নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঘড়ির টিকটিক শব্দে হাত চেপে ধরা মেয়েটা আর ভুতের ভয় পায় না।

রাফি বিন শাহাদৎ

সাহিত্য মানে যদি অসহায়ত্ব হয় আমি তবে অসহায় এক নিরবচ্ছিন্ন পথিক

রাফি বিন শাহাদৎ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছায়া-১

০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:০৭

ভার্সিটির পুকুরপাড়ে বসে আছি। চুপচাপ আকাশ দেখছিলাম। পানিতে এসে মিশেছে বিকেলের আকাশটা। কাল আকাশ। চারপাশে বাতাস হচ্ছে। বৃষ্টি নামবে নামবে ভাব। মন খারাপের কাছে হার মেনে পরাজিত সৈনিকের মত বসে আছি যুদ্ধক্ষেত্রে। সবাই দৌঁড়ে হলে ফিরে যাচ্ছে। দূর থেকে সিফাত ডেকে বলল- "শিহরণ ওইখানে থাকিস না। পানিতে পড়ে যাবি।" আমি কোন উত্তর দিলাম না। আমি সাঁতার জানতাম না। ভয়টা আমারও ছিল। কিন্তু আগে, এখন নেই। শুনেছি অনিচ্ছায় পানিতে পড়ে মারা গেলে নাকি স্বর্গে যাওয়া যায়। সত্য মিথ্যা জানি না। মনে হচ্ছিল যদি সত্যিই পড়ে যেতাম; কিন্তু অনিচ্ছায়। ইচ্ছা করে মরার ইচ্ছা আমার নাই। আমাকে চুপ করে থাকতে দেখে সিফাত চলে গেল। সে জানে আমি চুপ হয়ে থাকার মানে একজন বাদে কারো সাধ্য নেই যে কথা বলাবে। আর সে বুঝে গেছে সেই একজন নেই বলেই আমি চুপ করে আছি। সিফাত যেতেই আমি একজনের ছায়া দেখলাম পানিতে। ছায়ার মত ধীরে ধীরে এগোচ্ছে আমার দিকে। মেয়েটার নাম ছায়া। ঠিক আমার ছায়ার মত মেয়েটা সবসময় আমার সাথে থাকে। পাশে থাকলে তো থাকেই আর না থাকলে পকেটে সে সবসময় অন থাকে। একের পর এক মেসেজ আর অভিমানের জ্বালাতন। যাই হোক দুই নাম্বার সিড়িতে পা ফেলতেই সে পিছলে পড়ে যেতে নিল। তারপর নিজে নিজেই হাত এদিক ওদিক করে ব্যালান্স করে নিল নিজেকে। কিছুদূর এসে আমার থেকে একটু দূরে বসল, ঠিক আমি যেভাবে বসে আছি সেভাবেই। আমি জানি এখন আমি যা যা করব সে সেগুলা নকল করবে৷ অন্যদিন হলে কিছু না কিছু করতাম, কিন্তু আজ কেন জানি ইচ্ছা করছিল না। তাই চুপচাপ বসে থাকলাম। দূর থেকে বলে উঠল-"সরি, আর এমন হবে না। এই দেখ কানে ধরলাম।" কিন্তু সে কানে ধরে নি, আমি জানি। কানে হাত দিয়ে সে আমাকে মুখ ভ্যাংচাচ্ছে। ছোটবেলার অভ্যাস টা এখনো যায় নি। হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হল। মেয়েটার ঠান্ডাতে সমস্যা আছে আমি জানতাম। একটু ভিজলেই অবস্থা খারাপ হয়ে যায় ওর। তবুও দেখি সে বসেই আছে। আমার ভাল লাগছিল না যেয়ে বলতে, শাসন করে হলে ফিরায়ে দিতে। প্রতিদিনই তো তাই করি, আজ না হয় একটু ব্যতিক্রম হোক। এতকিছুর পরও যখন আমি চুপচাপ বসে আছি, ছায়া কিছুটা এগিয়ে আসল। তারপর বলল- "আর হবে না তো বাবা। এতক্ষণ রাগ করে থাকতে হয় না।" আমি বলে ফেললাম-" আমি ঠিক আছি, বাবুটা।" থমকে গেল ছায়া। কতদিন পর ডাকটা টা শুনল সে! সে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকল কিছুক্ষণ। আমি কি ভুল কিছু বলে ফেলেছি? নিজেকে প্রশ্ন করলাম, উত্তর পাই নি।
তারপর মেয়েটা আমার পাশে এসে বসল। হাতের উপর হাত রেখে বলল-"একটু জায়গা দিবি আমাকে?" আমি চুপ করে থাকলাম। উত্তর না পেয়ে আবার বলল-"বেশি না, কাধে মাথা রাখার জায়গাটুকু হলেই হবে।" এই বলেই সে কাধে মাথা রাখল। ছায়া কাঁপছে, খুব বেশি কাঁপছে। হাতটা চেপে ধরে ওকে বললাম-"চল তোকে হলে রেখে আসি। আর ভিজিস না।"
- উহু, আর একটু থাকি। হয়ত কোনদিন আর এই সুযোগ হবে না।
আমি আটকালাম না। আসলেও এই সুযোগ টা হয়ত আর আসবে না। কাঁদছে নাকি টের পাই নি। সব পানি মিশে একাকার হয়ে গিয়েছে পাঞ্জাবিতে। কোনো সিনেমার মত হঠাৎ বৃষ্টি থেমে যায় নি, মেঘ কেটে রংধনুও উঠে নি। আকাশ হাসতে পারে নি। কিন্তু আমি হাসছি, সহস্র বছর পর আমি হাসছি।।।।।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:১৪

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো লিখেছেন।

০৭ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১১:৪৪

রাফি বিন শাহাদৎ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই

২| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ২:০৫

বিজন রয় বলেছেন: হা হা হা হা .....

০৭ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ২:৫০

রাফি বিন শাহাদৎ বলেছেন:

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.