নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দেরীতে হলেও আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে আমি আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসুল (সাঃ) এর পথ খুঁজে পেয়েছি। বাকি জীবনে যা-ই হোক না কেন, আল্লাহর রাস্তা আমি ছাড়ব না। ভাবতে অবাক লাগে আমি কত হীন, অকৃতজ্ঞ ছিলাম আমার জীবনের প্রথমাংশে, তা সত্ত্বেও আল্লাহ্‌ কত রহমত বর্ষণ

লাল স্কচটেপ

আমি আল্লাহর অতি নিকৃষ্ট, গুনাহগার এক বান্দা। আল্লাহর ইবাদাতের মাধ্যমে ভালো মানুষ হওয়া এবং আল্লাহর দয়া ভিক্ষা করাই আমার লক্ষ্য।

লাল স্কচটেপ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুসলমানদের জন্য খুবই সহজ কিন্তু অমুল্য তিনটি আমল

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:০৩

আসসালামু আলাইকুম মুসলিম ভাই ও বোনেরা,
আপনারা নিশ্চয় জানেন মুসলিম মাত্রই ফরজ পালন করা বাধ্যতামূলক, সেই সাথে সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ (যা নবীজী (সাঃ) নিজে সর্বদা পালন করতেন) ও পালন করা অতি আবশ্যক। সুন্নতে গায়ের মুয়াক্কাদা (যা নবীজী (সাঃ) মাঝে মাঝে আদায় করতেন না, যেমন - আসরের চার রাকাআত সুন্নাত) পালন করলে আত্মার উন্নতি সাধিত হয় ও আল্লাহর নৈকট্য লাভে সাহায্য করে।
কিন্তু এত কিছুর পরেও একটা কথা থেকে যায়। মুসলমান হিসেবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ বলতে গেলে খুব কম মানুষ ই নিয়মিত পড়েন, আর যারা ও পড়েন তাদের একটা বিশাল অংশ সাধারণত এতেই সন্তুষ্ট থাকেন যে আমি তো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ পড়েছি/পড়ছি।
কিন্তু ভেবে দেখুন, মুসলমান হিসেবে এই ফরয ও সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ পালন করাটা হচ্ছে সর্বনিম্ন বাধ্যতামূলক আমল বা Absolute bare minimum that every muslim must do. কিন্তু শুধু bare minimum পালন করে কি আপনি আশা করতে পারেন যে আপনি সর্বোচ্চ কাতারের সম্মান পাবেন আল্লাহর দরবারে? হয়তো পাবেন, নিশ্চয় আল্লাহ্‌ ভাল জানেন, তিনি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। কিন্তু, আপনার কি উচিত না এমন কিছু আমল করা যে আমলের বরকতে আপনার অজস্র পাপ, গুনাহ দূর হওয়ার একটা ভালো সম্ভাবনা থাকে এবং আপনি বিপুল সওয়াব পেতে পারেন?
আমলের কথা ভাবলেই হয়তো মনে করতে পারেন বড় কোন দোয়ার কথা বলব। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে অনেক বড় বড় এবং খুবই ভালো দোয়া আছে যা দ্বারা আপনি খুব ভালো আমল করতে পারবেন। কিন্তু, আমি যে তিনটি আমলের কথা বলব সেই তিনটি আমল খুব ই সোজা এবং আপনি তা এখন থেকেই শুরু করতে পারবেন।
তবে একটি কথা মনে রাখবেন। যে আমল ই শুরু করুন না কেন, তার বরকত ও সওয়াব পেতে চাইলে তা ছাড়া যাবেনা। শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত করার মানুসিকতা নিয়ে আমল শুরু করবেন, তা জীবনে যত ঝড় আসুক না কেন (যেমন পিতামাতার মৃত্যু, বড় শোকের ঘটনা, পার্থিব ক্ষতি ইত্যাদি)। কোন আমল করে ছেড়ে দিলে তার বরকত পাওয়া যায়না। এজন্য এমন আমল করা উচিত যা আপনি সবসময় পালন করতে পারবেন।
আমলগুলো হল-
১। প্রতি ওয়াক্তের নামাজ শেষের আমলঃ
সুবহানআল্লাহ ৩৩ বার (সকল গৌরব আল্লাহ্‌র)
আলহামদুলিল্লাহ ৩৩ বার (সকল প্রশংসা আল্লাহ্‌র)
আল্লাহু আকবর ৩৩ বার (আল্লাহ্‌ সর্বশ্রেষ্ঠ)
দোয়াঃ "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা- শারীকালাহু, লাহুল মূলকু ওয়া লাহুল হামদ, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদির।" ১ বার
(আল্লাহ্‌ ব্যতীত অন্য কোন মা'বুদ নাই। তিনি এক। তাঁর কোন শরীক নাই। সমগ্র রাজত্ব ও সকল প্রশংসা তাঁরই। তিনি সবকিছুর উপর সর্বশক্তিমান।)
মোট ১০০ বার।
ফজিলতঃ পাঠকারীর পাপ যদি পৃথিবীর সকল সমুদ্রের ফেনা সমপরিমাণ হয়, তবুও আল্লাহ্‌ তায়ালা তা মাফ করে দেন।
২। সকাল-সন্ধ্যার আমলঃ
দোয়াঃ "সুবহানআল্লাহি ওয়াবিহামদিহী"
(আল্লাহ্‌ তায়ালার পবিত্রতা ও প্রশংসা বর্ণনা করছি।"
প্রতিদিন ভোরে ও সন্ধ্যায় ১০০ বার করে পড়বেন। আপনার সুবিধার্থে আপনি ইচ্ছে করলে ফজরের নামাজের পরে এবং মাগরিবের নামাজের পরে প্রতিদিন দুইবার এই সময়ে পড়তে পারেন।
ফজিলতঃ হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা ১০০ বার এই দোয়া পড়ে, কেয়ামতের দিন তার চেয়ে উত্তম আমল নিয়ে কেউ আসবেনা, সেই ব্যক্তি ব্যতীত যে তার সমপরিমাণ অথবা তার চেয়ে বেশী এই দোয়া পড়েছে। (মুসলিম, আবু দাউদ/মুন্তাখাব হাদিস)
৩। অশেষ বরকতের আমলঃ
প্রতিদিন অজু অবস্থায় ২০০ বার এক বসায়/একসাথে সুরা ইখলাস পড়া। (ন্যূনতম এক বার)
ফজিলতঃ
যে ব্যক্তি এই আমল করবেন, আল্লাহ্‌ পাক তাকে নিম্নোক্ত নেয়ামত দিবেন।
১) গজবের ৩০০ দরজা বন্ধ করে দিবেন।
২) রহমতের ৩০০ দরজা খুলে দিবেন।
৩) রিজিকের ৩০০ দরজা খুলে দিবেন।
৪) আল্লাহ্‌ তাকে ইলম, ধৈর্য ও বুঝ দান করবেন।
৫) ৬৬ বার কুরআন শরীফ খতম করার সওয়াব দান করবেন।
৬) ২০০ বছরের গুনাহ মাফ করে দিবেন।
৭) জান্নাতে বিশাল ২০টি মহল দান করবেন, যা নির্মিত হবে ইয়াকুত, মারজান ও জমরুদ দ্বারা।
৮) মৃত্যুর পর তার জানাজায় এক লক্ষ দশ হাজার ফেরেশতা অংশগ্রহণ করবেন।
৯) দুই হাজার রাকআত নফল নামাজ পড়ার সওয়াব দান করবেন।
১০) ৫০০ বছরের এবাদতের সওয়াব দান করবেন।

সুরা ইখলাসের আমলটি দিনে যত ইচ্ছে তত করতে পারেন, কিন্তু একবার আমল শুরু করলে প্রতিদিন নুন্যতম একবার অবশ্যই করবেন।
একদিন বেশী একদিন কম করুন সমস্যা নেই, কিন্তু কোন দিন যেন অন্তত একবার ২০০ বার সুরা ইখলাস পড়ার আমল বাদ না যায়।
একই কথা অন্য আমলগুলোর ক্ষেত্রে ও প্রযোজ্য। সকাল-সন্ধ্যার আমল অবশ্যই সকাল-সন্ধ্যায় করবেন, এবং নামাজ শেষের আমল অবশ্যই নামাজ শেষে করবেন।

এ আমলগুলোর কথা বিশেষভাবে বললাম একারণে যে অনেক মুসলমান ভাই ও বোনেরা আছেন যারা নামাজের পাশাপাশি অন্য আমল করতে চান, কিন্তু ভয় পান যে তারা বড় দোয়া অথবা অনেক সময়ব্যাপী আমল শুরু করলে ব্যস্ত জীবনে তা চালিয়ে যেতে পারবেন কিনা।
একথা যদিও সত্য যে আল্লাহ্‌র জন্য যত বেশী সময় দিবেন, আপনার তত লাভ হবে। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না যে পার্থিব জীবনে আমাদের উপর অনেকের হক আছে। যেমন, আপনি একজন পিতা হয়ে থাকলে আপনার সন্তান ও স্ত্রীর হক, মাতা হয়ে থাকলে vice versa, এরকম আরো অনেকের অনেক হক আছে, সেগুলো আপনাকে অবশ্যই পালন করতে হবে। ইসলাম ইবাদতের নামে অন্যের হক আদায় না করাকে বিন্দুমাত্র সমর্থন করেনা।

সুতরাং, আমার এরকম ব্যস্ত মুসলিম ভাই ও বোনেরা যেন নামাজের বাহিরে অল্প সময়ের কিন্তু খুব সম্মানীয় আমল করার সাথে সাথে সকলের হক আদায় করতে পারেন, তার জন্যই আমার এ ক্ষুদ্র প্রয়াস।

লেখায় কোন ভুল করে থাকলে আল্লাহ্‌ তায়ালা যেন আমাকে মাফ করে দেন। এ লেখায় সকল ভুল অনিচ্ছাকৃত। কোন ভুল পেলে তা ধরিয়ে আমাকে সংশোধন করার সুযোগ দান করবেন।

আল্লাহ্‌ আমাদের সকলের উপর শান্তি বর্ষণ করুন।
জাজাকুমআল্লাহু খায়র।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৩

কানিজ রিনা বলেছেন: আপনার সবই যুক্তি যুক্তো কিন্ত চোখের সামনে যা
দেখছি যে মানষটি প্রতিদিন মত খায় মসজিদে উঠে
নামাজ পড়ে তজবি পড়ে কোরান পড়ে তার জন্য
গহনহ হবেনা। কতটা ছওয়াবের পাল্যা ভারী হবে
আদৌ তার ব্যভিচারের গুনা মাফ হবে নাকি। জানালে ভাল হবে।

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:৪০

লাল স্কচটেপ বলেছেন: সগিরা গুনাহ মাফ হওয়ার জন্য এ আমল। কবিরা গুনাহ মাফ করার জন্য আল্লাহ্‌র দরবারে আন্তরিকভাবে তওবা করতে হবে এবং বাকি জীবনে ওই কবিরা গুনাহ আর করা যাবেনা। আল্লাহ্‌ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। তিনি ইচ্ছা করলে মাফ করতে পারেন।
তবে ব্যাভিচার একটি অত্যন্ত ঘৃণিত কবিরা গুনাহ, এটি করে ফেললে আল্লাহ্‌র কাছে তওবা করে মাফ চাওয়ার ও তা থেকে বিরত থাকার কোন বিকল্প নেই।
জাজাকআল্লাহু খায়র।

২| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৫

মীর মোহাম্মদ উল্লাহ বলেছেন: কবিরা গুনাহ তওবা ব্যতিত মাফ হয়না।
নফল ইবাদাতের মাধ্যমে যে গুনাহ মাফের কথা বলা হয় তা বলতে শুঢু সগীরা গুনাহ বুঝায়।

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:৩৭

লাল স্কচটেপ বলেছেন: সহমত মীর ভাই। জাজাকআল্লাহু খায়র।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.