#হ্যাপি_ফ্রেন্ডশিপ_ডে_স্পেশাল "খুব মনে পড়ে নাইন-টেনের সেইদিন গুলি"

০৫ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৮:৩৯

___যখন নয়টা বাজতে শুরু করছে তখনি নীলের ঘুমটা ভেংগে গেছে, তাই নীল হাই তুলতে তুলতে ওয়াশ রুমে গেল ফ্রেশ হতে। ফ্রেশ হয়ে এসে ঘড়িতে তাকিয়ে দেখল নয়টা বিশ বাজে। তাই নীল খুব খুশি কারন আজ কলেজে যেতে হবেনা। এখন কি করা যায় তাই ভাবছে নীল, মোবাইলটা হাতে নিয়ে মেসেজ বক্স চেক করতেই দেখে, "হ্যাপি ফ্রেন্ডশিপ ডে" লেখা একটি মেসেজ সেই মেয়েটির। যে মেয়েটি নীলকে সারাদিন শেয়ার এবং কেয়ারের মধ্যে রাখতো।
..
মেয়েটির নাম নদী, তাদের সম্পর্কের গভীরতা ছিল অসীম, তাদের কোন গার্লফ্রেন্ড-বয়ফ্রেন্ড সম্পর্ক না। তাদের সম্পর্ক ছিলো জাস্ট ফ্রেন্ডশিপ।
এই ফ্রেন্ডশিপের এতটাই গভীরতা ছিলো যা পৃথিবীর সর্বোচ্চ সম্পর্ককেও হার মানাবে। অর্থাৎ তারা তাদের মধ্যে সবকিছু শেয়ার এন্ড কেয়ার করতো। ছেলেটি একদিন মেয়েটির সাথে কথা না বললে, মেয়েটি অনেক কান্না করতো। মেয়েটি যখনি একটু অবসর হতো তখনি ছেলেটির দাদুর বাগানে এসে তারা কথা বলতো। আর ছেলেটি যখনি অবসর হতো তখনি বাগানে বসে বসে মেয়েটির অপেক্ষা করতো।
..
একদিন এদের স্কুল বন্ধ ছিলো, তাই দুজনের মনেই বেশি অবসরতার কৌতূহল হচ্ছে যে তারা দুজন আজকে খুব বেশি সময় কাটাতে পারবে। তাই ছেলেটি সকাল থেকেই বাগানের মাঝখানে একটি বেঞ্চে বসে গান শুনতেছে, আর মেয়েটির অপেক্ষা জন্য করতেছে। ( বাগানটি এদের পারিবারিক বাগান হওয়ায় জনশূন্য ও একদম নিরিবিলি)
মেয়েটি আজ একটু সাজুগুজো করতেছে তাই একটু দেরি হচ্ছে। ছেলেটি অপেক্ষায় বিভোর, হটাৎ এই নির্জন বাগানের এক কোনে মেয়েটির আগমন দেখে ছেলেটি মুখ ফিরিয়ে বসে আছে। অর্থাৎ খুব রাগ করেছে।
..
মেয়েটি হাজির, ছেলেটিকে চোখ ধরলো কিন্তু ছেলেটি কোন সাড়া দেয়নি এবং মনে মনে ভাবছে নদীকে আজ কাঁদিয়ে ছাড়বো। মেয়েটি রাগ ভাংগানোর জন্য ছেলেটিকে মেয়েটির দিকে টানছে আর বলতেছে নীল দেখ আমি আজ তোর ফেভারিট ড্রেসটি পড়ে সেজে এসেছি শুধু তোকে দেখাবো বলে, দেখ আমায় কেমন লাগছে। প্লিজ রাগ করিসনা আর আমিতো ইচ্ছে করে দেরি করিনি। প্লিজ আমার দিকে তাকানা নীল! তবুও ছেলেটি সাড়া দেয়নি।
..
তাই মেয়েটি একই বেঞ্চে ছেলেটির বিপরীত পাশে বসে বাচ্চাদের মতো কাঁদতে শুরু করলো ও আবার কান্নাকাটিতে অনেক পটু। ওর এমন কান্না দেখে ছেলেটির ও খুব কষ্ট লাগলো। তাই ছেলেটি উঠে গিয়ে মেয়েটির বরাবর নিচে বসে মেয়েটির চোখের পানি মুছে দিতে লাগলো, তাই মেয়েটি আরো কান্নায় ভেংগে পড়লো। প্লিজ কাদিস না তোর কান্না আমি সহ্য করতে পারিনা। প্লিজ স্টপ। যদি কান্না না থামাস আমি চলে যাবো, বলে সামনে পা বাড়াতেই মেয়েটি ছেলেটিকে টান দিয়ে কোলে বসিয়ে দিল।
..
আর বলল আচ্ছা তুই এমন কেনো বলতো? তুই জানিস না? তোর একটুখানি অবহেলা আমার কাছে পাহাড় সমান লাগে! অকে বাবু আর অবহেলা করবোনা। আর তুই এতো দেরি করলে কেন? আসলে একটু সাজতে গিয়ে দেরি হয়ে গেছে। অহ তোকে সত্যিই লাল ড্রেসে লাল-পরীর মতোই লাগছে। লাল-পরী কখনো দেখেছিস নাকি? হুম বাস্তবে দেখিনাই তবে কল্পনায় দেখেছি একেবারে তোর মতো। হইছে আর বলতে হবেনা বুঝতে পারছি তোমি এখন খুব আবেগে মাতাল হয়ে মাতলামি করতেছো।
..
এভাবে হাজারো ঝগড়াঝাঁটির গল্প করতে থাকে, হঠাৎ ছেলেটির খেয়াল হলো মেয়েটির কোলে বসে আছে। তাই সমন্বয় করার জন্য বলছে, কি অবাক কাণ্ড আমি তোর কোলে বসে আছি এতক্ষণ ধরে, এখন তুই আমার কোলে বস। আসলে ওরা যাই করে সমানসমান ভাগ নেই। এভাবেই ওরা দুজন দুজনার বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে ছিলো ক্লাস নাইন-টেনের দিনগুলোতে। কিন্তু আজ সময়ের আবর্তনে মেয়েটির মাধ্যমিক লেভেলের পড়াশুনা শেষ হওয়ায় মেয়েটি অন্য জায়গায় শিফট হয়ে যাই। এখন আর হয়না আগের মতো কম্বিনেশন। তবে ফোনে মাঝেমাঝে কথা হয়। একদিন রাত এগোরাটার সময় মুঠোফোনে কথা বলার পর চ্যাটিং হচ্ছিলো ছেলেটির সাথে। ছেলেটি যে লেখালিখি করে মেয়েটি আগে থেকেই জানতো তাই তখন মেয়েটি বলল নীল, অনেক বড় করে একটা টেক্সট কর যাতে পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে যেতে পারি। তাই নীল ভাবল অনেক বড় করে আর কি টেক্সট দিবো যাক একটা কবিতাই লিখে দেই, তারপর লিখলো;
"বন্ধু তোকে নিয়ে লেখা"
অনেকদিন পরে সেই বন্দুটির ফোন পেলাম,
কথা বলায় খুব ভালো ফীল করলাম।
কত যে স্মৃতির মাখা-মাখি ওর সাথে,
সেগুলো এখনো খুব বেশি মনে পড়ে।
সেই ছিল আমার প্রথম মেয়ে বন্ধু,
কথায় কথায় ডাকতো আমায় দুষ্টু।
এমনও দিন যাইতো,
আমি আড়াল হলে কাঁদতো।
ভালবাসি তারে আজও,
সেও বাসে তবে জানা নেই কত।
আমি কাঁদিয়েছি তাকে অনেক বার,
সে কাঁদাইনি আমাকে একবার।
সে যে বন্ধু আমার মনের মতো,
আর কেউ মিলেনি তার মতো।
বন্ধু তোর তুলনা হয়না,
তোকে ছাড়া প্রাণ বাঁচেনা.....@নীল

জয় হোক বন্ধুত্বের, বন্ধুর ভালোবাসার জয় হোক।
#হ্যাপি_ফ্রেন্ডশিপ_ডে_টু_ইউ_অল
ডেডিকেটেড টু বন্ধু তুই
#Rain
গত বছর লিখেছিলাম।
তারিখঃ ০৭/০৮/১৬ ইং

০ টি +০/-০