নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পেশা ব্যবসা ও চাকরি। জ্ঞানভিত্তিক জীবনদর্শনে বিশ্বাসী। নির্জনে ও নীরবে প্রকৃতির নৈসর্গিক রূপ উপভোগ করতে ভালোবাসি। বই পড়তে, ভ্রমণ করতে, একলা চলতে এবং জটিল চরিত্রের মানুষ থেকে দূরে থাকতে পছন্দ করি। –এম. জেড. ফারুক

এমজেডএফ

কথায় নয় কাজে বিশ্বাসী

এমজেডএফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

এশিয়ার ‘উদীয়মান বাঘ’ বাংলাদেশ - পর্ব ২ : বৈদেশিক মুদ্রার মজুত ১৮ ডলার থেকে বেড়ে ৪৮ বিলিয়ন

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:০৫


দু'বার নিজেদের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ — একবার পাকিস্তানের অংশ পূর্ব পাকিস্তান হিসেবে ১৯৪৭ সালে, এবং অন্যবার ১৯৭১ সালে, বর্তমান স্বাধীন বাংলাদেশ হিসেবে। দুবারই এ ভূখণ্ডটি অর্থনৈতিকভাবে ছিল পশ্চাৎপদ। প্রথম স্বাধীনতার প্রাক্কালে ধর্মীয় দাঙ্গা-হাঙ্গামায় বিপর্যস্ত পূর্ব বাংলার মুসলমানেরা হিন্দু অধ্যুষিত ভারতের দিল্লী ও কলকাতা কেন্দ্রিক প্রশাসনের পরিবর্তে ধর্মীয় বিশ্বাসকে প্রাধান্য দিয়ে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য পাকিস্তানকে গ্রহণ করেছিল। ধর্মের লেবাস পড়ে ইসলামের বুলি আউরিয়ে তখনকার পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকেরা পূর্ব বাংলাকে শোষণ করে তাদের নিজেদের প্রদেশকে সমৃদ্ধ করতে থাকে। স্বাধীনতার মাত্র ১৮ বছর পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে 'আমাদের বাঁচার দাবি: ছয় দফা' ঘোষণার মাধ্যমে পূর্ব বাংলার আপামর জনসাধারণ প্রথম জানতে ও বুঝতে পারে কীভাবে তাদেরকে শোষণ ও বঞ্চিত করা হয়েছে। এরপর "সোনার বাংলা শশ্মান কেন, আইয়ুব শাহী জবাব চাই" স্লোগান দিয়ে দ্বিতীয় বার স্বাধীনতার জন্য এদেশের মানুষ আন্দোলন শুরু করে। ১৯৭১ সালের নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বিশ্বের মানচিত্রে লাল-সবুজ পতাকা নিয়ে আত্মপ্রকাশ করে স্বাধীন বাংলাদেশ।

পাকিস্তান আমলের ২৩ বছরের ইতিহাসে বিশ্ববাসী পূর্ব পাকিস্তানের শুধু নেতিবাচক খবর দেখে এসেছে। যেমন বন্যা , খরা, সাইক্লোন, মহামারী, অভাব-দুর্যোগ ইত্যাদি। জনসংখ্যার ভারে নুয়ে পড়া এই ছোট দেশটির কোনো প্রাকৃতিক সম্পদ নেই, শুধু আছে অনবরত প্রাকৃতিক বিপর্যয় আর দারিদ্রতার অনমন। তাই সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত এ দেশটির ভবিষ্যৎ অস্তিত্ব নিয়ে সন্দেহের অন্ত ছিল না অনেকের। সংশয়বাদীদের কেউ কেউ এমনও পূর্বাভাস দিয়েছিলেন, এ দেশটি বেশিদিন টিকবে না। বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদরা সদ্যপ্রসূত বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে শুধু হতাশার বাণী শুনিয়েছিলেন। বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশ্ব ব্যাংকের প্রথম রিপোর্ট ছিল খুবই নেতিবাচক। বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধি জাস্ট ফালেন এবং তার এক সহযোগী লিখেছিলেন, "বাংলাদেশের জিওগ্রাফি ঠিক আছে, কিন্তু অর্থনীতি ঠিক নেই। এই দেশের অর্থনীতি টেকসই করতে দুশো বছর সময় লাগবে।" বিশ্ব ব্যাংকের সেই বহুল উদ্ধৃত রিপোর্টে আরও বলা হয়েছিল, বাংলাদেশের যদি উন্নয়ন সম্ভব হয়, আফ্রিকা-সহ বিশ্বের যে কোন দেশেরই উন্নয়ন সম্ভব।

"বাংলাদেশ শুরু করেছিল মাত্র ১৮ ডলার দিয়ে। পাকিস্তানীরা চলে যাওয়ার আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঢাকা অফিসে রেখে গিয়েছিল ১৮ ডলার।" -বিবিসির সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ডঃ মোহাম্মদ ফরাসউদ্দীন

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বৈদেশিক সাহায্য/ঋণের ব্যর্থ প্রচেষ্টা


বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরেই বাংলাদেশের প্রথম পরিকল্পনা কমিশন গঠন করেন। এই কমিশনের সদস্য ছিলেন সেসময়ের বাংলাদেশের খ্যাতিমান চার তরুণ অর্থনীতিবিদ: অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, রেহমান সোবহান, আনিসুর রহমান এবং মোশাররফ হোসেন। "মুক্তিযুদ্ধে আমরা জিতেছি। এখন দ্বিতীয় যুদ্ধ: পুনর্বাসন ও পুর্নগঠন, অর্থনীতি আবার চালু করা, মানুষের অন্নের সংস্থান করা।" -লক্ষ্য নিয়ে কাজে নামলেন পরিকল্পনা কমিশন।

এরকম এক সময়ে একবার তৎকালীন অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ এবং পরিকল্পনা কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুল ইসলাম যুক্তরাষ্ট্রে গেলেন খাদ্য সাহায্য চাইতে। সেই অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে নুরুল ইসলাম বলেন, "যখন আমরা ওয়াশিংটনে গেলাম, তখন ওরা আমাদের বিরাট লেকচার দিল। বললো, তোমরা পাকিস্তানের সঙ্গে মিটমাট করে নাও। তাজউদ্দিন সাহেব তো রীতিমত শকড। আমরা গেছি সাহায্য চাইতে, ওরা বলে পাকিস্তানের সঙ্গে মিটমাট করে নাও।"
নেতিবাচক রিপোর্ট দেওয়া স্বত্বেও এবার উনারা বিশ্বব্যাংকের কাছে গেলেন। বিশ্বব্যাংক তখন এমন কিছু বিষয় তুলছিল, যা বাংলাদেশকে ভীষণ ক্ষুব্ধ করে তুলেছিল। এর মধ্যে একটি ছিল, পাকিস্তানকে দেয়া বিশ্বব্যাংকের ঋণের দায়ভাগ নেয়ার প্রশ্ন। অধ্যাপক ইসলাম বলেন, "‌ওরা বলছিল, পাকিস্তানকে যে ঋণ দেয়া হয়েছে, সেটার দায়ভাগ আমাদেরও নিতে হবে। আমরা বললাম, আমরা কেন নেব, ওরা তো আমাদের সম্পদ পশ্চিম পাকিস্তানে পাচার করেছে। তখন ওরা বললো, সেটা তোমাদের ইন্টারন্যাল ব্যাপার। আমাদের টাকা ফেরত দিতে হবে।" শেষ পর্যন্ত ফয়সালা হয়েছিল, বাংলাদেশ কেবল সেই ঋণের অংশই পরিশোধ করবে, যেসব প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে গেছে। অর্থাৎ বাংলাদেশ কোনো দেশ বা সংস্থা থেকে বৈদেশিক ঋণ বা সাহায্য তো পায়নি, উল্টো পাকিস্তান আমলের বৈদেশিক ঋণের কিছু দেনা মাথায় নিয়ে ফেরত আসতে হলো। এভাবেই শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের প্রথম বৈদেশিক ঋণ ও সাহায্য পাওয়ার চেষ্টা।


যাই-হোক, ১৯৭২ থেকে ২০২১ এই দীর্ঘ ৫০ বছরে অনেক বাঁধা-বিপত্তি, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, রাজনৈতিক পরিবর্তন, দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের মত প্রতিকুলতা অতিক্রম করে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত ১৮ ডলার থেকে ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। এই অর্জনের পেছনে সরকার প্রধান থেকে শুরু করে পরিকল্পনাবিদ, শিল্পদ্যোক্তা, গার্মেন্টস কর্মী, প্রবাসী বাংলাদেশি এবং দেশের কৃষক-শ্রমিক অনেকের অবদান রয়েছে। ১৯৭২ থেকে ২০২১ সালের বৈদেশিক মুদ্রার মজুতের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়:

■ বৈদেশিক মুদ্রার মজুত প্রথমবারের মতো মিলিয়ন অতিক্রম করে বিলিয়নে উঠে ১৯৮৮ সালে।
■ মজুত বেড়ে ৩ বিলিয়নে হয় ১৯৯৪ সালে, ৫ বিলিয়নে হয় ২০০৭ সালে।
■ মজুত ২০০৮ সালে ছিল ৬ বিলিয়ন যা দ্রুতগতিতে বেড়ে ২০২১ সালে ৪৮ বিলিয়নে উপনীত হয়েছে।
■ রিজার্ভ ১ বিলিয়নে আসতে সময় লেগেছে, ১৮ বছর, ১ বিলিয়ন থেকে ৫ বিলিয়নে যেতে লেগেছে আরো ১৯ বছর।
■ ২০০৮ সালের ৬ বিলিয়ন থেকে ২০২১ সালে ৪৮ বিলিয়ন হতে সময় লেগেছে মাত্র ১৬ বছর।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি (২০০৮ - ২০২১) এই ষোল বছরে অনেকটা আগের মতই ছিল। অর্থাৎ হরতাল-অবরোধ, রাজনৈতিক দাঙ্গা-হাঙ্গামা, শ্রমিক অসন্তোষ, বন্যা-সাইক্লোন তো ছিলই, নতুনভাবে যোগ হয়েছিল পেট্রোল বোমা, আগুন সন্ত্রাস ও করোনা মহামারী। তারপরেও অপ্রতিরোধ্য গতিতে রিজার্ভ বাড়ার উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হচ্ছে:
♦ ক্ষমতায় একই সরকারের ধারাবাহিকতা,
♦ দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়ন করতে পারা,
♦ সার্বিক অবকাঠামোর উন্নয়ন,
♦ বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি,
♦ ব্যবসাবান্ধব পলিসি,
♦ গার্মেন্টস ও রেমিট্যান্সের অনুকূলে সরকারি সহায়তা
♦ রেমিট্যান্সে প্রণোদনা

কয়েকটি দেশের সাথে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের তুলনামূলক চিত্র ২০০০ - ২০২০ সাল




রিজার্ভে মালেয়শিয়া ও ভিয়েতনাম বাংলাদেশ থেকে এগিয়ে থাকলেও বিগত ১২ বছরে মজুত বৃদ্ধির হার বাংলাদেশের বেশি। এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী ৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ মালেয়শিয়ার সমপর্যায়ে চলে আসবে।

এক নজরে বৈদেশিক মুদ্রার মজুতে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশ ও দক্ষিণএশিয়ার দেশসমূহ


বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র অনুযায়ী, দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দিয়ে। স্বর্ণ, বৈদেশিক মুদ্রা ও ডলার এ তিন ক্যাটেগরিতে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রাখা হয় দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন ব্যাংকে। এই অর্থ বিভিন্ন দেশের বন্ড ও বিলে বিনিয়োগ করা হয়। প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা কেনাবেচাও করে বাংলাদেশ।

২০২১ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান বলেন, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। প্রতি ডলার ৮৫ টাকা হিসেবে বৈদেশিক মুদ্রায় রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় চার লাখ আট হাজার ৩৬৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটের অর্ধেকের বেশি। চলতি বছরে বাজেটের আকার ৬ লাখ ৩ হাজার কোটি টাকা। করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে লকডাউনসহ নিয়ন্ত্রণমুলক নানা বিধিনিষেধে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ব্যাহত হলেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ চলতি অর্থবছরে ৫২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রক্ষেপণ করেছে।
বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান দুটি খাত হচ্ছে তৈরি পোশাক ও প্রবাসী জনশক্তি। দেশের রপ্তানি আয়ের ৮০ ভাগের বেশি আসে তৈরি পোশাক থেকে। আর রেমিটেন্স দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। দেশের জিডিপিতে ১২ শতাংশের মতো অবদান রাখে বিদেশে থাকা ১ কোটিরও বেশি বাংলাদেশির পাঠানো অর্থ। গার্মেন্টস ও রেমিট্যান্স খাতেে ব্যাপারে অন্য পোস্টে বিস্তারিত আলাপ করবো।


সাম্প্রতিককালে শ্রীলংকার বৈদেশিক মুদ্রার নাজুক পরিস্থিতি দেখে অনেকেই বাংলাদেশকে ভয় দেখাচ্ছে। এ দেশের কিছু জ্ঞানপাপী তথ্য-উপাত্ত যাচাই না করে আরো একধাপ এগিয়ে গিয়ে বলছেন, সেদিন বেশি দেরি নেই গার্মেন্টস ও রেমিট্যান্স খাতে ধস নেমে বাংলাদেশ বুগান্ডা হয়ে যাবে! তবে আপাতত শুধু এটুকুই বলে রাখি, বাংলাদেশের গার্মেন্ট শিল্পে সবচেয়ে বড় এবং মর্মান্তিক ট্র্যাজেডি সাভারের রানা প্লাজা ধসে পড়ার পরও অনেকে বলেছিল গার্মেন্টস ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। বাংলাদেশের পোশাক শিল্প দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন শর্ত পূরণ করে এবং অনেক বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে এখন বিশ্ব বাজারে প্রতিযোগীতা করে ঠিকে থাকার শক্তি ও সামর্থ অর্জন করেছে। সৌদি আরব, কাতার ও কুয়েত বিভিন্ন অজুহাতে টানা কয়েক বছর বাংলাদেশ থেকে কোনো লোক নেয়নি। তাতে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স ধসে পড়েনি। সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলোকে তেলের বিকল্প খাতে বিনিয়োগ করতে হবে। কারণ পেট্রোডলারের জমজমাট ব্যবসা আর বেশিদিন থাকবে না। সুতরাং সেখানে সস্তা শ্রমিকের চাহিদা আরো অনেক বছর থাকবে। তাছাড়া জনশক্তি রপ্তানির দেশের তালিকায় নতুন যুক্ত হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইউরোপের কিছু দেশ।

আন্তর্জাতিক সংঘাত, যুদ্ধবিগ্রহ বা মহামারীর মতো কিছু ঘটলে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ে সাময়িক বিপর্যয় হতে পারে। তবে দেশ বর্তমানের সঠিক নেতৃত্ব ও দূরদর্শী পরিকল্পনায় চলমান থাকলে আগামী ১০ থেকে ১৫ বছরে আমাদের গার্মেন্টস ও রেমিটেন্সে ধস নামার কোনো সম্ভাবনা নেই। বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং অদূর ভবিষ্যতে নিজেদের প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক্স দ্রব্য ও গাড়ি দেশীয় কোম্পানীগুলো প্রস্তুত করবে। এতে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে। তাছাড়া বাংলাদেশের একাধিক নতুন ব্যবসায়িক সেক্টর (ইস্পাত, জাহাজ নির্মাণ, ঔষধ শিল্প) শিশুকাল পেরিয়ে এখন কৈশোরে পদার্পন করেছে। আগামী দশ বছরের মধ্যে এগুলো পূর্ণ যৌবন লাভ করে গার্মেন্টস ও রেমিট্যান্সের বিকল্প সৈনিক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করবে। দেশের কিছু দুর্নীতিবাজ অর্থপাচারকারীর কালো থাবায় কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হলেও এগিয়ে যাবে প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত।

তথ্য ও ছবিসূত্র:
মাত্র ১৮ ডলার দিয়ে যেভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতির যাত্রা শুরু - বিবিসি, ১৭ ডিসেম্বর ২০২১
বিশ্ব ব্যাংক, আই এম এফ
প্রথম আলো, ইত্তেফাক, বণিকবার্তা
ইন্টারনেট

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৫:৫৮

প্রতিদিন বাংলা বলেছেন: বৈদেশিক মুদ্রার স্বাস্থবান রিজার্ভ(৪০ বিলিয়ন ডলার) আমাদের জন্য দুর্ভাবনার।
আরেকটি হিসাব -
বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ধরি ৩০০০ ডলার। অর্থাৎ মধ্য আয়ের দেশ।
আসলেই কি তাই ? তা নয়
কারণ - ২০ কোটি জনসংখ্যার দেশে ধরে নেই ৬ কোটি লোক কর্মজীবী।
এই কর্মজীবীরদের মধ্যে ১ কোটি লোক প্রবাসী।
এখানে ফাঁকিটা হচ্ছে -
৬ -১ =৫ কোটি কর্মজীবীদের মধ্যে
২০ -৩০ লক্ষ জনের আয় গড়ে ১৫ -২০ হাজার ডলার
২ -১০ লক্ষ জনের আয় গড়ে ৫০ হাজার ডলার
প্রায় ১ লক্ষ জনের আয় গড়ে লক্ষ ডলার এর বেশি
অর্থাৎ ৬ কোটি কর্মজীবীদের গড় আয় ২ হাজার ডলারের আশেপাশে।
অর্থাৎ আমরা নিম্ন আয়ের দেশ।
ঋণ নিয়ে উন্নয়নে যে ব্যায় করছে সরকার তাতে মনে হয় - ""এত রিজার্ভ মানে অতিরিক্ত টাকা ,যা যেকোনো সময় ছাপা খানা থেকেই জোগাড় করা সম্ভব "" আসলে - রিজার্ভ যে বাড়ছে, তা পুরোপুরি শক্তিশালী অর্থনীতির কারণে নয় রিজার্ভ যে বাড়ছে, তা রেমিটেন্সের কারণে। কারণ আমরা জানি আমাদের আমদানি ব্যায় মসবসময়েই রপ্তানি বায়ের চেয়ে বেশি(পোশাক খাতের আয় সহ )

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:৪৭

এমজেডএফ বলেছেন: আপনার নিজস্ব ধারণার ওপর ভিত্তি করে দীর্ঘ মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

দেশের কতজন লোক কর্মজীবী ও কতজন প্রবাসী এবং তাদের আয় কত ইত্যাদি সঠিক পরিসংখ্যান ছাড়া নিজস্ব ধ্যান-ধারণায় হিসাব করলে একেক জনের হিসাব একেক রকম হবে। "মাথাপিছু আয়" বলতে শুধু মাসিক আর্থিক আয়কে বোঝায় না, এ ব্যাপারে অর্থনীতিবিদরা হিসাবটা একটু অন্যভাবে করে।
"শক্তিশালী অর্থনীতি" বলতে অনেক কিছুর সমষ্ঠিকে বুঝায় যার মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও অন্তর্ভুক্ত। রিজার্ভ বাড়ার অনেকগুলো কারণের মধ্যে রেমিট্যান্স অন্যতম - সঠিক।

"অতিরিক্ত টাকা ,যা যেকোনো সময় ছাপা খানা থেকেই জোগাড় করা সম্ভব।" দেশীয় মুদ্রা ছাপানো সম্ভব হলেও দেশে বৈদেশিক মুদ্রা ছাপানো কখনো সম্ভব নয়।
"বৈদেশিক মুদ্রার স্বাস্থবান রিজার্ভ(৪০ বিলিয়ন ডলার) আমাদের জন্য দুর্ভাবনার।" -ভুল ধারণা! শ্রীলংকার বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির খবর নিলে ব্যাপারটি বুঝতে পারবেন।

২| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:১৯

প্রতিদিন বাংলা বলেছেন: বাক্য বিকৃত করা ঠিক নয়
আমি বলেছি -
ঋণ নিয়ে উন্নয়নে যে ব্যায় করছে সরকার তাতে মনে হয় -
""এত রিজার্ভ মানে অতিরিক্ত টাকা ,যা যেকোনো সময় ছাপা খানা থেকেই জোগাড় করা সম্ভব "" আসলে - রিজার্ভ যে বাড়ছে, তা পুরোপুরি শক্তিশালী অর্থনীতির কারণে নয় রিজার্ভ যে বাড়ছে, তা রেমিটেন্সের কারণে।
আপনি বললেন - (আমি বলেছি -)
"অতিরিক্ত টাকা ,যা যেকোনো সময় ছাপা খানা থেকেই জোগাড় করা সম্ভব।" দেশীয় মুদ্রা ছাপানো সম্ভব হলেও দেশে বৈদেশিক মুদ্রা ছাপানো কখনো সম্ভব নয়।
অথনীতিবিদরা বাজার করে না ,বাজার করায় (তারা পথ আবিষ্কার করে না তারা মুখস্থ পথ বলে ।
আপনি যা বলেছেন সবই স্বীকৃত
আমি আমার ধারণা বলেছি

৩| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:১৩

কবিতা ক্থ্য বলেছেন: দেশের মানুষ এখনো দারিদ্রের কারনে মারা যায়।
৪৮ বিলিয়ন ডলার দিয়া কি হবে?

ভাই কি হিসাবে বাংলাদেশ ব্যংকের হারানো টাকা ধরসেন?

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:৫৪

এমজেডএফ বলেছেন: বাংলাদেশে এখন দারিদ্রে লোক মারা যায় না। বাংলাদেশে অনেক জায়গায় টাকা দিয়েও কাজের লোক পাওয়া যায় না। আবার কিছু মানুষ ঘুরেফিরে দারিদ্রের চক্রেই আবদ্ধ। এর কারণ খুঁজলে দেখা যাবে রিজার্ভ ১০০ বিলিয়ন হলেও এরা দরিদ্র থাকবে। বিশ্বের সবচেয়ে অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্রে হাজার হাজার মানুষ ভিক্ষা করে, রাস্তার ফুটপাতে ঘুমায়। এর জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এরজন্য ওরা নিজেরাই দায়ী।

৪| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:০৬

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
গুরুত্বপুর্ণ তথ্য সম্বলিত একটি পরিশ্রমী পোষ্ট ।
বাংলাদেশের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা রইল ।

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:৩৯

এমজেডএফ বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ এম এ আলী ভাই।
ব্লগে এখন প্রায় সব হালকা গদবাঁধা পিঠচাপড়াচাপড়ির পোস্ট! এ ছাড়া ধর্ম নিয়ে মান্ধাতার আমলের একই ক্যাচাল আর প্যাঁচাল। পড়ার ও জানার মতো লেখা খুব কম আসে।

৫| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১২:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: তাজউদ্দীন আহমেদ লোকটা ভালো ছিলো। বুদ্ধিমান ছিলো।

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৩:১০

এমজেডএফ বলেছেন: সঠিক মন্তব্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.