![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
উন্নত বিশ্বের জলবায়ু দূষণের ফলে আমাদের চারপাশের আবহাওয়ায় দ্রুত পরিবর্ত ঘটছে। যার ফলে সারা বিশ্বে বাড়ছে তাপমাত্রা।ষড়ঋতুর পালাক্রমে আমাদের দেশে এখন গ্রীষ্মকাল। গ্রীষ্মে অতিরিক্ত গরমে প্রতি বছরই বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়। অন্যান্য বারের তুলনায় এবছর সুর্যের তাপমাত্রা একটু বেশি। যার ফলে আবহাওয়া যেমন বিরুপ ধারন করছে তেমনি জনস্বাস্থ্য হচ্ছে বিপর্যস্ত । ফলে বাড়ছে স্বাস্থ্য সমস্যা। ঘামাচি, চুলকানি , পানিস্বল্পতা, হিটস্ট্রোক, স্কিন বার্ন, ডায়রিয়া এমনকি বিভিন্ন কিডনিজনিত সমস্যাতেও আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। গ্রীষ্মের গরমে এসব সমস্যা ও এসব সমস্যা সমাধানে আমাদের করনীয় :-
*****
গরমকালে একটি প্রধান সমস্যা হল শরীরে পানি স্বল্পতা। দেহের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা ঠিক রাখতে দেহ থেকে ঘাম আকারে বেরিয়ে আসে পানি। এর সাথে হারায় বিভিন্ন প্রয়োজনীয় উপাদান। ফলে দেহ হয় ক্লান্ত, সাথে যুক্ত হয় মাথা ব্যাথা, মাথা ঘোরানো। এছাড়া অজ্ঞান হয়ে যাওয়া সহ কিডনিতে সমস্যা দেখা দিতে পারে দেহে পানি স্বল্পতার কারনে।বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ থেকে শুরু করে যারা গরমের মাঝে বাহিরে কাজ করেন এবং প্রয়োজনীয় পানি পান করার সুযোগ পান না তাদের ক্ষেত্রে পানি স্বল্পতা বেশী দেখা দেয়।
গরমের আরেকটি মারাত্মক সমস্যা হল হিটস্ট্রোক। এর শুরুতে হিটক্র্যাম্প দেখা দেয়, যার ফলে শরীর ব্যথা, দূর্বলতা এবং প্রচন্ড পিপাসা লাগে। পরবর্তী সমস্যা হিট ইগজোসশনের ফলে শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত হয়ে যাওয়া, মাথা ব্যথা, রোগীর অসংলগ্ন আচরন দেখা দেয়। এর ফলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায় এবং শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রী এর বেশী বেড়ে গিয়ে হয় হিটস্ট্রোক। ঘাম বন্ধ হয়ে যাওয়া, নিঃশ্বাস দ্রুত হওয়া, ত্বক শুষ্ক ও লাল হয়ে যাওয়া, রক্তচাপ কমে যাওয়া মাথা ব্যথা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়।
তাছাড়া অতিরিক্ত গরমে ঘামাচি এবং চুলকানি দেখা দেয়। দেহে বেশী চুলকানির ফলে সেখানে ইনফেকশন হয়ে যায়।ফলে দেখা দেয় বিভিন্ন স্বাস্থ্য জনিত সমস্যা।
সুর্যের আলোতে বেশিক্ষণ থাকার ফলে ত্বক পুড়ে যেতে পারে। এতে ত্বক লাল এবং কালচে হয়ে যায়। সাথে চুলকান এবং ত্বক জ্বালাপুরা করে। বিশেষ করে যাদের ত্বক একটু ফরসা এবং নাজুক তাদের ক্ষেত্রে এটি বেশী দেখা যায়। সুর্যের অতি বেগুনি রশ্মির জন্য এমনটি হয়।
করণীয়ঃ
দেহের পানি স্বল্পতা দুর করতে পর্যাপ্ত পরিমানে নিরাপদ পানি পান করুন। নিরাপদ পানি বললাম কারন আজকাল রাস্তার পাশে ফুটপাতে বিভিন্ন পানীয় বিক্রি করা হয় যার বেশীর ভাগই স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। বেশির ভাগই অনিরাপদ এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রস্তুত ও পরিবেশন করা হয়। যাতে বিভিন্ন ধরনের রোগ জীবানু থাকে। এসব পানি পান করলে ডায়রিয়া, কলেরা, টাইফয়েড, হেপাটাইটিস সহ বিভিন্ন মারাত্মক রোগ হতে পারে। তাই নিরাপদ পানি পান করুণ। এক্ষেত্রে ডাবের পানি পান করতে পারেন। তাছাড়া বাহিরে বের হবার সময় বোতলে করে বাসা থেকে পানি নিয়ে বের হন। বাচ্চাদের স্কুলে যাবার বেলায় টিফিন বক্সের সাথে বোতলে করে নিরাপদ পানি স্কুল ব্যাগে দিয়ে দিন। তরমুজ, বেল, কাচা আমের জুস সহ লেবু পানীয় পান করতে পারেন। এতে করে আপনার দেহের পানি স্বল্পতা দুর হবে।
গরমে কেউ অজ্ঞান হলে কিংবা হিটস্ট্রোক করলে তার শরীরের তাপমাত্রা কমানোর চেষ্টা করুন। যথাসম্ভব কম তাপমাত্রার ছায়া যুক্ত স্থানে নিয়ে যান। শরীর ভেজা ঠান্ডা কাপর দিয়ে মুচে দিন। রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।
এছাড়া দৈনন্দিন চলাফেরার বেলায় সুর্যের তাপ এরিয়ে চলুন, ছাতা কিংবা বড় টুপি ব্যবহার করুন। রঙ্গিন জামাকাপর ব্যবহার কমিয়ে দিয়ে সাদা সুতি ঢিলেঢালা কাপর ব্যবহার করুন। যথাসম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে থাকার চেষ্টা করুন। স্কিন বার্ন থেকে বাচতে বাজারে যেসব ক্রিম কিংবা লোশন পাওয়া যায় তা ব্যবহার করতে পারেন। এক্ষেত্রে ব্যবহারের আগে ভাল করে যাচাই করেন নিন। শরীর যথাসম্ভব ঢেকে রাখুন।
এই গরমে স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে জীবনযাপন করুন। সুস্থ থাকুন-ভালো থাকুন।
©somewhere in net ltd.