নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পরিবর্তন চাই

আমাদের একটা মানুষের সমাজ লাগবে

হোরাস

যেকোন সমালোচনা, আলোচনা, যেকোন কিছু জানাতে পারেন [email protected] ঐক্যবদ্ধ লড়াই ই মুক্তির একমাত্র পথ।

হোরাস › বিস্তারিত পোস্টঃ

আচিবির থিংকস ফল এপার্ট, আমার অনুভুতি

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:২১

চিনুয়া আচিবি গভীর মমত্ত্ববোধ থেকে প্রাচীন নাইজেরীয় সমাজের পতনকে করুন সুরে বেধেছেন। "থিংকস ফল এপার্ট"(১৯৫৮) বইটির সবচে আকর্ষনীয় দিক এর গল্পের বয়ে চলার ঢঙ। কোন নির্দিষ্ট ব্যাক্তির বয়ানে তার মেয়ের কাছে চলে গেছে গল্পের ভরকেন্দ্র, সেখান থেকে চলে গেছে তার মাতৃগোষ্ঠীর কারো কাছে।আবার ওখান থেকে চলে গেল চিল কিংবা কচ্ছপের কাছে।মনে হয় যেন কোন লেখকই এখানে নেই, কেবল যেদিকে মন চায় ভেসেই বেড়াচ্ছি ভেসেই বেড়াচ্ছি। হৃদয়ে কাপন ধরানোর মতো আফ্রিকার যুগ থেকে যুগের প্রাচীন প্রবাদ আর ফোকগল্পের গাথুনিতে গল্পটা অসাধারন হয়ে উঠেছে।বিদেশী ভাষার অনুবাদ গল্পের প্রধান সমস্যা হলো পুরো গল্পের সাথে নিজের সামাজিক অভিজ্ঞতা না মেলা। যেমন ধরা যাক কারো নাম "এজিনমা" এর নাম "ফাতেমা" হলেই হয়েতো বাঙ্গালি পাঠক আনন্দবোধ করবেন।আর নামগুলো এতো কাছাকাছি যে চরিত্রগুলো মনে রাখাই কঠিন।যাই হোক এই সমস্যাটুকু কাটিয়ে উঠলেই পাঠে আনন্দ পাওয়া যাবে।ব্রিটিশ শাদা চামড়াদের "সভ্য করে তোলা"র যাদুর কাঠির আঘাতে মুমূর্ষু প্রাচীন ব্যাবস্থার আর্তচিৎকার গল্পের শেষভাগে তারস্বরে অনুরণিত হয়।

কয়েকটা বর্ননা আর ডায়লগ অসম্ভব ভালো লেগেছে। এক বড় ভোজের আয়োজন শেষে একজন বয়োবৃদ্ধ বলছেন," মানুষ যখন তার স্বজনকে নিমন্ত্রন করে তখন এই ভেবে করেনা যে সে খেতে পায়না। যার যার ঘরে সকলেই পায় খেতে। জোৎসনা রাতে আমরা গ্রামের মাঠে কেবল চাদ দেখব বলেই গিয়ে জড়ো হই না। সে তো ঘরে বসেই দেখা যায়। আমরা জড়ো হই নিজের মানুষদের সঙ্গে মিলিত হব বলে।

ভাবতে পারো একথা কেন বলছি, কেননা নতুন প্রজন্ম আমাকে ভাবাচ্ছে।স্বজাতির মধ্যে ঐক্যবন্ধন যে কি শক্তি দেয় তোমরা তা জান না। জান না, সকলে একসঙ্গে বলা কথার শক্তিতে কত কাজ দেয়।পূর্বপুরুষদের দেবতাদের বিরুদ্ধে নিন্দাবাক্য বলছ, রীতিনীতি অগ্রাহ্য করছ। পাগলা কুকুর এভাবেই খেপে একদিন তার প্রভুকে কামড়ে দেয়।"

পিতার গ্রাম থেকে মাতার গ্রামে সাত বছরের জন্য নির্বাসিত ওকোংকোয়া ভীষন বিষন্ন। তার মামা উচেন্ডু তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, বলতো কেন আমরা আমাদের সন্তানদের নামকরণ করি "ননেকা" অর্থ্যাৎ জননীই শ্রেষ্ঠা? অথচ পুরুষই হলো পরিবারের কর্তা।

কেন স্ত্রীলোকের মৃত্যু হলে তাকে সমাধি দিতে তার পিতৃভুমিতে নিয়ে আসা হয়? স্বামীর পরিজনের কাছে নয়।ওকোংকোয়া মাথা নাড়ল, সে জানে না।

উচেন্ডু বলল" যখন সবই ভালো,সুন্দর, মাধুর্য্য আছে তখন সন্তান তার পিতার।কিন্তু যখন সে দুঃখ পায়, তিক্ত কোন অভিজ্ঞতা হয় তার, তখন সে তার মাতৃভুমিতেই, মায়ের কোলে গিয়ে আশ্রয় নেয়। মা তাকে রক্ষা করে । তাই আমরা বলি যে "জননীই শ্রেষ্ঠা"।"

এই গল্পে বর্নিত প্রাচীন প্রবাদ, রুপকথা, ঘটনার বনর্নার মধ্যে দিয়ে মানুষের হৃদয়ের গভীরের ঝনৎকার উপলব্ধি করা যায়। এত বছর পর ২০০৭ সালে বইটা "ম্যান বুকার প্রাইজ পায়" প্রয়াত আচিবি কে আবারও স্মরন করছি আফ্রিকার সাহিত্যের সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:০৫

সাইবার অভিযত্রী বলেছেন: জোৎসনা রাতে আমরা গ্রামের মাঠে কেবল চাদ দেখব বলেই গিয়ে জড়ো হই না। সে তো ঘরে বসেই দেখা যায়। আমরা জড়ো হই নিজের মানুষদের সঙ্গে মিলিত হব বলে।

২| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:৩০

হোরাস বলেছেন: আমারও পছন্দের উক্তি এটা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.