বাবার কষ্ট সহ্য করতে পারে না । পৃথিবীর কোন
মেয়েই তার বাবাকে কষ্ট দিতে পারে না। সেই মানুষটিকে কাঁদিয়ে সে আদৌ কি সুখি হতে পারবে? প্রশ্নগুলো কঠিন বাস্তবতার
সামনে এনে ফেলে । এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে । পিছনে ফিরে যাওয়া সম্ভব না । এই পরিণতিই মেনে নিতে হবে। তামান্নার চোঁখ
পানিতে ভিজে আসছে । নিজেকে অন্ধকার ঘরে একা একা লাগছে। সে হাতে আরেকটি হাতের স্পর্শ পেল । অপূর্ব
তার হাত ধরে আছে । সবকিছু মুখে বলতে হয় না । কিছু কথা বুঝে নিতে হয়।
তামান্না অপূর্বর দিকে তাকিয়ে হাসার চেষ্টা করলো।
মানুষটি তাকে বড্ড ভালবাসে!
ব্রাক্ষণবাড়িয়ার উদ্দেশ্যে বাস ছুটছে । অপূর্বের বাসায়
যাচ্ছে। তামান্না নতুন বউদের মতো ঘোমটা দিয়েছে । জানালার
পাশে বসায় চুল আর ঠিক থাকছে না । বাতাসে অবাধ্য
স্বাধীনতা পেয়ে উড়ছে । অপূর্ব অনেকক্ষন
ধরে চুপচাপ আছে । বাসায় কিভাবে নিয়ে উঠবে তাই হয়তো ভাবছে । তামান্না জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে ।
ভেতরে অস্থিরতা এখন আর নেই । কিছুই ঠিক নেই, তবুও সবকিছু ঠিকঠাক লাগছে । এরকম
কেন মনে হচ্ছে? অপূর্ব পাশে আছে, একারনেই?
হয়তো । কিছু মানুষ থাকে, যাদের সান্নিধ্যে থাকলে জগতের সকল বাঁধা-বিপত্তি অতি তুচ্ছ মনে হয় । অপূর্বের সাথে সেই
নিশ্চয়তা আছে, অপূর্বের সাথে নির্ভরতা আছে ।
ভবিষ্যতে কি হবে তামান্না জানে না । সে বর্তমানটা জানে । বর্তমানের
মুহূর্তটা সুন্দর । বাকি সারাটি জীবন মানুষটির
হাতে হাত রেখে, কাধে মাথা রেখে কাটিয়ে দেবার মতোই
সুন্দর । তামান্না অপূর্বের কাঁধে মাথা রাখলো ।
চোঁখদুটি বন্ধ করলো । অদ্ভুত প্রশান্তি আছে ।
হ্যাঁ, এখানেই তার ঠিকানা । এখানেই সব
ভালবাসা ।
(Out view of my friend's upcoming future)
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৩২
সাজ্জাদ মণি বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৪৪
হাসান মাহমুদ ১২৩৪ বলেছেন: ভালো লাগলো
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৩২
সাজ্জাদ মণি বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:১১
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ভাল লাগল| লিখে যান