নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনের কথাগুলো বলে ফেলার জন্যে এসেছি

লিসানুল হাঁসান

নিতান্তই সাধারণ মানুষ

লিসানুল হাঁসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

দুনিয়াটা কি সায়েন্স ফিকশান টাইপ কিছু হয়ে যাবে বা যাচ্ছে?

১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১:৪৯

#random
#highthoughts
#midnightthoughts
আমার ছোটভাই হল পৃথবি। বাচ্চাকাল থেকে আমরা আলাদাই ছিলাম। আমি বড় হয়েছি নানুবাড়িতে। আর ও আব্বু আম্মুর সাথে। তো শুরুর দিকে ব্যাপারটা এমন ছিল যে আমার ভাইয়ের সাথে আমার কাজিনদের মত সম্পর্ক। আর কাজিনের সাথে একসাথে বড় হবার সুবাদে আপন ভাইয়ের মত সম্পর্ক। আমি নিজে খুব অথর্ব বড় ভাই টাইপ। ঠিকঠাক মত খোঁজখবর নেই না; জন্মদিন ভুলে যাই এই টাইপ। তারওপর আজকে একটা আর্টিকেল পড়ছিলাম। বড় বাচ্চাদের এচিভমেন্ট ছোটদের উপর খুব প্রেশার ক্রিয়েট করে এমন কিছু কথাবার্তা আরকি। আমরা এখনো এই আঠারো বছরের ছেলেকে বাবু ডাকি। ও আর বড় হইতে পারে নাই। হাহা। বুড়া হইলেও বোধহয় বাবুই থাকবে। বাচ্চাকালে ও অনেক প্রশ্ন করত। আমি বেশ বিস্মিত হতাম । ওর ধারণা ছিল আমি যেহেতু সায়েন্স পড়ি তাই বোধহয় সব কিছুর উত্তর আমার জানা। দেখা গেল আকাশে একটা প্লেন যাচ্ছে , তো বাবু এসে আমাকে প্লেন উড়ার মেকানিজম ব্যাখ্যা করতে বলত। যদি বলতাম আমি এত ডিটেইল জানি না, ও খুব কনভিংসিংলি প্রশ্ন করত, তাইলে সায়েন্স পড় কেন? এই যে আমি মেডিকেল পড়ী,আমার সবচেয়ে বড় এডমায়ারার বোধহয় ও( মনে মনে আরকি) ওর ধারণা ছিল মেডিকেল সায়েন্স বোধয় মাজিকের মত। ওষুধপত্র দিব, সাথে সাথে রোগী ভাল হয়ে যায় না কেন? ও খালি সবকিছুর ব্যাখ্যা খোঁজে। পরিবারের ছোটরা একটু দুরন্ত হয়, আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, আমরা ছোটদের এসব এনারজি ঠিকভাবে চ্যানেল করতে পারি না। এর জন্য মাঝে মাঝে নিজেকে ও কিছুটা দায়ি মনে হয়।
ও এখন যে ফেজে আছে , ওকে দেখে আমার নিজের সেই সময়টার কথা মনে হয়। কত নির্দ্বিধায় আমি কত কঠিন কঠিন প্রশ্ন করে ফেলতাম। আমি যখন ওর মত ফেজে ছিলাম, তখন দেশ বেশ উত্তাল ছিল। বিডীয়ার বিদ্রোহ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, গনজারন মঞ্চ- এসব হচ্ছিল। নানুবাড়িতে যখন থাকতাম, নানুভাইকে রোজ পেপার পড়ে শোনাতাম, রাজনীতি, আন্তর্জাতিক থেকে শুরু করে সম্পাদকীয়। কলেজে যখন উঠলাম, আমাদের বাসায় তখনো রোজ পেপআর নেয়ার ট্রেন্ড শুরু হয় নি। চিটাগাং কলেজ থেকে ফেরার পথে চকবাজারে মোড় থেকে রোজ একটা বা দুইটা পেপার কেনা হত আমার । আবুল মকসুদের ' সহজিয়া কড়চা' জাফর ইকবালের ' সাধাসিধে কথা ' , প্রজেক্ট সিন্ডীকেট, সম্পাদকীয়, উপসম্পাদকীয় এসব পড়তে বেশ ভাল লাগত। তখন আমি বিতর্ক করার , প্রশ্ন করার মানুষ ছিল ছোটমামা। গণজাগরণ মঞ্চ চিটাগাং এর অন্যতম একজন ছিল মামা। প্রতিদিন বিকেলে মামা যেত। আমি পেপার আর টিভিতে দেখতাম। মামার কাছে গল্প শুনতাম। একদিন মামাকে খাবার টেবিলে জিজ্ঞেস করলাম, ' আচ্ছা মামা, তোমাদের স্লোগান যে - একটা একটা *** ধর , ধইরা ধইরা জবাই কর' এটা তো আসলে ভুল। একজন মানুষ তার পছন্দ অনুযায়ি যে কোন দল করতে পারে। তার যদি কাল মার্ক্স পছন্দ তাইলে সে সেটা করবে, তার যদি ভাসানি রে পছন্দ তাইলে সে সেটা করবে। শুধু একটা আদর্শ করার জন্য কাউরে ধরে জবাই করার স্লোগান দেয়া কি জাসটিফাইড ' তখন আসলে ডেমক্রেসি নিয়ে অনেক উচ্চ ধারণা ছিল।( বেশ নাদান ছিলাম ত) । সেদিন বিকেলে যখন মামা মঞ্চে গেল- তখন আমাকে ফোন দিল। বলল তোমার কথা এই মঞ্চ শুনসে, সেই স্লোগান চেইনজ হইসে। আমি জাফর ইকবালের লেখার খুব ফ্যান। তো তার প্রবন্ধে, লেখায় বেশ ইন্সপায়ারড হইতাম। হুটহাট এমন প্রশ্ন করে ফেলার সাহস রাখতাম। আমাদের বাবুর মাঝে মাঝে এমন বিভিন্ন প্রশ্ন শুনলে আমার মনে হয়- আহারে সেই ইনসেন্স! ভার্সিটি লেভেলে উঠলে , আমার মত কয়েকটা শান্টিং খাইলে এসব প্রশ্ন করার ক্রিয়েটিভিটি সেন্টারই বন্ধ হয়ে যাবে। আমি মাঝে মাঝে ভাবি, এই যে আমরা কয়েকটা জেনারেশন বের হচ্ছি, ভেড়ার মত জীবন যাপন করে, প্রশ্ন করার অধিকার ছাড়াই, আমাদের আগের সময়গুলাও কি এমনি ছিল। তাইলে বাঙ্গালির এত সব আন্দোলন, জাগরণ কই থেকে হইসে! জাহানারা ইমাম রুমিরে বলসিল- যা বাবা, তোকে দেশের জন্য কোরবানি করে দিলাম। এই সময়, কিংবা যখন প্রয়জন হবে তখন আমার মা তো বলবে না , আমার মনে হয় আমাদের কারোর মা ই বলবে না। আমরা কি একদিন চায়না , রাশিয়া কিংবা কোরিয়া হয়ে যাব। মনলিথিক আর সুপারফিশিয়ালি হ্যাপি , কিন্তু মানুষের বেসিক যে কিছু রাইট , প্রশ্ন করার , সেটা কি একদমই থাকবে না। দুনিয়াটা কি সায়েন্স ফিকশান টাইপ কিছু হয়ে যাবে বা যাচ্ছে?

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: দুনিয়ার খবর জানি না তেমন কিছু, তবে শেখ হাসিনা দেশকে ডিজিটাল বানানোত জন্য আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.