![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সেটা ছিল ২০১৮ সালের কথা। তখন আমি সাতক্ষীরার আদিবাসীদের নিয়ে কাজ করতাম রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল (আরআই)’র একটা প্রকল্পের ম্যানেজার হিসাবে। আমি বরাবরই বিশ্বাস করি, উন্নয়নের মূল প্রথিত রয়েছে শিক্ষায়, দানে নয়। তাই প্রত্যন্ত আদিবাসী গ্রামে যদি একটা লাইব্রেরি করা যায় তাহলে তাদের হয়তো কোন উপকারে লাগতেও পারে। এটা আদিবাসী ছেলেমেয়েদের পাঠাভ্যাস তৈরিতে ভূমিকা রাখবে। যদি প্রকল্পে লাইব্রেরি করার জন্য আলাদা করে কোন বাজেট বরাদ্দ ছিল না তবু প্রস্তাবনা দিতেই প্রতিষ্ঠান রাজি হয়ে গেলেন সেসময় রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর নজরুল ইসলাম ভাই। তিনি খুব সৌখিন এবং শিক্ষানুরাগী মানুষ। বললেন প্রস্তুতি নিন, আমরা করে ফেলি।
একটা বিশাল বুকলিস্ট করে বাংলা একাডেমি, পাঠক সমাবেশ, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র, বাতিঘর, আজিজ সুপার মার্কেটসহ বিভিন্ন বইয়ের দোকানে ছুটলাম সহকর্মীরা। প্রকল্পের টাকায় একগাদা বই, বুক শেলফ, কিছু চেয়ার আর পড়ার টেবিল কিনে পাঠিয়ে দিলাম সুন্দরবন আদিবাসী মুন্ডা সংস্থা (সামস) এর অফিসে। সামসের অফিস হলো সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের উত্তর কদমতলা গ্রামের গ্যারেজবাজারের পাশেই। সামসের এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর কৃষ্ণপদ মুন্ডা তার অফিসের একটা রুম আমাদের ছেড়ে দিলেন লাইব্রেরি করতে। আমাদের ঢাকা আর শ্যামনগরে ফিল্ড অফিসের সকল সহকর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে দাঁড় হয়ে গিয়েছিল একটা লাইব্রেরি।
আরআই ফিল্ড অফিসের দীপঙ্কর সাহা আর সামসের দীপঙ্কর বিশ্বাসও কাজ করেছিল বেশ। যে রুমটি সামস ছেড়ে দিয়েছিল লাইব্রেরির জন্য সেখানে মূলতঃ ওরা দু’জন অফিস করতো। লাইব্রেরি হওয়ার খুশিতে ওরা নিজেদের বসবার জায়গা ছেড়ে দিয়ে অন্য জায়গাতে নিজেদের অ্যাকোমোডেট করে নিয়েছিল।
আমার দু’টো কবিতার বই ”লাল স্বপ্ন” এবং ”আমি জাতিস্মর” আমি ডোনেট করেছিলাম লাইব্র্রেরিটির জন্য। আদিবাসী ছেলেমেয়েরা এসে বই পড়তো। ওরা ফিল্ড থেকে ছবি পাঠাতো বিভিন্ন সময়। দেখে মনটা ভরে যেত। আমি নিজে যখন ফিল্ড ভিজেটে যেতাম তখন সেখানে বসতাম। বইগুলো দেখতাম, কোনটা বের করে পড়তাম। একটা শিহরণ তৈরি হতো। প্রফুল্ল হয়ে যেতো মনটা।
জানিনা এখনো আছে কি না সেই লাইব্রেরি। চলছে কিনা সে খবরও পাই না আজকাল আর।
[দ্র: ছবিটি সামস অফিসের কর্মীদের নিকট আমার লেখা বই হস্তান্তর করার সময়ে তোলা। দিন তারিখ মনে নাই]
©somewhere in net ltd.