![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
খুব সাধারন একটা মানুষ আমি... বন্ধু বানাতে পছন্দ করি অন্যায় কে ঘৃণা করি...
আজ আমি শেয়ার করব কিছু গল্প যা আমার জীবন কে দিয়েছে শিক্ষা, দিয়েছে অনুপ্রেরণা, দিয়েছে জীবনে ভালো ভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন, জীবন কে করেছে পরিপূর্ণ।
আজ বন্ধু দিবস। প্রতি বছর আগস্ট মাসের ১ম রবিবার এই দিন টা বিশ্বব্যাপী পালিত হয়। এক বন্ধু আরেক বন্ধু কে উপহার দেয়। একে অপরের সাথে মজা করে, সারাজীবন পাশাপাশি থাকার প্রতিশ্রুতি দেয়। আসলে বন্ধু রা এমন ই। একে অপর কে না জ্বালালে, খুনসুটি, দুষ্টামি না করলে মনে হয় বন্ধুত্বই পূর্ণ হয় না।
আমি ছোট বেলা থেকেই খুব বেশি বন্ধু প্রবন ছেলে। বন্ধুত্বর জন্য অনেক কিছু করতে পারি। এবং করি। সবাই বলে বন্ধুত্তে নাকি কোন স্বার্থ থাকে না। আমি বলব অবশ্যই স্বার্থ থাকে। স্বার্থ টা হল ভালবাসার, স্বার্থ টা হল পাশে থাকার, পাশে পাবার। বন্ধুত্ব হল এক ঐশ্বরিক ব্যাপার যা সৃষ্টিকর্তা নিজ হাতে সৃষ্টির শুরু থেকে এই দুনিয়া তে পাঠিয়েছেন এবং তা থাকবে দুনিয়া শেষ হবার আগ পর্যন্ত।
আমার বন্ধুত্ব বোধ শুরু হয় যখন আমি কলেজ এ পড়া শুরু করি। এর আগে আমি বন্ধু বানিয়েছি কিন্তু কেও আমার ওই ভাবে বন্ধু হয়ে উঠেনি। কলেজ এর প্রথম দিন থেকেই আমার কয়েকজনের সাথে খুব ভালো পরিচয় হয়। এখন পর্যন্ত তারাই আমার খুব ভালো বন্ধু।
আমার একটা ভালো গুন আছে যে আমি সবাইকে খুব আপন করে নিতে পারি। সেই সুত্র ধরে আমি আমার মতো কিছু পাবলিক পেলাম যারা আমার মতই বন্ধু প্রবন। দুষ্টু ।
বরাবর আমি ভালো ছাত্র ছিলাম। আরেকটা জিনিস ছিল যেটা আমি যা পারতাম তা অন্য রা পারত না। সেটা হল মেয়েদের আকর্ষণ করার ক্ষমতা । আমার বন্ধু রা এই কাজের সুযোগ নিত। যখন ই কোন মেয়ে আমার উপর একটু ভালো প্রতিক্রিয়া দেখাত আমার বন্ধুরা উঠে পড়ে লেগে যেত তাকে আমার গার্ল ফ্রেন্ড বানানোর জন্য । যা হোক একবার আমার জীবনে একটা মেয়ে আসলো যাকে কেন জানি আমি খুব ই ভালবেসে ফেলেছিলাম। সেই মেয়ে আমার সাথে যখন খুব বেশি পরিমানে প্রতারনা করলো তখন আমি খুবে বেশি ভেঙ্গে পরেড়েছিলাম। সেই মেয়ে একাধিক ছেলের সাথে সম্পর্ক করতো যা আমি পরে আমার বন্ধুদের মাধ্যমেই জানতে পারছিলাম।
আমি এতটাই ভেঙ্গে পড়েছিলাম যে আমার পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হতে লাগল। তখন সেই বন্ধুরাই আমার পাশে এসে দাঁড়াল আমাকে উৎসাহ দিল। তাদের মধ্যে কয়েকজন ছিল খুবই দুষ্টু (ফাজিল) যারা সব সময় আমাকে আমার এক্স গার্ল ফ্রেন্ড কে নিয়ে আমাক জ্বালাতো। আমার খুব মেজাজ খারাপ হতো। কিন্তু পড়ে আমি বুঝতে পারলাম যে তারা আমাকে জ্বালাত ওই মেয়ে কে ভুলে যাবার জন্য সাহায্য করতে।
তাদের উদ্দেশ্য ছিল আমাকে ভালো ভাবে উপরের দিকে যাওয়া। আমাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তারা এসব করেছিল।
এরপর থেকে যে কোন বিপদে আমার বন্ধুরাই আমাকে সব সময় সাহায্য করেছে। একবার আমার আম্মু খুব অসুস্থ হয়ে পড়ছিল। আমার বাসায় তখন শুধু আমার ছোট ভাই আর আব্বু। আমি আমার আম্মু কে খুব ভালবাসি তাই আমার আবার ও পড়াশোনা তে ব্যাঘাত ঘটলো। কলেজ এ টাকা দিব সেই সময় ছিল না। আম্মুর সেবা করা নিয়ে এত বাস্ত থাকতাম আমার কোন হুশ ছিল না। আমার কিছু বন্ধু আমার সাথে আমার আম্মু সেবা করলো। তারা যখন আম্মুর পাশে থাকতো তখন আমি পড়াশোনা তে মন দিতে পারছিলাম। আম্মু সুস্থ হয়ে উঠল, আমিও খুব ভালো ভাবে পাশ করলাম। এমন সময় ও গেছে যে আমিও তাদের বিপদে তাদের পাশে থেকেছি।
আমি আজ কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এ গ্র্যাজুয়েট পাশ করছি। ভালো একটা বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করছি। সব কিছুই আমার বাবা মা এবং বন্ধুদের উৎসাহ ও দোয়া এর জন্যই হয়েছে। কিন্তু আমার সেই বন্ধুদের সাথে আমার এখন ও ভালো মতই যোগাযোগ আছে। প্রতি মাসে একবার করে আমরা সবাই এক বন্ধুর বাসায় একজায়গায় মিলিত হয়। মজা করি। সময় পার করি।
বন্ধুরা আমি তোমাদের আজ বলতে চাই। তোমরা আমার জীবন কে করেছ পরিপূর্ণ। আমি খুব ই ভাগ্যবান তোমাদের মতো বন্ধু আমার জীবনে পেয়েছিলাম। আশা করি এবং দোয়া করি সারাজীবন যেন এক সাথে থাকতে পারি।
শুভ বন্ধু দিবস ।
©somewhere in net ltd.