![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এমএবি সুজন। এমএসএস (পাস) ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার গ্রাফিক্স ডিজাইন। তথ্য সংগ্রহ ও রচনা: ক্রাইম পেট্রোল (এটিএন বাংলা), ক্রাইম ফিকশন (জিটিভি), সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টারস সোসাইটি (ঢাকা মহানগর উত্তর)
মাহমুদুল হাসান/এমএবি সুজন : দৈনিক প্রথম ভোর, দৈনিক রূপবানী ও দৈনিক আজকের আলোকিত সকাল পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে মুখোশ খুলে যায় সিআই জিহাদুলের। তার সকল অন্যায়, অনিয়ম ও ব্যাপক দূর্ণীতির খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে রাগে, ক্ষোভে দূর্ণীতির পক্ষে জিহাদী সিআই জিহাদুল প্রকাশিত সংবাদ ও প্রতিবেদকদের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে জিহাদ ঘোষণা করেছেন বলে জানা যায় কয়েকজন সাংবাদিকদের মাধ্যমে। ১৯ জুন সকাল ১২টা এবং ২১ জুন সন্ধ্যা ৭টার সময় সাংবাদিক শেখ রফিক উদ্দিন ও টাইগার ফারুক ওরফে কবিরাজ ফারুক ওরফে ওমর ফারুক বলেন, "সিআই জিহাদুল বিমানবন্দর রেল ষ্টেশনে বিশেষ গোয়েন্দা বাহিনী নিয়োগ দিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশকারী সাংবাদিকদের তারা দিনরাত হন্নে হয়ে খুঁজছেন, দেখামাত্র গ্রেফতার করে মামলা দিয়ে চালান করে শায়েস্তা করবেন তিনি। তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশকারী সাংবাদিকরা ভুয়া সাংবাদিক। মাননীয় রেলমন্ত্রী তাকে বিশেষ ক্ষমতা দিয়েছেন মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের শায়েস্তা করার।" তারা আরও বলেন, "রেলের ডিআইজি তাকে স্বারকলিপিতে ঢাকা বিমানবন্দর রেল ষ্টেশন এলাকায় সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষেধ এবং অনধিকার প্রবেশ করলে প্রয়োজনে তাদের গ্রেফতার করে কমলাপুর থানায় প্রেরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তার বাড়ী গোপালগঞ্জের মোকসেদপুরের কাশিয়ানীতে তিনি ঝেড়ে কাঁশলে তার দূর্ণীতির বিরুদ্ধে অবস্থানকারী সাংবাদিকরা পায়ের তলায় মাটি পাবেনা বলে শাসায়"। সিআই জিহাদুলের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি নিম্নরূপে:
বাংলাদেশ রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) চীফ কমানডেন্ট ও কমানডেন্ট জহিরের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে কমলাপুরে নিয়োজিত সিআই সহিদ এর যোগসাজশে কালো টাকার পাহাড় গড়ছে বলে অভিযোগ উঠেছে আরএনবি বিমানবন্দর সার্কেল চীফ ইন্সপেক্টর (সিআই) মোঃ জিহাদুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
আরএনবি বিমানবন্দর সার্কেল সিআই জিহাদুল
সরেজমিনে ঢাকা বিমানবন্দর, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, তেজগাঁও ও টঙ্গী রেল ষ্টেশনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তেজগাঁও রেল ষ্টেশনের পিছনে তার নামে বরাদ্ধকৃত কোয়ার্টার ও তার আশপাশের বিশাল ভুমি দখলে নিয়ে তিনি অবৈধ স্থাপনা তৈরী করেছেন। এসব স্থাপনায় বেসরকারী পরিবারকে ভাড়া দিয়ে প্রতিমাসে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন এই কর্মকর্তা।
জানাগেছে, অন্তত বিশটিরও বেশী পরিবারকে ভাড়া দিয়ে তিনি প্রতিমাসে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন এই ভাড়া ব্যবসা করে। এসব কালোটাকার অবৈধ বিত্তবৈভব নিয়ে এক বিলাসী জীবনযাপন করছে এই কর্মকর্তা। রেলওয়ের বিভিন্ন বিভাগেও তিনি প্রভাব তৈরী করেছেন, যার জন্যে তিনি গনমাধ্যম কর্মীদেরও পাত্তা দেননা কিংবা যোগাযোগের চেষ্টা করলে এড়িয়ে যান বিভিন্ন কৌশলে।
অনুসন্ধানে আরো জানাগেছে, রেলওয়ের এসব জায়গায় নির্মিত তার এসব বাড়ীতে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানিসংযোগও অবৈধ। ভাড়াটিয়াদের সাথে কথা বলে এসবের সত্যতা পাওয়া গেছে। রেলওয়ের সম্পত্তি দখলে রেখে প্রতিমাসে হাজার হাজার টাকার গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ বিল হাতিয়ে নিচ্ছে সিআই জিহাদুল।
ঢাকা বিমানবন্দর রেল ষ্টেশন সূত্র জানায়, সিআই জিহাদুল এর ঈশারায় তার একান্ত অনুগত ও বাধ্যগত সিপাহীরা টিকেট ক্রয় করে যাত্রীদের কাছে চড়াদামে বিক্রি করে রুটিন মাফিক টিকেট কালোবাজারী করছে, এবং তার রয়েছে টিকিট কালোবাজারির এক বিশাল চক্র। তার সিপাহীরা ট্রেন থেকে নেমে আসা যাত্রীদের টিকেট চেকিং এর নামে নগদ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলেও অনুসন্ধানে জানাগেছে। টার্গেটকৃত যাত্রীরা টাকা না দিলে জোড়পূর্বক ধরে নিয়ে একরকম বিবস্ত্র করে নাস্তানাবুদ করা হয়। এমন চিত্র অহরহ চোখে পড়ে। প্রতিবাদ করতে গেলে সিআই জিহাদুল এর লালিত বাহিনীর আক্রোশে পড়তে হয়।
গোপনসূত্রে জানাযায়, বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ী, হরেক মালের হকার, পকেটমার ও ছিনতাইকারীরা সিআই জিহাদুল এর সাথে গোপনে যোগাযোগ রেখেই এসব দুস্কৃতিকারীরা তাদের এই অপকর্ম চালিয়ে যায় নির্দিধায়। এসব অপরাধীদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা অগ্রিম নিয়ে ষ্টেশনে এসব অপকর্মের অঘোষিত লাইসেন্স দেয়া হয়। এসব খাত থেকে সিআই জিহাদুল এর পক্ষে টাকা সংগ্রহ করে তার আস্থাভাজন করিম। কুলি সর্দার আমান তার মাদক ব্যবসার পার্টনার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিআই জিহাদুল এর কয়েকজন ঘনিষ্টজনের কাছ থেকে জানা যায়, বুকিং বহির্ভূত ট্রেনের বগিতে আসা মালামাল লোকসহ তার নির্দেশেই আটক করা হয়। দাবীকৃত টাকা নগদ কিংবা বিকাশে না দিলে কিংবা টাকা আসতে দেড়ি হলে অনেক সময় ঐসব মালামাল ষ্টেশন থেকে হাওয়া হয়ে যায়।
অপরদিকে, ঢাকা বিমানবন্দর রেল ষ্টেশনের মোট ৩টি পাবলিক টয়লেট থেকে মাসিক ১০ হাজার করে টয়লেট বাবদ মোট ৩০ হাজার টাকার ব্যবসা করেন সিআই জিহাদুল যা টয়লেটের রক্ষণাবেক্ষণকারীদের কাছ থেকে জানা যায়। টয়লেট ব্যবহারে রেলওয়ে কতৃপক্ষের ২ টাকা মূল্য নির্ধারিত থাকলেও জনপ্রতি ১০ টাকা করে ছিনিয়ে নেয় সিআই জিহাদুল এর টয়লেট বাহিনী।
এছাড়াও ঢাকা বিমানবন্দর এলাকা এবং রেল ষ্টেশন এলাকার হাটবাজার ঘুরে খোঁজ নিয়ে জানাযায়, চা, ঝালমুড়ি, ফলমূল, সবজি ও মাছের প্রতিটি দোকানের জন্য গড়ে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে জামানত নেয় এই সিআই জিহাদুল। প্রতিদিন ভাড়া আদায় করে দোকান প্রতি ৩ থেকে ৪ শত টাকা। আবার খাবার হোটেলের অগ্রিম সেলামী বাড়িয়ে বর্তমানে ৫০ হাজার টাকা এবং দৈনিক ৮ শত টাকা ভাড়া ধার্য করেছে সিআই জিহাদুল। হাটবাজার থেকে টাকা আদায়ের দায়িত্বে রয়েছেন মনির নামে এক লাইনম্যান। সিআই জিহাদুল এর ধার্যকৃত টাকা দিতে অস্বীকার কিংবা গড়িমসি করলে ধরে নিয়ে ইচছামত মারধর করে জরিমানা আদায় করে। কেউ কেউ বলেন, সিআই জিহাদুল নিজেকে গোপালগঞ্জের গোপালী বাঘ, কখনো শেখ সেলিমের আত্মীয় আবার কোন কোন সময় স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর কাছের লোক বলে সবাইকে শাসায়। ষ্টেশন সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাযায়, বিমানবন্দর, ক্যান্টনমেন্ট ও টঙ্গীতে নিয়োজিত মোট ৫১ জন আরএনবি সদস্য সিআই জিহাদুল এর অধীনে কাজ করে। গড়ে প্রায় সকলেই তার নির্যাতন, নিপীড়নের শিকার হন। সিআই জিহাদুল সান্ধ্যকালীন ডিউটি দেয়া বাবদ প্রত্যেকের বেতন থেকে প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা করে কেটে নেয় বলে গোপন অভিযোগ আছে যা ডিউটি বন্টন রোস্টারে উল্লেখ থাকে। কাগজে কলমে ৫১ জন থাকলেও নিয়মিত ডিউটি করে মাত্র ৩১ জন বাকী ২০ জন পর্যায়ক্রমে নিজ নিজ বাসা বাড়ীতে অথবা অন্যত্র চাকুরী বা ব্যবসা বাণিজ্য কিংবা গ্রামে গিয়ে হালচাষ দেখে। ঐ ২০ জনের প্রত্যেকের বেতন থেকে সিআই জিহাদুল প্রতিমাসে জোড়পূর্বক ৬ হাজার টাকা করে কেটে রাখে । এছাড়া অন্যায়ভাবে রুট কাটিং এর ফেরে দোষীদের নামে ডায়েরী করে ও জনপ্রতি জোড়পূর্বক ৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায়ের পকেট বাণিজ্য আছে। কেউ আপত্তি কিংবা প্রতিবাদ করতে চাইলে চীফ কমানডেন্টের ভয় দেখিয়ে তাদের দমন করে অথবা কমানডেন্ট জহির এবং প্রয়োজনে চীফ কমানডেন্টকে বলে তাদের বদলী করে দেয়ার অনেক অভিযোগ পাওয়া গেছে। সিআই জিহাদুলের রোষানলে পড়ে মোস্তফা মল্লিক, বেলায়েত ও ফজলুসহ আরও বেশ কয়েকজন এবং ইতিমধ্যেই অন্যায়ভাবে তাদের শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে।
সিআই জিহাদুল তার অধিনস্তদের বলেন, “তোমরা টাকা না দিলে আমি চীফ কমানডেন্ট আর কমানডেন্ট জহিরের চাহিদা পূরণ করবো কিভাবে ? আমি তোমাদের উপর দয়া করলেও স্যারেরাতো আমার উপর রহম করেনা। আমিতো একলা খাইনা, আমার উপরে টেবিল বুঝে টাকা পাঠিয়ে দেই” ইত্যাদি। ইতিপূর্বে র্যাবের হাতে ৩০০ বোতল ফেন্সিডিলসহ গ্রেফতার হওয়া মাদক ব্যবসায়ী দাগী আবুলকে টঙ্গী থেকে তুলে এনে সিআই জিহাদুল তার ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব দেন। নায়েক রাসেল তার সকল কুকর্মের আরেক সহযোগী স্বাক্ষী। বিমানবন্দর রেল স্টেশনের পশ্চিম পাশের পাবলিক টয়লেট সংলগ্ন রেলওয়ের জমির উপর গড়ে ওঠা সকল অবৈধ রকমারী দোকান, খাবার হোটেল ও গ্যারেজসমূহ থেকে প্রতিমাসে ১৮ হাজার টাকা আদায় করে দেয় ঐ নায়েক রাসেল যা পাবলিক টয়লেটের হিজড়া তাজু অকপটে স্বীকার করে।
বিভিন্ন চ্যানেল ও পত্রিকার সাংবাদিকদের সাথে কথা বলে জানাযায়, সিআই জিহাদুল এর দূর্নীতি নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করলে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা, হামলা ও গ্রেফতারের ভয়ভীতি দেখায়। তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশিত হওয়া সংবাদপত্রকে সিআই জিহাদুল টিস্যু বলে তিরস্কার করে থাকেন। তার শরীর বাইপাস সার্জারি করা, এবং রেলওয়ের বিধান মতে তার এই কর্মস্থলে কাজ করার কোন শারীরিক যোগ্যতা নেই। তিনি খালি চোখে এমনকি পাওয়ার চশমাতেও কাছে দূরে ভাল করে দেখতে সামর্থ নন। সিআই জিহাদুল কথায় কথায় গর্ব করে বলেন, “আমি সিআই সহিদ আর কমানডেন্ট জহির ও চীফ কমানডেন্ট স্যারের ছায়ায় আছি। আমাকে নিয়ে ঘাটাঘাটি করে কোন লাভ নাই”।
এসকল অভিযোগ ও অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আপনারা সাংবাদিক, আপনাদের কাজ সংবাদ প্রকাশ করা, করেন যত পারেন নিউজ করেন। তিনি আরো গর্ব করে বলেন, আমার এখানে সমকালের সহিদ ভাই, কালের কন্ঠের আপেল মাহমুদ সাথী, জনতার হাবিব ও মাই টিভির হাসান জাকিরসহ বিভিন্ন প্রচারবহুল গনমাধ্যমের সাংবাদিকরা আসেন”।
©somewhere in net ltd.