নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনের কথাগুলো বলে ফেলার জন্যে এসেছি

লিসানুল হাঁসান

নিতান্তই সাধারণ মানুষ

লিসানুল হাঁসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানসিক স্বাস্থ্য এবং মোটিভেশন

০২ রা জুন, ২০২১ বিকাল ৪:৫৩

কিছুদিন আগে একজন প্রশ্ন করছিলেন যে সোলাইমান সুখন কিংবা এমন মোটিভেশনাল স্পিকারের সাথে একজন মেন্টাল হেলথ প্রফেশনাল এর পার্থক্য কি আসলে। চমৎকার প্রশ্ন। একজন সাইকোথেরাপিস্ট / একজন কাউন্সিলর আসলে কি করেন। উনিও কি "জানি তুমি পারবে", " নিজের ভেতরের যোদ্ধাকে জাগিয়ে তোল" টাইপ কথাবার্তা বলেন?

প্রশ্নটা আমাকে বেশ ভাবালো। আমি যদিও তখনই তাকে একটা উত্তর দেয়ার চেষ্টা করেছি তবে এটা নিয়ে পরেও ভেবেছি।

কেউ যখন আমাদের মোটিভেশন দেয় তখন সেগুলো অনেকটা হয় জেনারালাইজড। জীবনে খারাপ সময় আসবে , হেরে গেলে চলবে না, লড়ে যেতে হবে, মানুষের মাঝে অপার সম্ভাবনা আছে - এমন কথাবার্তা মূল্যহীন আমি সেটা বলছি না। আমরা যারা মোটামুটি স্বাভাবিক জীবন যাপন করছি কোন মেন্টাল হেলথ ইস্যু ছাড়া তাদের জীবনে যখন কোন স্ট্রেস আসে তখন এসব কথা হয়ত কাজে লাগতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে কাজে লাগেও। নইলে মোটিভেশনাল স্পিকারদের এত ফলোয়ার থাকত না। তবে এই ধরণের মোটিভেশনের একটা অসুবিধা হল এগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে "One size fits all" বা সর্বরোগের মহৌষুধ টাপের ফলাফলের আশা দেখায়।

আমরা যদি আমাদের শারীরিক সমস্যার কথাগুলো চিন্তা করার চেষ্টা করি তবে দেখব যে সুস্থ থাকার জন্য আমাদের কিছু সাধারণ স্বাস্থ্য উপদেশ মেনে চলার কথা বলা হয়। নিয়মিত হাঁটাহাঁটি কিংবা ব্যায়াম, ফলমূল খাওয়া, পানি পান করা, অতিরিক্ত তেল মশলাযুক্ত খাবার পরিহার করা এসব। সাধারণ স্বাস্থ্য উপদেশ হিসেবে এসব হয়ত ঠিক আছে। তবে একটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে যে একটা মানুষের যখন অনেক কো মরবিড কন্ডিশন থাকে তখন এমন সাধারণ উপদেশ খুব একটা কাজে আসে না। তখন তার প্রয়োজন হয় একদম নির্দিষ্ট পরামর্শের। এই জায়গাটায় প্রফেশনালদের ভূমিকা চলে আসে।

যার অস্টিওআরথ্রাইটিস আছে তাকে অন্যদের মত হাঁটার পরামর্শ দেয়া উচিত হবে না কিছুটা মডীফিকেশন দরকার, যার কোন হার্ট কন্ডিশন আছে তার জন্য পরামর্শ কেমন হবে, যার রেনাল ইম্পেয়ারমেন্ট আছে তার জন্য পরামর্শ কেমন হবে, সেও কি অন্যদের মত দৈনিক দুই লিটার পানি খাবে নাকি তার পানি কম খেতে হবে এমন উপদেশগুলো কিন্তু সাধারণ স্বাস্থ্য উপদেশের অন্তর্ভুক্ত নয়। এর জন্য বিশেষায়িত জ্ঞান প্রয়োজন। ঠিক তেমনি ভাবে একজন স্বাভাবিক সুস্থ্য মানুষের জন্য জন্য মোটিভেশন বা সেলফ হেল্প গাইড হয়ত সাহায্য করবে তবে যিনি ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন, এংজাইটি , প্যানিক বা ফোবিক ডীজওরডার এ ভুগছেন, যার কোন নিউরোডেভলাপমেন্টাল ডিজওরডার আছে , যার বিভিন্ন এডিকশন আছে তার জন্য এমন ' জেনারালাইড মোটিভেশন ' খুব একটা কাজ করবে না। অনন্ত ক্লিনিকাল লিটারেচারগুলো তাই বলে আরকি। তখন প্রত্যেক ব্যক্তির আলাদা আলাদা এসেস্মেন্ট করে সায়েন্টিফিক উপায়ে প্রত্যেকের জন্য আলাদা ট্রিট্মেন্ট প্লান ঠিক করতে হবে।

আমার আরেকটা জিনিস ইদানিং খুব মনে হয়। যদিও আমরা ডীজিজের বায়ো-সাইকো-সোশ্যাল মডেল পড়ি তবে আমাদের মত তৃতীয় বিশ্বের দেশে যেখানে মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি মানুষের খুব নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিত সেখানে ডীজিজের বায়োলজিকাল বেসিস এর উপর অনেক জোর দেয়া উচিত। অন্তত পেশান্টের কাউন্সেলিং এবং সাইকোএডুকেশনের সময়টায়। এতে করে পেশেন্ট কমপ্লায়েন্স অর্থাৎ রোগীদের চিকিৎসা নেয়া এবং চালিয়ে যাওয়ার হার হয়ত বাড়বে।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জুন, ২০২১ বিকাল ৫:০৭

রাজীব নুর বলেছেন: মোটিভিশন দিয়ে যদি সত্যিই কিছু হতো তাহলে দেশে এত বেকার থাকতো না।

২| ০২ রা জুন, ২০২১ বিকাল ৫:৫১

আমি সাজিদ বলেছেন: খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে লিখেছেন। আমি আপনার সাথে একমত। মোটিভেশনাল টকিংকে সব তরকারির আলু বানাতে গেলে সমস্যা।

৩| ০২ রা জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২৭

রানার ব্লগ বলেছেন: সোলাইমান সুখন কে আমার নিম্ন শ্রেনীর বাচাল ছাড়া কিছুই মনে হয় না।

৪| ০২ রা জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪০

শাহ আজিজ বলেছেন: ভাল লিখেছেন । আমি সেলফ মোটিভেট করি যদিও ডাক্তারের তেমন কোন উপদেশ নেই । এক সাইকো ডাক্তার আমায় ০০ তে কিছুক্ষন উপদেশ দিয়েছিলেন সেটা খুব কাজে দিয়েছিল এবং এখনো দেয় । কাউন্সেলিং খুব কাজের জিনিষ যদি আপনার পরিবার আর কর্মস্থলের লোকজন আপনার প্রতি সহানুভূতিশীল থাকে ।

৫| ০২ রা জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫৯

শূন্য সারমর্ম বলেছেন: ন্যাচারালি একটু বড় হলেই মোটিভেশন দেয়া যায় তবে সেটা পরিপূর্ণতা পায় না, হয়তো কাজও করে না। মানসিক, শারীরিক স্বাস্থ্য বিবেচনা করে দেয়া মোটিভেশন কাজ করার সম্ভাবনা প্রবল বেড়ে যায়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.